মুখ্যমন্ত্রীর এই আবেদন নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। অনেকেই তার এই মন্তব্য মেনে নিতে পারছেন না।
বিজ্ঞাপন
সোমবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে চলতি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
গত ৯ আগস্ট ধর্ষিত ও খুন হওয়া চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর একমাস কেটে গিয়েছে। মমতা বলেন, "এক মাস তো হয়ে গেল। আমি অনুরোধ করব, পুজোয় ফিরে আসুন, উৎসবে ফিরে আসুন।"
শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার ডিডাব্লিউকে বলেন, "সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন প্রতিবাদ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাদের মনোভাব বুঝতে পারেননি। তাই এটা উৎসবে ফিরে যাওয়ার সময় নয়, যখন একটা শোকের মধ্যে আমরা আছি। পুজো হবে তার নির্ঘণ্ট অনুযায়ী, উৎসব নিয়ে সংযম কাম্য।"
ডিডাব্লিউকে চলচ্চিত্র নির্মাতা অশোক বিশ্বনাথন বলেন, "এমনই একটা ভয়ংকর মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে যে, উৎসবের সঙ্গে যুক্ত থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে আমার নেই। বরং যারা প্রতিবাদ করছেন, তাদের সঙ্গে আমি আছি। এত সময় নিচ্ছেন তদন্তকারীরা, এই হত্যার পিছনে কোনো অভিসন্ধি আছে কি না, ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে কি না, সেটা নিয়েই আমাদের চিন্তা। উৎসব নিয়ে নয়।"
মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানের মধ্যে সরকারের একটা লক্ষ্য দেখছেন কেউ কেউ। সাহিত্যিক স্বপ্নময় চক্রবর্তী ডিডাব্লিউকে বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী অনুদান দিয়েছেন। তিনি চাইছেন এই ঘটনাটা ভুলিয়ে দিতে। দুর্গাপুজোর পর কালীপুজো আসবে, একের পর এক উৎসব। জাস্টিসের যে দাবি উঠেছে, তা শুধু আরজি করের ঘটনায় সীমাবদ্ধ নেই। আনিসের মৃত্যু, কামদুনি, সারদা-নারদ, শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি, সব কিছুরই বিচার চাইছে জনতা। সরকার চাইছে উৎসবের কথা বলে এই আন্দোলনকে থিতিয়ে দিতে।"
ডিডাব্লিউকে চিকিৎসক কুণাল সরকার বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী মনে হয় সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত মাথায় রেখে কথাটা বলেননি, রাজনৈতিক ভাবে একটা মরিয়া চেষ্টা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল নেতৃত্ব চাইছেন যাতে ঝামেলা মিটে যায়, সব স্বাভাবিক হয়ে যায়। কিন্তু তা সহজে হবে বলে মনে হচ্ছে না। উৎসব মানেই হুল্লোড়ে উদ্বাহু হয়ে ওঠা, সেটা কেউ কেউ হয়ত পারবেন, কিন্তু অধিকাংশ মানুষই পারবেন না।"
আরজি কর কাণ্ডের ৩০তম দিনে শিল্পী, রিকশা চালক, সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ
আরজি কর কাণ্ডের ৩০তম দিনে আবার পথে নামলো কলকাতা। প্রতিবাদ করলেন সাধারণ মানুষ। আবার রাত দখল হলো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হাতে টানা রিকশা চালকদের প্রতিবাদ
প্রথম থেকেই আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রোববার সেই ধারা বজায় রেখে কলকাতার হাতে টানা রিকশ চালকেরাও প্রতিবাদ জানালেন। নিজেদের রিকশায় 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' লেখা পোস্টার লাগিয়ে মধ্য কলকাতার রাস্তা দিয়ে হাঁটলেন। এই গরিব মানুষেরাও নিজেদের মতো করে প্রতিবাদে সামিল হলেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হেদুয়া থেকে কলেজ স্ট্রিট
