করোনার কারণে ভারতে লকডাউন দেয়ায় এ বছর মুম্বইয়ে অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি পরিযায়ী ফ্লেমিঙ্গোর দেখা পাওয়া গেছে৷ ভবিষ্যতেও যেন এভাবে ফ্লেমিঙ্গোরা আসে তা নিশ্চিত করতে দূষণ কমানোর পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷
বিজ্ঞাপন
প্রজননের জন্য হাজার হাজার ফ্লেমিঙ্গো আসায় ভারতের মুম্বইয়ের খাঁড়িগুলোতে এবার বিশ্বের অন্যতম সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল৷
১৯৮০-র দশকে প্রথম মুম্বইতে ফ্লেমিঙ্গোরা আসা শুরু করে৷ এ বছরের শুরুতে তাদের সংখ্যা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি ছিল৷
করোনার কারণে ভারতে লকডাউন চলায় অনেকটা সময় ফ্লেমিঙ্গোর প্রজননস্থলে মানুষের আনাগোনা ছিল না৷
সে কারণে থানের জলাভূমিতে ইচ্ছেমতো আনন্দ করতে পেরেছে ফ্লেমিঙ্গোরা৷ খাবার হিসেবে ‘ক্রাস্টেইশন’ নামের কাঁকড়াজাতীয় প্রাণী, জলজ উদ্ভিদ আর নীল-সবুজ অ্যালজির টানে প্রতিবছর দক্ষিণ ইউরোপ, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফ্লেমিঙ্গোরা মুম্বইতে আসে৷
মুম্বইয়ে রেকর্ডসংখ্যক ফ্লেমিঙ্গো
04:07
রাহুল খোট বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটিতে কাজ করেন৷ তিনি একটি দশ বছর মেয়াদি প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘গত দুই বছর ধরে প্রতি মাসে থানের খাঁড়িগুলোতে গিয়ে আমরা ফ্লেমিঙ্গোদের সংখ্যা গুনছি৷ পূর্ব, পশ্চিম দুই তীরেই আমরা যাই৷ ২০১৯ সালের মার্চ মাসে আমরা প্রায় এক লাখ ৩৪ হাজার ফ্লেমিঙ্গো গুনেছিলাম৷ মুম্বইতে ওটাই ছিল ফ্লেমিঙ্গোদের সর্বোচ্চ সংখ্যা৷’’
মুম্বইয়ের শহুরে জীবন দেখলে হয়ত প্রকৃতি-বিরোধী মনে হতে পারে, কিন্তু গুজরাটের লবণাক্ত ভূমির পর ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ফ্লেমিঙ্গোর দেখা পাওয়া যায় সেখানে৷
ফ্লেমিঙ্গোরা সেই সব প্রজাতির একটি, যাদের সংখ্যা আসলে বেড়েছে৷
পক্ষিবিজ্ঞানীরা এই অবস্থাকে ‘এজ নেচার’ বলে থাকেন, যেখানে মানুষের হস্তক্ষেপের কারণে কখনও কখনও বন্যপ্রাণীদের আসলে লাভ হয়ে থাকে৷
ভারতে মুম্বইয়ের পাশেই আছে ম্যানগ্রোভ অরণ্য
03:33
This browser does not support the video element.
