পরিবেশ দূষণের সমস্যা উত্তর মেরু এলাকার সমুদ্রের নীচেও পৌঁছে গেছে৷ মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা মাছের শরীরে প্রবেশ করে মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলেও প্রবেশ করছে৷ গবেষকরা তথ্য সংগ্রহ করে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে চাইছেন৷
বিজ্ঞাপন
বিপন্ন মেরু অঞ্চল
সম্প্রতি গবেষকরা উত্তর মেরুর তুষারের নীচে অভিনব জীববৈচিত্র্য আবিষ্কার করেছেন৷ সেখানে ছোট চিংড়ির পাশাপাশি সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতভাবে প্রবালও পাওয়া গেছে৷ কিন্তু সেই পরিবেশ বিশাল হুমকির মুখে রয়েছে৷ জার্মানির আলফ্রেড-ভেগেনার ইনস্টিটিউটের এক গবেষকদল সেই এলাকার কিছুটা দক্ষিণে প্লাস্টিক জঞ্জাল ও অন্যান্য আবর্জনার ছবি তুলেছেন৷
গত ১৫ বছর ধরে মেলানি ব্যার্গমান মেরু এলাকার সমুদ্রে আবর্জনার দিকে নজর রাখছেন৷ সেসব দেখে মন খারাপ হওয়াই স্বাভাবিক৷ তিনি বলেন, ‘‘দেখে মনে হচ্ছে, জেলেদের ব্যবহৃত জালের প্রান্ত৷ এটাও প্লাস্টিক আবর্জনার উদাহরণ৷ এমনকি আড়াই কিলোমিটার গভীরে সমুদ্রের তলদেশেও প্লাস্টিকের এমন অনেক অংশ দেখা যায়৷''
গবেষকরা ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা জুড়ে তাঁদের পরীক্ষার ক্ষেত্রের নাম রেখেছেন ‘বাড়ির বাগান'৷ ১৯৯৯ সাল থেকে সেখানে দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ চালানো হচ্ছে৷
সমুদ্রের তলদেশে মাইক্রোপ্লাস্টিকের আধিক্য
মেলানি ব্যার্গমান ও তাঁর সহকর্মীরা প্রায় প্রতি বছরই সেখানে যান৷ ওশেন ফ্লোর অবজারভেশন সিস্টেম কাজে লাগিয়ে তাঁরা সমুদ্রের তলদেশের ছবি তোলেন৷ লম্বা এক তারের মাধ্যমে তলদেশ থেকে এক মিটার উচ্চতায় ক্যামেরা চালিয়ে গোটা সময় জুড়ে উচ্চ মানের ছবি তোলা হয়৷
সাগরতলে আবর্জনা
বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে সাগরে পড়ে বা ফেলে আসা হয় নানা জিনিসপত্র৷ পানির নীচে কী হয় সেগুলোর, সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে এই ছবিঘরে৷
সমুদ্রের তলদেশে দীর্ঘকাল পড়ে আছে এসব চেয়ার৷ গ্রিসের থাসোস দ্বীপ সংলগ্ন সাগরের নিচের ছবি৷
ছবি: Reuters/S. Misinas
ইলেকট্রনিকসও পাবেন
বিভিন্ন সময়ে সাগরে ফেলে আসা বা জাহাজ ডুবিতে সমুদ্রের তলদেশে ঠাঁই হয়েছে নানা ইলেকট্রনিক সামগ্রীর৷ গ্রিসের সিফনোস দ্বীপ সংলগ্ন সাগরের তলদেশে পড়ে আছে এই মাইক্রোওভেন৷
কত দিন পড়ে আছে, জানা নেই৷ তারপরেও সাগরের তলদেশে অক্ষত রয়েছে এই কাঁচের বোতল৷
ছবি: Reuters/S. Misinas
কনটেইনার
সাগরের তলদেশে থেকে শ্যাওলায় ভরে গেছে এই টিনের কনটেইনার৷
ছবি: Reuters/S. Misinas
নোঙর পাশে চলছে মাছ
সাগরের তলদেশে পড়ে থাকা একটি নোঙরের কাছ দিয়ে সাঁতরে যাচ্ছে মাছ৷
ছবি: Reuters/S. Misinas
7 ছবি1 | 7
গবেষকরা বিভিন্ন বছরে তোলা ছবি তুলনা করে দেখেছেন৷ ফলাফল সত্যি বড় বেদনাদায়ক৷ মেলানি ব্যার্গমান বলেন, ‘‘উত্তরের স্টেশনে জঞ্জাল প্রায় ২০ গুণ বেড়ে গেছে৷ একটি ফুটবল মাঠের সমান এলাকায় আগে যেখানে আড়াইটি অংশ পাওয়া যেতো, এখন তা বেড়ে ৬০ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ তা-ও জনবসতি থেকে এত দূরে মেরু এলাকায়!''
