1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোদীর সফর নিয়ে ভারতীয়দের ভাবনা

৬ মার্চ ২০২০

ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে থাকবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ সাম্প্রতিক সময়ে দিল্লিতে মুসলমানদের উপর হামলার পর মোদীর সফরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে বাংলাদেশে৷ প্রশ্ন তুলছেন ভারতীয়রাও৷

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে যোগ দিতে ঢাকা আসবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীছবি: AFP/P. Singh

তাঁরা বলছেন, এমন অনুষ্ঠানে ব্যক্তি মোদীর অবস্থান কতটা সমীচীন? ভারতের শাসক দলের হাত ধরে যে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির চাষ হচ্ছে গোটা দেশ জুড়ে, তা কি আদৌ বঙ্গবন্ধুর ভাবমূর্তির সঙ্গে যায়?

শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ যতটা একাত্ম, ততটাই একাত্ম ভারতের বাঙালিরা৷ শুধু বাঙালি নয়, বঙ্গবন্ধুর প্রতি আম ভারতীয়ের এক অন্যরকম দৃষ্টিভঙ্গি আছে৷ উদারপন্থি ভারতীয়দের কাছে মহাত্মা গান্ধীর যে সম্মান, ততটাই সম্মান বঙ্গবন্ধুর৷ এহেন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্বের জন্মশতবার্ষিকীতে নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতি কতটা বাঞ্ছনীয়, তা নিয়ে ভারতের এক বড় অংশের মানুষ সন্দিহান৷ ঠিক যতটা তাঁরা উদ্বিগ্ন ছিলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত বিশ্বভারতীর সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোদীর অংশগ্রহণ নিয়ে৷

লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বরাবরই নিবিড়৷ শেখ মুজিব আমাদের সকলের কাছে বঙ্গবন্ধু৷ বাংলাদেশের মানুষের কাছেও ভারত নিয়ে একটা মস্ত আবেগ বরাবর কাজ করে৷ আমরা বন্ধু৷ কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেই জায়গাটাই নষ্ট হতে বসেছে৷ এটা আমাদের কাছে লজ্জার৷ যে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সোনার সম্পর্ক, তার সঙ্গে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে, দাঙ্গা নিয়ে আমাদের তিক্ততা তৈরি হল৷ এর দায় মোদীকেই নিতে হবে৷''

দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, শিক্ষাবিদ এবং সাহিত্যিক পবিত্র সরকার৷ সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে তাঁর স্পষ্ট মত, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়ে নরেন্দ্র মোদীর সেখানে না যাওয়াই উচিত৷ যে কোনও একটা অজুহাত দেখিয়ে তিনি সফর বাতিল করতে পারেন৷ তিনি গেলে আরও একটা সমস্যা হবে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খানিকটা বিড়ম্বনায় ফেলা হবে৷ কারণ তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আগেই ডেকে ফেলেছেন৷ তাঁর পক্ষে এখন পিছিয়ে আসা কঠিন৷''

পবিত্র সরকার

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশ অবশ্য কেবল নরেন্দ্র মোদীকেই ডাকেনি৷ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীও আমন্ত্রিত৷ বঙ্গবন্ধুর অনুষ্ঠানে তাঁদের যাওয়া নিয়ে কারও কোনও আপত্তি নেই৷ একমাত্র সমস্যা মোদীকে নিয়েই৷ অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, যাঁরা বিষয়টিকে ভারত বিদ্বেষ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাঁরা সত্য এড়িয়ে যাচ্ছেন৷ প্রতিবাদ হচ্ছে ব্যক্তি মোদীকে নিয়ে৷

পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং সাংসদ দিলীপ ঘোষ অবশ্য সে কথা মানতে নারাজ৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ‘‘সফর বাতিলের প্রশ্নই ওঠে না৷ পশ্চিমবঙ্গের কিছু দেশবিরোধী বাঙালি এ সব প্রচার করে দেশকে ছোট করার চেষ্টা করছে৷ নরেন্দ্র মোদীকে আটকাবে, এমন হিম্মত কার আছে?''

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অনিন্দ্যজ্যোতি মজুমদার মনে করছেন, বাংলাদেশ চাইলে এখনও মোদীর নিমন্ত্রণ বাতিল করতে পারে৷ কিন্তু একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বোঝাই যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যক্তি হিসেবে ভারত থেকে প্রণববাবু কিংবা সোনিয়া গান্ধীকে ডেকেছে৷ কিন্তু মোদীকে ডেকেছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে৷ সেখানে মোদী না বসে অন্য যে কেউ বসলে তাঁকেই ডাকা হতো৷ ভারতের সঙ্গে প্রতিবেশী বাংলাদেশের যে সম্পর্ক, তাতে কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশ মোদীর সফর বাতিল করবে বলে মনে হয় না৷ যদি করে, তা হলে তার কূটনৈতিক প্রভাব দু'দেশের উপরেই পড়বে৷ কোনও দেশই সেটা চাইবে বলে মনে হয় না৷''

অনিন্দ্যজ্যোতি মজুমদার

This browser does not support the audio element.

সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে লাগাতার আন্দোলনরত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের বক্তব্য, ‘‘মোদী তো নিজের দেশেই স্বাগত নন৷ তিনি এবং অমিত শাহ যতবার বাংলায় এসেছেন, আমরা রাত জেগে প্রতিবাদ দেখিয়েছি৷ বাংলাদেশের সাধারণ মানুষও সেই প্রতিবাদটাই দেখাচ্ছেন৷ সেখানে কূটনীতির কোনও জায়গা নেই৷ আবেগের জায়গা আছে৷ শেখ মুজিবের জন্মশতবর্ষ বাঙালির তেমনই এক আবেগের জায়গা৷ সেখানে কূটনীতি নিয়ে কেন ভাববো আমরা? প্রতিবাদ ছিল, আছে এবং থাকবে৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