হেদুয়া থেকে কলেজ স্ট্রিট পর্যন্ত তারা রিকশা টেনে নিয়ে যান। তারপর কিছুক্ষণ রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। এই রিকশা চালকরা জানান, তাদের ঘরেও মা-বোন আছেন। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত তারা থামবেন না।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদ ছড়াচ্ছে
আরজি কর কাণ্ডের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ ছড়াচ্ছে। তাতে যোগ দিচ্ছেন সর্বস্তরের মানুষ, সব পেশার মানুষ। অন্যায়ের প্রতিবাদ করছেন তারা। ব্যবস্থা বদলের দাবি করছেন। তারা ন্যায় চাইছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শিল্পীদের প্রতিবাদ
রোববার বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন চিত্রকররাও। তাদের বিক্ষোভ দেখানোর অস্ত্র ছিল রং-তুলি। তারা রাস্তায় বসে এঁকে গেছেন। তাদের প্রতিবাদের ভাষা মূর্ত হয়েছে পথে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন হাজারো মানুষ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিভিন্ন জায়গায়
কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় শিল্পীরা এই প্রতিবাদের ছবি ছড়িয়ে দিয়েছেন। শ্যামবাজার, সিঁথির মোড়, যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড সর্বত্র।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
মৃৎশিল্পীরা প্রতিবাদে
কলকাতার কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরাও প্রতিবাদ জানাতে পতে নেমেছিলেন। আর একমাস পরে দুর্গাপুজো। এই সময়ে তাদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। কিন্তু তারা সেই কাজ ফেলে রেখে প্রতিবাদ করেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
পরিবারের মানুষও
শুধু মৃৎশিল্পীরাই নন, তাদের পরিবারের মানুষও বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। তারা যত পথ হেঁটেছেন, ততই বিক্ষোভের যোগ দেয়া মানুষের সংখ্যা বেড়েছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদের ভাষা যেখানে গান
প্রায় সব বিক্ষোভেই প্রতিবাদের ভাষা হয়ে উঠছে গান। গানের মধ্যে উঠে আসছে প্রতিবাদের স্বর। সেই গানে গলা মেলাচ্ছেন সকলে। এই গণ-প্রতিবাদে গান একটা বড় ভূমিকা পালন করছে। গান ছাড়াও পথনাটক করে, কবিতা বলে মানুষ প্রতিবাদ করছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিশাল মানববন্ধন
সোদপুর থেকে শ্যামবাজার। প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকা। সোদপুর থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রোববার সন্ধ্যায় তৈরি হলো মানববন্ধন। হাতে হাত মিলিয়ে মানুষ আবার এতটা রাস্তা-জুড়ে প্রতিবাদ দেখালেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হাতে হাত
হাতে হাত মিলিয়ে প্রতিবাদ হচ্ছে। বঙ্গসন্তানদের সঙ্গে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন এই সর্দারজিও। সব বয়সের, সব শ্রেণির মানুষের এই সমবেত প্রতিবাদের জোরালো বার্তা ছড়িয়ে যাচ্ছে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
এতদিন ধরে
আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ৩০ দিন হয়ে গেলো। এতদিন ধরে সাধারণ মানুষ সমানে প্রতিবাদ দেখিয়েছেন। প্রতিবাদ ছড়িয়ে গিয়েছে কলকাতা থেকে গোটা পশ্চিমবঙ্গ, সেখান থেকে সারা ভারত, তারপর গোটা বিশ্বে। একের পর এক মানববন্ধন, একের পর এক বিক্ষোভ, একের পর এক প্রতিবাদে একটা কথাই উঠে এসেছে, আর এরকম অত্যাচার, অবিচার সহ্য করা হবে না। দোষীদের শাস্তি চাই।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
বিদেশের প্রতিবাদ
শুধু কলকাতা নয়, রোববার বিশ্বের ১৩০টিরও বেশি শহরে আরজি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ হয়েছেও। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি-সহ ইউরোপের নানা দেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-সহ অনেক দেশে প্রতিবাদ হয়েছে। উপরে জার্মানির কোলন শহরে প্রতিবাদের ছবি।
ছবি: Bikram Mukherjee
12 ছবি1 | 12
রুটিরুজিরপ্রশ্ন
কলকাতার দুর্গোৎসব হেরিটেজের তকমা পেয়েছে। মহালয়া থেকে রেড রোডের কার্নিভাল, দুর্গাপুজোর এই কটা দিন কলকাতা সহ বাংলায় দেখা যায় শিল্পের প্রদর্শনী। প্রতিমা, মণ্ডপ, আলোকশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কারিগরদের এটাই উপার্জনের মূল সময়।
এই সূত্রে কবি সুবোধ সরকার ডিডাব্লিউকে বলেন, "পুজো মানে শুধু পুজো নয়। হাজার হাজার মানুষের আর্থিক উপার্জনের সময়। এই অর্থনীতির পরিসরকে অস্বীকার করা যায় না। উৎসব কথাটা যদি আপনার খারাপ লাগে, পুজো তো বলতেই হবে। উৎসব শব্দের পরিবর্তে হয়তো অন্য কথা বলা যায়। আন্দোলন চলতেই পারে, কিন্তু অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে নয়। আমি কাল দেখলাম, গড়িয়াহাট এলাকায় পুরোদমে পুজোর কেনাকাটা চলছে, ঢোকা যাচ্ছে না।"
উৎসব শব্দে সিলমোহর দিচ্ছেন না সংগীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্রও। তিনি ডিডাব্লিউকে বলেন, "প্রতিবাদ করেও উৎসবে আসা উচিত। উৎসব শব্দটা হয়তো বলা ঠিক হচ্ছে না, পুজোয় ফেরা উচিত। পুজো একটা ইন্ডাস্ট্রি, বহু মানুষ তাদের উপার্জনের জন্য এই সময়টার অপেক্ষা করেন। একজন শিল্পী গান করলে তার অনুষ্ঠানের সঙ্গে ২০ জন মানুষ যুক্ত থাকেন। তাই আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ করলেও আমার মনে হয়, পুজো হওয়া উচিত আগের মতই। যদিও আমি চাই না, যে ঘটনা ঘটেছে তা পুজোয় চাপা পড়ে যাক।"
তিনি সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন: আশীষ
অর্থনীতির প্রশ্নটিকে গুরুত্ব দিয়েও চিত্র পরিচালক অনীক দত্ত ডিডাব্লিউকে বলেন, "রিকশাচালক জোর করে রং, তুলি কেনার পয়সা দিয়ে যাচ্ছেন স্লোগান লেখা, ছবি আঁকার জন্য। সুতরাং কেউ পুজোয় চপ, মুড়ি বিক্রি করতে করতে প্রতিবাদ জানাতে পারেন। অর্থনৈতিক কাজকর্ম সব চলবে। পুজো মণ্ডপে প্রতিবাদের ব্যানার লাগানো থাকবে। স্লোগান, শাউটিং হবে। ঢাক বন্ধ রাখতে হবে।"
ডিডাব্লিউকে অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী বলেন, "পুজো নিশ্চয়ই হবে, ধার্মিক আচার সকলেই পালন করবেন। কিন্তু উৎসব হিসেবে যে জাঁকজমক দেখি, সেটার জন্য মানসিকভাবে আমরা প্রস্তুত নই। গত কয়েক বছরে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের পুজো ঘিরে যে অর্থ ও ক্ষমতার প্রদর্শন দেখা যাচ্ছে, সেটা এবার কাম্য নয়। পুজো আয়োজনের সঙ্গে বহু মানুষের রুটি-রুজি জড়িয়ে থাকে, তাই পুজো হবে। কিন্তু উৎসব পালনের জন্য আমরা অনেকেই হয়তো তৈরি নই।"
