জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ের বলেছেন, অস্ট্রিয়া থেকে জার্মানিতে শরণার্থী আসার সংখ্যা অনেক কমে এসেছে৷ এমন চলতে থাকলে মে মাসের মাঝামাঝি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ তুলে দেয়া হতে পারে৷
বিজ্ঞাপন
অস্ট্রিয়ার প্রচারমাধ্যম ওআরএফ-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে ডেমেজিয়ের বলেন, মার্চ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৪০ জন শরণার্থী অস্ট্রিয়া সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জার্মানিতে প্রবেশ করেছে৷ গত সেপ্টেম্বরে সংখ্যাটা ছিল প্রায় ১০ হাজার৷ সে কারণে অস্ট্রিয়া-জার্মানি সীমান্তে সাময়িক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে জার্মানি৷
শরণার্থী প্রবেশ ঠেকাতে অস্ট্রিয়া তাদের সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করায় এবং শরণার্থীদের ব্যবহার করা বলকান রুট বন্ধ করে দেয়ায় অস্ট্রিয়া থেকে জার্মানিতে শরণার্থী প্রবেশের সংখ্যা কমেছে বলে জানান ডেমেজিয়ের৷
19051349
এদিকে, বলকান রুট বন্ধ থাকায় শরণার্থীরা এখন অস্ট্রিয়া-ইটালি সীমান্তের ‘ব্রেনার পাস' ব্যবহার করে অস্ট্রিয়া, জার্মানি সহ উত্তর ইউরোপের দেশগুলোতে আসার চেষ্টা করতে পারে৷ সেটা যদি হয় তাহলে অস্ট্রিয়া সেখানেও কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রণ করবে বলে জানিয়েছে৷ এ ব্যাপারে অস্ট্রিয়াকে জার্মানির সহায়তা করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জার্মানির পরিবহণমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডোবরিনড্ট৷ এর ফলে জার্মানিতে যে শরণার্থীরা স্বাগত নয় তেমন একটি সংকেত দেয়া যাবে বলে মনে করেন তিনি৷ উল্লেখ্য, ডোবরিনড্ট-এর দল সিএসইউ সরকারের অংশ হলেও চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের শরণার্থী নীতির বড় সমালোচক৷
শরণার্থীদের প্রিয় জার্মানি, আরো প্রিয় ম্যার্কেল
শরণার্থীদের নিয়ে একটা ছবি সবারই নজর কেড়েছে৷ প্ল্যাকার্ড হাতে এক শিশু, প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘‘উই ওয়ান্ট জার্মানি’’৷ অনেকেই এসে পৌঁছেছেন তাঁদের কাঙ্খিত ঠিকানা জার্মানিতে৷ পছন্দের মানুষ ম্যার্কেলের দেশে এসে খুশি তাঁরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bernd von Jutrczenka
জার্মানিকে চাই...
সেই ছবি৷ বুদাপেস্টে তখন শরণার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে৷ অস্ট্রিয়া বা জার্মানির উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করতে না পারায় তাঁরা ক্ষুব্ধ৷ সবাই ছুটছিলেন প্ল্যাটফর্মের দিকে৷ পুলিশ ফিরিয়ে দিলো৷ স্টেশনের বাইরে শুরু হলো বিক্ষোভ৷ কারো কারো হাতে তখন ট্রেনের টিকিট৷ কেউ ক্ষোভ জানালেন কোলের সন্তানকে নিয়ে৷ অনেক শিশুর হাতে দেখা গেল, ‘উই ওয়ান্ট জার্মানি’ লেখা কাগজ৷ ইউরোপে এত দেশ থাকতে কেন জার্মানি?
ছবি: Reuters/L. Foeger
আছে নব্য নাৎসি, পুড়েছে শরণার্থী শিবির, তবুও...
জার্মানির কোথাও কোথাও শরণার্থীবিরোধী বিক্ষোভ দেখা গেছে৷ অনেক জায়গায় রাতের অন্ধকারে আশ্রয় শিবিরে লেগেছে আগুন৷ তারপরও অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জার্মানিকেই বেছে নিতে চায়৷
ছবি: Getty Images/M. Rietschel
বড় কারণ ম্যার্কেল এবং...
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ব্যাপারে শুরু থেকেই উদার জার্মানি৷ চ্যান্সেলর ম্যার্কেল সবসময়ই অভিবাসী এবং অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পাশে ছিলেন৷ পেগিডা আন্দোলনের সময়ও সরকারের অভিবাসীদের পাশে থাকার কথা স্পষ্ট করেই বলেছেন ম্যার্কেল৷ পাশে থেকেছেও৷ জার্মানির সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষও ছিল তাঁর পাশে৷ এখনও আছে৷ এই বিষয়গুলোও মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের মনে জার্মানির প্রতি আরো আস্থাশীল করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/NDR
তোমাদের স্বাগত
অভিবাসনপ্রত্যাশীরা জার্মানিতে পা রেখেই দেখেছে অবাক হওয়ার মতো দৃশ্য৷ এখানে তাঁরা অনাহূত নয়৷ নিজের দেশ থেকে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে এসে জার্মানিতে পাচ্ছেন সাদর সম্ভাষণ!
ছবি: Getty Images/A. Beier
জার্মানির নেতৃত্বে ম্যার্কেল, ইউরোপের নেতৃত্বে জার্মানি
বৃহস্পতিবার আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, শরণার্থীদের বিষয়ে জার্মানির ভূমিকা হতে হবে অনুসরণীয়, দৃষ্টান্তমূলক৷ জার্মানির সংসদের নিম্নকক্ষ বুন্ডেসটাগে বক্তব্য রাখার সময় তিনি আরো বলেন, অভিবাসন সংকট মোকাবেলায় ইউরোপকেও সফল হতে হবে৷
দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষটিকে শরণার্থীরা নিজেদের একজন হিসেবেই বরণ করে নিয়েছিলেন৷ শরণার্থীদের সঙ্গে বন্ধুর মতোই সময় কাটিয়েছেন ম্যার্কেল৷ কয়েকজন শরণার্থী তাঁর সঙ্গে সেলফি তুলতে চেয়েছিলেন৷ সানন্দে তাঁদের আশা পূরণ করেছেন ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Michael Sohn
7 ছবি1 | 7
লেসবসে যাবেন পোপ
গ্রিসের লেসবসে থাকা শরণার্থীদের অবস্থা দেখতে আগামী সপ্তাহে সেখানে যাবেন পোপ ফ্রান্সিস৷ গ্রিসের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এএফপি বলছে, আগামী ১৪ কিংবা ১৫ তারিখ পোপ লেসবসে যাবেন৷ সঙ্গে থাকবেন ইস্টার্ন অর্থোডক্স চার্চের প্রধান৷ গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস তাঁদের সঙ্গে থাকবেন৷
পোপ সেখানে এমন সময় যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন যখন ইইউ-তুরস্ক চুক্তির আওতায় লেসবস সহ গ্রিসের অন্যান্য এলাকা থেকে প্রত্যাখ্যাত অভিবাসনপ্রত্যাশীদের তুরস্কে পাঠানো হচ্ছে৷ তবে এভাবে তুরস্ক যাওয়া ঠেকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন লেসবসে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীরা৷
জেডএইচ/ডিজি (এএফপি, রয়টার্স)
মে মাসে সীমান্তে নিয়ন্ত্রম তুলে দেওয়াটা কি জার্মানির উচিত হবে? আপনি কী মনে করেন?