জার্মানির রাজধানী বার্লিনের একটি মেট্রো স্টেশনে ২৭ অক্টোবর মধ্যরাতে একজন মেয়ে সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামছিল৷ সেই সময় হঠাৎ পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় এক ব্যক্তি৷ শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷
বিজ্ঞাপন
সম্প্রতি ঐ ঘটনার ভিডিও প্রকাশ করে পুলিশ৷ এতে দেখা যায়, অভিযুক্ত ঐ ব্যক্তির সঙ্গে আরও তিনজন ছিল৷ তার এক হাতে ছিল সিগারেট, আরেক হাতে পানীয়ের বোতল৷ মেয়েটি সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করার পর যুবকটি তাঁর পেছনে গিয়ে পা দিয়ে আঘাত করে৷ সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি মুখ থুবড়ে সিঁড়ির একেবারে নীচে পড়ে যায়৷ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, যুবকটি ঐ কাজ করার পর নিশ্চিন্ত মনে হেঁটে চলে যাচ্ছে৷ তার সঙ্গে থাকা অন্যরাও একই কাজ করছে৷ শুধু তাদের মধ্যে একজনকে সিঁড়িতে পড়ে থাকা বোতল কুড়াতে দেখা গেছে৷ এরপর সেও চলে যায়৷
Shocking video of woman being kicked in Berlin
00:37
পুলিশ বলছে, ঐ ঘটনার আগে মেয়েটির সঙ্গে ঐ যুবকদের কোনো কথা কাটাকাটি বা প্ররোচনামূলক কিছু ঘটেনি৷ আশেপাশের কয়েকজন মেয়েটির সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল৷ পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল৷
পুলিশ ঐ ব্যক্তিকে শনিবার বার্লিন থেকে গ্রেপ্তার করেছে৷ তবে তার নাম, পরিচয় প্রকাশ করেনি৷
অবশ্য জার্মানির বহুল প্রচারিত পত্রিকা ‘বিল্ড' বলছে, যুবকটি বুলগেরিয়া থেকে কয়েক মাস আগে নির্মাণ শিল্পে কাজ করতে বার্লিন এসেছিল৷ বুলগেরিয়ায় তার স্ত্রী ও তিন সন্তান আছে৷ দেশেও তার বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি ও লুটপাটের অভিযোগ ছিল৷ বুলগেরিয়ার একটি পত্রিকার বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানায় বিল্ড৷
ভিডিও প্রকাশের পর অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েন৷ তাঁদের মধ্যে একজন মিশায়েল ক্যুর৷ তিনি লেডি গাগা, অ্যাঞ্জেলিনা জোলি সহ অনেক তারকার বডিগার্ড হিসেবে কাজ করেছেন৷ অপরাধীকে ধরতে তিনি দুই হাজার ইউরো পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘সকালে খাওয়ার সময় আমি যখন ভিডিওটি দেখি তখন আমার প্রায় বমি করার উপক্রম হয়েছিল৷'' আরেক ব্যবসায়ীও ঘটনার সমাধানে ১০ হাজার ইউরো দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন৷ এর মধ্যে পাঁচ হাজার ইউরো তাঁকে দিবেন বলেছিলেন যিনি ঐ যুবকের খোঁজ দিতে পারবেন৷ আর বাকি অর্থ দেয়া হবে আহত মেয়েটিকে, যেন তিনি ব্যাথা ভুলতে কোথাও ছুটি কাটাতে যেতে পারেন৷
মেয়েদের জন্য সেরা দেশ
২০১৬ সালে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন ফান্ড’ ১৪৪টি দেশে মেয়েদের পরিস্থিতি বিচার করে একটি ‘গার্লস অপরচুনিটি ইনডেক্স’ তৈরি করে৷ সূচকে ছিল বাল্যবিবাহ, কিশোরী মাতৃত্ব, প্রসূতিমৃত্যু, মহিলা সাংসদদের অনুপাত ও স্কুলের পড়াশুনা৷
ছবি: picture alliance / empics
তালিকার শীর্ষে সুইডেন
তাতে সম্ভবত কেউই বিশেষ আশ্চর্য হবেন না৷ মেয়েদের সুযোগ-সম্ভাবনার তালিকা যেন শুরুই হচ্ছে ইউরোপের উত্তরে সুইডেন, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে - সেখান থেকে নেমে আসছে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক হয়ে স্লোভেনিয়ায়...
ছবি: Getty Images/D. Ramos
১২ নম্বরে জার্মানি
স্লোভেনিয়ার পর পর্তুগাল, সুইজারল্যান্ড, ইটালি, স্পেন হয়ে তবে জার্মানি৷ জার্মানির পরপরই অস্ট্রিয়া ও লুক্সেমবুর্গ৷ তারপর আসছে...
ছবি: Reuters/M. Dalder
১৫ নম্বরে ব্রিটেন
‘স্পাইস গার্লস’দের দেশ ব্রিটেনে যে মেয়েরা বেশি সুযোগ পাবে, সেটা ধরে নেওয়াটা বোধহয় ভুল হতো, কেননা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর ইনডেক্সে যে ইন্ডিকেটরগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলি সামগ্রিক৷
ছবি: picture alliance / empics
২১ নম্বরে অস্ট্রেলিয়া
ইউএনডিপি’র হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্সে এই দেশ কিন্তু দ্বিতীয় স্থানে৷ ‘গার্লস অপরচুনিটি ইনডেক্স’-এ অস্ট্রেলিয়ার এতটা নেমে যাওয়ার কারণ মহিলা সাংসদদের স্বল্পতা ও কিশোরী মাতৃত্বের অপেক্ষাকৃত উচ্চ হার৷ যুক্তরাজ্য (১৫) বা ক্যানাডার (১৯) স্থানও মূলত ঐ দু’টি কারণে৷
ছবি: Getty Images/S. Barbour
৩২ নম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন তালিকায় যে দেশ অষ্টম, তার স্থান মেয়েদের সুযোগ-সম্ভাবনার বিচারে কাজাখস্তান (৩০) ও আলজেরিয়া (৩১)-এর চেয়েও নীচে৷ এর কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কিশোরী মাতৃত্ব ও প্রসূতি মৃত্যুর হার অনুরূপ ধনী দেশগুলির তুলনায় বেশি৷ ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র্রে প্রতি এক লক্ষ শিশুর জন্মে ১৪ জন প্রসূতি মারা যান, যেখানে পোল্যান্ড, গ্রিস বা ফিনল্যান্ডে প্রতি এক লাখ শিশুর জন্মে তিনজন করে মা প্রাণ হারান৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Rain
৬০ নম্বরে শ্রীলঙ্কা
উপমহাদেশের দিকে নজর দিলে, সবচেয়ে ভালো ফলাফল করেছে শ্রীলঙ্কা...
ছবি: Messe Berlin
৮৮ নম্বরে পাকিস্তান
এটাকেও চমক বলা চলে...
ছবি: Mirza Tours
৯০ নম্বরে ভারত
এটাকে চমক বলা চলে না...
ছবি: Getty Images/AFP/N. Seelam
১১১ নম্বরে বাংলাদেশ
বাদবাকি উপমহাদেশের মতোই, এখানেও অনেক কিছু করা বাকি৷
ছবি: N.Seelam/AFP/GettyImages
১৪৪ নম্বরে নাইজার
বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলির মধ্যে পড়ে৷ নাইজারের মতো দেশে দারিদ্র্যকেই মেয়েদের দুরবস্থার মূল কারণ বলে ধরে নেওয়া চলে৷