মেরু সাগরে এমন উচ্চ মাত্রার দূষণের একটি সম্ভাব্য কারণ অবশ্যই সামুদ্রিক স্রোত৷ গাল্ফ স্ট্রিম বা উপসাগরীয় প্রবাহ দক্ষিণের অঞ্চলগুলি থেকে জঞ্জাল উত্তরে বয়ে আনে এবং পানির গভীরে ঠেলে দেয়৷
ইউরোপে পরিবেশ সমস্যা যে কোথায় পৌঁছাতে পারে, তার নমুনা হল পশ্চিম বলকানের দেশগুলি৷ কয়লা-থেকে-বিদ্যুৎ, অবাধে গাছ কাটা আর প্লাস্টিক আবর্জনার ফলে পরিবেশ বিপন্ন৷
ছবি: picture alliance/M. Strmoti
বেআইনি ময়লা ফেলা চলেছে সর্বত্র
মধ্য বসনিয়ার রাদুসা অঞ্চলটি মনোরম হতে পারত – যদি না সেখানে প্লাস্টিক আবর্জনার পাহাড় জমত৷ প্রায় দশ হাজার ছোট-বড় বেআইনি ল্যান্ডফিল বা গারবেজ ডাম্প, অর্থাৎ ময়লা ফেলার জায়গা আছে এখানে, বলে অনুমান করা হয় – যার মধ্যে শুধু পাঁচটি নাকি লাইসেন্স প্রাপ্ত এবং পরিবেশ সুরক্ষা সংক্রান্ত সরকারি রীতিনীতি মেনে চলে৷ বসনিয়ায় মোট আবর্জনার মাত্র তিন শতাংশ রিসাইকেল করা হয়৷ প্রায় সমগ্র বলকান অঞ্চলে একই পরিস্থিতি৷
ছবি: A. Kamber
আগুন লাগলে পর...
২০১৭ সালের গ্রীষ্মে ড্যানিউব নদীর তীরে ভিংকা শহরের ময়লা ফেলার জায়গাটিতে আগুন লাগে৷ এক মাস ধরে সেই আগুন জ্বলতে থাকে৷ প্লাস্টিক, গাড়ির টায়ার আর ইলেকট্রিকের সাজসরঞ্জাম পোড়ার বিষাক্ত ধোঁয়া কাছের বেলগ্রেড শহরকে আচ্ছন্ন করে ফেলে – বেলগ্রেড হল সার্বিয়ার রাজধানী৷ ভিংকায় প্রতিদিন ২,৭০০ টন ময়লা ফেলা হয়৷ আবর্জনার পাহাড়ের তলায় মিথেন গ্যাস জমে, পরে সেই গ্যাসে যখন আগুন ধরে, তখন দমকলও অসহায়৷
ছবি: Google Earth
প্লাস্টিকের নদী
অগুনতি প্লাস্টিকের বোতল নদীনালায় গিয়ে পড়ে, যেমন এখানে দক্ষিণ সার্বিয়ার মোরাভা নদীতে৷ এছাড়া রয়েছে পয়ঃপ্রণালী আর কলকারখানার ময়লা পানি: তা-ও গিয়ে পড়ে নদীর জলে৷ সার্বিয়ায় ময়লা পানির মাত্র আট শতাংশ সিউয়েজ প্ল্যান্টে পরিষ্কার করা হয়৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের জন্য সার্বিয়াকে তার পরিবেশ সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে অর্থাৎ হাজার কোটি ইউরো বিনিয়োগ করতে হবে – যা কিনা তার বাৎসরিক সরকারি বাজেটের চেয়ে বেশি!
