মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চলছে নগ্ন বা অর্ধ নগ্ন ছবির আদান প্রদান৷ সেইসঙ্গে বেড়ে চলেছে অশ্লীল বার্তা প্রেরণও৷ জরিপ বলছে, ১২ থেকে ১৭ বছরের ১৫ শতাংশ তরুণ-তরুণীই নাকি পাচ্ছে এসব ছবি, বার্তা৷ কেউবা স্বেচ্ছায় কেউবা অনিচ্ছায়৷
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবক, শিক্ষকমহল৷ কারণ মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে তরুণ-তরুণীরা নিজেদের যৌন উদ্দীপক ছবি কিংবা কোন জুটির ধারণকৃত ফুটেজও একে অপরকে পাঠাচ্ছে৷ আর প্রযুক্তির কল্যাণে তা ফোন ছেড়ে ইন্টারনেটের পাতায় হাজির হতে সময় নিচ্ছে না খুব একটা৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ ইন্টারনেট এবং অ্যামেরিকান লাইফ প্রজেক্টের জরিপ থেকে জানা যাচ্ছে, এক ষষ্ঠমাংশ তরুণ-তরুণীই পরিচিতদের কাছ থেকে মেসেজ আকারে নগ্ন বা অর্ধ নগ্ন ছবি এবং উদ্দীপক বার্তা গ্রহণ করছে৷ আধুনিক ভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘সেক্সটিং'৷
জার্মান সংস্কৃতির কিছু অজানা তথ্য
প্রতিটি দেশেরই বোধ হয় কিছু বিষয় থাকে, যেগুলো বিদেশিদের কাছে নতুন বা অন্যরকম মনে হয়৷ জার্মানিও সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়৷ জার্মান সংস্কৃতির কিছু মজার তথ্য নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: sabelfoto13 - Fotolia.com
চুপ, আজ রবিবার!
জার্মানিতে রবিবার মানই ‘রুয়েটাগ’, অর্থাৎ শব্দহীন দিন৷ শব্দ তৈরি হয় এমন কোনো কাজ করা যায় না এদিন৷ যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে ঘর পরিষ্কার কিংবা দেয়ালে কোনো কিছু লাগানো ইত্যাদি৷ এমনটা করলে আপনাকে প্রতিবেশীর কাছ থেকে অভিযোগ শোনার প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে৷
ছবি: DDRockstar - Fotolia.com
জন্মদিনের শুভেচ্ছা আগে নয়
কখনো কোনো জার্মানকে নির্দিষ্ট দিনের আগে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো যাবে না৷ কারণ এটাকে তাঁরা ‘অশুভ’ মনে করে৷ তাই শুভেচ্ছা পর্ব শুরু হয় জন্মদিনের প্রথম প্রহরে, অর্থাৎ মধ্যরাতে৷
ছবি: pressmaster - Fotolia.com
পানি মানেই ‘বুদবুদ-কণা ওঠা’ পানি
জার্মানদের কাছে পানি মানেই ‘বুদবুদ-কণা ওঠা’ পানি, যেটাকে কার্বনেটেড বা সোডা ওয়াটার বলা হয়৷ আপনার বাড়িতে কোনো অতিথি এলে তাঁকে ‘ট্যাপকল’-এর পানি দেয়াকে অভদ্রতা হিসেবে দেখা হয়৷ অতিথিকে সাধারণত বোতলজাত পানি বা বুদবুদ ওঠা পানি দিতে হয়৷ কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে পানি চাইলেও আপনাকে দেয়া হবে ‘স্পার্কলিং ওয়াটার’, মানে বুদবুদ ওঠা পানি৷
ছবি: mdxphoto - Fotolia.com
প্লিজ মানে ‘হ্যাঁ’, ধন্যবাদ মানে ‘না’
ধরুন আপনি জার্মানিতে কোনো বার-এ গিয়ে বিয়ার পান করছেন৷ ওয়েটার এসে যদি জিজ্ঞেস করে আপনার আরও বিয়ার চাই কিনা – তখন আপনি যদি বলেন ‘ডাংকে’, মানে ধন্যবাদ, তাহলে ওয়েটার বুঝে নেবে যে আপনি আর বিয়ার চান না৷ কিন্তু আপনি যদি বলেন ‘বিটে’, মানে প্লিজ, তাহলে ওয়েটার বুঝবেন হ্যাঁ, আপনার আরও চাই৷
ছবি: fotodesign-jegg.de - Fotolia.com
দুপুরে গরম, রাতে ঠান্ডা
বাঙালির খাবার যেমন গরম হওয়া চাই, জার্মানদেরও তেমনি৷ তবে পার্থক্য একটা আছে৷ জার্মানরা শুধু দুপুরের খাবারটা চান গরম৷ রাতে কিন্তু তাঁরা ঠান্ডা ব্রেড বা রুটির সঙ্গে শূকরের মাংস, পনির, চিজ বা সবজি দিয়ে খেয়ে ফেলেন৷ অনেক সময় শেষ পাতে থাকে নানা রকম ফলও৷
ছবি: Marén Wischnewski - Fotolia.com
অনুবাদ – ইংরেজি থেকে ইংরেজি!
