1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুরসি-র বিরুদ্ধে রায় নিয়ে নানা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে

রাইনার সলিচ/এসি২২ এপ্রিল ২০১৫

মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মেদ মুরসি-কে বিশ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে৷ আবার একটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়, বলে মনে করেন রাইনার সলিচ৷

Ägypten Mursi Urteil
ছবি: picture alliance/AP Photo/T. el-Gabbas

এই রায় কি বড়ই নরম, নাকি অত্যন্ত কড়া? রায় ঘোষণার পর পরই তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কে নেমেছেন মিশরীয়রা৷ সাবেক জেনারেল এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসি-র কট্টর সমর্থকরা মুরসি-কে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পক্ষপাতী ছিলেন৷

মুরসি-র মুসলিম ব্রাদারহুড-কে ইতিমধ্যেই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের পর্যায়ভুক্ত করা হয়েছে৷ তারা বলছে ‘‘সামরিক অভ্যুত্থানকারীদের দ্বারা মিশরে গণতন্ত্রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানের'' কথা – যদিও মুরসি-কে আদর্শ গণতন্ত্রী বলে গণ্য করার কোনো কারণ নেই৷ অপরদিকে মিশরের বর্তমান শাসকরাও আদর্শ গণতন্ত্রীর তকমা দাবি করতে পারেন না৷ ফৌজি হর্তাকর্তারা ২০১৩ সালে একটি অংশত সাজানো গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে মুরসি-কে ক্ষমতাচ্যুত করেন৷

আরো মামলা ঝুলছে

অবশ্য মুরসি-র বিচার প্রক্রিয়ার এখানেই সমাপ্তি নয়, আরো চমক আসতে পারে, কেননা ৬৩ বছর বয়সি মুরসি-র বিরুদ্ধে অন্তত তিনটি আরো মামলা ঝুলছে৷ তবে তাঁকে সাজা দেওয়া হয়েছে আন্দোলনকারীদের নিপীড়ন ও গ্রেপ্তারের দরুন৷ একাধিক মানুষকে হত্যা, অথবা তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকার অভিযোগ অপ্রত্যাশিতভাবে বাতিল করা হয়েছে৷

সাক্ষ্যপ্রমাণের পর্যালোচনা না করেই বলা যায় যে, এই রায় আদালতের অপরাপর রায়ের মতো নয়৷ প্রথমত, এই রায় প্রাক্তন সামরিক শাসক হোসনি মুবারকের বেকসুর খালাসের তুলনায় অতিমাত্রায় কঠিন৷ অপরদিকে এও আশ্চর্য যে, মুসলিম ব্রাদারহুডের অনেক ছোটখাটো কর্মীদের ইতিপূর্বে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে – অথচ মুরসি-কে দেওয়া হল বিশ বছরের কারাদণ্ড৷

পশ্চিমে সমালোচনার ঝড় ওঠেনি

মুরসি-কে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ার কারণ সম্ভবত মিশরের পররাষ্ট্র নীতিগত পরিস্থিতি৷ মুরসি-কে ক্ষমতাচ্যুত করার বিরুদ্ধে গোড়ায় পশ্চিমি সরকারবর্গ কিছুটা সমালোচনা ব্যক্ত করলেও, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের বৃহত্তর প্রেক্ষিতে তারা আরব বিশ্বের সর্বাপেক্ষা জনবহুল দেশটির সঙ্গে সহযোগিতায় আগ্রহী৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় সামরিক সাহায্য শুরু করেছে, প্যারিস কায়রোর সঙ্গে একটি বিপুল অঙ্কের অস্ত্র সরবরাহ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল আল-সিসি-কে বার্লিনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন৷ মুরসি-কে আরো কড়া সাজা দিলে মিশরের সঙ্গে নতুন করে দহরম-মহরমে ব্যাঘাত ঘটতে পারত৷ ওদিকে মিশরের অর্থনীতির নাটকীয় পরিস্থিতের ফলে কায়রোর শাসকবর্গ এখন পশ্চিমের মদত পেতে আকুল৷

রাইনার সলিচ, ডয়চে ভেলে

মুরসি-র বিরুদ্ধে রায় তুলনামূলকভাবে কঠিন না হলেও, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল মানবাধিকার সংস্থা মুরসি-র বিচার প্রক্রিয়াকে ন্যায় এবং আইনের শাসনের উপযোগী বলে মনে করেনি৷ বিগত কয়েক বছরে মিশরে যে ক'টি রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ মামলা সংঘটিত হয়েছে, তাদের সব ক'টিতেই অভিযুক্তদের অপরাধ প্রমাণিত বলে গণ্য করা হয়েছে এবং তাদের দীর্ঘমেয়াদি কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে৷

ন্যায়বিচারের কী হল?

এখন বোঝা যাচ্ছে যে, মিশরের আইন বিভাগ শুধু সরকারের বাধ্যই নয়, বরং চতুর এবং সর্বাঙ্গীণ রাজনৈতিক আবহাওয়া অনুযায়ী নড়ে-বসে৷ এর মূল শিকার হচ্ছে ন্যায়বিচার: মিশরে গত কয়েক বছরের নাটকীয় ঘটনাবলিতে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন৷ মুরসি-র পতনের পর মুসলিম ব্রাদারহুডের বিক্ষোভ দমন করা হয় শক্ত হাতে: তাতে প্রাণ হারান অন্তত ৬০০ জন৷

অথচ এই সব মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের মৃত্যুদণ্ড অথবা কারাদণ্ডের কোনো আশঙ্কা নেই৷ আল-সিসি-র রাজত্বে তাদের আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে না, কেননা তারা বর্তমান ক্ষমতার কাঠামোর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