ছবি: picture-alliance/AP Photo/D. Vojinovic
ময়লা কুড়িয়ে জীবনধারণ
উত্তর-পশ্চিম ম্যাসিডোনিয়ার গোস্তিভার শহরের ময়লা ফেলার জায়গাটিকে দেখলে বেআইনি বলে মনে হতে পারে৷ এখানে সব ধরনের ময়লা এসে পড়ে – তারই মধ্যে এটা-সেটা কুড়িয়ে ও বেচে দিন গুজরান করেন কিছু মানুষ৷ এবার নাকি আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর অর্থানুকুল্যে এই ল্যান্ডফিলটিতে ৫০ লাখ ইউরো বিনিয়োগ করা হবে – তবে আবর্জনা রিসাইক্লিংয়ের কোনো পরিকল্পনা নেই৷
ছবি: DW/S. Toevski
শুধু কাচের বোতলের উপর ডিপোজিট
পশ্চিম বলকান প্লাস্টিক আবর্জনায় ভরে যাচ্ছে কেন (যেমন ছবিতে ম্যাসিডোনিয়ার রাজধানী স্কোপিয়েতে), সে প্রশ্নের একটি উত্তর হলো: এখানে শুধুমাত্র কাচের বোতলের ওপর ডিপোজিট নেওয়া হয়৷ ম্যাসিডোনিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলিতেও শুধুমাত্র কাচের তৈরি বিয়ারের বোতলের উপর ডিপোজিট নেওয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/L.Cameron
প্লাস্টিকের বোতলের পরেই আসে প্লাস্টিকের ব্যাগ
গোটা বলকান জুড়ে দোকানে কিছু কেনাকাটা করলে, তা বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিনামূল্যে প্লাস্টিকের ব্যাগ পাওয়া যায় – ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করতে হলে প্রথমেই যা বদলাতে হবে৷ আলবেনিয়া ২০১৮ সালের পয়লা জুলাই থেকে প্লাস্টিকের ব্যাগ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করছে৷ কিন্তু গোটা বলকান জুড়ে তা ঘটা অবধি আইওনিয়ান সাগরের তীরে হিমারার উপকূলে সম্ভবত এই দৃশ্যই বজায় থাকবে৷
ছবি: picture-alliance/R. Haid
সাগর যা বয়ে আনে
স্থানটি ক্রোয়েশিয়ার পর্যটকপ্রিয় দুব্রোভনিক শহরের প্রাচীন অংশ৷ কিন্তু সেখানে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে যে টন টন প্লাস্টিক ভেসে আসে, তার অধিকাংশই এসেছিল আলবেনিয়া থেকে – এড্রিয়াটিক সাগরের ঢেউয়ের দোলায় ভেসে ভেসে৷
ছবি: picture alliance/PIXSELL/G. Jelavic
এক ঝাঁক গাংচিল
ডালমেশিয়ায় পর্যটকদের প্রিয় স্প্লিট শহরের কাছেই এলাকার একমাত্র বৈধ ল্যান্ডফিল৷ ইইউ-এর সদস্যদেশ ক্রোয়েশিয়া অধিবাসী প্রতি ৪০৩ কিলোগ্রাম আবর্জনা সৃষ্টি করে থাকে, যা কিনা ইইউ-এ দেশগুলির গড়, বাসিন্দা প্রতি ৪৮০ কিলোর চেয়ে বেশ কিছুটা কম৷ পশ্চিম বলকানে এক মন্টেনিগ্রো (৫৩৩ কিলো) ছাড়া বাকি সবাই ইইউ গড়ের নীচে (আলবেনিয়া ৩৯৬ কিলো, বসনিয়া ৩১১ কিলো ও সার্বিয়া ২৬৮ কিলো) – বলছে ইউরোস্ট্যাট-এর পরিসংখ্যান৷
ছবি: picture alliance/M. Strmoti
পথিকৃৎ
ক্রোয়েশিয়ার কৃক দ্বীপটিতে কিন্তু ইতিমধ্যেই আবর্জনার ৬০ শতাংশ রিসাইকেল করা হয়ে থাকে – যার জন্য বিভিন্ন ধরনের আবর্জনা পৃথক পৃথকভাবে জমা করা প্রয়োজন৷ কৃক দ্বীপের লক্ষ্য হলো, ২০৩০ সালের মধ্যে ইউরোপের একমাত্র জ্বালানি-স্বনির্ভর দ্বীপ হওয়া৷
