1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মায়ের স্বপ্ন কেড়ে নিল আইএস!

আশীষ চক্রবর্ত্তী১৫ আগস্ট ২০১৫

ব্রিটেনে ইস্ট লন্ডনের একটি পরিবার এখন দু-দুটি আঘাতে বিপর্যস্ত৷ প্রথমে মা, তারপর মেয়েও ধরেছে মৃত্যুর পথ৷ মা-কে কেড়ে নিয়েছে ক্যানসার, আর মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস!

Hijab-Debatte
ছবি: FARS

বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চৌধুরী মইনুদ্দিনের নাম জড়ানোর কারণেই প্রথমে নজরে এসেছিল খবরটি৷ দীর্ঘদিন ধরে ব্রিটেনপ্রবাসী চৌধুরী মইনুদ্দীনের পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে ওঠা একটি সংগঠন নাকি কচি মেয়েদের ভুলিয়ে ভালিয়ে আইএস-এ পাঠাচ্ছে৷ প্রথমে একজন, তারপর আরো তিন বাঙালি কিশোরী আইএস-এ যোগ দিতে ব্রিটেন ছাড়ার খবর আন্তর্জাতিক পর্যায়েও সাড়া জাগায়৷ একটি পরিবারের জন্য আদরের মেয়ে হারানো ছিল বড় বেশি হৃদয় বিদারক৷

মেয়েটির নাম শারমিনা বেগম৷ কিছুদিন আগেই মা মারা গেছেন ক্যানসারে৷ মা চেয়েছিলেন মেয়ে বড় হয়ে ডাক্তার হোক৷ মেয়েও চেয়েছিল মায়ের স্বপ্ন পূরণ করে জীবন সার্থক করবে৷ ডাক্তার হলে মুমূর্ষুকে নতুন জীবন দিত৷ তা না করে ও ধরেছে মৃত্যুর পথ৷ শারমিনার ধারণা, মরলে সে মায়ের দেখা পাবে!

‘ডেইলি মেল'সহ বেশ কিছু সংবাদপত্রের খবর অনুযায়ী, বৃটেনে অবস্থানরত আইএস সমর্থক একটি গোষ্ঠীই শারমিনার মনে এমন ধারণা প্রোথিত করেছে৷ শারমিনার বয়স যখন ১৫ তখন তার মা মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ক্যানসারে ভুগে মারা যান৷ মায়ের মৃত্যুর পর থেকে পড়ুয়া মেয়ে শারমিনার মধ্যে কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছিলেন বাবা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন৷ পড়ালেখায় বিশেষ মন নেই৷ আগের মতো শাকিরার গান বাজিয়ে আর নাচে না৷ স্কুল থেকে বেরিয়েই চলে যায় মসজিদে৷ অনেক রাত করে ফেরে৷ ভারতীয় এক রেস্টুরেন্টের ওয়েটার নিজাম উদ্দিন ভেবেছিলেন, অল্প বয়সে মা হারানোর বেদনা ভুলতেই মেয়ে তাঁর মসজিদে যাচ্ছে৷ তাতে তো অসুবিধা নেই৷ ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই সে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে লেখাপড়াতেও মন দেবে৷ ডেইলি মেলকে সে কথাই বলেছেন শারমিনার বাবা

কিন্তু আর স্বাভাবিক জীবনে ফেরেনি শারমিনা৷ প্রথমে দাদির কাছ থেকে বলে-কয়ে ৫০০ পাউন্ড আদায় করে৷ তার কিছুদিন পর দাদির জিম্মায় রাখা পাসপোর্টটাও স্কুলের হয়ে শিক্ষাসফরে যাওয়ার কথা বলে বাগিয়ে নেয়৷ গত ডিসেম্বর থেকে শারমিনা একেবারে উধাও৷ সন্তানকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে বাবা নিজেই বিষয়টি পুলিশকে জানান৷ ধীরে ধীরে খুলতে থাকে রহস্যের জট৷

জট একেবারেই খুলে যায় শারমিনার সহপাঠী এবং ঘনিষ্ঠ তিন বন্ধুও হঠাৎ উধাও হওয়ায়৷ তিন কিশোরী যে তুরস্ক হয়ে সিরিয়ায় গিয়েছে তা আর কারো অজানা নেই

আশীষ চক্রবর্ত্তী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

শারমিনা কোথায় তা-ও এখন সবারই জানা৷ উধাও হওয়ার দু'মাস পর মেয়ে নিজেই ফোন করেছিল বাবাকে৷ ফোনে একটা কথাই বলেছে সে, ‘‘আব্বা, আমি সিরিয়ায় এসে এক আইএস যোদ্ধাকে বিয়ে করেছি৷ এখানে মরলে আমি আম্মার কাছে যাবো৷''

স্ত্রীবিয়োগ শোকে কাতর নিজাম উদ্দিন মেয়েকেও হারালেন জেনে তারপর থেকে দিশেহারা৷

ক্যানসারে মৃত্যু বরণ করার আগে একজন মা আশা করেছিলেন তাঁর মেয়ে দীর্ঘজীবী হবে, ডাক্তার হয়ে মানবকল্যাণে উৎসর্গ করবে নিজের জীবন৷ রেস্টুরেন্টের ওয়েটার নিজাম উদ্দিন দেখেছিলেন মেয়ের অর্জনে গর্বিত হওয়ার স্বপ্ন৷ কিন্তু বাবা-মায়ের স্বপ্ন কেড়ে নিল আইএস৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