মায়া সভ্যতার এক আশ্চর্য নিদর্শন মিলেছে মেক্সিকোর ইউকাটান অঞ্চলে। বলের সামনে খেলোয়াড়ও আছে সেখানে।
বিজ্ঞাপন
যে পাথরটি আবিষ্কার হয়েছে, সেখানে একটি বল আছে। তার পাশে খেলোয়াড় আছে। আর মাঝখানে মায়া সভ্যতার হায়ারোগ্লিফিক্সে কিছু লেখা আছে। পুরাতাত্ত্বিক প্রাথমিক সন্দেহ, এটি একটি স্কোরবোর্ড। খেলাটির নাম পক টা পক। এক সময় মেসোমেরিকানদের মধ্যে যে খেলা খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল।
সাড়ে ১২ ইঞ্চি ব্যাসের ওই পাথরটির ওজন প্রায় ৪০ কিলোগ্রাম। পুরাতাত্ত্বিকদের ধারণা, ৬৫০ থেকে ৯০০ সালের মধ্যে তৈরি হয়েছিল ওই স্কোরবোর্ডটি। বস্তুত, ৯০০ শতাব্দীতে শেষ মায়া সাহিত্যের সন্ধান পাওয়া যায়। এই স্কোরবোর্ডটিও একেবারে শেষকালের মায়া সভ্যতার নিদর্শন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে গবেষণা এখনো অনেক বাকি আছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
মেক্সিকোর আদিবাসী মুসলমান সম্প্রদায়
মেক্সিকোর চিয়াপাস রাজ্যটি প্রাচীন মায়া সভ্যতার একটি অংশ ছিল৷ সেখানকার একটি আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
খ্রিষ্টান থেকে ইসলাম
ছবিতে ৬৪ বছর বয়সি উমরকে দেখতে পাচ্ছেন৷ একসময় তিনি এভানজেলিক্যাল গির্জার যাজক ছিলেন৷ নব্বই দশকের শেষ দিকে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
ঐক্যের প্রতীক
মেক্সিকোর চিয়াপাস রাজ্যের সান ক্রিস্টোবাল ডে লাস কাসাস শহরে বাস করেন উমর৷ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর স্থানীয় মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছেন তিনি৷ ‘‘আমাদের একেশ্বরবাদী ধর্ম,’’ বলেন তিনি৷ ‘‘তবে আমরা সন্তের পূজা করি না৷’’
ছবি: Reuters/E.Garrido
মুসলিম সম্প্রদায়
উমর সহ কয়েকশ মুসলমানের বাস চিয়াপাস রাজ্যে৷ তাঁদের অধিকাংশই সোসিল সম্প্রদায়ের অন্তর্গত৷ ইসলাম ধর্ম গ্রহণের আগে তাঁরা ক্যাথলিক সহ খ্রিষ্টান ধর্মের অন্যান্য গোষ্ঠীর অংশ ছিলেন৷ ছবিতে ২০ বছরের আনিসাকে কোরান শরিফ পড়তে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
ধর্মান্তরের কারণ
আশির দশকের শেষ দিকে স্থানীয়রা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ শুরু করে৷ ঐ সময় চিয়াপাস রাজ্যে সাপাতিস্তা মুভমেন্টে ছড়িয়ে পড়ছিল৷ ফলে পুঁজিবাদসহ খ্রিষ্টান ধর্ম সমালোচনার মুখে পড়েছিল৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
পোশাক
পুরুষরা মাথায় টুপি, স্থানীয়ভাবে যা ‘কুফি’ নামে পরিচিত, আর নারীরা মায়া সভ্যতার ঐতিহ্যবাহী শাল দিয়ে বানানো হিজাব পরেন৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
স্থানীয়দের মাঝে প্রতিক্রিয়া
ছবির ব্যক্তিটি মুস্তফা৷ তিনি জানান, ‘‘আমরা যখন ধর্মান্তরিত হই তখন মানুষ আমাদের দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে ছিল৷ তাঁরা ভেবেছিল আমরা সন্ত্রাসী, তাই তাঁরা আমাদের ভয়ও পেয়েছিল৷’’ তবে সময়ের সঙ্গে তা ঠিক হয়ে গেছে৷ ‘‘আমাদের কাজ দেখে তাঁদের মতামতে পরিবর্তন আসে,’’ বলেন তিনি৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
এক শতাংশের কম
মেক্সিকোর মোট জনসংখ্যা ১২ কোটি৷ এর মধ্যে প্রায় ৮৩ শতাংশ ক্যাথলিক খ্রিষ্টান৷ আর মুসলমানের সংখ্যা এক শতাংশেরও কম৷
ছবি: Reuters/E.Garrido
পবিত্র ধর্ম
৫৫ বছরের মোহাম্মদ আমিনকে নামাজ পড়তে দেখতে পাচ্ছেন৷ ইসলাম গ্রহণ করার কারণ সম্পর্কে রয়টার্সকে তিনি বলেন, ‘‘এটা একটা পবিত্র ধর্ম৷ এই বিষয়টিই আমাকে আকৃষ্ট করেছে৷’’
ছবি: Reuters/E.Garrido
8 ছবি1 | 8
মেক্সিকোর যে জায়গায় এটি পাওয়া গেছে, সেটি একটি ইউনেস্কো হেরিটেজ সাইট। চিচেন ইটজা নামের ওই জায়গায় প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ বেড়াতে যান। পুরাতাত্বিকদের বক্তব্য, ওই অঞ্চলে এধরনের মায়া হায়ারোগ্লিফিক্স পাওয়ার কথা নয়। কারণ, ওই অঞ্চলে যে সময়ের মায়া সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া যায়, সে সময় হায়ারোগ্লিফিক্সের ব্যবহার ছিল না। এই পাথরটি ইতিহাস বদলে দিতে পারে।
বস্তুত, ওই সময় পক টা পক খেলা হতো বলেও জানা নেই। ফলে ওই পাথরটি অনেক পরের বলেই মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎষ ওই অঞ্চলে পরবর্তীকালেও মায়া সভ্যতা ছড়িয়েছিল বলে পুরাতাত্ত্বিকেরা মনে করছেন। তার ওই পাথরটির ছবি তুলে গবেষণার কাজ শুরু করেছেন।
পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন সংস্কৃতি হিসেবে চিহ্নিত মায়া সভ্যতা। উন্নত এই সভ্যতার সন্ধান মেলে যিশুর জন্মের একহাজার বছর আগে থেকে। তবে মায়া সভ্যতা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে ৯০০ শতকে। যে স্কোরবোর্ডটি মিলেছে, তা শেষ সময়ের মায়ার সভ্যতার নিদর্শন বলে মনে করা হচ্ছে।