1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুম্বইয়ের ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে বেসরকারি উদ্যোগ

৬ ডিসেম্বর ২০১৯

মুম্বই শহরের ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে বাইরের সাহায্যের উপর নির্ভর না করে আদিবাসী জেলেরা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়েছে৷ আদালতের হস্তক্ষেপে সরকার ও প্রশাসনও নড়েচড়ে বসেছে৷

ছবি: Imago/Zuma

নন্দকুমার পাওয়ার ভান্ডুপ নামে জেলেদের গ্রামের সরু অলিগলি দিয়ে হাঁটার সময় প্রতিদিন কৃতজ্ঞ বোধ করেন৷ ২০০৫ সালে মুম্বই শহরে প্রবল বন্যায় যখন প্রায় এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, তখন তাঁর গ্রাম প্রায় অক্ষত ছিল৷ ফলে সবার বোধোদয় হয়েছিল৷ তিনি বুঝতে পারেন, যে ম্যানগ্রোভের কারণেই তাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন৷

তিনি প্রতিবেশী জেলেদের নিয়ে তৃণমূল স্তরে এক আন্দোলন শুরু করেন৷ গ্রামের আশেপাশে এক হাজার হেক্টরেরও বেশি সবুজ ম্যানগ্রোভ অরণ্য বাঁচানোই ছিল তাঁদের উদ্দেশ্য৷ শ্রী একভিরা প্রতিষ্ঠানের নন্দকুমার পাওয়ার জানান, ‘‘প্রত্যেক জেলেই স্বেচ্ছাসেবী৷ এইরোলি থেকে ভাশি পর্যন্ত প্রায় ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী পালা করে ২৪ ঘণ্টা ধরে কাজ করেন৷ বনবিভাগের সাহায্যের জন্য আমরা অপেক্ষা করি না৷ আমরা নিজেদেরই সহায়তা করি৷ আমরা নিজেরাই পদক্ষেপ নেই৷ যে কোনো জবরদখলকারী ও ম্যানগ্রোভের ক্ষতি বন্ধ করি৷’’

শহরের পূবের উপকূলে ম্যানগ্রোভের প্রান্তে বড় বড় পুকুরে আদিবাসী কোলি সম্প্রদায়ের জেলেরা মাছ ধরতো৷ সারাদিন পরিশ্রম করে সামান্য পরিমাণ মাছ ধরে জেলেরা জীবনধারণের চেষ্টা করেন৷ তাদের পেশা এখন হুমকির মুখে পড়েছে৷ আগে সেখানে অনেক প্রজাতির অঢেল মাছ পাওয়া যেত৷ এখন আর সেগুলি দেখাই যায় না৷

ম্যানগ্রোভ বন রক্ষায় আদালতের সহায়তা

04:23

This browser does not support the video element.

মুম্বইয়ের উত্তর পূর্বাংশে ম্যানগ্রোভ চিরকাল নার্সারির কাজ করেছে৷ সেখানে কাঁকড়া ও চিংড়িসহ নানা সামুদ্রিক প্রাণী খাদ্য ও আশ্রয় পেয়েছে৷ ‘বনশক্তি' সংগঠনের স্টালিন দয়ানন্দ বলেন, ‘‘উপকূলবর্তী এই অরণ্যে শুকনো পাতা মাটিতে মিশে যায়৷ এখানে আসলে পলিমাটি রয়েছে৷ সেখানে পাতা পচতে শুরু করে৷ কাঁকড়া ও অন্যান্য প্রাণী পাতা নিয়ে গিয়ে পচন প্রক্রিয়া আরও তরান্বিত করে৷ ফলে মাটির পুষ্টি বেড়ে যায়৷ ম্যানগ্রোভ আসলে সমুদ্রের রান্নাঘর৷ সেখানেই খাদ্য প্রস্তুত করা হয় এবং গোটা মহাদেশ, পৃথিবী ও মহাসাগর জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷’’

বহু প্রজন্ম ধরে মাছ ধরা ও প্রজনন চক্রের ফলে এই পানি উর্বর হয়ে উঠেছে৷ কিন্তু অবারিত দূষণ ও বেআইনি জমি দখলের কারণে ক্ষয়ের এক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে৷

স্থানীয় জেলেরা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন৷ বেআইনি জবরদখল ও চোরাশিকারিদের দেখলেই তাঁরা সংগঠনে খবর দিচ্ছেন৷ কিন্তু প্রায়ই গ্রাম্য সমাজের সদস্যরাই সমস্যার কারণ হয়ে ওঠেন৷ নন্দকুমার পাওয়ার বলেন, ‘‘আমি তাদের বোঝাবার চেষ্টা করেছি৷ কিন্তু গ্রামের মানুষ হিসেবে তারা আমার কথার তোয়াক্কা করে নি৷ আমি বার বার তাদের এমন কাজ করতে মানা করেছি৷ কিন্তু তারা কথা শোনে নি৷ অবশেষে আমি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বেআইনি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে এফিডেভিট দাখিল করি৷ বনবিভাগের সাহায্যে ২০০৯ সালে সব স্থাপনা শেষ পর্যন্ত ভেঙে দেওয়া হলো৷ গোটা এলাকা এখন নিরাপদ হয়ে উঠেছে৷’’

নন্দকুমার ও তাঁর কমিউনিটি প্রকল্প যে ম্যানগ্রোভ রক্ষা করে, সেটি পৃথিবীর ইকোসিস্টেমের শূন্য দশমিক এক শতাংশ জুড়ে রয়েছে৷ অত্যন্ত বিরল এই পরিবেশ৷ উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্র ভারতের একমাত্র রাজ্য, যেখানে ম্যানগ্রোভ সংরক্ষণের জন্য আলাদা সেল রয়েছে৷

এমন জেলে সম্প্রদায়ের উদ্যোগের কল্যাণেই শহরের বাকি অংশ আরও ভালোভাবে সমুদ্রস্তরের উচ্চতাবৃদ্ধির মোকাবিলা করার সুযোগ পাচ্ছে৷ 

কার্মেন মায়ার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