নরসিংদীর এক গ্রামে চার বছরের একটি মেয়ে বাবার সাথে মসজিদে নামাজ পড়তে যায়৷ সেই ঘটনাকে ঘিরে সংঘর্ষ বাঁধলে একজন নিহত হন।
বিজ্ঞাপন
ইসলামি চিন্তাবিদরা বলছেন, চার বছরের মেয়ে শিশুর মসজিদে বাবার সঙ্গে নামাজ পড়তে যেতে কোনো বাধা নেই। এটাকে ইস্যু করে সংঘর্ষ এবং একজনের মৃত্যু খুবই দুঃখজনক।ইসলাম সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাবে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। গত বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগরইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের আড়ো নামক এলাকার একটি মসজিদে এই ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত লাল চান মিয়া (২৮) রবিবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অববস্থায় মারা যান।
স্থানীয় পর্যায়ে কয়েকজনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাহাদুরপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম তার চার বছরের মেয়েকে নিয়ে পাশের বাড়ির মসজিদে যান নামাজ পড়তে। তিনি মেয়েকে নিয়ে ইমামের পেছনের সারিতে দাঁড়ান। এতে আপত্তি জানান প্রতিবেশী আলাল উদ্দিন। নামাজ শেষে এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হাতাহাতিতে রূপ নিলে আলাল উদ্দিন আহত হন।
পরে রাতে দুই পরিবারের লোকজনের মধ্যে ফের সংষর্ষ হয়। সংঘর্ষে এর আগে আহত আলালউদ্দিনকে দেখতে আসা তার ভাগ্নে লাল চাঁন মিয়া ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন। তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকার উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। রবিবার দুপুরে তিনি সেখানে মারা যান।
নানা ধর্মে ধর্মীয় আচারে প্রথাভাঙা নারীরা
অনুসারীর সংখ্যায় এগিয়ে থাকা সবগুলো ধর্মেই প্রথা অনুযায়ী নারীরা উপাসনালয় বা ধর্মীয় আচারে নেতৃত্ব দিতে পারেন না৷ তবে সমান অধিকারের দাবিতে সেই প্রথা ভাঙার অনেক উদাহরণও আছে৷
ছবি: Lucas Barioulet/AFP/Getty Images
স্বীকৃতি না মিললেও পাদ্রি
চার্চে নারীরা পাদ্রিদের সহযোগী হিসেবে কিছু দায়িত্ব পালনের স্বীকৃতি পেলেও পাদ্রি হওয়ার অনুমতি নেই৷ তবে অনেক দেশের নারীরা ভ্যাটিকানের এই নিয়ম মানতে রাজি নন৷ তারাও দীক্ষা নিয়ে চার্চ প্রধান হতে চান৷ সেই সুযোগ করে দিচ্ছে রোমান ক্যাথলিক উইমেন প্রিস্টস অর্গ্যানাইজেশন৷ ভোগ ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তাদের অধীনে ২০৫ জন নারী পাদ্রি আছেন৷ তারা স্বাধীনভাবে পরিচালিত বিভিন্ন চার্চে দায়িত্ব পালন করছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Rumpenhorst
মসজিদেও ব্যতিক্রমী চিত্র
কিছু দেশে পুরুষদের ইমামতিতে নারীরা আলাদাভাবে জামাতে অংশ নিতে পারেন৷ মধ্যপ্রাচ্যসহ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে তাদের ইমামতির অনুমতি নেই৷ তবে ক্যানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপের কিছু দেশে নারী ইমামের নেতৃত্বে নারী মুসল্লিদের নামায পড়ার নজির আছে৷ ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ৬০ জন নারী-পুরুষ ফ্রান্সের একটি মসজিদে দুই নারীর ইমামতিতে জামাতে অংশ নেয়ার খবর আসে রেডিও ফ্রান্সে৷ (ছবি: ফ্রান্সের ইমাম কাহিনা বাহলুল)
ছবি: Lucas Barioulet/AFP/Getty Images
বার্লিনের নারী ইমাম সাইরান আতিস
আরো ব্যতিক্রমী উদাহরণ তৈরি করেছেন সাইরান আতিস৷ তুর্কি বংশোদ্ভূত এই জার্মান প্রশিক্ষণ নিয়ে বার্লিনের ইবনে রুশদগ্যোটে মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন৷ ২০১৭ সালে আতিস নিজেই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ সেখানে যেকোনো ধর্মের মানুষেরই প্রবেশাধিকার রয়েছে এবং নারী-পুরুষ একসঙ্গেই প্রার্থনায় অংশ নিতে পারেন৷ আতিস ২০১৭ সালে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘‘আমাদের মসজিদে কাউকে নিকাব বা বোরকা পরে আসতে হবে না৷’’
