বক্সিংয়ের দুনিয়ায় তিনি এক চিরস্মরণীয় মানুষ৷ রিংকে যিনি ব্যবহার করেছেন রাজনীতির মঞ্চ হিসেবে৷ বলেছেন কালো মানুষের অধিকারের কথা৷ মোহাম্মদ আলীর কিছু নক আউটের ঝলক থাকলো এই ভাইরাল ভিডিওতে৷
বিজ্ঞাপন
শুধু বক্সার বললে কম বলা হয়৷ তিনি একাধারে গায়ক, অভিনেতা এবং খুব বড় মাপের একজন অ্যাক্টিভিস্ট৷ ষাট সত্তরের দশকে রিংকে তিনি বানিয়েছিলেন রাজনীতির মঞ্চ৷ রাজনীতির মঞ্চকে লড়াইয়ের রিং৷ মোহাম্মদ আলী এখনো চিরস্মরণীয়৷
অ্যাফ্রো-অ্যামেরিকান যখন যুবক,মার্কিন মুলুক তখন সিভিল যুদ্ধের আগুনে জ্বলছে দাউ দাউ করে৷ কৃষ্ণাঙ্গ মানুষের ওপর চলছে অত্যাচার৷ শুধু তাই নয়, পাল্টা লড়াই দিচ্ছেন অ্যাফ্রো-অ্যামেরিকানরাও৷ চলছে আন্দোলন৷
সে সময়েই বক্সিংয়ের রিংয়ে নামেন আলী৷ নক আউটে একের পর এক হারিয়ে দিচ্ছেন বিপক্ষের তারকাদের৷ সকলে তাজ্জব হয়ে দেখছেন৷ সেই আলীই ভিয়েতনামে যেতে রাজি না হওয়ায় জেলে যান৷ তবু নিজের মত থেকে এক পা-ও সরে আসেননি৷ কেড়ে নেওয়া হয় পদক৷ শেষ পর্যন্ত ১৯৭১ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সব কিছুই ফিরে পান তিনি৷ চার বছর পর আবার নামেন রিংয়ে৷ আবার তিনি বিধ্বংসী৷
শেষজীবনে অবশ্য পারকিনসন্সে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ রোগসজ্জা ভোগ করেন৷ ২০১৬ সালের জুন মাসে মৃত্যু হয় তাঁর৷ রেখে যান অবস্মরণীয় কিছু মুহূর্ত৷ তারই ঝলক দেখা যায় এই ভিডিও-তে৷
এসজি/এসিবি
মোহাম্মদ আলী: বক্সার ও শিল্পী
বক্সিং রিং-এ যাঁর হাত এবং মুখ সমান চলতো, সেই মোহাম্মদ আলী সংগীত, চলচ্চিত্র বা শিল্পকলা, সবই পছন্দ করতেন৷
ছবি: picture alliance/Reisfeld/Jackson
অভিনেতা
১৯৭৯ সালের ‘‘ফ্রিডম রোড’’ কাহিনিচিত্রে গিডিয়ন জ্যাকসনের ভূমিকায় অভিনয় করেন আলী৷ সাবেক ক্রীতদাস গিডিয়ন আইনের সব বাধা পেরিয়ে মার্কিন সেনেটের সদস্যপদ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছিলেন৷
ছবি: picture alliance/Reisfeld/Jackson
ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে খ্রিষ্টান সন্ত
মার্কিন ‘‘এস্কোয়ার’’ ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদের জন্য ছবিটি তোলেন কার্ল ফিশার, ১৯৬৭ সালে৷ ইটালির রেনেসাঁস চিত্রকলায় সন্ত সেবাস্তিয়ানের শহিদ হওয়ার যে ছবিটি প্রচলিত আছে, তারই অনুকরণ করা হয়েছে এই আলোকচিত্রটিতে৷ আলী মার্কিন সৈন্য হিসেবে ভিয়েতনাম যুদ্ধে যেতে অস্বীকার করেন এই বলে যে, ‘‘কোনো ভিয়েতকং কখনো আমাকে ‘নিগার’ বলে ডাকেনি৷’’
ছবি: Carl Fischer
মিউজিক্যালের শিল্পী
নিউ ইয়র্কে ব্রডওয়ের ‘‘ব্ল্যাক হোয়াইট’’ মিউজিক্যালটির জন্য এই সাজে সাজেন মোহাম্মদ আলী৷ মোহরত ছিল ১৯৬৯ সালের ২রা ডিসেম্বর তারিখে৷ শো-টি মাত্র সাতবার মঞ্চস্থ হয়৷ আলী সেই সময় মার্কিন সেনাবাহিনীতে যোগদান করতে ও ভিয়েতনামে যুদ্ধ করতে যেতে অস্বীকার করার দরুণ সাসপেন্ডেড ছিলেন৷