কারও মতে, উৎসবের পরিস্থিতি আজ রাজ্যে নেই। চিন্তাবিদ ও গবেষক আশীষ লাহিড়ী ডিডাব্লিউকে বলেন, "আমি অত্যন্ত মর্মাহত হয়েছি মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে। তিনি যে সাধারণ মানুষের থেকে কতখানি বিচ্ছিন্ন, এটা তার প্রমাণ। উৎসব মানে হচ্ছে আনন্দের প্রকাশ। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন, অন্যান্য পাঁচটা দিনের থেকে উৎসব আলাদা। সেদিন মানুষ নিছক আনন্দে মাতে। কোনো স্বার্থের বোধ থাকে না। সেই পরিস্থিতি কি আজকের পশ্চিমবাংলায় আছে? এই কথাটা যদি কেউ বুঝতে না পারেন, তিনি সংবেদনহীন।"
'বিচার পেতে আলোর পথে' কলকাতা, আবার রাতদখল
জুনিয়র ডাক্তারদের অনুরোধে রাতে ঘরের আলো বন্ধ রেখে বাইরে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদ দেখালো কলকাতা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
'বিচার পেতে আলোর পথে'
জুনিয়র ডাক্তাররা আরজি করে 'বিচার পেতে আলোর পথে'-র প্রতিবাদে অংশ নেন। সেখানে যোগ দেন সাধারণ মানুষও। যোগ দিয়েছিলেন মৃত চিকিৎসকের বাবা-মা এবং পরিবারের মানুষরাও। ফুল, মালা, প্রতীকী ছবি দিয়ে ছোট মঞ্চের চারপাশে জ্বলতে লাগলো মোমবাতি, যা আসলে প্রতিবাদের আগুন। প্রতিবাদের আলো ছড়িয়ে গেল চারদিকে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
নির্যাতিতার বাবা-মায়ের অভিযোগ
প্রশ্ন তুললেন নির্যাতিতার বাবা-মা। বললেন, ''কেন পুলিশ টাকা দিতে চেয়েছিল? হাসপাতাল কী করে বললো, মেয়ে আত্মহত্যা করেছে? মেয়ের মুখ দেখতে কেন সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগলো? সাতটার মধ্যে করা এফআইআর নথিভুক্ত হতে কেন পৌনে বারোটা বাজলো? কেন পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করলো?'' উত্তর চেয়েছেন তারা। জবাব চান সাধারণ মানুষও।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
কেন দাহ করতে এত চাপ?
নির্যাতিতার বাবা বলেছেন, তারা দেহ রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের চাপে দাহ করতে বাধ্য হন। দাহ করার অর্থ জোর করে পুলিশ দেয়। তার মেয়ে জানলো, বাবা দাহ করার অর্থও দিতে পারলো না। তারপর ডিসি নর্থ অফিসে টাকা দিতে চান। নেননি তারা। সাদা কাগজে সই করানোর চেষ্টা করেন। কাগজ তারা ছিঁড়ে ফেলে দেন। মা বলেন, ''অপরাধীরাও আমার মতো রাতে নিদ্রাহারা হোক।''
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদের আলোয়
বুধবার কলকাতার প্রায় প্রতিটি প্রান্তে ছিল এই প্রতিবাদের আলো। মানুষ রাস্তায় নেমে মোমবাতি হাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বাড়ির সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে রেখেছেন। আরজি করের চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা এবং তারপরের ঘটনা তাদের এতটাই নাড়া দিয়েছে যে, সাধারণ মানুষ দিনের পর দিন রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন। তাদের এই প্রতিবাদের আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে পুরো দেশে।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
হেডলাইট বন্ধ রেখে
প্রতিবাদে নিজের মতো করে অংশ নিচ্ছেন সকলেই। গাড়ি চালকেরাও হেডলাইট বন্ধ রেখে গাড়ি চালিয়েছেন। বরানগরের এই ছবি কলকাতার অনেক জায়গায় দেখা গেছে। প্রতিবাদের ফলে রাস্তায় যানজট হলেও কেউ বিরক্ত হচ্ছেন না। বরং গাড়ি থেকেই তারা বলছেন 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আরজি করের সামনে
আরজি কর হাসপাতালের সামনে তখন শুধু মানুষের ভিড় আর মোমবাতির প্রতিবাদের আলো। জুনিয়র ডাক্তারদের ডাকে সাড়া দিয়ে তারা রাস্তায় নেমেছেন। তারা ন্যায় চান। তারা চান, অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টা বন্ধ হোক। ন্যায় পাক নির্যাতিতা।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
শ্যামবাজারের মোড়ে
উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়। সেখানে রাতে মোমবাতি রাস্তায় রেখে প্রতিবাদ হলো। সেই প্রতিবাদে সামিল হলেন সকলেই। এমনকি নিজের ছোট্ট বাচ্চাকে নিয়ে মোমবাতি জ্বালালেন এই মানুষটি।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
জ্বালাও আলো
মানুষরা বাড়ির বাইরে এসে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। রাস্তায় নেমেছেন মা-বোনেরা। তাদের মোমবাতির আলোয় অন্ধকার দূর করার আহ্বান শুনেছে পশ্চিমবঙ্গ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
উৎসারিত আলোয় প্রতিবাদের মুঠি
দমদমের ছবি। মোমবাতির আলোর সঙ্গে প্রতিবাদী হাত। এটাই দেখিয়ে দিচ্ছে মানুষের ক্ষোভের আগুন কীভাবে জ্বলছে। অন্যায়ের প্রতিবাদে ন্যায় পেতে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
প্রতিবাদের ভাষা
কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্র দেখা গেছে এই ছবি। আলোয় আলোয় প্রতিবাদের ছবি। পাড়ায় পাড়ায় এভাবেই প্রতিবাদ হয়েছে। ন্যায়ের দাবিতে প্রতিবাদ।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
আগুনের পরশমণি
এভাবেই বুধবার রাতে আগুনের পরশমণি জ্বলে উঠলো পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে। ন্যায়ের দাবি আরো জোরালো হলো। মানুষের প্রতিবাদ আরো তীব্র হলো।
ছবি: Satyajit Shaw/DW
11 ছবি1 | 11
নাট্যব্যক্তিত্ব মেঘনাদ ভট্টাচার্য ডিডাব্লিউকে বলেন, "এই কথাটা বলা উচিত হয়নি। এতে অনেকেই মানসিকভাবে আঘাত পেয়েছেন। বিশেষ করে যাদের বাড়ি এই ঘটনা ঘটেছে, তারা সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছেন। এই মেয়েটির জন্য যারা লড়াই করছেন, যারা রাস্তায় নামছেন বিচারের জন্য, তারা অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন। মানুষ নিজের মতো করে উৎসবে সামিল হতে পারে। কিন্তু এই মুহূর্তে সব ভুলিয়ে দিয়ে উৎসবের কথা মনে করিয়ে দেয়া খুব অনুচিত কাজ।"
চন্দ্রিল ভট্টাচার্য ফেসবুক ভিডিওতে বলেছেন, ''একজন প্রধান সমাজতত্ত্ববিদ উৎসব সম্পর্কে আমাদের নতুন একটি তত্ত্ব সরবরাহ করেছেন। তিনি বলছেন, উৎসব যদি শুরু হয়ে যায়, তাহলে তোমার প্রতিবাদ থেমে থাকতে হবে, প্রতিরোধ থেমে থাকতে হবে, বিদ্রোহ থেমে থাকতে হবে। ঠিক যেরকম রেফারি খেলাশেষের বাঁশি বাজিয়ে দিলে তুমি আর খেলা খেলাতে পার না। তোমাকে বল নিয়ে চলে যেতে হবে, তা তুমি যত গোলেই হার না কেন। ঠিক সেইভাবে তোমার মনের মধ্যে যতখানি ক্ষোভ সঞ্চিত হোক না কেন, সেটাকে আর তুমি উগড়ে দিতে পারবে না, আছড়ে ফেলতে পারবে না। কারণ, উৎসব শুরু হয়ে গেছে। উৎসব যে একটি সুমহান আব্বুলিশ, যেটা বলে দিলে তুমি আর চোর ধরতে পারবে না, এটা কেউ এতদিন জানত না। কিন্তু এখন নতুন করে জানলো।''