1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মৃত্যুর আগে হত্যাকারীদের নাম বলেছেন সাংবাদিক সুবর্ণা

২৯ আগস্ট ২০১৮

পাবনায় সাংবাদিক সুবর্ণা নদীর ওপর কারা হামলা চালিয়েছে তা মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর মা-কে বলে গেছেন৷ থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় তাঁর সাবেক স্বামী , শ্বশুরসহ ৬-৭ জনকে আসামি করা হয়েছে৷ পুলিশ সাবেক শ্বশুরকে আটক করেছে৷

Screenshot Facebook Shobarna Nodi
সুবর্ণা নদীর ফেসবুক পাতাছবি: Facebook/Shobarna Nodi

বাকিরা পলাতক৷ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ‘আনন্দ টিভি'র পাবনা প্রতিনিধি ছিলেন সুবর্ণা৷ তিনি দৈনিক জাগ্রতবাংলা নামের একটি পত্রিকার পাবনা প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করতেন৷ মঙ্গলবার রাতে তাঁর বাসার সামনেই দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে আহত করে৷ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান৷

 বুধবার থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় নদীর মা মর্জিনা বেগম নিহত সুবর্ণার সাবেক স্বামী রাজিব হোসেন, শ্বশুর আবুল হোসেন ও রাজিবের সহকারী মিলনসহ আরো ৬-৭ জনকে আসামি করেছেন৷

‘রাজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করায় তারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে’

This browser does not support the audio element.

মর্জিনা বেগম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কুপিয়ে আহত করার পর সুবর্ণার কিছুক্ষণ জ্ঞাণ ছিল৷ তখন সে আমাকে বলে, ‘রাজিব ও তার সহকারী মিলনসহ কায়েকজন আমাকে কুপিয়েছে৷' এরপরই সে অজ্ঞান হয়ে যায়৷ হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়৷''

তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘রাজিব ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করায় তারা আমার মেয়েকে হত্যা করেছে৷ আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই৷''

যৌতুকের মামলায় মঙ্গলবার আদালতে সুবর্ণার বড় বোন চম্পার স্বাক্ষ্য ছিল৷ চম্পা এবং সুবর্ণা দু'জনই আদালতে যান৷ মর্জিনা বেগম জানান, ‘‘আদালতে  রাজিবের বিরুদ্ধে স্বাক্ষ্য দেয়ায় রাজিব সেখানেই তাদের হুমকি দেয়৷ এ নিয়ে বাক-বিতন্ডা হয় এবং হামলারও চেষ্টা করে৷ আদালত থেকে বের হওয়ার পরও রাজিব ও তার সগযোগীরা তাদের অনুসরণ করে৷ তারা তখন সুবর্ণার অফিসেও যায়৷ তবে সেখানে সাংবাদিকরা থাকায় তারা সেখান থেকে চলে যায়৷''

‘এজাহারে যৌতুকের মামলাকে হত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে’

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘রাত পৌনে ১০টার দিকে সুবর্ণা বাসার গেট পর্যন্ত আসার পরই তার ওপর হামলা করে৷ আমরা কলিংবেলেরও শব্দ পাই৷ ওই সময় রাস্তায় কোনো  বিদ্যুৎ ছিল না৷ গেট খুলে বাড়ির আলোতে রক্তাক্ত সুবর্ণাকে পড়ে থাকতে দেখি৷ এরপর হাসপাতালে নিয়ে যাই৷''

সুবর্ণার মরদেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে পাবনা সদর হাসপাতালে৷ ময়নাতদন্তে তাঁর শরীরে ধারালো অস্ত্রের ৬টি আঘাত পাওয়া গেছে৷ আঘাতে তাঁর মাথা, পেট ও হাতে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে৷ একটি আঙুলও কেটে গেছে৷ ধারণা করা হচ্ছে, সুবর্ণা হাত দিয়ে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন৷

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মামলার এজাহারে হত্যাকাণ্ডের কারণ বলা হয়েছে৷ আমরা এরইমধ্যে সুবর্ণার সাবেক শ্বশুর আবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছি৷ বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি৷''

‘সব আসামি গ্রেপ্তার না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দেব’

This browser does not support the audio element.

তিনি বলেন, ‘‘কোনো আসামিকেই ছাড় দেয়া হবে না৷ সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে৷ এজাহারে যৌতুকের মামলাকে হত্যার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ সেটা ধরেই তদন্ত করছি৷ তবে আরো কোনো কারণ আছে কিনা তা-ও তদন্ত করে দেখছি৷''

সুবর্ণার সহকর্মীরা জানান, আদালত থেকে ফেরার পর রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সুবর্ণা তার হামিদ রোডের অফিসেই কাজ করেন৷ প্রেসক্লাবও তাঁর অফিসের কাছে৷ সেখান থেকে তাঁদের রাধানগর মহল্লার বাসায় হেঁটে যেতে ৮-১০ মিনিট লাগে৷ তিনি হেঁটে  বাসায় যাওয়ার সময় প্রেসক্লাব গলিতে তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গেও দেখা হয়৷

পাবনা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আঁখিনুর রহমান রেমন্ড ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সুবর্ণাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়৷ আমরা প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ করে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছি৷ তিন দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছি৷ এর মধ্যে সব আসামি গ্রেপ্তার না হলে আমরা বৃহত্তর কর্মসূচি দেব৷''

সুবর্ণার সঙ্গে গতবছর পাবনার শিল্পপতি আবুল হোসেনের ছেলে রাজিব হোসেনের বিয়ে হয়৷ ওই বছরই সেই বিয়ে ভেঙ্গে যায়৷ সুবর্ণার আগের ঘরে সাত বছরের একটি কন্যা সন্তান আছে৷ সুবর্ণারা দুই বোন৷

এ বিষয়ে আপনার মতামত লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