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Gambarini
ইতিহাস বদলানো দুই নারী
ঐতিহ্যগতভাবে হিন্দু ধর্মে ঋতুমতী নারীদের মন্দিরে প্রবেশ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বাধা দেয়া হয়৷ ২০১৮ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এর বিরুদ্ধে রায় দেয়৷ এরপর ঋতুমতী অবস্থায় কেরালার শবরীমালার ‘আয়াপ্পা’ মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েন দুই নারী৷ ঘটনাটি ভারতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে৷ রক্ষণশীল হিন্দুরা ঋতুমতী নারীদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার পুনর্বহাল চাইলে সুপ্রিম কোর্ট নতুন আইন তৈরির কথা জানায়৷
ছবি: Getty Images/A. Sankar
রীতি ভেঙে পৌরোহিত্যে
প্রথা অনুযায়ী হিন্দুদের পূজা বা বিয়েতে নারীরা পুরোহিত হতে পারেন না৷ তবে এই নিয়ম ভাঙার চেষ্টা করছেন অনেকে৷ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতির শিক্ষক নন্দিনী ভৌমিক পুরোহিত হিসেবে একাধিক বিয়ে পড়িয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন৷ মহারাষ্ট্রেও একটি পুরোহিত পাঠশালা নারীদের পৌরোহিত্যের দীক্ষা দিয়ে আসছে৷ দু'জন হিন্দু বিধবাকে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের একটা মন্দিরে পুরোহিত হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল ২০১৬ সালে৷
ছবি: PURONATUN/Arshavi Banerjee
মিয়ানমারে এক নারী ভিক্ষুর লড়াই
মিয়ানমারসহ দক্ষিণ-র্পূব এশিয়ার দেশগুলোতে নারী ভিক্ষুরা পুরুষের সমান মর্যাদা পান না৷ অনেক বৌদ্ধ স্থাপনায় তাদের প্রবেশ নিষেধ৷ এমনকি বসা যায় না পুরষ ভিক্ষুদের সামনেও৷ মিয়ানমারে এই পরিস্থিতি বদলাতে চান কেতুমালা৷ সমঅধিকার আর মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি ফাউন্ডেশন৷ এই সংস্থাটির ৪,৮০০ টি বৌদ্ধ শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে৷ নারী ভিক্ষুদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিও চালু করেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/S. A. Main
6 ছবি1 | 6
তার বড় ভাই কামাল বাদশা দাবি করেন, ‘‘আমরা ভাই কোনো সংঘর্ষে জড়িত ছিল না। সে শুধু মামা আলাল উদ্দিন আহত হওয়ার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিল। তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুনেছি, ছোট একটি মেয়েকে নিয়ে তার বাবা নুরুল ইসলাম মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়তে গেলে আলাল উদ্দিনের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। তার জেরেই পরে সংঘর্ষে লাল চাঁন নিহত হন।’’
লাল চাঁনের খালাতো ভাই হযরত আলী বলেন, ‘‘একটি মেয়ে শিশুকে মসজিদে নামাজ পড়তেনিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে সংঘর্ষ হয়। কিন্তু লাল চাঁন সংঘর্ষে জড়িত ছিল না। সে ঘটনার শিকার৷’’
যিনি তার মেয়েকে নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন সেই নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয় সূত্র জানায়, তিনিও মামলার আসামি। তাই তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। পুলিশ হত্যা মামলার আসামিদের ধরতে তৎপর রয়েছে।
