1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মরক্কোয় নারীদের ‘বিপ্লব’

৩১ মে ২০১৫

প্রায় শতভাগ মুসলমানের দেশ মরক্কোয় মসজিদ, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজে গিয়ে ‘নতুন দিনের ডাক’ দিচ্ছে নারীরা৷ ধর্মের আলোকে এগিয়ে যেতে বলছেন৷ বলছেন, ইসলামে নারী-পুরুষের সমান অধিকার স্বীকৃত, সে অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে৷

Ayoub Errimi
ছবি: DW/Ayoub Errimi

উত্তর আফ্রিকার সুন্নি মুসলমান অধ্যুষিত দেশ মরক্কো৷ ধর্মীয় গোঁড়ামি, কুসংস্কার, নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যাপারগুলো যেন সে দেশের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে৷ তবে এ অবস্থার পরিবর্তনে উদ্যোগী হয়েছে সরকার৷ সমাজ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার জন্য অভূতপূর্ব এক সুযোগ দেয়া হয়েছে নারীদের৷ মরক্কোর মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, কারাগার, এমনকি বাড়ি বাড়ি গিয়েও নারীর প্রতি ইসলামের প্রকৃত দৃষ্টিভঙ্গির কথা জানাচ্ছেন সবাইকে৷ মরক্কোয় ইসলামের উদারতার বাণী প্রচারে ব্যস্ত এই নারীরা ‘মরশিদাত' নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত৷

মর্শিদাতরা ইসলামি মৌলবাদকে প্রতিহত করতে ধর্ম সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ শুরু করেছিলেন ২০০৬ সালে৷ তার তিন বছর আগে কাসাব্লাঙ্কা শহরে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়েছিল ইসলামী জঙ্গিরা৷ তারপর থেকেই মৌলবাদকে প্রতিহত করার উপায় খুঁজছিল সরকার৷

ইসলামের উদারতার বাণী প্রচার করছেন মরক্কোর নারীরা (ফাইল ছবি)ছবি: Ane Nordentoft/Transterra Media

গত ৯ বছরে মর্শিদাতদের অক্লান্ত চেষ্টায় মরক্কোয় লক্ষণীয় পরিবর্তন এসেছে৷ এখন নারী বিদ্বেষী বক্তব্য শুনলে নারীরাই তার প্রতিবাদ করেন৷ অপমান-অত্যাচার চুপ করে সহ্য করার মানসিকতা ধীরে ধীরে কমছে৷ ‘মেয়েরা টাইম বোমার মতো৷ ওরা যে কোনো সময় বিস্ফোরিত হয়ে পরিবারের সুনাম নষ্ট করতে পারে৷ ওদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দেয়াই ভালো' – এমন কথা শুনলে মরক্কোর অনেক মেয়েই আর প্রতিবাদ করতে ভয় পায়না৷

এক গহনার দোকানে ঠিক এই কথাই শুনেছিলেন হানানে৷ সেদিন প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘‘এসব কথা বলবেন না৷ ইসলাম বাল্যবিবাহ সমর্থন করেনা৷ তাছাড়া মেয়েরা এখন ঘরে-বাইরে সবখানেই কাজ করে সমাজের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে৷'' হানানে নিজেও একজন মরশিদাত৷ সবার মাঝে ইসলামের ‘আলো' ছড়ানোই তাঁর কাজ৷

ছবি: Ane Nordentoft/Transterra Media

মুসলিম দেশগুলোতে নারীদের দুরবস্থা দেখে হানানের খুব খারাপ লাগে৷ তবে নারীর অমর্যাদার জন্য তিনি ইসলাম ধর্মকে দায়ী মনে করেন না৷ তাঁর মতে, ‘‘মরক্কোসহ অনেক মুসলিম দেশই দীর্ঘকাল অজ্ঞতা এবং স্থবিরতার সঙ্গী ছিল৷ তাই অনেকেই জেনে বা না জেনে ইসলামস্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকার থেকেও নারীদের বঞ্চিত রেখেছে৷''

মরশিদাতদের তৎপরতায় মরক্কোর সমাজে পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে৷ অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশগুলোতেও মর্শিদাতদের নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে৷ ইসলাম এবং নারী অধিকার সম্পর্কে ভাষণ দিতে অনেক মুসলিম দেশ থেকে আমন্ত্রণও পাচ্ছেন মরশিদাতরা৷

এ মুহূর্তে ৪০০ মরশিদাত মরক্কোর বিভিন্ন শহরে কাজ করছেন৷ তাঁদের নিয়ে ইতিমধ্যে একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়েছে৷ চলচ্চিত্রের নাম,‘কাসাব্লাঙ্কা কলিং', অর্থাৎ ‘কাসাব্লাঙ্কা ডাকছে'৷ মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহরেই কয়েকদিন আগে অনুষ্ঠিত হলো বাল্যবিবাহবিরোধী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন৷ সেই সম্মেলনে প্রদর্শিত হয়েছে ছবিটি৷ এ বছর আল জাজিরা টেলিভিশনেও দেখানো হবে ‘কাসাব্লাঙ্কা কলিং'৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