জার্মানিতে হাজার হাজার সেবাকর্মী প্রয়োজন৷ দূরপ্রাচ্যের শিক্ষানবিশরা এই ঘাটতি পূরণ করতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷ সেবাক্ষেত্রে জরুরি অবস্থার মোকাবেলাও করতে পারবেন তাঁরা৷
বিজ্ঞাপন
এই কাজের জন্য নীল-গোলাপি রঙের ডোরা কাটা কেডস জুতা কিনেছেন হুয়োং গো গো৷ কাজের চাপ বেশি থাকলে বৃদ্ধনিবাসের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছোটাছুটি করতে হয় তাঁকে৷ তিনি এই নিবাসের বাসিন্দাদের ধোয়ামোছা করেন, কাপড় পরতে সাহায্য করেন৷ দ্রুত কাজ সেরে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে যেতে হয় তাঁকে৷ দুই একটা কথার আদান-প্রদানের মতো সময়ও থাকে না হাতে৷
‘দ্রুত ও ভালো'
‘দ্রুত ও ভালো' এই হলো জার্মানিতে থাকাকালীন তাঁর মটো৷ জার্মান শেখা ও কাজ করা, এছাড়া আর কোনো কিছু করার সময় নেই৷
হুয়োংকে এক্ষেত্রে ‘পায়োনিয়ার' বা অগ্রগামী বলা যায়৷ ১২০ জন তরুণ ভিয়েতনামিদের সঙ্গে গত বছরের সেপ্টেম্বরে জার্মানিতে এসেছেন তিনি৷ জার্মান অর্থমন্ত্রণালয় ও ভিয়েতনামের শ্রমমন্ত্রণালয়ের একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্পের আওতায় তাঁদের আনা হয়েছে৷ স্টুটগার্ট শহরে তাঁদের ৩৬ জনকে সেবাকর্মী হিসাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ ২০১৬ সাল পর্যন্ত চলবে এই প্রশিক্ষণ৷ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবাকর্মীরা তিন বছর জার্মানিতে কাজ করবেন৷
প্রবীণ নিবাস ‘স্টেনভেল্ডলে' স্টুটগার্ট শহরের এক প্রান্তে বনাঞ্চল ও আঙুর খেতের মধ্যে রোম্যান্টিক এক পরিবেশ অবস্থিত৷ গতাণুগতিক বৃদ্ধাশ্রমের মতো নয় এটি৷
সান্ত্বনার হাত
সকালবেলায় শান্তভাবেই চলছে সবকিছু৷ রেডিওতে হালকা সুরের গান ভেসে আসছে৷ খাবারের জায়গায় পরিচয় হলো ৯১ বছরের মারিয়ার সাথে৷ ‘‘আমি পড়ে গিয়েছি'' অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন তিনি৷ হুয়োং তাঁর কাধে হাত দিয়ে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন, ‘‘কিছু হবে না৷ আমরা তো আছি আপনার জন্য৷'' তারপর খানিক্ষণ গল্পগুজব হয়৷ বৃদ্ধা জানতেন না কোন দেশ থেকে হুয়োং এসেছেন, বয়স কত ইত্যাদি৷
বৃদ্ধাবাসের বাসিন্দারা অভ্যস্ত যে, সেবক-সেবিকারা বিদেশি উচ্চারণে কথা বলেন৷ এখানকার ৭৫ শতাংশ সেবাকর্মী বিদেশি বংশোদ্ভূত৷ তরুণ ভিয়েতনামিদের পছন্দ করেন সবাই৷ ‘‘তাঁরা এত মিষ্টি৷'' উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন মিসেস শুমাখার৷ মিসেস গ্যার্সট সংযোজন করে বলেন, ‘‘কারো কিছু প্রয়োজন হলে তাঁরা সবসময় সাহায্য করতে প্রস্তুত৷''
ভাষা বড় সমস্যা
হুয়োং ও তাঁর সহকর্মীরা আসার আগে হ্যানয়ে প্রায় ছয়মাস জার্মানির জন্য প্রস্তুতি নেন৷ জার্মান শেখেন এবং ভিডিওতে বৃদ্ধাশ্রম সম্পর্কে একটা ধারণা নেন৷ তাঁর সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সেবাকর্মী৷ এ জন্য তাঁদের জার্মানিতে প্রশিক্ষণের সময়সীমা কমিয়ে দুই বছর করা হয়েছে৷
