1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রশ্নপত্র ফাঁস

সমীর কুমার দে, ঢাকা১ অক্টোবর ২০১৫

সরকার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলছে, মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়নি৷ অন্যদিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে চিকিৎসকসহ কিছু মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব৷ ওদিকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষার পর ফলাফল প্রকাশ হয়েছে ইতিমধ্যে৷

Bangladesch Schüler Schulkasse in Dhaka Prüfung
ছবি: picture-alliance/landov

একদিকে সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীরা ভর্তির প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে৷ অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ পরীক্ষার ফল বাতিল করে নতুন পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে আন্দোলন করছে৷ তাদের উপর নির্দয়ভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে পুলিশ৷ এমনকি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করা শিক্ষার্থীদের থানায় ধরে নিয়েও নির্যাতন চালানো হচ্ছে৷ – এভাবেই সম্পূর্ণ পরিস্থিতির বর্ণনা করে অধ্যাপক মঞ্জুরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মেধাহীন এক সমাজের দিকে এগোচ্ছি আমরা৷ এক পর্যায়ে যার পক্ষে যেটা সম্ভব নয়, তার হাতে সেই দায়িত্ব যাওয়ার ফলে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়বে আমাদের সমাজ৷''

তাঁর মতে, ‘‘১০-১২ বছর আগে ছিল নকল৷ এখন নকল নেই, আছে প্রশ্ন ফাঁস৷ শুধু মেডিকেল নয়, সব ধরনের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে৷ এটা একটা বড় লাভজনক ব্যবসায় পরিণত হয়েছে৷ স্বাস্থ্য ও শিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করা হচ্ছে৷ এমনকি চিকিৎসকরাও জড়িয়ে পড়ছেন এই ব্যবসায়৷ এখন ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা যখন চিকিৎসক হবে তখন তাদের হাতে চিকিৎসা সেবা কতটা নিরাপদ থাকবে, তা এক বিরাট প্রশ্ন৷ আমাদের মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় হচ্ছে৷ জাতিকে এক সময় এর মাশুল দিতে হবে৷''

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল চ্যানেল টোয়েন্টিফোর-এর প্রতিবেদন

গত ১৮ই সেপ্টেম্বর মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়৷ ঐ দিন রাতেই প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে চিকিৎসক ও কোচিং সেন্টারের শিক্ষকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয় দেশের এলিট ফোর্স ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা ব়্যাব৷ এরা হলেন – জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৪১), ডা. জেড এম এ সালেহীন শোভন (৪০), এস এম সানোয়ার (৩০) এবং মো. আখতারুজ্জামান তুষার (৩৮)৷ এঁদের মধ্যে জসিম পেশায় একজন ব্যবসায়ী৷ শোভন ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে নোয়াখালীতে কাজ করছেন৷ সানোয়ার ই-হক কোচিং সেন্টারের একজন শিক্ষক এবং তুষার লাইলী-আবেদ কনস্ট্রাকশন নামে একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক৷ প্রশ্ন ফাঁসের ব্যাপারে তাঁদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে বলে ডয়চে ভেলের কাছে স্বীকার করেছেন র‌্যাব-এর পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান৷

ঐ ঘটনার পর ২১শে সেপ্টেম্বর প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন রংপুর মেডিকেল কলেজের ৩ চিকিৎসকসহ সাতজন৷ র‌্যাব-এর কাছে তাঁরা প্রশ্ন ফাঁসের কথা স্বীকার করেন৷ এতসব ঘটনার পরও বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের অধিকাংশ সংবাপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি, এটা একটা গুজব৷ শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছে, তা যৌক্তিক নয়৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে – তাহলে কি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন চালাতে হবে? তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এভাবে পুলিশ নিপীড়ন চালাবে?

টান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি-র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘প্রশ্ন ফাঁসের ফলে প্রতিযোগিতা বিনষ্ট হচ্ছে, শিক্ষা বাণিজ্যে রূপান্তর হচ্ছে৷ প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে৷ আমি তো মনে করি, সরকারের একটি মহল এর সঙ্গে যুক্ত না থাকলে এভাবে প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে না৷ আমরা এখন যত কথাই বলি সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষমাত্রায় ভালো ফল অর্জন করেছি আমরা, কিন্তু আসলে ভেতরে ফাঁকা থেকে যাচ্ছে৷''

তিনি বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষার্থী যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে৷ তারা যেন সন্ত্রাসী, অপরাধী৷ আসলে তাদের কথা তো শুনতে হবে৷ কিন্তু সবাই যেন উট পাখির মতো মাথা গুজে বসে আছে৷ আমার তো মনে হয়, এর পেছনে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র আছে৷ মূল কথা হলো – এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের সদিচ্ছা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