1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেরু অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব স্পষ্ট

৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে টের পাওয়া যাচ্ছে৷ সুমেরু অঞ্চলে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে সেই বিপর্যয়ের কারণ সম্পর্কেও আরো স্পষ্ট চিত্র উঠে আসছে৷

Arktis-Eis untersucht vom Alfred Wegener Institut
ছবি: AWI/Stefan Hendricks

আবহাওয়াবিদ মারিয়ন মাটুরেলি প্রায় ২০ বছর ধরে নিয়মিত নরওয়ের স্পিৎসবার্গেন দ্বীপে যান৷ মেরু অঞ্চলের জলবায়ুর উপর বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব নিয়ে গবেষণা করছেন তিনি৷

ইউরোপের উত্তরতম প্রান্তের জনবসতি ‘ন্যু আলেসুন্ড' অতীতে কয়লা খনির কারণে পরিচিত হলেও বর্তমানে জলবায়ু বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে৷ দশটি দেশ সেখানে রিসার্চ স্টেশন গড়ে তুলেছে৷

ফরাসি-জার্মান যৌথ স্টেশনের ছাদে পরিমাপের একাধিক যন্ত্র বসানো রয়েছে৷ মাটুরেলি সেখানে আবহাওয়া বিজ্ঞানের জন্য প্রাসঙ্গিক নানা তথ্য সংগ্রহ করেন৷ মাটুরেলি বলেন, ‘‘এগুলি একেবারে মৌলিক তথ্য, যেমন তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বাতাসের চাপ এবং বাতাসের গতি৷ সেইসঙ্গে অবশ্যই মেঘ, মেঘের কণা, মেঘের মধ্যে তরল ও শক্ত বরফের কণা, এয়ারোসোল সংক্রান্ত তথ্যও রয়েছে৷ মোটকথা যা কিছু বাতাসের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়৷ ট্রেস গ্যাসের উপরেও নজর রাখা হয়৷ আমরা একদিকে বায়ুমণ্ডলের অবস্থা নথিভুক্ত করি, অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে সেগুলির কারণ খোঁজার চেষ্টা করি৷’’

বেশ গুরুতর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ সুমেরু বৃত্তের উত্তরের এই স্থানে এমনকি শীতকালেও ফিয়র্ড বা খাঁড়িগুলি আর বরফে জমে যাচ্ছে না৷ খুব উঁচু জায়গা ছাড়া তুষারপাতও হচ্ছে না৷ সমুদ্রের উপর ভাসমান বরফ গলে চলেছে এবং পারমাফ্রস্ট জমিও আরও পাতলা হয়ে যাচ্ছে৷

ইউরোপের উত্তরতম প্রান্তের জলবায়ু গবেষণা কেন্দ্র

04:07

This browser does not support the video element.

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা গড়ে প্রায় এক ডিগ্রি বেড়ে গেছে৷ অথচ শুধু স্পিৎসবার্গেন দ্বীপে গত ২০ বছরে তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি বেড়ে গেছে! মাটুরেলির মতে, বাতাসের গতি পরিবর্তন এর অন্যতম কারণ৷ নিজের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘বিশেষ করে শীতের মাসগুলিতে আমরা দেখতে পাচ্ছি, যে বাতাসের স্রোত আরও বেশি করে দক্ষিণ দিক থেকে আসছে৷ ক্রান্তিমণ্ডলীয় এলাকার সেই বাতাস উষ্ণ ও আর্দ্রতা নিয়ে আসছে৷ এখানকার বৃষ্টিপাত ও মেঘের উপর তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে৷ ফলে স্থানীয় পর্যায়ে জলবায়ুও বদলে যাচ্ছে৷’’

১০,০০০ মিটার উচ্চতায় বাতাসের এক প্রণালী সুমেরু অঞ্চলে দক্ষিণের বাতাস টানার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বলে মাটুরেলি অনুমান করছেন৷ বিষুবরেখার কাছে উষ্ণ বাতাস আকাশে উঠে উত্তর দিকে ধেয়ে গিয়ে মেরু অঞ্চলের শীতল বাতাসের সঙ্গে ধাক্কা খেলে  সেই পোলার জেট স্ট্রিম সৃষ্টি হয়৷

কিন্তু তাপমাত্রার মধ্যে ফারাক নাটকীয় মাত্রায় বেড়ে যাওয়ায় দুই বাতাসের মধ্যে দ্রুত মিশ্রণ এখন আর সম্ভব হচ্ছে না৷ পৃথিবীর আবর্তনের ফলে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে সেই বাতাসের গতি বাড়ে৷ এখনো পর্যন্ত সেই উচ্চতার বাতাস ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০০ কিলোমিটার বেগে স্থিতিশীল এক করিডোরের মাধ্যমে হালকা ঢেউয়ের মতো গতিপথে উত্তর গোলার্ধ পরিক্রমা করতো৷ কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেই প্রণালীতে বিঘ্ন ঘটছে৷ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মারিয়ন মাটুরেলি বলেন, ‘‘সুমেরু অঞ্চল ও পৃথিবীর মধ্যভাগের মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য আর তত বেশি না হওয়ায় বাতাসের অবস্থাও বদলে যাচ্ছে৷ তথাকথিত জেটস্ট্রিমের মতো দ্রুতগামী বাতাসের সমান্তরাল স্রোত দুর্বল হয়ে পড়ছে৷ বাতাস আর আগের মতো শক্তিশালী না হওয়ায় সেই স্রোতের গতিপথ বেঁকে যাচ্ছে৷’’

এবার বেলুনে গ্যাস ভরার পালা৷ পরিবেশ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে ফিকে রাডের এক বছর ধরে এই স্টেশনে গবেষণা চালাচ্ছেন৷ সংবেদনশীল পরিমাপ যন্ত্রভরা ওয়েদার বেলুনের প্রস্তুতিও তাঁর দৈনিক কাজের মধ্যে পড়ে৷

 টর্স্টেন মেলট্রেটার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