মাদক মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলেছে মেক্সিকোয়। উত্তর মেক্সিকোর একটি শহরে রিহ্যাবে ঢুকে ২৩ জনকে অপহরণ করল দুষ্কৃতীরা। ১৩ জনকে উদ্ধার করা গেলেও এখনও খবর নেই বাকি ১০ জনের।
বিজ্ঞাপন
মাদক পাচার নিয়ে অপরাধীদের গোষ্ঠী যুদ্ধ মেক্সিকোয় নতুন কিছু নয়। তা নিয়ে সিনেমা, সিরিজও হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার উত্তর মেক্সিকোর ইরাপুতো শহরে যে ঘটনা ঘটেছে, তা চমকে দিয়েছে সকলকে। মাদকাসক্তদের জন্য তৈরি একটি রিহ্যাবে ঢুকে ২৩ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ড্রাগ মাফিয়ারা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান, দুষ্কৃতীদের হাতে আধুনিক অস্ত্র ছিল। পরে অবশ্য অপহৃত ১৩ জন ফিরে আসেন। এখনও খবর নেই বাকি ১০ জনের।
যেসব দেশে গাঁজা বৈধ
গাঁজাসহ বেশ কিছু মাদক পৃথিবীর অনেক দেশেই অবৈধ৷ কিন্তু কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যেই বৈধ হয়েছে এসবের সীমিত সেবন ও বেচাকেনা৷ বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/empics/D. Dyck
আর্জেন্টিনা
গাঁজা সেবন অনেক দেশেই আইনতভাবে অপরাধ নয়৷ এমনই একটি দেশ ল্যাটিন অ্যামেরিকার আর্জেন্টিনা৷ সেখানে চিকিৎসার জন্য গাঁজা আগে থেকেই বৈধ হলেও ব্যক্তিগত পছন্দে সেবনের জন্য গাঁজাকে ২০০৯ সাল থেকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: Getty Images/AFP/E. Abramovich
জার্মানি
২০১৭ সালের ১০ মার্চ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীদের গাঁজা সংগ্রহের অনুমতি দেয় জার্মান সরকার৷ অনুমোদনের পর দেশটিতে গাঁজার চাহিদা ব্যাপকহারে বেড়েছে৷
ছবি: Imago/C. Mang
অস্ট্রেলিয়া
চিকিৎসার উদ্দেশ্যে গাঁজার সেবন ও চাষ অস্ট্রেলিয়ায় বৈধ৷ সেই দেশের আদিবাসীদের মধ্যে গাঁজা সেবনের মাত্রা শহরাঞ্চলে কিছুটা কম বলে জানা যায়৷
ছবি: Getty Images/P.Kane
বেলজিয়াম
প্রাপ্তবয়স্করা সেবনের জন্য তিন গ্রাম ওজন পর্যন্ত গাঁজা সঙ্গে রাখতে পারবেন ইউরোপের দেশ বেলজিয়ামে৷ ২০০৩ সাল থেকে কার্যকরী এই আইনে মাথাপিছু একটি গাঁজা গাছ লাগানোকেও বৈধতা দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: Reuters/P. Wojazer
বলিভিয়া
মাথাপিছু ৫০ গ্রাম গাঁজা কেনা বলিভিয়ায় বৈধ৷
ছবি: imago/CHROMORANGE
ক্যানাডা
সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলে সব রকমের গাঁজা সেবন ও চাষের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে ক্যানাডা সরকার৷ ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে নতুন আইন এনে গাঁজা সার্বিকভাবে বৈধ ঘোষণা করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/empics/The Canadian Press/J. Franson
চিলি
ল্যাটিন অ্যামেরিকার আরেক দেশ চিলিতেও ২০০৫ সাল থেকে বৈধ হয়েছে গাঁজা বা মারিহুয়ানার সেবন ও বিক্রি৷