ওই এলাকার ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার আবু চাঁন জানান, ‘‘মসজিদে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ায় নুরল ইসলামকে আলাল উদ্দিন আপত্তিকর কথা বলেন। তিনি মেয়েকে নিয়ে ইমামের পিছনের সারিতে ছিলেন। নামাজ শেষে এটা নিয়ে কথা কটাকাটির এক পর্যায়ে আলাল দ্দিনকে ঘুষি মারেন নুরুল ইসলাম। পরে রাতে আলাল উদ্দিনের কাছে তার দুই ভাগ্নে এলে দুই পরিবারের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।” তিনি বলেন, "আলাল উদ্দিন এই এলাকায় নতুন বাড়ি করেছেন। তাকে মাগরিবের নামাজের পর মারধর করা হয়েছে খবর পেয়ে তার ভাগ্নেরা রাতে আসেন।’’
রায়পুরা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) গোবিন্দ সরকার জানান, ‘‘মারামারির ঘটনায় আগেই মামলা হয়েছে। সেই মামলাই হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে। একজন আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’’ তিনি অবশ্য আসামির সংখ্যা এবং গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির নাম জানাননি।
ওই এলাকায় এখন গ্রেপ্তার আতঙ্ক চলছে। অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে রাতে সংঘর্ষের পর রায়পুরা থানায় আলাল উদ্দিন যে মামলা করেছেন, তাতে মসজিদের ঘটনা উল্লেখ করা হয়নি। তিনি অভিযোগ করেছেন, নানা বিষয় নিয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে তাদের ওপর হামলা করা হয়। তিনি মামলায় মোট ১২ জনকে আসামি করেছেন।
‘‘মেয়েরা বালেগ হলেও মসজিদে নামাজ পড়তে পারেন’’
তবে মসজিদের ঘটনা প্রসঙ্গে ইমলামিক ফাউন্ডেশনের ইমাম প্রশিক্ষণ অ্যাকাডেমির পরিচালক মওলানা আনিসুজ্জামান শিকদার বলেন , ‘‘শিশুদের মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ায় কোনো বাধা নেই। সে ছেলে বা মেয়ে শিশু যা-ই হোক না কেন। আর মেয়েরা ‘বালেগ' হলেও মসজিদে নামাজ পড়তে পারেন। পর্দা মেনে আলাদা লাইনে মসজিদে নারীরা নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদে নববী, কাবা শরীফে নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে। রসুল (সা.)-এর সময়েও নারীরা মসজিদে নামাজ পড়তেন। ঢাকার বায়তুল মেকাররম জাতীয় মসজিদেও ছয় হাজার নারীর আলাদা নামাজের ব্যবস্থা আছে।’’
তবে তিনি বলেন, ‘‘হযরত ওমর ফারুক (রা.)- যখন খলিফা হন, তখন তিনি নারীদের মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে নিরুৎসাহিত করতেন। কারণ, কেউ কেউ নারীদের আপত্তিকর কথা বলতেন।পরে এটা কেউ মেনেছেন, কেউ মানেননি। কারণ, রসুল নিজেই নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছেন।’’
‘‘চার বছরের শিশুর ওপর শরিয়তই কার্যকর না’’
ঢাকার ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদের ইমাম মুফতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘‘মেয়ে শিশুরা মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পারবে না- এটা অহেতুক কথা। আর চার বছরের শিশুর ওপর তো শরিয়তই কার্যকর না। সব শিশুই যেতে পারবে। নারীরাও পর্দা মেনে, নিয়ম মেনে মসজিদে নামাজ পড়তে পাবেন।’’
তিনি জানান, ‘‘রসুল (সা.) জুমার দিনে খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন শিশু হাসান ও হোসাইন (রা.) হেলেদুলে মসজিদে আসেন। তখন খুতবা থামিয়ে ওনাদের দুইজনকে কোল নিয়ে আবার খুতবা দিয়েছেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘আসলে ইসলামকে সঠিকভাবে জানা প্রয়োজন। অনেকেই না জেনে ইসলামের নামে নানা কথা বলেন। অনেক কিছু দেশে প্রচলিত আছে, সেটাতে অনেকে ইসলামের বিধান মনে করেন। এই প্রচলিত জিনিসকে ইসলামের সাথে মিলিয়ে ফেলা ঠিক না।’’ তারা দুইজনই মনে করেন, শিশুরা যাতে নামাজ শেখে সেজন্য তাদের মসজিদে নিয়ে যাওয়া উচিত৷
ঢাকার দশটি প্রাচীন মসজিদ
