1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মিশরের পর্যটন

৫ জুলাই ২০১২

ইসলামপন্থী নেতা মোহাম্মদ মুরসি ক্ষমতায় আসার ফলে ইসলামি বিধি-বিধানের চাপে মিশরের পর্যটন শিল্প হুমকির মুখে৷ সংক্ষিপ্ত পোশাক এবং মদ্যপান নিষিদ্ধ করার ফলে পর্যটকরা লোভনীয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোও বর্জন করবে বলে আশঙ্কা৷

ছবি: Reuters

লোহিত সাগরের তীরে একটি জনপ্রিয় পর্যটন স্থান ইলগুনা৷ সেখানেই রৌদ্রজ্জ্বল দুপুরে খোলা আকাশের নীচে একটি ছোট্ট টেবিলে বন্ধুদের সাথে বসে আছেন ইকরামি লাতিফ৷ তিনি একজন প্রশিক্ষক ডুবুরি৷ ইলগুনায় আগত পর্যটকদের পানির নীচের জগত দেখাতে সহযোগিতা করেন৷ ঐ অঞ্চলের বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে আসা পর্যটকরা স্থানীয় জনপ্রিয় খাবার ফাউল ও ফালাফেল খুব মজা করে উপভোগ করেন৷ দুপুরের বিরতিতে সেই ফাউল এবং ফালাফেল নিয়ে বসেছেন লাতিফ৷ ৩৬ বছর বয়সি এই মিশরীয়র পরনে হাটু পর্যন্ত দীর্ঘ পাজামা এবং গায়ে একটি গেঞ্জি৷ তাঁর সাথে কথা বলে জানা গেল, গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুরসির প্রতিদ্বন্দ্বী আহমেদ শফিককেই ভোট দিয়েছেন ইলগুনার অধিকাংশ মানুষ৷

ইকরাম লাতিফের মতোই ঐ অঞ্চলের মানুষের আশঙ্কা, বর্তমান অবস্থায় পর্যটকরা ঐ অঞ্চল ছেড়ে পালাবেন৷ লাতিফ বলেন, ‘‘মুরসি প্রশাসন নিয়ে আমরা বেশ আতঙ্কিত৷ আমার মনে হয়, এখন পর্যটকরা এ ধরণের সুন্দর আবহাওয়া রয়েছে এমন ভিন্ন কোনো দেশে ছুটি কাটাতে যাবে৷ কারণ সেসব জায়গায় তারা আরো বেশি আতিথেয়তা পাবে৷'' এতদিন ইলগুনায় আতিথেয়তার কোনো ত্রুটি ছিল না৷ সুন্দর আবহাওয়ার নিশ্চয়তার সাথে পানির নীচে ডুব দিয়ে চলে যাওয়া, সার্ফিং এবং নৌকা ভ্রমণ সবকিছুই উপভোগ করতেন পর্যটকরা৷ কিন্তু এখন এসবকিছুই যেন অতীত হয়ে গেছে৷

ছবি: picture-alliance/dpa

মিশরের বিগত সংসদে মুসলিম ব্রাদারহুড'এর সাংসদরা সেদেশে জনসম্মুখে বিকিনি পরে ঘোরা এবং মদ্যপান নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আলোচনা করে৷ অবশ্য সেই সংসদ গত জুনে ভেঙে দেওয়া হয়৷ কিন্তু নির্বাচনে মুরসির জয় আবারও কড়কড়িভাবে ইসলামি বিধান প্রয়োগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিয়েছে৷ ফলে ইলগুনার মতোই লোহিত সাগরের তীরবর্তী পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন৷ কারণ মিশরের অর্থনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভগুলোর মধ্যে তৃতীয় স্থানেই রয়েছে তাদের পর্যটন খাত৷ সেখানকার প্রতি ছয়জন উপার্জনক্ষম মানুষের একজন পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত৷

নেদারল্যান্ডস'এর ভেনেন্ডাল থেকে চার চার বার মিশরে ছুটি কাটাতে গেছেন আনেমারি বাকের৷ সংক্ষিপ্ত টপ এবং হাফপ্যান্ট পরে দুপুরের খাবার টেবিলে বসে রয়েছেন তিনি৷ সবসময়ই তাঁর ছুটিতে নিত্যদিনের সঙ্গী বিয়ার জাতীয় পানীয়৷ তিনি ছুটি কাটাতে এসে এমন পছন্দের পানীয় ছাড়তে রাজি নন৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘এখানে যদি আমরা বিকিনি পরে থাকতে কিংবা মদ পান করতেই না পারি - তাহলে আর এখানে আসা হবে না৷ এই জায়গাটা আমি খুব পছন্দ করি৷ কিন্তু তাই বলে এত বেশি কিছু ছাড় দিতে পারি না৷ এটা খুব বাড়াবাড়ি৷''

অবশ্য প্রেসিডেন্ট মুরসিও ভালো করেই জানেন যে, পর্যটন খাত তাঁর দেশের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ৷ তাই তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বৈঠকেই উল্লেখ করেছেন যে, গণজাগরণ ও বিপ্লব শুরুর আগে পর্যটন শিল্প যেমন লাভজনক ছিল, এটিকে আবারও সেই পর্যায়ে নিয়ে যেতে তিনি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবেন৷ মুরসি'র এমন আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আশাবাদী ইলগুনা অঞ্চলের পর্যটন কর্মকর্তা আদহাম মাহমুদ৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশের সমস্যার মধ্যে যখন বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য সবচেয়ে উপরে জায়গা পায়, তখন অর্থনৈতিক ক্ষতি হয় এমন কোনো পদক্ষেপ কেউ নিতে পারে না৷''

প্রতিবেদন: ভিক্টোরিয়া ক্লেবার / এএইচ

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