1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুম্বই হামলার পাঁচ বছর

গ্রেহেম লুকাস/এসবি২৬ নভেম্বর ২০১৩

ঠিক পাঁচ বছর আগে পাকিস্তান থেকে আসা একদল সন্ত্রাসবাদী ভারতের মুম্বই শহরে মারাত্মক হামলা শুরু করেছিল৷ পাকিস্তান আজও এই অপরাধের তদন্তে গড়িমসি করে চলেছে৷

FREI FÜR SOCIAL MEDIA (FILE) A file picture dated 27 November 2008 shows firefighters trying to douse the fire as smoke rises from the Taj hotel building after terrorist attacks in Mumbai, India. Photo: EPA/Tyagi (Zu dpa "Fünf Jahre nach Mumbai-Terror: «Indien genauso verletzlich»") +++(c) dpa - Bildfunk+++
ছবি: picture-alliance/dpa

২০০৮ সালের ২৬শে নভেম্বর৷ দিনটি আর পাঁচটা দিনের মতোই শুরু হয়েছিল৷ সন্ধ্যায় অসংখ্য মানুষ ঘরে ফিরছিলেন৷ শহরের কেন্দ্রস্থলে হোটেলে-রেস্তোরাঁয় দেশি-বিদেশি মানুষের ভিড়৷ তারপর শুরু হলো সেই ভয়ংকর ঘটনা, যা ‘২৬/১১' হিসেবে সারা ভারতে স্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ জঙ্গি ইসলামপন্থি সন্ত্রাসবাদীরা গুলি চালিয়ে, বোমা ও গ্রেনেড নিক্ষেপ করে অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছে৷ বিশেষ করে ইহুদি, অ্যামেরিকান বা ব্রিটিশ হিসেবে তারা যাদের চিহ্নিত করতে পেরেছে, তারাই হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে৷ সন্ত্রাসীরা হোটেল-রেস্তোরাঁয় মানুষকে পণবন্দি করেছে৷ এক ইহুদি স্থাপনার উপর হামলা চালিয়েছে৷

আজমল কাসাভছবি: dapd

ভারতের সংবাদমাধ্যম কোনো রাখঢাক না করেই গোটা ঘটনার খুঁটিনাটি ছবি তুলে ধরেছে৷ মৃতদেহ ও মৃতপ্রায় মানুষদেরও দেখানো হয়েছে৷ সন্ত্রাসবাদী ও নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ গড়িয়েছে ২৯শে নভেম্বর পর্যন্ত৷ শেষ পর্যন্ত ন'জন সন্ত্রাসবাদী প্রাণ হারিয়েছে৷ আজমল কাসাভ নামের এক পাকিস্তানি সন্ত্রাসবাদীকে কাবু করে আটক করা সম্ভব হয়েছে৷ মৃতের সংখ্যা ১৬৬, যাদের মধ্যে ভারতীয়দের সংখ্যাই বেশি৷ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর সূত্র অনুযায়ী আহতের সংখ্যা প্রায় ৩০০৷

ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

হামলার কিছু পরে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ কয়েকজন সন্দেহভাজন লোককে গ্রেপ্তার করে৷ পাঁচ বছর পর তারা আজও বন্দি রয়েছে৷ প্রমাণের অভাবের কারণেই নাকি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা যাচ্ছে না৷ সন্ত্রাসবাদীদের লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে আগাম খবর সংগ্রহ করার দায়ে মার্কিন নাগরিক ডেভিড কোলম্যান হেডলিকে শিকাগোর এক আদালত ৩৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে৷ ভারতের এক আদালত আজমল কাসাভ-এর বিরুদ্ধে ‘ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ'-এর দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছে৷ ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷

ডেভিড কোলম্যান হেডলিছবি: picture alliance/dpa

হামলার পাঁচ বছর পর ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তদন্তকারীরা এই হামলার প্রেক্ষাপট প্রায় পুরোটাই উন্মোচন করেছেন৷ বিশেষ করে হেডলি ও কাসাভের স্বীকারোক্তি থেকে অনেক কথা জানা গেছে৷ সেই সব তথ্য অনুযায়ী, এই হামলার জন্য লাহোর-ভিত্তিক সংগঠন ‘লস্কর-ই-তৈবা' দায়ী৷ জঙ্গি ইসলামপন্থি এই সংগঠন পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলে৷ ‘নন-স্টেট অ্যাক্টর' হিসেবে তারা ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে নিয়মিত হামলা চালায়৷ ২০০১ সালে মার্কিন প্রশাসন ‘লস্কর-ই-তৈবা'-কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে৷

তদন্তে পাকিস্তানের আগ্রহ নেই

আজ পর্যন্ত পাকিস্তান এই হামলার তদন্তের ক্ষেত্রে কোনো উদ্যোগ দেখায়নি৷ ইতিহাসবিদ আরশাদ মাহমুদ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই মনোভাবের ব্যাখ্যা দিয়েছেন৷ পাকিস্তানের সরকারের দাবি, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ভারত তেমন কোনো জোরালো প্রমাণ দিতে পারেনি৷ মামলার ফলে যদি প্রমাণ হয়ে যায় যে পাকিস্তান মুম্বই হামলায় জড়িত ছিল, তাহলে বিষয়টা সে দেশের পক্ষে বড় অপমানজনক হবে৷ পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজনৈতিক অ্যাক্টিভিস্ট তৌকির গিলানি অবশ্য মনে করেন, বিষয়টি শুধু দেশের মুখরক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷ তাঁর মতে, ‘লস্কর-ই-তৈবা'-র মতো সংগঠনকে মদত দেয় আইএসআই৷ তাই লস্করের বিরুদ্ধে কিছু করা মানে রাষ্ট্রের একটা অংশের উপর হামলা চালানোর মতো৷

ছবি: Reuters

মুম্বই হামলার পাঁচ বছর পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংলাপে তেমন কোনো অগ্রগতি ঘটেনি৷ ভারতের ‘হিন্দুস্তান টাইমস' সংবাদপত্রের সাংবাদিক বিনোদ শর্মা মনে করেন, ২৬/১১ ছিল বিশাল এক ব্যর্থতা৷ যখন জানা গেল যে, পাকিস্তান এই হামলার নেপথ্য নায়কদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেবে না, তখন সে দেশের বিরুদ্ধে আস্থা আরও কমে গেল৷

দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যে কঠিন সংলাপ

বিনোদ শর্মার মতে, শীতল দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য দুই দেশের সংবাদ মাধ্যমও আংশিকভাবে দায়ী৷ ভারতে পাকিস্তানকে দায়ী করা ও পাকিস্তানে ভারতকে দায়ী করা দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ ফলে কেউই লাভবান হয় না৷ তাঁর মতে, রাজনীতি সংলাপের উপর দাঁড়িয়ে থাকে৷

তবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বিনোদ শর্মা আশাবাদী৷ পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার অঙ্গীকার করেছেন৷ ভারতের কাছে এটা খুবই ইতিবাচক বার্তা৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, তিনি এমনটা করে দেখাতে পারবেন কিনা৷ পর্যবেক্ষকদের মতে, কাজটা বড়ই কঠিন৷ কারণ চরমপন্থিদের প্রতি সমর্থন শরিফের নিজস্ব মুসলিম লিগ দলের ভেতরেও দেখা যায়৷

সম্পর্কের উন্নয়ন ভারতের উপরেও নির্ভর করছে৷ ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সে দেশে সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা৷ তারপর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নের সম্ভাবনা বাড়বে কিনা, তা কেউ জানে না৷ বর্তমান কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকার জনমত সমীক্ষায় বিজেপি-র নেতৃত্বে এনডিএ জোটের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সংলাপের কোনো উদ্যোগ নিতে পারবে না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