‘‘আমাদের রয়েছে শুধু একটি সমস্যা৷ আর তা হলো জার্মান ভাষা৷ হতাশার সুরে বলেন হুয়োং৷ কোনো কোনো দিন এমনও হয়েছে কেউ বার বার কিছু চাইছেন, কিন্তু আমি তা বুঝতে পারছি না৷ তখন মনে হয় আমার জার্মান শিখতে হবে৷ দ্রুত ও ভালো করে৷ সহকর্মী বাখ ট্রান চুয়ান-এরও ভাষা নিয়ে একই সমস্যা৷''
জার্মানির কোলন শহরে প্রবীণদের জীবনযাত্রা
জার্মানিতে অন্যান্য দেশের মতো বাড়ছে প্রবীণদের সংখ্যা৷তাঁরা কেন দীর্ঘজীবী হন, তাদের জীবনযাত্রা, তাঁদের জীবনের সফলতা আসার নানা গল্প জানিয়েছেন কোলনে একটি অভিজাত এলাকায় বসবাসকারী ইতিবাচক চিন্তার কয়েকজন প্রবীণ৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
স্বাস্থ্য সচেতন ও ইতিবাচক চিন্তার মানুষ
প্রতিদিনের নাস্তায় অবশ্যই থাকে তাজা ফলের রস, রুটি, কফি ইত্যাদি৷ জো প্রতিদিন বাজারে যায়, লক্ষ্য তাজা ফল, সালাদ কেনা ছাড়াও বাড়ির বাইরে বের হওয়া এবং আশেপাশের লোকজনের খোঁজখবর রাখা৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
রিটা এবং জো
আসল নাম মার্গারিটা৷ তবে আদর করে সবাই তাঁকে ডাকে রিটা নামে৷ আর তাঁর স্বামী ইউসেফকে ডাকে জো৷ এই দম্পতি অবসর জীবনেও থাকেন হাসিখুশি আর নানা কাজ নিয়ে ব্যস্ত৷ তরুণ বয়সে ইংল্যান্ড, অ্যামেরিকা, অস্ট্রেলিয়াতে বেশ কয়েক বছর কাটিয়েছেন৷ কোলন শহরের নামি দামি এলাকায় বহু বছর ছিল তাঁদের গহনার দোকান৷ আজকের এই অবস্থানে আসতে দু’জনে মিলে প্রচুর খেটেছেন৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
হ্যাপি আওয়ার
জো এর বয়স ৮০৷ নিজ হাতে তৈরি করা বাড়ির সামনের সাজানো বাগানে গরমকালে প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত বসেন৷ আর অপেক্ষায় থাকেন তাদেরই মতো আরো কয়েকজনের জন্য৷ এঁরা মনে করেন, শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার জন্য শুধু ভালো খাবার আর নিয়মিত চেকআপই যথেষ্ট নয়, চাই ভালো বন্ধুবান্ধব আর হাসিতামাশা৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
মিলে মিশে থাকা
এই এলাকার প্রায় ৫০টি বাংলো বাড়ির কয়েকটি ছাড়া বাকিগুলোর মালিক কর্মজীবন থেকে অবসর নিয়েছেন৷ অর্থাৎ তাদের বয়স ৬৫’র ওপর৷ এঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নিয়মিত এই আড্ডায় যোগ দেন, করেন খানিকটা মদ্যপান৷ এই অবসরপ্রাপ্ত ব্যবসায়ী, শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকোশলী ও চাকরিজীবীদের আলোচনার বিষয় পারিবারিক সুখ-দুঃখ থেকে বিশ্বের চলমান রাজনীতি পর্যন্ত৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
রিটার দিন শুরু
দেখে বোঝার কোনো উপায়ই নেই যে তাঁর বয়স ৭৫৷ সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়ামের মধ্য দিয়ে তাঁর দিনের শুরু৷ সবসময়ই ফিটফাট থাকেন৷ কি করে সম্ভব জানতে চাইলে বলেন, পুরনো অভ্যাস৷ একসময় তিনি নিজেদের ব্যবসা, দুটো সন্তান মানুষ করা এবং সংসারের সমস্ত কাজসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানেও অংশ নিতেন৷ এই দম্পতির মতে জীবনে ‘ডিসিপ্লিন’ খুব বড় ব্যাপার৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
