1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেডিকেলে অনশন চলছেই

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
২০ জুলাই ২০১৮

কলকাতার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বর্ষের ডাক্তারির ছাত্ররা হস্টেলের দাবিতে ১০ জুলাই থেকে অনশন শুরু করেছেন৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ নিজেদের অবস্থানে অনড়৷

Studenten Hungerstreik Indien
ছবি: DW/S. Bandyopadhyay

মেডিকেল কলেজে গত দু'‌বছর ধরে হস্টেলের জন্য কাউন্সেলিং বন্ধ ছিল৷ এই দু' বছরে ভর্তি হওয়া অনেক ছাত্র এবং তাঁদেরও সিনিয়র বহু ছাত্র হস্টেলে জায়গা পাননি৷ কিন্তু অবশেষে যখন ১১ তলা একটি নতুন হস্টেল তৈরি হলো, মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ সেখানে একমাত্র প্রথম বছরের, অর্থাৎ সদ্য ভর্তি হওয়া ডাক্তারি পড়ুয়াদেরই জায়গা দিলো৷ এতেই আপত্তি জানান সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রীরা৷ তাঁরা প্রথমত দাবি করেন, ওই নতুন হস্টেলে তাঁদেরও থাকার জায়গা দিতে হবে৷ এবং বলেন, ছাত্রদের সিনিয়রিটি, এবং কে কত দূর থেকে কলকাতায় পড়তে এসেছেন, তার ভিত্তিতে হস্টেলে অগ্রাধিকার দিতে হবে৷ কিন্তু সিনিয়র ছাত্রদের এই দাবি মানেনি মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ৷ কারণ, হিসেবে তারা র‌্যাগিং প্রতিরোধে সর্বভারতীয় বিধির কথা বলছে, যেখানে প্রথম বছরের নতুন ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজের সিনিয়রদের থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থা আবশ্যিক করা হয়েছে৷ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্রকে নাকি এমন কথাও বলতে শোনা গিয়েছে যে, তিনি যে কোনো মূল্যে সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রীদের সংস্পর্শ থেকে নতুনদের দূরে রাখবেন৷

কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ যেভাবে জটিল হচ্ছে, এই অনড় অবস্থান নেওয়ার জন্য একটু বেশিই মূল্য দিতে হতে পারে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকে৷ ১০ জুলাই ৬ জন ছাত্র অনশন শুরু করেছিলেন৷ পঞ্চম দিনে তাঁদের মধ্যে দু'‌জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়৷ কিন্তু আরো দু'জন সঙ্গে সঙ্গে এসে তাঁদের জায়গা নিয়ে নেন৷ আর ১৮ জুলাই রাত থেকে আরো ১৫ জন এসে যোগ দিয়েছেন অনশনে৷ এর মধ্যে একদিন সিনিয়র ডাক্তাররা এসে ১২ ঘণ্টার এক প্রতীকী অনশনে বসে তাঁদের সমর্থন জানিয়ে গেছেন৷ মেডিকেল কলেজের ইনটার্ন ডাক্তাররা জানিয়েছেন, তাঁরা এই আন্দোলনের সঙ্গে আছেন৷ তেমন পরিস্থিতিতে তাঁরাও কাজ বন্ধ করে অনশনে বসবেন৷ কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রথম ৬ জন অনশনকারীর বাড়ি পুলিশের হাত দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছিল, যাতে তাঁরা নিজেদের সন্তানদের হঠকারী আন্দোলন সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন৷ কিন্তু সমস্যা হলো, ওই ৬ জন তো বটেই, বাকি আন্দোলনকারীদের আত্মীয়-বন্ধুরাও একদিন এসে ওঁদের পাশে বসে বুঝিয়ে দিয়ে গেছেন যে, তাঁরাও সঙ্গে আছেন৷ অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে এই শান্তিপূর্ণ অনশন আন্দোলনের খবর এবং অসংখ্য মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানাচ্ছেন৷

‘নিজেদের স্বাস্থ্যের খেয়াল ওঁরা নিজেরাই রাখতে পারবেন’

This browser does not support the audio element.

ফলে রীতিমতো চাপে পড়ে গিয়ে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, যদিও তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে উদ্বেগজনক কিছু ধরা পড়েনি৷ এ কারণে মনে করা হচ্ছে, তিনি চাপ এড়াতে না পেরে অসুখের ভান করলেন৷ একদিকে কলেজে, তাঁর ঘরের বাইরে অনশনরত ছাত্রদের চাপ, অন্যদিকে অজানা কোনো চাপ৷ সেই চাপ সম্ভবত রাজনৈতিক৷ শাসকদলের মদতপুষ্ট বাহুবলীরা ঘনঘন মেডিকেল কলেজ চত্বরে সদল ঘুরে যাচ্ছেন বলেও শোনা যাচ্ছে৷ আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা কিন্তু এ ব্যাপারে বরং তাঁদের অধ্যক্ষের প্রতিই সহানুভূতিশীল৷ তাঁরা প্রকাশ্যেই জানাচ্ছেন, হয় অনশনরত ছাত্রদের ওপর পালটা চাপ দিতে, অথবা ছাত্রদের হয়ে সরকারের ওপর চাপ দিতেই এই শরীর খারাপের নাটক করছেন অধ্যক্ষ৷ এবং বিষয়টা যেখানে শেষ পর্যন্ত সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাত্রদের স্পষ্ট ঘোষণা যে, তাঁরা কোনো রাজনৈতিক দল বা জোটের মুখাপেক্ষী নন৷ কার মাথায় কে বসে আছে, সে নিয়ে ভাবিত নন তাঁরা৷ বরং তাঁদের হস্টেল সমস্যার সমাধানে তাঁরা এখনও তাঁদের প্রিন্সিপালের দিকেই তাকিয়ে৷

আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদেরই একজন, গৈরিক দে'র সঙ্গে এই আন্দোলনের সর্বশেষ অবস্থান নিয়ে বিস্তারিত কথা হয় ডয়চে ভেলের৷ গৈরিক তাঁর সহপাঠী সহযোদ্ধাদের কথারই প্রতিধ্বনি করেন যে, নিজেদের ন্যায়সঙ্গত পাওনার জন্য লড়ছেন তাঁরা৷ তীব্র অভিমানও কাজ করছে ওঁদের মধ্যে৷ গৈরিক বললেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ যেহেতু অনশনরত ছাত্রদের শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে আদৌ চিন্তিত নন, ওঁরাও কলেজ কর্তৃপক্ষের বানানো মেডিকেল কাউন্সিলকে ফিরিয়ে দিয়েছেন৷ নিজেদের স্বাস্থ্যের খেয়াল ওঁরা নিজেরাই রাখতে পারবেন৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