ঢাকাকে বলা হয় মসজিদের শহর৷ মূলত মুঘল আমল থেকেই মসজিদের শহরে পরিণত হয় ঢাকা৷ নতুন নতুন মসজিদের পাশাপাশি প্রাচীন আমলের অনেক মসজিদ এখনো বিদ্যমান ঢাকা শহরে৷ রাজধানীর প্রাচীন দশটি মসজিদ নিয়ে এই ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিনত বিবির মসজিদ
পুরনো ঢাকার নারিন্দা এলাকায় অবস্থিত মধ্যযুগীয় মসজিদ৷ ঢাকার সবচেয়ে পুরাতন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম এটি৷ ৮৬১ হিজরি বা ১৪৫৭ খ্রিস্টাব্দে সুলতান নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহের শাসনামলে মারহামাতের কন্যা মুসাম্মাত বখত বিনত বিবি এই মসজিদটি নির্মাণ করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
চক বাজার শাহী মসজিদ
পুরানো ঢাকার চকবাজারে অবস্থিত মুঘল আমলের মসজিদ৷ মুঘল সুবেদার শায়েস্তা খান এটিকে ১৬৭৬ খ্রিস্টাব্দে নির্মাণ করেন৷ তিনটি গম্বুজ আর বিশাল মিনার এ মসজিদটির মূল আকর্ষণ৷
ছবি: DW/M. Mamun
কর্তালাব খান মসজিদ
পুরনো ঢাকার বেগম বাজারে অবস্থিত এ মসজিদটি বেগম বাজার মসজিদ নামেও পরিচিত৷ ১৭০১ থেকে ১৭০৪ সালের মধ্যে নির্মিত এই মসজিদটি তৎকালীন দেওয়ান মুর্শিদ কুলি খানের নামে করা হয়৷ মুর্শিদ কুলি খান কর্তালাব খান নামেও পরিচিত ছিলেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
তারা মসজিদ
পুরানো ঢাকার আরমানিটোলায় আবুল খয়রাত সড়কে অবস্থিত৷ আঠারো শতকের শুরুর দিকে মির্জা গোলাম পীর নামে এক ধনাঢ্য ব্যক্তি এ মসজিদ নির্মাণ করেন৷ পরে ১৯২৬ সালে ঢাকার ব্যবসায়ী আলী জান ব্যাপারী মসজিদটির সংস্কার করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
মুসা খান মসজিদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে মুসা খাঁর মসজিদ নির্মিত হয় আনুমানিক ১৬৭৯ সালে৷ ধারণা করা হয় যে, মসজিদটি ঈশা খাঁ’র পুত্র মুসা খান নির্মাণ করেন৷ এ মসজিদ প্রাক-মুঘল স্থাপত্যের একটি নিদর্শন৷
ছবি: DW/M. Mamun
হাজী শাহবাজ মসজিদ
ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ৷ মুঘল শাসনামলে শাহজাদা আযমের সময়কালে ১৬৭৯ খ্রিস্টাব্দে এ মসজিদটি নির্মিত হয়৷ হাজী শাহবাজ নামে একজন অভিজাত ধনী ব্যবসায়ী এটি নির্মাণ করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
লালবাগ শাহী মসজিদ
ঢাকার লালবাগ কেল্লার পাশে অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ৷ ১৭০৩ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন ঢাকার উপ-শাসক সম্রাট আওরঙ্গজেবের প্রপৌত্র ফর্রুখশিয়রের পৃষ্ঠপোষকতায় এটি নির্মিত হয়৷
ছবি: DW/M. Mamun
খান মহম্মদ মৃধার মসজিদ
পুরনো ঢাকার লালবাগের আতশখানায় অবস্থিত প্রাচীন মসজিদ৷ এটি ১৭০৬ খ্রিস্টাব্দে নায়েবে নাযিম ফররুখশিয়ারের শাসনামলে ঢাকার প্রধান কাজী ইবাদুল্লাহ’র আদেশে খান মহম্মদ মৃধা এ মসজিদটি নির্মাণ করেন৷ বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এই মসজিদের রক্ষণাবেক্ষণ করে৷
ছবি: DW/M. Mamun
কসাইটুলি মসজিদ
পুরান ঢাকার কসাইটুলির কে পি ঘোষ রোডের এ মসজিদ ‘কাস্বাবটুলি জামে মসজিদ’ নামে পরিচিত৷ এর আরেক নাম ‘চিনির টুকরা মসজিদ’৷ হিজরি ১৩৩৮ সনে জনৈক ব্যবসায়ী আবদুল বারি এ মসজিদটি নির্মাণ করেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ
পুরান ও নতুন ঢাকার মিলনস্থলে ১৯৫৯ সালে এ মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নেন তৎকালীন ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ ইব্রাহিম বাওয়ানি৷ পরবর্তীতে ১৯৬০ সালের ২৭ জানুয়ারি এই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়৷ এই মসজিদে একসঙ্গে ৪০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন৷ বায়তুল মোকাররম মসজিদের মূল অবকাঠামো মক্কা শরীফ এর কাবা এর মতো৷ এটি বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ৷