সকালের নাস্তা
প্রতিদিনের নাস্তায় অবশ্যই থাকে তাজা ফলের রস, রুটি, কফি ইত্যাদি৷ জো প্রতিদিন বাজারে যায়, লক্ষ্য তাজা ফল, সালাদ কেনা ছাড়াও বাড়ির বাইরে বের হওয়া এবং আশেপাশের লোকজনের খোঁজখবর রাখা৷ কোন প্রতিবেশীর কি দরকার, কে ছুটিতে গেছে বা কোনো নতুন প্রতিবেশী এসেছে কিনা সব খবরই থাকে জো’র কাছে – যার দিনের অনেকটা সময় কাটে বাগান করে৷ আর হ্যাঁ, সপ্তাহে দু’দিন নিয়ম করে স্ত্রীর জন্য ফুল কিনতে ভুল হয়না তাঁর৷
ছবি: Fotolia/kab-vision
হাসিখুশি মারিয়ানা
পেশায় ছিলেন স্কুল শিক্ষক৷ স্বামী মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে৷ নিজের গাছের যত্ন ছাড়াও প্রতিবেশীদেরও প্রয়োজনে নানা পরামর্শ দিয়ে থাকেন৷ শীতকালে এই প্রবীণ গ্রুপের ‘হ্যাপি আওয়ার’ আড্ডা বন্ধ থাকে বলে তখন বাইরে কোনো রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া, কোনো থিয়েটার বা কনসার্টে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন মারিয়ানা৷ উদ্দেশ্য একসাথে আনন্দ করা৷ তাঁর মতে সুস্থ থাকতে চাইলে ভাবের আদান-প্রদান খুবই জরুরি৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
চাই মুক্ত বাতাস আর হাঁটাহাঁটি
শরীর ঠিক রাখতে হাঁটাহাঁটি আর ফুসফুস ঠিক রাখতে মুক্ত বাতাস সেবন করেন প্রবীণরা৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানদের আজকের এই অবস্থানে আসতে কত কষ্ট করতে হয়েছে তাঁরা তা খুব ভালোভাবেই জানেন৷ তাঁদের অনেকেরই তখন ঠিকমতো খাবার বা থাকার জায়গা ছিল না৷ অথচ এসব কথা এই প্রজন্মের জার্মানরা বুঝতে বা জানতে চায়না – একথা মাঝেমধ্যেই দুঃখ করে বলেন প্রবীণরা৷
ছবি: Fotolia/Fotowerk
বয়স কোনো বাধা নয়
এঁদের বয়স ৬৫ থেকে ৮৩ পর্যন্ত৷ সবাই নিজে গাড়ি চালান এবং পছন্দ করেন চালাতে৷ প্রায় সবাই কম্পিউটার চালাতে অভ্যস্ত৷ ছেলে-মেয়ে বা নাতি-নাতনির সাথে ইমেল বা ফেসবুকেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন৷ তাঁরা বলেন, ‘সময়ের সাথে কিছুটা তাল মিলিয়ে চলা মানেই ব্রেনের সেলগুলোকে সজাগ রাখা৷’
ছবি: Fotolia/Rido
অসুখকে গুরুত্ব দিলেও মন খারাপ করেন না
বয়সের সাথে অসুখের সম্পর্ক নিবিড়, যা খুবই স্বাভাবিক৷ তাই বলে মন খারাপ নয়৷ অসুখের সময়ও এই প্রবীণ দল একে অন্যের দেখাশোনা করেন৷ ৭৮ বয়সি হান্সের ডায়াবেটিস খুব বেশি৷ কদিন আগে তিনি বাড়ির কাছেই তাঁর অত্যাধুনিক মডেলের ‘আউডি’ গাড়িটি অন্য একটি গাড়ির সঙ্গে লাগিয়ে দিয়েছিলেন৷ তাই এখন মেয়ে বলে দিয়েছে যে, তাঁর ‘গাড়ি চালানো বন্ধ’ – এ কথাই সেদিন হান্স ছলছল চোখে প্রবীণ বন্ধুদের বলছিলেন৷
ছবি: DW / N.Baeva
গান বাজনা