থানের খাঁড়িগুলোতে মানুষের হস্তক্ষেপ সাধারণত অনেক বেশি হয়ে থাকে৷ কারণ শহরের একটি বড় অংশের গৃহস্থালী ও শিল্পের বর্জ্য সেখানে ফেলা হয়৷ এই বর্জ্যের কারণে যে অ্যালজি গজিয়ে ওঠে তা ফ্লেমিঙ্গোদের খুব প্রিয়৷
পক্ষিবিজ্ঞানী সঞ্জয় মঙ্গা শুরু থেকেই ফ্লেমিঙ্গোদের আসা-যাওয়া খেয়াল করছেন৷ তিনি বলছেন, যদিও বর্তমানে ফ্লেমিঙ্গোদের জন্য ভালো পরিবেশ বিরাজ করছে, ভবিষ্যতে তেমনটা না-ও থাকতে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘মাহুল এলাকার তেল শোধনাগারগুলো থেকে গরম পানি বের হয়৷ মুম্বইয়ে ফ্লেমিঙ্গোদের সংখ্যা বাড়ার এটি একটি কারণ৷ আমি সাধারণত বলে থাকি যে, থানের খাঁড়িগুলো আসলে ফ্লেমিঙ্গোদের জন্য ‘ঠিকভাবে দূষিত'৷ সেখানকার পানি এমন উষ্ণ থাকে, যা ফ্লেমিঙ্গোরা খুব পছন্দ করে৷ একই কারণে অন্য পাখিরাও সেখানে ভিড় করে৷’’
লকডাউনের কারণে মানুষের আনাগোনা না থাকায় পাখিরা তাদের আবাসে নিজের মতো করে থাকতে পেরেছে৷ কিন্তু যে হারে দূষণ বাড়ছে, তাতে হয়ত একটা সময় আসবে যখন এই দূষণই ফ্লেমিঙ্গোদের আবাস ধ্বংসের কারণ হয়ে উঠবে৷
পাখিদের এই বিশাল সংখ্যা সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন প্রকৃতি আসলে প্রকৃতির মতো ছিল৷ বন্যপ্রাণীদের মন বুঝে যদি তাদের আবাস রক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়, তাহলে ভবিষ্যতেও এমন সংখ্যায় ফ্লেমিঙ্গোরা আসতে থাকবে৷
ইশা পল/জেডএইচ
বিলিওনেয়ারদের সবচেয়ে প্রিয় ১০ শহর
ফোর্বস ম্যাগাজিন সম্প্রতি সবচেয়ে বেশি বিলিওনেয়ার থাকেন এমন ১০টি শহরের তালিকা প্রকাশ করেছে৷ ২০২০ সালে ফোর্বসের বিলিওনেয়ার তালিকায় নাম থাকা ২,০৯৫ জনের মধ্যে ৫৫২ জন থাকেন এসব শহরে৷
ছবি: Reuters/E. Munoz
১. নিউ ইয়র্ক
নিউ ইয়র্কে সবচেয়ে বেশি ৯২ জন বিলিওনেয়ার থাকেন৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৪২৪ বিলিয়ন ডলার৷ এর মধ্য়ে সবচেয়ে ধনী মাইকেল ব্লুমবার্গের আছে ৪৮ বিলিয়ন৷ ২০১৯ সালের চেয়ে নিউ ইয়র্কে বিলিওনেয়ারের সংখ্যা বেড়েছে আটজন৷ ফলে টানা ছয় বছর ধরে ফোর্বসের তালিকায় শীর্ষে আছে নিউ ইয়র্ক৷
ছবি: Reuters/E. Munoz
২. হংকং
আটজন বিলিওনেয়ার হারালেও তালিকায় দ্ৱিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে হংকং৷ ২০১৯ সালের শেষদিকে হংকংয়ে সম্পদ আয়ের মূল উৎস নির্মাণ খাতে মন্দা দেখা দেয়৷ হংকংয়ে এখন বিলিওনেয়ার বাসিন্দা আছেন ৭১ জন৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৩২১ বিলিয়ন ডলার৷
ছবি: picture-alliance/Prisma
৩. মস্কো
ফোর্বসের এই তালিকায় নাম থাকা চীনের শেনজেন ছাড়া মস্কো হচ্ছে আরেকটি শহর যেখানে নিজের আয়ে (উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া নয়) বিলিওনেয়ার হওয়া ব্যক্তিরা থাকেন৷ তবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে তাঁদের ভালো সম্পর্ক থাকতে পারে৷ রাশিয়ার ৮০ শতাংশ বিলিওনেয়ার থাকেন মস্কোতে৷ সবমিলিয়ে সেখানে বাস করা বিলিওনেয়ারের সংখ্যা ৭০ জন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Sputnik/N. Seliverstova
