জার্মানি সফরে এসেই উত্তর কোরিয়ার নিন্দা জানালেন বারাক ওবামা৷ তবে দু'দিনের সফরের বড় একটি অংশ কেটেছে হানোফার বাণিজ্যমেলায়৷ সেখানে ‘মেড ইন অ্যামেরিকা'-র পক্ষে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করেছেন তিনি৷
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় অর্থাৎ শেষ দফার শেষ জার্মানি সফরে একটি ইতিহাসেরও সাক্ষী হলেন বারাক ওবামা৷ এবারই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য মেলা ‘হানোফার মেসে'-র পার্টনার কান্ট্রি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে মেলা পরিদর্শনে যান যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট৷
ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আরো সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যেই হানোফার বাণিজ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র৷
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যৌথভাবে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন৷ নিজের বক্তব্যে ওবামা বলেন, ‘‘এখানে আসার এই সুযোগটা পেয়ে প্রথমেই আমি সবাইকে বলতে চাই, আপনারা সবাই ‘মেড ইন অ্যামেরিকা' পণ্য কিনুন৷''
সোমবার জার্মানি সফর শেষ করার আগে ম্যর্কেলের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকে বসবেন ওবামা৷ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া ওলঁদ, ইটালির প্রধানমন্ত্রী মাটেও রেনজি এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও অংশ নেবেন সেই বৈঠকে৷
Obama visits German industrial trade fair in Hanover
02:33
এদিকে উত্তর কোরিয়াকে ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে৷ শনিবার দক্ষিণ কোরিয়া জানায়, সাগরে ভাসমান একটি সাবমেরিন থেকে উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে৷ সেদিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয় বলে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক দপ্তর থেকে জানানো হয়৷
জার্মানি সফরের শুরুতেই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য উত্তর কোরিয়ার কঠোর সমালোচনা করেন বারাক ওবামা৷ উত্তর কোরিয়ার এই পদক্ষেপকে ‘উসকানিমূলক' হিসেবে উল্লেখ করে দেশটির প্রতি পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার আহ্বানও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷
তবে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে তারা পারমাণবিক পরীক্ষা বন্ধ করতে রাজি, কিন্তু তার আগে যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে এ বিষয়ে আন্তরিকতা দেখাতে হবে৷ উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী রি সু ইয়ং বার্তা সংস্থা এপি-কে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া বন্ধ করে তাহলেই উত্তর কোরিয়া এ ধরণের পরীক্ষা বন্ধ করবে৷
এসিবি/ডিজি (ডিপিএ,এপি)
ওবামার প্রতি জার্মানদের মুগ্ধতা
২০০৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় বারাক ওবামার প্রতি জার্মানরা বেশ মুগ্ধ ছিল৷ কিন্তু এখনও কী সেটা আছে?
ছবি: AP
অনুমোদন দেননি আঙ্গেলা ম্যার্কেল
২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার জন্য জার্মানিতে এসেছিলেন বারাক ওবামা৷ তিনি বার্লিনের ঐতিহাসিক ‘ব্রান্ডেনবুর্গ গেট’-এর সামনে বক্তব্য রাখতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু সে অনুমতি দেননি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তাঁর যুক্তি ছিল, বিদেশি নির্বাচনি প্রচারণার অংশ হতে দেয়া যাবে না এই নিদর্শনকে৷ পরে অবশ্য বার্লিনের আরেক জায়গায় বক্তৃতা দেন ওবামা৷ প্রায় দুই লক্ষ মানুষ তাঁর কথা শোনেন৷
ছবি: AP
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম বার্লিন সফর
২০০৮ সালে প্রচারণার সময় প্রচুর জার্মানের সমর্থন পেলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওবামা প্রথমবারের মতো রাজধানী বার্লিনে আসছেন আগামী মঙ্গলবার৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘ওবামা ফিঙ্গার্স’
প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর জার্মানির একটি ফ্রোজেন ফুড কোম্পানি ‘ওবামা ফিঙ্গার্স’ নামে ফ্রাইড চিকেন বাজারে ছেড়েছিল৷ সঙ্গে ছিল মজাদার সস৷
ছবি: AP
ওবামার কাছ থেকে শিক্ষাগ্রহণ
২০০৮ সালের এই ছবিতে বার্লিনের মেয়র ক্লাউস ভোভেরাইটের সঙ্গে ওবামাকে দেখা যাচ্ছে৷ ওবামার নির্বাচনি প্রচারণার সফলতা দেখে জার্মান রাজনীতিবিদরা ওবামার কাছ থেকে অনেক কৌশলই গ্রহণ করেছেন৷ যেমন অনলাইনে উপস্থিতি বাড়ানো, তৃণমূলকে শক্তিশালী করা, ক্যাম্পেইন ব্লগ চালু, অনলাইনে চাঁদা সংগ্রহ করা ইত্যাদি৷
ছবি: AP
২০০৯ সালে একবার
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এবারই প্রথম সরকারি সফরে বার্লিনে আসছেন ওবামা৷ তবে এর আগে ২০০৯ সালে জার্মানিতে এসেছিলেন তিনি৷ সেবার মিশর থেকে ফ্রান্স যাওয়ার পথে ড্রেসডেন শহরে ক্ষণিকের যাত্রা বিরতি করেছিলেন ওবামা৷
ছবি: Getty Images
চিত্রকর্মে ওবামা
গত এপ্রিলে কোলন শহরে অনুষ্ঠিত একটি মেলার ছবি এটি৷ চিত্রশিল্পী ফিক মুনোৎসের আঁকা এই ছবিটির নাম ‘ওবামা’৷
ছবি: Reuters
খেলনায় ওবামা
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জার্মানির ন্যুরেমব্যার্গ শহরে আন্তর্জাতিক খেলনা মেলা অনুষ্ঠিত হয়৷ সেখানেও ছিল ‘ওবাম্যানিয়া’-র চিহ্ন৷
ছবি: AP
ম্যার্কেলের যুক্তরাষ্ট্র সফর
২০১১ সালের জুন মাসে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক অ্যাওয়ার্ড ‘প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ দেয়া হয়৷ এরপর ম্যার্কেলের সম্মানে সরকারি নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ তখন থেকে এই দুই বিশ্বনেতা একে অপরকে তাদের প্রথম নামে ডাকেন – অ্যাঙ্গেলা ও বারাক৷