হস্ট অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার৷ শখ অ্যাকোর্ডিয়ান বাজানো আর ছবি আঁকা৷ প্রতিবেশীদের জন্মদিন বা কোনো উপলক্ষ্য হলেই হাতে তুলে নেন অ্যাকোর্ডিয়ান আর তালে তালে নেচে ওঠেন অন্যরাও৷ মজার ব্যাপার হলো, জন্মদিনের দাওয়াত দেবার সময় এঁরা বলে দেন, ‘‘কোনো উপহার নয়, আনন্দ ফুর্তি করার জন্য ‘মন’ নিয়ে এসো৷’’
ছবি: Nurunnahar Sattar
আনন্দ আর ধরেনা
এরকম হালকা আনন্দই বেচে থাকার প্রেরণা যোগায়
ছবি: Nurunnahar Sattar
পোশাককর্মীদের নিয়ে চিন্তা
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সব খবরই তাঁরা রাখেন৷ সম্প্রতি বাংলাদেশের পোশাক কারখানা রানা প্লাজা ধসে যাওয়ার খবরে তারা খুবই বিচলিত৷ পোশাক কর্মীদের বেতন অবশ্যই বাড়ানো উচিত বলে তাঁরা মনে করেন৷ তাঁদের মতে পোশাক প্রতি ১ ইউরো বেশি দেওয়া জার্মানদের পক্ষে মোটেই কঠিন নয়৷ তাই তাঁরা এর আশু সমাধান কামনা করছেন৷
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images
তরুণদের প্রতি পরামর্শ
তরুণ বয়সই কাজ করার উপযুক্ত সময়, তাই নিজের বুদ্ধি আর শক্তিকে কাজে লাগাও৷ নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলো এবং ইতিবাচক চিন্তা করো৷ ছোট বড় সবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রাখো, প্রয়োজনে সাহায্য করো৷ জীবনে সমস্যা আসবেই, মোকাবেলা করো৷ সময়কে ভালোভাবে কাজে লাগাও, সাফল্য আসবেই আসবে৷ তরুণ বয়সে খাটলেই কেবল প্রবীণ বয়সে ভালো থাকা সম্ভব৷
ছবি: Nurunnahar Sattar
14 ছবি1 | 14
প্রবীণাশ্রমের বাসিন্দারা নীচু স্বরে কথা বলেন৷ তার ওপর আবার আঞ্চলিক সোয়েবিয়ান ভাষায়৷ তাই বুঝতে আরো অসুবিধা হয়৷
ভিয়েতনামে এই তরুণ তরুণীদের পরিবার পরিজনও আশা করে থাকেন৷ আগ্রহভরে জানতে চান, জার্মান ভাষায় কতটা দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছেন তাঁদের সন্তানরা৷
ঘাটতি বৃদ্ধি পাবে
এখনই জার্মানিতে সেবাকর্মীর অভাব প্রকট৷ জার্মান শ্রমমন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে ২০৩০ সাল নাগাদ সংখ্যাটা দুই লক্ষে দাঁড়াতে পারে৷ বিশ্বখ্যাত ব্যার্টেলসমান ফাউন্ডেশনের অনুমান এই সংখ্যা পাঁচ লক্ষও হতে পারে৷ তরুণ জার্মানরা সেবা পেশার প্রতি খুব একটা আগ্রহী নন৷ তাছাড়া ডেমোগ্রাফিক পরিবর্তনের কারণে তরুণ জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে৷ ফলে এক্ষেত্রে সংকট তীব্র হচ্ছে৷
বৃদ্ধাশ্রম ‘স্টেনভেল্ডলে'-র পরিচালক ইয়োখেন মাগের নিশ্চিত যে, বিদেশি কর্মী ছাড়া সেবাক্ষেত্র চালানো সম্ভব নয়৷ এখনই তাঁর বৃদ্ধাশ্রমের জন্য উপযুক্ত সেবাকর্মী পাওয়া সহজ হচ্ছে না৷ তাই তিনি নিজে হাতেই সমস্যার মোকাবেলা করতে চান৷ এপ্রিল মাসের শেষে হ্যানয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর৷ সেখানে নিজেই নানা জায়গায় যোগাযোগ স্থাপন করবেন তিনি৷ খতিয়ে দেখবেন কিভাবে কর্মসূচিটিকে আরো সম্প্রসারিত করা যায়৷ অন্যান্য বৃদ্ধাশ্রমের কর্তৃপক্ষ চীন ও ভারতেও সেবাকর্মী খুঁজছেন৷ ‘‘আমরা আমাদের জন্য ভিয়েতনামকে আবিষ্কার করেছি৷'' বলেন ইয়োখেন মাগের৷ মেকং-এর শিক্ষানবিশদের নিয়ে তিনি খুব সন্তুষ্ট৷