ঢাকাই সিনেমার বাংলা নামের ইংরেজীকরণ নিয়ে অনেক কথা হয়৷ যেমন ‘নিঃস্বার্থ ভালোবাসা’-র ইংরেজি করা হয়েছে ‘হোয়াট ইজ লাভ?’৷ জার্মানিতে ইংরেজি ছবির নামের অনুবাদ করা হয় ইংরেজিতেই! যেমন ‘মেড ইন ম্যানহ্যাটন’-এর ইংরেজি ‘ম্যানহ্যাটন লাভ স্টোরি’৷ ‘ব্রিং ইট অন’-এর অনুবাদ ‘গার্লস ইউনাইটেড’৷ প্রশ্ন করতে পারেন, কেন? উত্তরে বলা যায়, এটা একটা ভালো প্রশ্ন!
ছবি: picture-alliance/dpa
নগ্ন হওয়ার স্থান
এফকেকে মানে হলো ‘ফ্রাইক্যোর্পারকুলটুর’, অর্থাৎ ‘ফ্রি বডি কালচার’৷ কোনো ছুটি কাটানোর স্থানে এই চিহ্নটি থাকার মানে আপনি সেখানে পুরো নগ্ন হয়ে ঘোরাফেরা করতে পারবেন৷ যে-কোনো বয়সের বা লিঙ্গের সবার ক্ষেত্রেই একই নিয়ম প্রযোজ্য৷ তেমন কোনো স্থানে যদি আপনি জামা-কাপড় পরে যান, তাহলে বাকিরা কিন্তু আপনাকে ‘অস্বাভাবিক বিনয়াভিমানী বিদেশি’ বলেই বিবেচনা করবে!
ছবি: sabelfoto13 - Fotolia.com
7 ছবি1 | 7
শুধু তাই নয় জরিপ অনুযায়ী, ১২ বছর বয়সি চার শতাংশ কিশোর-কিশোরী নাকি নিজেদের নগ্ন ছবি ধারণ করে তা পাঠাচ্ছে একে অপরকে! ছড়াচ্ছে ইন্টারনেটে৷ ১৭ বছর বয়সিদের মধ্যে এই হার ৮ শতাংশ৷
১২ থেকে ১৭ বছর বয়সের ৮০০ তরুণ-তরুণীর উপর জরিপ চালায় পিউ ইন্টারনেট এবং অ্যামেরিকান লাইফ প্রজেক্ট৷ তাদের মতে, যেসব তরুণ-যুবা নিজেদের খরচে মোবাইল ব্যবহার করে এবং আনলিমিটেড টেক্সট মেসেজ পাঠানোর সুবিধাপ্রাপ্ত তাদের মধ্যে সেক্সটিং এর প্রবণতা বেশি৷ অন্যদিকে, অভিভাবকের দেয়া মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই প্রবণতা অনেক কম৷ তবে ছেলে-মেয়েরা সমানভাবে অংশ নিচ্ছে সেক্সটিং-এ৷
অবশ্য অনেক তরুণ-তরুণী জানাচ্ছে, পছন্দের জনকে নানা ধরণের উদ্দীপক ছবি বা বার্তা পাঠায় তারা৷ আর সেক্ষেত্রে খুব একটা ভাবনা চিন্তার অবকাশ নেই৷ কিন্তু পিউ-র দাবি, সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর কোন কোন পক্ষ এসব টেক্সট বা ছবি পাঠিয়ে দেয় অন্যদের কাছে, ইন্টারনেটে৷ তখন তা ছড়িয়ে পড়ে সাধারণের মাঝে৷
শুধু মার্কিন মুলুক নয়, সেক্সটিং বেড়ে চলেছে বাংলাদেশ, ভারতের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও৷ এসব অঞ্চলের নানা ওয়েবসাইট বয়ে চলেছে তার নমুনাও৷ আর তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, তরুণ-তরুণী বিশেষত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের সেক্সটিং থেকে দূরে রাখতে এগিয়ে আসতে হবে অভিভাবকদের৷ তাদেরকে বোঝাতে হবে, মোবাইল ফোন ব্যবহারের নিরাপদ দিকগুলো৷ আর তবেই, সেক্সটিং এর প্রবণতা কমানো সম্ভব হতে পারে৷