মেক্সিকোর সিউডাড হুয়ারেজ শহরে এই ঘটনা ঘটেছে। সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে হামলা চালায় আক্রমণকারীরা। পলাতক বহু বন্দি।
বিজ্ঞাপন
সোমবার সকালে সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে গুলি চালাতে চালাতে জেলের দিকে এগোতে থাকে আক্রমণকারীরা। জেলের বাইরে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরাও পাল্টা গুলি চালায়। কিন্তু বেশিক্ষণ তারা জেলের দরজা আটকে রাখতে পারেনি। জেলের বাইরেই ১০ জন নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যু হয়। এরপর জেলের ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায় ওই আক্রমণকারীরা। বস্তুত, আক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই জেলের ভিতর বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই শুরু হয়ে যায় বলে জানা গেছে।
কোন দেশের মাদক আইনে কী শাস্তি?
বাংলাদেশের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮ অনুযায়ী মাদক সেবন ও বহনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ ছবিঘরে বিশ্বের আরো কয়েকটি দেশের মাদক আইনের তথ্য থাকছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Walton
মালয়েশিয়া
মাদক বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷ এজন্য মাদক রাখার জন্য জেল, জরিমানার ব্যবস্থা আছে৷ অভিবাসীদের কাছে মাদক পাওয়া গেলে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. Seng Sin
চীন
মাদকসহ ধরা পড়লে সরকারের মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে যেতে বাধ্য করা হয়৷ মাদক সংক্রান্ত কিছু অপরাধের জন্য ফাঁসিও দেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/Afp/Y. A. Thu
ভিয়েতনাম
০.৫৯ কেজি হেরোইনসহ ধরা পড়লে নিশ্চিত ফাঁসি৷
ছবি: Bulgarian Prosecutor's Office/picture-alliance/AP
ইরান
প্রতিবেশী আফগানিস্তানে আফিমের চাষ হওয়ায় ইরানে এটা একটা অন্যতম সমস্যা৷ সেখানে মাদকসহ ধরা পড়লে বড় অংকের জরিমানা থেকে শুরু করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে৷
ছবি: ilna
থাইল্যান্ড
মাদক পাচারের কারণে মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে৷ মাদকসেবীদের বাধ্যতামূলকভাবে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠানো সে দেশে একটি নিয়মিত ঘটনা৷
ছবি: Lilian Suwanrumpha/AFP/Getty Images
সৌদি আরব
মাদক বিক্রি করতে গিয়ে ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড প্রায় নিশ্চিত৷ অ্যালকোহল কিংবা মাদক সেবন কিংবা সেগুলো রাখার জন্য প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত, জরিমানা, দীর্ঘদিনের কারাবাস কিংবা মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷
ছবি: Yasin Akgul/AFP/Getty Images
সিঙ্গাপুর
মাদক বিক্রির দায়ে অভিযুক্ত হলে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়৷
ছবি: Bodo Marks/dpa/picture-alliance
কম্বোডিয়া
মাদক রাখার দায়ে এমনকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে৷ তবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশের মতো কম্বোডিয়ায় মাদক পাচারের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান নেই৷
ছবি: Reuters/S. Pring
ইন্দোনেশিয়া
গাঁজাসহ ধরা পড়লে সর্বোচ্চ ২০ বছরের জেল হতে পারে৷ অন্যান্য মাদকের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত জেলের বিধান রয়েছে৷ মাদক বিক্রির দায়ে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে৷
ছবি: M Risyal Hidayat/Antara Foto/REUTERS
লাওস
মাদকসহ ধরা পড়লে প্রায় ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে৷ আর চেতনানাশক ওষুধসহ ধরা পড়লে ১০ বা তার বেশি সময়ের জেল হতে পারে৷
ছবি: Getty Images/Afp/A. Jones
ফিলিপাইন্স
মাদকপাচারকারীদের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান আছে৷ কারো কাছে ১০ গ্রামের বেশি মাদক পাওয়া গেলে তাকে পাচারকারী হিসেবে ধরে নেয়া হয়৷
ছবি: Getty Images/AFP/N. Celis
তুরস্ক
মাদক রাখার জন্য বড় অংকের জরিমানা ও দীর্ঘ কারাবাসের বিধান রয়েছে৷ মাদক বিক্রির অপরাধের শাস্তি আরো কঠোর হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/TASS/dpa/S. Bobylev
বাংলাদেশ
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিল ২০১৮ অনুযায়ী ৫ গ্রাম পর্যন্ত কোকেন, হেরোইন, মরফিন ও পেথিডিন পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে৷ মাদকের পরিমাণ ৫ থেকে ২৫ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড এবং মাদকের পরিমাণ ২৫ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে৷
ছবি: bdnews24.com
ইয়াবার শাস্তি
ইয়াবা সেবনের শাস্তি তিন মাস থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড৷ এছাড়া ইয়াবা সরবরাহ, বিপণন, কেনা-বেচা, হস্তান্তর, গ্রহণ-প্রেরণ, লেনদেন ও প্রদর্শনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে - ২০০ গ্রাম পর্যন্ত ইয়াবা পাওয়া গেলে ১ থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে৷ পরিমাণ ২০০ থেকে ৪০০ গ্রামের মধ্যে হলে ৫ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে৷ পরিমাণ ৪০০ গ্রাম বা তার বেশি হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Walton
অ্যালকোহল পানের নিয়ম
অনুমতি ছাড়া কেউ অ্যালকোহল পান করতে পারবেন না৷ চিকিৎসার প্রয়োজনে সিভিল সার্জন বা সরকারি মেডিকেল কলেজের কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো মুসলমানকে অ্যালকোহল পানের অনুমতি দেওয়া যাবে না৷ তবে মুচি, মেথর, ডোম, চা শ্রমিক ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তাড়ি ও পঁচুই এবং পার্বত্য জেলা বা অন্যান্য অঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যগতভাবে তৈরি করা মদ পান করার ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না৷
ছবি: bdnews24.com
15 ছবি1 | 15
পরে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অন্তত ১৩। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পালিয়ে গেছে অন্তত ২৪ জন বন্দি।
জেলে আক্রমণ চালানোর আগে আততায়ীরা পুরসভার বাইরেও গুলি চালায়। নিরাপত্তারক্ষীদের একটি গাড়ি গুলি করে ধ্বংস করে দেওয়া হয়। পরে জেলে আক্রমণ চালায় তারা। প্রায় দুইঘণ্টার চেষ্টায় ফের জেলের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা সম্ভব হয়। তার মধ্যে একাধিক বন্দি পালিয়েছে, আহত হয়েছে অনেকে।
সিউডাড হুয়ারেজের এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও একাধিকবার এই জেলে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র লড়াই হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বন্দিদের। অ্যামেরিকা-মেক্সিকো সীমান্তের এই শহরে দুই প্রধান মাদক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীসিনালোয়া এবং হুয়ারেজ ড্রাগ কার্টেল। তাদের নিজেদের মধ্যে যেমন সংঘর্ষ লেগেই থাকে, তেমনই নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষও নতুন কিছু নয়। কিছুদিন আগে এই শহরে ভয়াবহ দাঙ্গাও হয়েছিল মাদক কেনা-বেচা নিয়ে।