ছবি: DW/D. Romac
9 ছবি1 | 9
গত কয়েক বছর ধরে গবেষকরা বারবারসমুদ্রের তলদেশের নমুনা সংগ্রহ করে তার মধ্যেমাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ পরীক্ষা করেছেন৷ চলতি বছর পরীক্ষা চালিয়ে আরো দুঃসংবাদের আশঙ্কা করছেন তাঁরা৷ মেলানি ব্যার্গমান বলেন, ‘‘উত্তর মেরু মহাসাগরের আড়াই কিলোমিটার গভীরে তলদেশ থেকে এই নমুনা সংগ্রহ করেছি৷ এবার তার মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ বিশ্লেষণ করবো৷ গত বছরে একই ধরনের নমুনার মধ্যে আমরা প্রায় এক থেকে দেড় হাজার মাইক্রোপ্লাস্টিকের কণা শনাক্ত করেছিলাম৷ সেই মাত্রা যথেষ্ট বেশি৷''
উন্নত প্রযুক্তির সুবিধা
অতীতে গবেষকরা দূষণের মাত্রা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন না৷ বিশ্লেষণের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতিরও অভাব ছিল৷ এখন তলদেশের মাটির মধ্য থেকে প্রত্যেকটি কণা আলাদা করে ফিল্টার করা সম্ভব৷ এমনকি কালো ও লাল কণা গুনে তার ছবি তোলাও সম্ভব৷ সেই দৃশ্য অবশ্য মোটেই সুখকর নয়৷ মেরু গবেষক মেলানি ব্যার্গমান বলেন,‘‘মাটির মধ্যে অতি ক্ষুদ্র কণা ঢুকে গেছে৷ সেগুলি কোনোদিন আলাদা করতে পারবো না৷ এসব খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করবে এবং সমুদ্রের তলদেশ প্লাস্টিকে ভরে যাবে৷''
গবেষকরা বেশিরভাগ সামুদ্রিক প্রাণীর শরীরেও প্লাস্টিক শনাক্ত করেছেন৷ প্রায়ই সেগুলি তাদের শরীরে সংক্রমণ ও বিষক্রিয়া ঘটায়৷ তার ফলে শুধু প্রাণীদেরই ক্ষতি হয় না৷ মেলানি ব্যার্গমান বলেন, ‘‘আজকাল মাছ, শামুক বা চিংড়ি খেলে ধরে নিতে হবে যে, সঙ্গে মাইক্রোপ্লাস্টিকও পেটে ঢুকছে৷''
অর্থাৎ, সমুদ্রের মধ্যে জঞ্জাল শুধু মেরু অঞ্চলের প্রাণিজগতের সমস্যা নয়৷ এমন পরিবেশ-বিপর্যয় আমাদের সবার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে৷
আর্নো ট্র্যুম্পার/এসবি
আবর্জনা থেকে চোখধাঁধানো শিল্পকলা
যুক্তরাষ্ট্রের অরেগন রাজ্যের সমুদ্রসৈকতে যে সব ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের টুকরো ভেসে আসে, তা জুড়ে জুড়ে সাগরের জীবজন্তুর মূর্তি গড়েন ‘ওয়াশড অ্যাশোর’ প্রকল্পের শিল্পীরা৷
ছবি: Washed Ashore
সাগর, সচেতনতা ও শিল্প
‘ওয়াশড অ্যাশোর’ মানে যা সাগরের পানিতে ভেসে এসেছে৷ সেই প্লাস্টিক সংগ্রহ করার মানে সমুদ্রসৈকতকে আবর্জনামুক্ত রাখা৷ আবার তা থেকে এ ধরনের ভাস্কর্য সৃষ্টি করার অর্থ শিল্পকলা৷ ভাস্কর্যটি প্রবালদ্বীপের বাসিন্দা একটি প্যারট ফিশের – কাজেই সাগরের আবর্জনা যেন শিল্প হয়ে আবার সাগরেই ফিরে যাচ্ছে৷
ছবি: Washed Ashore
আসলে...
