1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে চিড়?

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

২৬/১১-র মুম্বই জঙ্গি হামলা সম্পর্কে ঐ হামলার জন্য অভিযুক্ত মার্কিন নাগরিক ডেভিড হেডলি যে জবানবন্দিতে দিয়েছে, তাতে উঠে এসেছে বেশ কিছু বিস্ফোরক তথ্য৷ এতে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারো বিষিয়ে উঠতে পারে, বলছেন বিশেষজ্ঞ মহল৷

Zeichnung Gericht David Coleman Headley vor Richter Harry Leineweber
ছবি: picture alliance/dpa

ভারতের পাঠানকোট বিমান ঘাঁটির ওপর জঙ্গি হামলার ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই আবারো আলোচনায় এসেছে ২০০৮ সালের ২৬শে নভেম্বরের মুম্বই সন্ত্রাসী হামলা৷ গত সোমবার ও মঙ্গলবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ হামলার অন্যতম অভিযুক্ত ডেভিড হেডলি মুম্বই আদালতে তার জবানবন্দি দেয়, যাতে উঠে আসে নানা বিস্ফোরক তথ্য৷

এ সব তথ্য ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ওপর যে আঘাত হানবে, তাতে সন্দেহ নেই৷ এ প্রসঙ্গে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক প্রবীর কুমার দে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এতে মোদীর অতি সাম্প্রতিক পাকিস্তান সফরে ভারত-পাক সম্পর্কে যে মসৃণতা তৈরি হয়েছিল, সেটা ধাক্কা খাবে৷ আসলে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যে মজবুত গণতান্ত্রিক ভিত্তিটা দরকার, সেটা পাকিস্তানের নেই৷ ফলে ইসলামাবাদ কর্তৃপক্ষের একটা বাধ্যবাধকতা রয়েছে৷ ভারতের দেয়া কোনো প্রমাণই তাই পাকিস্তান সরকারের কাছে যথেষ্ট না হচ্ছে না৷ এক্ষেত্রে যেটা করণীয়, তা হলো কাশ্মীর ইস্যুর জটিল রাজনৈতিক সমাধানের জন্য অপেক্ষা না করে দু'দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করা৷ আমার মনে হয়, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ প্রসারিত করতে পারলে রাজনৈতিক সমাধানের পথটা সহজ হবে৷ যেমনটা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশের ক্ষেত্রে৷ এছাড়া ক্রিকেট খেলা ইত্যাদির মাধ্যমে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধনের প্রক্রিয়াকে ত্বরাণ্বিত করা যেতে পারে৷''

রাজসাক্ষী হিসেবে কী বলেছে হেডলি? যুক্তরাষ্ট্রে জেলবন্দি হেডলি তার স্বীকারোক্তিতে বলে যে, পাকিস্তানের মাটি থেকে লস্কর-ই-তৈয়বা, হিযবুত তাহরীর ও জইশ-ই-মোহাম্মদের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি ভারতে নাশকতামূলক কার্যকলাপ চালাতে নিত্যনতুন ছক কষছে৷ এর জন্য তারা আর্থিক, সামরিক ও নৈতিক মদত পাচ্ছে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই থেকে৷ ডেভিড হেডলি জানায়, ঐ জঙ্গি গোষ্ঠীতে যোগ দেবার পর তাকে ট্রেনিং দিয়ে পাঠানো হয় মুম্বইয়ে৷ ২৬/১১-এর মুম্বই হামলার আগে হেডলি ৫-৬ বার মুম্বইতে আসে এবং রেকি করে ছবি পাঠায় পাক জঙ্গিদের কাছে৷ তার কথায়, সম্ভাব্য প্রাথমিক টার্গেট ছিল ২০০৬ সালে প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীদের সম্মেলন চলাকালীন মুম্বইয়ের তাজ হোটেল, সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির, মুম্বই পুলিশের সদরদপ্তর আর ভারতের নৌ ও বায়ুসেনার ঘাঁটি৷ উল্লেখ্য, মুম্বই হামলায় তার ভূমিকার জন্য মার্কিন প্রশাসন ২০০০ সালে হেডলিকে গ্রেপ্তার করে৷ এরপর আদালতে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় তার ৩৫ বছরের কারাদণ্ড হয়৷

হেডলির এই সাক্ষ্যের ভিত্তিতে নতুন দিল্লি এবার নতুন করে ‘ডোসিয়ার' দেবে পাকিস্তানকে৷ ভারতের অভিযোগ, পাঠানকোট কাণ্ডে পাকিস্তানি জঙ্গিদের হাত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ দেয়া সত্ত্বেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি৷ সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেভাবে নাটকীয়ভাবে পাকিস্তানে গিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের আতিথেয়তা গ্রহণ করেন, তাতে অনেকেই ভেবেছিলেন যে মোদী একটা সদর্থক বার্তা দিয়ে এসেছেন৷ কিন্তু ভারত-পাক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাসের দিকে তাকালেই দেখা যাবে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে যখনই একটা সদিচ্ছার বাতাবরণ তৈরি হয়েছে, তখনই পাকিস্তানের সামরিক শক্তির মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি তা বিষিয়ে তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে৷ তাই ভারতে সমুদ্রপথে আবারও জঙ্গি হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে৷ সংশয় বেড়েছে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক নিয়েও৷

উল্লেখ্য, পাঠানকোট কাণ্ডের পর বৈঠকটি বাতিল না করে পিছিয়ে দেয়া হয়৷ ভারতের পররাষ্ট্রদপ্তর সূত্রে বলা হচ্ছে যে, এই পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদ আস্থাবর্ধক কোনো পদক্ষেপ না নিলে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হবে নিরর্থক৷ এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদী কড়া অবস্থান না নিলে সংসদের আসন্ন বাজেট অধিবেশনে তাঁকে যে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হবে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই৷ মোদী সরকার অবশ্য এ রকম কোনো ঝুঁকি নিতে আদৌ রাজি নয়৷

ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের পক্ষ থেকে কী করা উচিত বলে আপনার মনে হয়?

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