ছবি: Nelson Vergara/Revista Minga
নেদারল্যান্ডস
সেই ১৯৭৬ সাল থেকেই ইউরোপের নেদারল্যান্ডসে গাঁজা বৈধ৷ সেই দেশের বিখ্যাত ‘কফিশপ’-গুলিতে গাঁজা বিক্রি ও সেবন বৈধ হলেও পাঁচ গ্রামের বেশি গাঁজা রাখতে পারবেন না কেউ৷
ছবি: Getty images/AFP/J. Juinen
দক্ষিণ আফ্রিকা
আফ্রিকার প্রথম দেশ হিসাবে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১৮ সালে গাঁজা সেবন ও গাঁজা চাষকে বৈধতা দেয়৷ প্রসঙ্গত, এই দেশের ডাক্তারেরা চিকিৎসার প্রয়োজনে গাঁজা সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন ঠিকই, কিন্তু কোনো বিশেষ দোকান বা হাসপাতালে তা বিক্রির পরিষেবা এই মুহূর্তে নেই৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bosch
উরুগুয়ে
২০১৩ সাল থেকে উরুগুয়েতে সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়েছে গাঁজা সেবন ও বিক্রি৷ শুধু তাই নয়, নিষেধাজ্ঞা উঠেছে গাঁজা চাষের ওপর থেকেও৷
ছবি: Reuters/A. Stapff
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
অঞ্চল অনুসারে ভিন্ন আইন থাকায় গাঁজা বা অন্যান্য মাদক বিষয়ক আইনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিন্ন৷ কিছু রাজ্যে ব্যক্তিগত সেবন বৈধ হলেও দেখা যায় যে, সেখানে গাঁজার চাষে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা৷ কিন্তু ডাক্তারি পরামর্শে গাঁজা সেবন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক অংশেই বৈধ বলে জানা যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/AP/J. Locher
11 ছবি1 | 11
মাদকাসক্তি মেক্সিকোর একটি বড় সমস্যা। অনেকেই বলেন, মাদক মাফিয়াদের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে দেশটি। প্রকাশ্য রাস্তায় মাদক মাফিয়াদের মধ্যে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধও নতুন কিছু নয়। অনেকের মতে, মাদকাসক্তদের জন্য তৈরি রিহ্যাবগুলিকে নিশানা করে এই মাদক মাফিয়ারা। রিহ্যাবে ঢুকে সেখানেও মাদক ব্যবসা চালানোর চেষ্টা করে তারা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ ক্ষেত্রেও তেমনই ঘটছিল ওই রিহ্যাবটিতে। খবর পেয়ে বিরোধী গোষ্ঠীর মাদক মাফিয়ারাসেখানে আক্রমণ করে এবং ২৩ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই যে ১০ জনকে উদ্ধার করা গিয়েছে, তারা কেউ মুখ খুলতে চাইছেন না। তাঁদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, কী ভাবে রাখা হয়েছিল, কারা নিয়ে গিয়েছিল, কিছুই বলতে চাইছেন না তাঁরা। বাকি ১০ জনের খোঁজে বিশেষ তদন্ত টিম তৈরি করেছে পুলিশ।
এর আগে ২০১০ সালে টিজুয়ানার একটি রিহ্যাবে ঢুকে ১৩ জনকে গুলি করে মেরেছিল দুষ্কৃতীরা। যা নিয়ে বহু হইচইও হয়েছিল।
এসজি/জিএইচ (ডিডব্লিউ/এএফপি)
১৫ ফেব্রুয়ারির ছবিঘরটি দেখুন...