তোতাপাখি মাছের সুবিশাল ভাস্কর্যটি কাছ থেকে দেখলে চোখে পড়বে: প্লাস্টিকের খেলনা, টুথব্রাশ, বোতল, গাড়ির টায়ার, প্লাস্টিকের স্যান্ডাল বা বাস্কেট, সব কিছু৷ এ সবই ভেসে এসেছে অরেগনের উপকূলে৷
ছবি: Washed Ashore
প্রথমে ময়লা পরিষ্কার
প্লাস্টিক আবর্জনা থেকে আর্ট সৃষ্টির আগে সেগুলোকে যোগাড় করে, ধুয়ে-মুছে, রং অনুযায়ী ভাগ করে নিতে হয়৷ ‘ওয়াশড অ্যাশোর’ প্রকল্পের স্বেচ্ছাসেবীরা গত পাঁচ বছর ধরে ১৭ টন প্লাস্টিক আবর্জনা পরিষ্কার করেছেন৷
ছবি: Washed Ashore
প্রধান শিল্পী
‘ওয়াশড অ্যাশোর’ প্রকল্পটি প্রতিষ্ঠা করেন অ্যাঞ্জেলা হ্যাজেলটাইন পৎসি (ছবিতে), প্রধান শিল্পীও তিনি৷ ভাষ্কর্যের ধারণাগুলো প্রথমে তাঁর মাথাতেই আসে – জীবজন্তুর মুখ ইত্যাদি ‘শক্ত’ জায়গাগুলোতে তাঁকে হাত লাগাতে হয়৷
ছবি: Washed Ashore
কলাশিক্ষা
সব বয়সের স্বেচ্ছাসেবী ভাস্কর্যের কোনো না কোনো অংশে প্লাস্টিকের টুকরো বসানোয় সাহায্য করতে পারেন – যা কলাশিক্ষা হিসেবেও গণ্য হতে পারে, আবার অনেকের মনে হয়ত তাদের পরিবেশ সংক্রান্ত আচরণ নিয়ে প্রশ্ন জাগতে পারে: ‘আমি নিজে কতটা প্লাস্টিক ব্যবহার করি?’
ছবি: Washed Ashore
চাই সচেতনতা
সাগরে প্লাস্টিক আবর্জনা যে সাগরের প্রাণীদের পক্ষে একটা বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াচ্ছে, এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টিও এই ভাস্কর্যগুলির উদ্দেশ্য – সমাপ্ত হবার পরে সেগুলিকে গোটা মার্কিন মুলুকে ঘুরিয়ে দেখানো হয়৷ ১৫টি করে ভাস্কর্য নিয়ে এ ধরনের তিনটি ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র পরিক্রমা করছে৷
ছবি: Washed Ashore
নজর কাড়া চাই
‘‘নজর কাড়া চাই – প্লাস্টিকের একটি সুবিশাল জীব দেখলে লোকজনের চোখ না ফিরিয়ে উপায় নেই!’’ বলেন হ্যাজেলটাইন পৎসি৷ অধিকাংশ মূর্তি দৈর্ঘ্যে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার মিটার আর উচ্চতায় প্রায় তিন মিটার৷ এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভাস্কর্যটি ছিল একটি সাত মিটার লম্বা পাখাওয়ালা পাখির৷
ছবি: Washed Ashore
অনুকরণ কাম্য
অন্যান্য দেশের মানুষও ‘ওয়াশড অ্যাশোর’-এর দৃষ্টান্তে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের ‘আবর্জনা শিল্প’ সৃষ্টি করুন, এই হলো পৎসির কামনা৷ তাঁর স্বপ্নে এই প্রকল্পটি হবে এক ধরনের ছোঁয়াচে মহামারী, যা আরো বেশি মানুষকে সমুদ্রসৈকত থেকে আবর্জনা সরানোর প্রেরণা দেবে৷ একাধারে শিল্প ও পরিবেশ সচেতনতার মহামারী...