গাড়ি থেকে গুলিবৃষ্টি। মেক্সিকোয় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের। অপরাধী এখনো অধরা।
বিজ্ঞাপন
অনেকটা সিনেমার দৃশ্যের মতো। এসইউডি-তে চড়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে যাচ্ছে আততায়ী। অসহাায়ের মতো রাস্তায় লুটিয়ে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। শনিবার বিকেল থেকে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে অ্যামেরিকার সীমান্তে মেক্সিকোর শহর রেনোসায়। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এখনো পর্যন্ত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আততায়ী পলাতক। তবে মেক্সিকোর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বেশ কিছু মানুষ আহত অবস্থায় হাসপাতালে। পুলিশ আততায়ীর খোঁজে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে।
করোনাকালে মেক্সিকোর নির্বাচন, প্রচারে সহিংসতা
করোনায় বিপর্যস্ত মেক্সিকোর নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট কৌতূহল ছিল। রোববার সেই নির্বাচন হলো।
ছবি: Carlos Jasso/REUTERS
করোনাকালের নির্বাচন
মেক্সিকোয় করোনার তাণ্ডব ছিল প্রবল। আক্রান্তদের মধ্যে নয় দশমিক ৪১ জন মারা গেছেন। মৃত্যুর হার বিশ্বে সব চেয়ে বেশি। করোনাকালের নির্বাচনে ভোট দেয়া নিয়ে মানুষের উৎসাহ ছিল যথেষ্ট।
ছবি: Toya Sarno Jordan/REUTERS
কেন এই নির্বাচন
মেক্সিকোর স্থানীয় পরিষদের ১৪ হাজার সদস্য, ১৪ জন গভর্নর, দুই হাজার মেয়র, স্টেট কংগ্রেসের এক হাজার সদস্য ও ৫০০ জন ডেপুটিকে বেছে নিতেই এই নির্বাচন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে গভর্নর পদে এক নারী প্রার্থীকে।
ছবি: Edgard Garrido/REUTERS
কেন গুরুত্বপূর্ণ
প্রেসিডেন্ট লোপেজ ওব্রাডরের কার্যকালের তিন বছর শেষ হয়েছে। কিন্তু যেভাবে করোনা মেক্সিকোর অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করেছে, মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, বেকারত্ব বেড়েছে, তাতে মানুষ ক্ষুব্ধ। সেই ক্ষোভ ভোটের বাক্সে পড়লে, প্রেসিডেন্টের জনপ্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। কংগ্রেসে লোপেজের শরিকরা গরিষ্ঠতা বজায় রাখতে পারবেন কি না সে প্রশ্নও আছে।
ছবি: Jose Mendez/Agencia EFE/imago images
প্রচারে প্রবল হিংসা
মেক্সিকোর নির্বাচনের প্রচার ছিল রীতিমতো সহিংস। বহু প্রার্থীকে হত্যা করা হয়েছে। ২৭০টি প্রচার সংক্রান্ত ঝামেলা হয়েছে। এছাড়া হুমকি দেয়ার বহু অভিযেোগ পুলিশের কাছে জমা পড়েছে। ২০১৫-র তুলনায় সহিংসতা ৩০ শতাংশ বেড়েছে।
ছবি: Marco Ugarte/AP Photo/picture alliance
অর্থনীতির প্রভাব
করোনায় বিপর্যস্ত হয়েছে মেক্সিকোর অর্থনীতি। জাতিসংঘ ও অন্য কিছু সংস্থার সমীক্ষা বলছে, করোনার ফলে অর্থনীতিতে যে আঘাত এসেছে, তাতে মেক্সিকোয় গরিবের সংখ্যা অনেকটাই বাড়বে। তার প্রভাব ভোটে পড়তে পারে।
ছবি: Henry Romero/REUTERS
ভোট দিতে উৎসাহ
প্রচুর মানুষ করোনাকালে সামাজিক দূরত্বের তোয়াক্কা না করে ভোট দিয়েছেন। ছিল বিশাল লাইন। পুলিশের উপস্থিতিও ছিল যথেষ্ট।
ছবি: Carlos Jasso/REUTERS
প্রাথমিক ফলাফল
প্রাথমিক ফলাফল অনুযায়ী,,কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট লোপেজের বামপন্থি দলের শক্তি কমেছে। তাদের আরো বেশি করকে শরিকদের উপর নির্ভর করতে হবে।
ছবি: Mahe Elipe/REUTERS
7 ছবি1 | 7
ঘটনার সূত্রপাত স্থানীয় সময় শনিবার বিকেলে। একটি এসইউভি গাড়ি চড়ে আততায়ী গুলি ছুড়তে ছুড়তে দ্রুত গতিতে চলে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই রেনোসার একাধিক এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। পুলিশ গাড়িটিকে ধাওয়া করেও ধরতে পারেনি। তবে সীমান্ত অঞ্চল সিল করে দেওয়া হয়েছে। বর্ডার গার্ড, সেনা এবং পুলিশ গোটা এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে। এর সঙ্গে ড্রাগ মাফিয়া বা কার্টেলদের সম্পর্ক আছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
অন্য একটি ঘটনায় আরো এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। সেও পুলিশের উপর আক্রমণ চালিয়ে ছিল বলে প্রশাসনের দাবি। পুলিশের গুলিতেই তার মৃত্যু হয়েছে।
মেক্সিকো প্রশাসন জানিয়েছে, আততায়ীকে ধরার জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দ্রুতই তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে কেন সে এভাবে গুলি ছুড়ল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। স্পষ্ট নয় তার পরিচয়ও।
গত দুই বছরেমেক্সিকোয় হত্যার সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে। ২০১৯ সালে ৩৪ হাজার ৬৮১ জনকে হত্যা করা হয় মেক্সিকোয়। ২০১৯ সালে সংখ্যাটি সামান্য কমে হয়েছে ৩৪ হাজার ৫৫৪ জন। সমস্ত হত্যার সঙ্গেই ড্রাগ মাফিয়া বা কার্টেলদের যোগ রয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। শনিবারের ঘটনার সঙ্গেও তাদের যোগ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।