হেরোইনের আগ্রাসন রুখতে মরিয়া মেক্সিকো
মেক্সিকোর পাহাড়ি এলাকার গভীর জঙ্গল ছেয়ে গেছে গোলাপি রঙের পপি গাছে৷ অবৈধ পপির চাষ এতটাই বেড়েছে, এখন আর আগের মতো লাভও করতে পারছেন না৷ বাধ্য হয়ে পপি উৎপাদন বন্ধে ব্যাপক অভিযানে নেমেছে দেশটির সেনাবাহিনী৷
ছবি: Reuteers/C. Jasso
দুর্গম পাহাড়, পপির অভয়ারণ্য
মেক্সিকোর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় সিয়েরা অঞ্চল যেন পপিচাষীদের অভয়ারণ্য৷ দুর্গম পাহাড়ী এলাকা আর ঘন অরণ্য, অবৈধ পপির চাষের জন্য স্বর্গরাজ্য৷ মানুষের চোখের আড়ালে খুব সহজেই এখানে চাষ করা যায় পপি৷
ছবি: Reuters/C. Jasso
অন্য শস্যের আড়াল
মাঝে মাঝে পপিক্ষেত লোকচক্ষুর আড়ালে রাখার জন্য অন্য নানারকম শস্য, যেমন ভুট্টার চাষ করা হয়৷ সরকারও পপি চাষীদের বৈধ শস্য চাষের জন্য নানা সহায়তা করে থাকে৷ কিন্তু পাহাড়ের পাথুরে ঢালে পাতলা মাটির আস্তরণে অন্য কোনো শস্যই তেমন ভালো হয় না৷
ছবি: Reuteers/C. Jasso
পপি চাষের কেন্দ্র
গুয়েরেরো রাজ্যের দরিদ্র পাহাড়ি জেলাগুলোতে অবৈধ পপির চাষ হয় সবচেয়ে বেশি৷ এর মধ্যে এগিয়ে আছে মার্কিন সীমান্ত থেকে ৮০০ মাইল দূরে অবস্থিত হুকিলা ইউকুচানি জেলা৷ দেশটিতে অপরাধের হারও সবচেয়ে বেশি গুয়েরেরো রাজ্যেই৷
ছবি: Reuteers/C. Jasso
পপি বীজে সয়লাব বাজার
চাষ, সরবরাহ, বাজারজাতকরণ, সবকিছুই আইনত দণ্ডণীয় হলেও অনেকটা প্রশাসনের নাকের ডগাতেই চলে পপি বীজের কেনাবেচা৷
ছবি: Reuters/C. Jasso
বাড়িতেও পপি গাছ
এখন আর অনেক ক্ষেত্রে তেমন রাখঢাকেরও প্রয়োজন দেখছেন না পপি চাষীরা৷ কেউ কেউ কষ্ট করে পাহাড়ের ঢালে লুকিয়ে চাষ না করে নিজের বাড়ির উঠানেই বুনছেন গাছ৷
ছবি: Reuteers/C. Jasso
সেনা অভিযান
পপি এবং এ থেকে উৎপাদিত আফিম ও হেরোইনের দৌরাত্ম কমাতে এবার জোরেসোরে মাঠে নেমেছে মেক্সিকোর সেনাবাহিনী৷ দুর্গম পাহাড়ি এলাকাতেও চলছে বিশেষ অভিযান৷
ছবি: Reuteers/C. Jasso
গাছ কেটে সাফ
পাহাড়ে ভাঁজে ভাঁজে তল্লাশি চালিয়ে লুকিয়ে রাখা পপিক্ষেত খুঁজে বের করছেন সেনারা৷ তারপর সেগুলে কেটে কেটে এক জায়গায় জড়ো করা হচ্ছে৷
ছবি: Reuters/C. Jasso
লক্ষ্য– চিরতরে নির্মূল
শুধু পপি গাছ কেটেই নিরস্ত হচ্ছেন না সৈনিকরা৷ পরবর্তীতে গাছের বীজ থেকে যাতে চাষীরা আবার বীজ উৎপাদন করতে না পারেন, সেজন্য জড়ো করা গেছে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে আগুন৷
ছবি: Reuteers/C. Jasso
অসহায় চাষীরাও
দুর্গম এ পাহাড়ি এলাকায় যারা থাকেন, তাঁদের জন্য নেই পর্যাপ্ত নাগরিক কোনো সুযোগ-সুবিধা৷ সবচেয়ে কাছের হাসপাতাল বা স্কুলও কয়েক ঘণ্টার পথ৷ ফলে, ভবিষ্যতের চিন্তায় উদ্বিগ্ন পপি চাষীদের অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও ভাবছেন সীমানা পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার কথা৷