ছবি: picture alliance/ASSOCIATED PRESS
আলীর ভূমিকায় আলী
বহু ফিল্ম আর টেলিভিশনের সিরিয়ালে মোহাম্মদ আলী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন মোহাম্মদ আলী, যেমন ‘‘রিকোয়েম ফর এ হেভিওয়েট’’ (১৯৬২), ‘‘বডি অ্যান্ড সোল’’ (১৯৮১) অথবা ‘‘ডুইন’ টাইম’’ (১৯৮৫) ছবিগুলিতে৷ ‘‘আই অ্যাম আলী’’ ২০১৪ সালে তৈরি একটি তথ্যচিত্র৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Universal Pictures
ফিল্মের কাহিনির মতোই জীবন
২০০১ সালে আলীর সেরা ফাইটগুলোকে কেন্দ্র করে যে হলিউড ব্লকবাস্টারটি তৈরি হয়, তাতে আলীর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উইল স্মিথ৷ তবে শুধু বক্সিং-ই নয়, ছবিতে আলিকে রাজনৈতিক আন্দোলনকারী ও ধর্মপ্রাণ মুসলিম হিসেবেও দেখানো হয়েছে৷ ফিল্মটি শেষ হচ্ছে ১৯৭৪ সালে কিনশাসার সেই সুবিখ্যাত ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ দিয়ে, যে ফাইটে জর্জ ফোরম্যানকে পরাস্ত করে মোহাম্মদ আলী আবার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন৷
ছবি: picture-alliance/Mary Evans Picture Library
কবি ও লেখক
মোহাম্মদ আলীর আত্মজীবনীর শীর্ষক হলো ‘‘দ্য সোল অফ এ বাটারফ্লাই’’, ‘একটি প্রজাপতির আত্মা’৷ কন্যা হানার সঙ্গে একত্রে এই আত্মজীবনী লিখেছিলেন আলী৷ বইটিতে আলী ও তাঁর কন্যা হানার কিছু কবিতাও আছে৷ ছবিতে আলী ও তাঁর কন্যাকে তাঁদের বই প্রোমোশনের টুরে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B.Matthews
শিল্পীদের প্রিয়
ফিলিপাইন্সের বক্সিং ফ্যান মার্কো জোসে রেভিল্লা মুগ্ধ হয়ে যে ছবিটি দেখছেন, সেটি রাখা রয়েছে ম্যানিলার ‘আলি মল’-এ৷ ছবিটির শিল্পী মোনিকা জেন ভ্যালেরিও৷ ১৯৭৫ সালে এই ম্যানিলাতেই আলী ও তাঁর বহুকালের প্রতিদ্বন্দ্বী জো ফ্রেজিয়ারের মধ্যে ‘থ্রিল ইন ম্যানিলা’ নামে প্রখ্যাত মুষ্টিযুদ্ধটি অনুষ্ঠিত হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M.R.Cristino
ব্রোঞ্জ মূর্তি
লাস ভেগাস-এর প্ল্যানেট হলিউডে ১৯৯৫ সালের এপ্রিল মাসে একটি ব্রোঞ্জ স্ট্যাচুর মাধ্যমে মোহাম্মদ আলীকে সম্মান জানানো হয়৷ প্রখ্যাত ভাস্কর জন পেটেক মূর্তিটি তৈরি করেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/L. McLendon
অ্যান্ডি ওয়ারহলের আলী
পপ আর্টের খ্যাতনামা শিল্পী অ্যান্ডি ওয়ারহল তাঁর ‘ক্রীড়াবিদ’ পর্যায়ের অঙ্কণগুলির জন্য মোহাম্মদ আলীর ছবি তোলেন ১৯৭৭ সালে৷ সেই পর্যায়ের একটি ছবি প্রদর্শিত হয় ২০১৩ সালের সপ্তম মস্কো শিল্পকলা প্রদর্শনীতে৷ পার্কিনসন্স-এ আক্রান্ত আলী পরলোকগমন করেন ২০১৬ সালের ৩রা জুন তারিখে৷