৪. বেইজিং
চীনের তিনটি শহরের নাম আছে এই তালিকায়, যা সর্বোচ্চ৷ দেশটির রাজধানীতে বিলিওনেয়ারের সংখ্য়া গতবছরের চেয়ে ছয়জন বেড়ে এখন হয়েছে ৬৭৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ২১৮.২০ বিলিয়ন ডলার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Yu Shenli
৫. লন্ডন
এবছর লন্ডনে বিলিওনিয়ারের সংখ্য়া একজন বেড়েছে৷ মোট সংখ্যা ৫৬ জন৷ তাঁদের মোট সম্পদের পরিমাণ ২১২.৭ বিলিয়ন ডলার৷ লন্ডনের নতুন বিলিওনেয়ারের মধ্য়ে পাঁচজন এসেছেন যুক্তরাজ্য়ের বাইরে থেকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Kalker
৬. সাংহাই
চীনের এই শহরে বিলিওনেয়ারের সংখ্যা ৪৬ জন৷ করোনার কারণে ঘরে বসে থাকতে বাধ্য় হওয়ায় অনলাইন রিটেল ব্য়বসায়ী কলিন হুয়াংয়ের আয় বেড়েছে৷ ফলে সাংহাইয়ে বাস করা বিলিওনেয়ারদের মধ্যে তাঁর সম্পদের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি, ১৬.৫ বিলিয়ন৷
আলিবাবার জ্যাক মা'র পর চীনের সবচেয়ে ধনী মা হুয়াতেং থাকেন এই শহরে৷ তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৩৮.১ বিলিয়ন ডলার৷ শহরটিতে মোট ৪৪ জন বিলিওনেয়ারের বাস৷ গতবছরের চেয়ে পাঁচজন বেশি৷ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ সত্ত্বেও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের জন্য বিখ্যাত শেনজেনের ধনীদের সম্পদ গতবছরের তুলনায় ২৯.৭ বিলিয়ন ডলার বেড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L. Xiashun
৮. মুম্বই
একবছরে পাঁচজন বিলিওনেয়ার মুম্বই ছেড়ে গেছেন৷ তবে ছয়জন মুম্বইকে নিজেদের শহর বানিয়েছেন৷ শহরটির মোট ৩৮ জন বিলিওনেয়ারের সম্পদের পরিমাণ ১৪৯.৩ বিলিয়ন৷ সবচেয়ে ধনী মুকেশ আম্বানি (৩৬.৮ বিলিয়ন ডলার)৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ZUMA/Ashish Vaishnav
৯. সান ফ্রান্সিসকো
শহরের বাসিন্দা উবারের সাবেক প্রধান নির্বাহী রায়ান গ্রেভস ও পিন্টারেস্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বেন সিলবারমানের সম্পদ এক বিলিয়ন ডলারের নীচে নেমে গেছে৷ সবমিলিয়ে পাঁচজন বিলিওনেয়ার হারিয়েছে সান ফ্রান্সিসকো৷ ফলে এখন মোট বিলিওনেয়ার আছেন ৩৭ জন৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৯০.৭ বিলিয়ন ডলার৷
ছবি: Getty Images/J. Revillard
১০. সিঙ্গাপুর
সাউথ কোরিয়ার সৌলকে হারিয়ে তালিকার শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে সিঙ্গাপুর৷ কারণ গতবছরের চেয়ে বিলিওনেয়ারের সংখ্য়া বেড়েছে ২২ জন৷ এখন মোট ৩১ জন বিলিওনেয়ার বাস করছেন সেখানে৷ তাঁদের সম্পদের পরিমাণ ৯৫.৩ বিলিয়ন ডলার৷