1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মেয়রদের দ্বন্দ্বে কি বেরিয়ে আসছে থলের বেড়াল?

১০ জানুয়ারি ২০২১

পরস্পরের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্তমান ও সাবেক দুই মেয়রের৷ দুইজনের তথ্য নিয়েই তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে টিআইবি৷

পরস্পরের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) বর্তমান ও সাবেক দুই মেয়রের৷ দুইজনের তথ্য নিয়েই তদন্ত করা প্রয়োজন বলে মনে করে টিআইবি৷
ছবি: Sazzad Hossain und privat

শুরুটা গত মাসে ডিএসসিসি'র ফুলাবাড়িয়া সুপার মার্কেট-২ এর অবৈধ দোকান উচ্ছেদ নিয়ে৷ সেসময় সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন দাবি করেন দোকানগুলো অবৈধ নয়৷ আদালতের নির্দেশে বৈধতা দেয়া হয়েছে৷ কিন্তু বর্তমান মেয়র ফজলে নূর তাপসের দাবি দোকানগুলোর কোনো বৈধতা নেই৷ সেগুলো রাস্তা ও মার্কেটের ভিতরের, লিফটের ও সিঁড়ির জায়গা দখল করে বানানো হয়েছে৷ এরকম দোকান মোট ৯১১টি৷

এসব দোকেনের ব্যবসায়ীরা দাবি করেন তারা সিটি কর্পোরেশনকে দোকান প্রতি ২০ থেকে ৪০ লাখ টাকা দিয়েছেন৷ ওই মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু এরই মধ্যে আদালতে একটি মামলা করেছেন, যা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)৷ মামলায় তিনি অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা দোকানের জন্য সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনকে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা দিয়েছেন৷ এর বাইরেও আরো নগদ টাকা দেয়া হয়েছে সাবেক মেয়রকে৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা কাছে সব ডকুমেন্ট আছে৷ কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কত টাকা দেয়া হয়েছে তার ব্যাংক স্টেটমেন্ট আছে৷ মামলায় এইসব ডকুমেন্ট আমি সংযুক্ত করেছি৷’’ তার আরো অভিযোগ, সাবেক মেয়র তার সহযোগীদের নিয়ে এই টাকা দিতে বাধ্য করেছেন৷ তাই সাঈদ খোকন ছাড়া আরো পাঁচজনকে এই মামলায় বিবাদি করা হয়েছে৷

কোন ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা দেয়া হয়েছে সে স্টেটেমেন্ট আছে: দেলোয়ার হোসেন দেলু

This browser does not support the audio element.

এদিকে শনিবার ঢাকায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের এক প্রতিবাদ সমাবেশে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বর্তমান মেয়র ফজলে নূর তাপসের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন৷ তিনি দাবি করেছেন, ‘‘তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা তার নিজ মালিকানাধীন মধুমতি ব্যাংকে স্থানান্তর করেছেন এবং শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ হিসেবে গ্রহণ করছেন৷ অন্যদিকে, অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গরিব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না৷ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে৷’’

এসব কারণে ফজলে নূর তাপস দক্ষিণ সিটি কের্পোরেশন আইনের লঙ্ঘন করে মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হরিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি৷

এই কথার জবাবে ফজলে নূর তাপস রোববার এক অনুষ্ঠানে সংবাদমাধ্যমকে বলেন,‘‘এটা ওনার (সাঈদ খোকন) ব্যক্তিগত অভিমত৷ এটা কোনো গুরুত্ব বহন করে না৷ ব্যক্তিগত আক্রোশের কোনো বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেয়াটাও সমীচীন মনে করি না৷’’ কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না এই অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এটা ভ্রান্ত কথা৷ এমন বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই৷’’

ফুলবাড়িয়ায় দোকান উচ্ছেদ অভিযান

01:30

This browser does not support the video element.

দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তাপস বলেন, ‘‘যদি কেউ উৎকোচ গ্রহণ করে, যদি কেউ ঘুস গ্রহণ করে, যদি কেউ কোনো কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কমিশন–বাণিজ্য করে, যদি কেউ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে, বিল দেওয়ার জন্য কমিশন বাণিজ্য করে, অর্থ আত্মসাৎ করে থাকে, সে ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়৷ তবে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, এটা কোনোভাবেই সঠিক না৷’’

এনিয়ে রবিবার তাপসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি৷ তবে তার জনসংযোগ বিভাগ থেকে জানানো হয়, এনিয়ে তিনি আলাদাভাবে কথা বলবেন না৷ যা বলার সকালেই (রবিবার) সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন৷

যা বলার প্রকাশ্যে বলেছি:সাঈদ খোকন

This browser does not support the audio element.

তবে সাঈদ খোকন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমি যা বলার প্রকাশ্যে বলেছি৷ এখন তার (তাপস) দায়িত্ব হলো আত্মপক্ষ সমর্থন করা, আমার কথা ডিফেন্ড করা৷ তিনি কী বলেন তা দেখার অপেক্ষায় আছি৷’’ তার নিজের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আছে সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘এটা সাবজুডিজ ম্যাটার৷ তদন্তেই জানা যাবে৷ সাব জুডিজ ম্যাটার নিয়ে আমি কথা বলি না৷’’

সাবেক ও বর্তমান মেয়রের বাকযুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দুর্নীতির বিষয়গুলো প্রকাশ হচ্ছে বলে মনে করেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান৷ তিনি বলেন, ‘‘দুই জনই যেসব কথা বলেছেন তা যদি তথ্য ভিত্তিক হয় তাহলে দুদকের উচিত হবে তদন্ত করে দেখা৷ তাতে বর্তমান ও সাবেক যেকারো বিরুদ্ধে যদি দুর্নীতির প্রমাণ মেলে তাহলে ব্যবস্থা নেয়া দরকার৷’’

তিনি বলেন, ‘‘সিটি কর্পোরেশন অনেক ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে যুক্ত৷ এখানে নানা ধরনের ক্রয় ও টেন্ডার থাকে৷ তাই এখানে দুর্নীতি ও অনিয়মের অনেক ঝুঁকি রয়েছে৷ বাংলাদেশের যে নিয়ম তাতে সাবেকদের ব্যাপারে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে৷ কিন্তু বর্তমানরা যে এর বাইরে তা সব সময় বলা যায় না৷’’

তার মতে, ‘‘এখানে সিন্ডিকেট কাজ করে৷ আর সেটা একক নয়৷ এরসঙ্গে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধরাও যুক্ত থাকেন৷ তাদের সহযোগিতা ছাড়া দুর্নীতি সম্ভব নয়৷’’

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