1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুঘল গার্ডেন হলো অমৃত উদ্যান

৩১ জানুয়ারি ২০২৩

ইতিহাস থেকে মুঘল ঐতিহ্য মুছে দেওয়ার আরো এক নিদর্শন। ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনের মুঘল গার্ডেনের নাম বদলে দেওয়া হলো।

মুঘল গার্ডেন
ছবি: Javed Akhtar/DW

দিল্লির রাইসিনা হিলে ভারতের রাষ্ট্রপতির বাসভবন। ব্রিটিশ আমলে তৈরি এই ভবনের নির্মাণ করেছিলেন ইউরোপের বিখ্যাত স্থপতি এডউইন লুটিয়েনস। রাষ্ট্রপতি ভবনের অন্যতম আকর্ষণ প্রায় ১৫ একর জমির উপর তৈরি মুঘল গার্ডেন। প্রতিবছর নির্দিষ্ট কয়েকমাসের জন্য যা খুলে দেওয়া হয় সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্যেও। সেই বাগানের নাম রাতারাতি বদলে দেওয়া হলো। রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, এখন থেকে বাগানের নাম 'অমৃত উদ্যান'। কেন এই নাম পরিবর্তন করা হলো, তার অবশ্য নির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে শাসকদল বিজেপি অনেকদিন ধরেই বলছে, দেশের ইতিহাস নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। উপনিবেশবাদের ইতিহাস বদলে দেওয়া হবে। তারই অন্যতম উদাহরণ এই নামবদল বলে মনে করা হচ্ছে।

দিল্লির সরকারি ভবন বানরদের দখলে

01:41

This browser does not support the video element.

প্রশ্ন হলো, কেন রাষ্ট্রপতি ভবনের বাগানের নাম মুঘল গার্ডেন রাখা হয়েছিল? মুঘলরা তো এই বাগান তৈরি করেনি! বরং ব্রিটিশ স্থপতির পরিকল্পনায় বাগান তৈরি হয়েছিল। ইতিহাসবিদদের বক্তব্য, মুঘলদের বাগান তৈরির কিছু নির্দিষ্ট ভাবনা ছিল। পারস্যের অনুপ্রেরণায় যে স্থাপন কৌশল তারা তৈরি করেছিল। রাষ্ট্রপতি ভবনের বাগান সেই স্থাপত্য কৌশলের উপরেই দাঁড়িয়ে। বস্তুত, জম্মু-কাশ্মীরের মুঘল বাগান, তাজমহলের মুঘল বাগানের অনুকরণে রাষ্ট্রপতি ভবনের বাগান তৈরি করা হয়েছিল। পার্রস্যের মিনিয়েচার ছবির অনুপ্রেরণাও আছে ওই বাগান নির্মাণে। শুধু তা-ই নয়, মুঘল স্থাপত্য কৌশলে তৈরি বাগানে ফুল গাছ লাগানো হয়েছিল ইউরোপীয় কায়দায়। ফলে ঐতিহাসিকভাবে এই বাগানের গুরুত্ব অপরিসীম।

ইতিহাসবিদদের একাংশের বক্তব্য, রাতারাতি বাগানের নাম বদলে ইতিহাস নষ্ট করা হয়েছে। দ্য ওয়্যারে বিশিষ্ট লেখক উরবিশ কোঠারি লিখেছেন, ''সর্ব অর্থেই ইতিহাস নষ্ট করা হয়েছে।'' তার বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি ভবনের ওয়েবসাইটে গেলে দেখা যাচ্ছে, বাগানের উপর কার্সার নিয়ে গেলে 'অমৃত উদ্যান' লেখা ফুটে উঠছে। সঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের একটি উদ্ধৃতি। সেখানে প্রণববাবুর উদ্ধৃতির মধ্যেও অমৃত উদ্যান শব্দটি আসছে। যেন, প্রণববাবু অমৃত উদ্যান শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু সাবেক রাষ্ট্রপতি বাগানকে মুঘল গার্ডেনই বলেছিলেন। উরবিশ মনে করেন, এ-ও একধরণের ইতিহাস বিকৃতি।

বিজেপির নেতারা অবশ্য একে কোনোভাবেই ইতিহাসের বিকৃতি বলে মনে করেন না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং বলেছেন, ''দেশ বদলাচ্ছে, দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।'' আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু টুইট করেছেন, 'এই নাম পরিবর্তন নতুন ভারতের অন্যতম প্রতীক।'

বিরোধীরা অবশ্য নাম পরিবর্তনের বিরোধিতা করছেন। তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেছেন, ''কে বলতে পারে, এবার ইডেন গার্ডেনের নাম বদলে রাখা হবে মোদী উদ্যান। কেন্দ্রীয় সরকার মানুষের জন্য কাজের ব্যবস্থা করুক। মুদ্রাস্ফীতি কমানোর ব্যবস্থা করুক।'' সিপিআই-য়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজার প্রশ্ন, ''ইতিহাস বিকৃতির এই প্রবণতা কবে বন্ধ হবে?''

এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এনডিটিভি, দ্য ওয়্যার)

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