প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় যা যা ‘ভুল' সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ক্ষমতায় এলে সেসব পরিবর্তন করতে চান তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি৷ লেখা হয়েছে তাঁর দলের নির্বাচনি ইশতাহারে৷
বিজ্ঞাপন
বিরোধীদের সমবেত অভিযোগ, নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর থেকে একটি কাজ খুব জোর দিয়ে করা হয়েছে৷ ভারতের যে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, যেখানে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে এক ধরনের ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় থাকে, তা পরিকল্পিতভাবে নষ্ট করা৷ সময়ের দাবি যেখানে ছিল ক্ষমতার আরও বেশি বিকেন্দ্রীকরণের, সেখানে ঘটেছে ঠিক উলটো এবং যেসব রাজ্যে অ-বিজেপি সরকার, বিশেষত আর্থিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে তাদের শক্তিহীন করার একটা চেষ্টা জারি থেকেছে গত পাঁচ বছর ধরে৷ তারই অন্যতম উদাহরণ, স্বাধীনতার পর থেকে ভারতে যে ‘যোজনা কমিশন' দেশের নানা পরিকল্পনা গ্রহণের দায়িত্ব পালন করেছে, তাকে তুলে দিয়ে ‘নীতি আয়োগ' নামে নতুন একটি দপ্তর চালু করা, যেখানে খোদ প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারের পছন্দসই লোকজনকে বসানো৷
কিন্তু এর পেছনে কারণ কী ছিল? যোজনা কমিশনে মোদীর আপত্তি কেন? বিশিষ্ট অর্থনৈতিক পর্যবেক্ষক ধ্রুবজ্যোতি নন্দী ডয়চে ভেলেকে জানাচ্ছেন, ‘‘মোদীর মূল আপত্তির কারণ ছিল, যে যোজনা কমিশনের গোটাটাই ছিল কংগ্রেসের পরিকল্পনা৷ মূল পরিকল্পনা ছিল সুভাষচন্দ্র বোসের, জওহরলাল নেহরু সেই পরিকল্পনা রূপায়ণ করেন এবং যেহেতু ওটা কংগ্রেসের পরিকল্পনা, মোদী তো দেশের ইতিহাস থেকে কংগ্রেসের নাম মুছে দেওয়ার পরিকল্পনায় চলছে, সেই পরিকল্পনায় যোজনা কমিশন বাদ দিয়ে নীতি আয়োগ করার কথা ভেবেছিল৷ এবং সেটা করতে গিয়ে, নীতি আয়োগের কাঠামো যোজনা কমিশনের কাঠামোর থেকে অনেকখানি আলাদা৷ যোজনা কমিশনে যেভাবে রাজ্যগুলোর বক্তব্য জানানোর সুযোগ ছিল, নীতি আয়োগে সেটা তার চেয়ে অনেক কম৷''
অর্থাৎ নতুন কোনো দৃষ্টিভঙ্গী বা নতুন কোনো দর্শনে পরিচালিত হয়ে নয়, নিছকই রাজনৈতিক কারণে নরেন্দ্র মোদী দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি দপ্তরকে স্রেফ বাতিল করে দিয়েছিলেন৷ তৃণমূল কংগ্রেস তার নির্বাচনি ইশতাহারে জানাচ্ছে, মোদী এবং বিজেপিকে হারিয়ে বিরোধীরা কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে অন্যতম কাজ হবে যোজনা কমিশনের পুনরুদ্ধার৷ একইসঙ্গে মোদী সরকারের দুটি বিতর্কিত সিদ্ধান্তের পর্যালোচনা হবে৷ এক, জিএসটি চালু করার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে খুঁজে দেখা হবে তার ভুলত্রুটি, ফাঁকফোকর৷ দুই, নোট বাতিলের হঠাৎ সিদ্ধান্তের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে৷ সুপ্রিম কোর্টের কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে দিয়ে এই তদন্ত করানোর পক্ষপাতী মমতা ব্যানার্জি৷
নির্বাচনি ইশতাহারে এই পুরনো ভুলগুলোর পর্যালোচনার পাশাপাশি তৃণমূল নেত্রী জোর দিয়েছেন কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায়, যার অভাব এই মুহূর্তে মোদি সরকারের সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ খাড়া করে দিয়েছে৷ ঋণের ভারে জর্জরিত কৃষকদের আত্মহত্যা, ফসলের দাম না পাওয়া, ক্ষুব্ধ কৃষকদের একের পর এক আন্দোলন, আজকে লোকসভা ভোটের মুখে মোদী এবং বিজেপির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেওয়ার জায়গায় পৌঁছেছে৷
পাশাপাশি মমতা ইশতাহারে বলেছেন কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়ার কথা৷ গ্রামের গরিব মানুষদের উপার্জনের সুযোগ দিতে চালু হওয়া ১০০ দিনের কাজ বাড়িয়ে ২০০ দিন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং সেকাজের দিনপ্রতি মজুরিও বাড়িয়ে দ্বিগুণ করার কথা বলেছেন৷
এক্ষেত্রে উল্লেযোগ্য যে দেশের সবকটি বিরোধী রাজনৈতিক দলই তাদের নির্বাচনি ইশতাহারে সাধারণ মানুষের আর্থিক সঙ্গতি বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে৷ কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী যেমন নির্দিষ্ট করে বলেই দিয়েছেন, মাসে অন্তত ৬০০০, বছরে কমপক্ষে ৭২,০০০ টাকা সরকারি অর্থসাহায্যের কথা, যা মোদীর গত নির্বাচনে দেওয়া জনপ্রতি ১৫ লক্ষ টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতির থেকে অনেক বেশি বাস্তবসম্মত৷
মোদী তখন বলেছিলেন, দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া কালো টাকা ফেরত আনবেন এবং সেই সুবাদেই প্রতিটি মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে ঢুকে যাবে৷ কিন্তু কার্যত হয়েছে ঠিক উলটো৷ সরকারি ব্যাংকের টাকা লুটে বিদেশে ফেরার হয়েছেন বিজয় মালিয়া, নীরব মোদী, মেহুল চোকসির মতো অসৎ ব্যবসায়ীরা৷ যদিও সম্প্রতি নীরব মোদী লন্ডনে গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং বিজয় মালিয়ার মতো তাঁকেও ভারতে ফেরানোর আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ ভোটের মুখে এই খবর মোদীর মুখে যেটুকু হাসি ফোটাতে পারত, তাও কেড়ে নিয়েছে কৃষক অসন্তোষ এবং বেকারি৷ তৃণমূল কংগ্রেসের ইশতাহারে কৃষকদের সহায়ক মূল্য নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে, যে প্রতিশ্রুতি মোদী এর আগে দিয়েও রাখতে পারেননি৷ মওকুফ করতে পারেননি কৃষিঋণ৷ ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মওকুফ করার কথা বলা হয়েছে জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাচনি ইশতাহারে৷ অন্যদিকে তৃণমূলের ইশতাহারে বলা হয়েছে তফশিলি জাতি-উপজাতি, আদিবাসী, অনুন্নত শ্রেণি এবং সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত সরকারি চাকরিতে সমস্ত শূন্য পদ পূরণ করার কথা৷
আরেক বিজেপিবিরোধী জোট বামফ্রন্টও সদ্য তাদের নির্বাচনি ইশতাহার প্রকাশ করেছে৷ তাতে জোর দেওয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের ওপর সরকারি নজরদারি, খবরদারি বন্ধ করার ওপর৷ দেশে টেলিফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদী যেভাবে তাঁর পছন্দের দু-একটি সংস্থাকেই একচেটিয়া কর্তৃত্ব কায়েম করার সুযোগ করে দিয়েছেন, তার অবসানের কথা বলা হয়েছে বামদের ইশতাহারে৷ বলা হয়েছে ন্যূনতম মজুরি মাসে ১৮,০০০ টাকা করার কথা৷ যদিও এই সবকটি ইস্যুই এই মুহূর্তে ভারতের প্রেক্ষিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু কোথাও বাস্তবের মূল সমস্যাগুলো থেকে সম্পর্কবিযুক্ত মনে হয়েছে বামেদের ইশতাহারকে৷ তুলনায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাচনি প্রতিশ্রুতি অনেক বেশি মাটির কাছাকাছি৷
বিজেপিকে চিনে নিন
ভারতে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি৷ বর্তমানে জাতীয় ও রাজ্যস্তরে সর্বাধিক প্রতিনিধিত্ব রাখা দলটি সদস্য সংখ্যায় বিশ্বের বৃহত্তম৷ ঐতিহাসিকভাবে হিন্দু-জাতীয়তাবাদী অবস্থানের বিজেপির গল্প এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. K. Singh
আদর্শগত উৎস
বিজেপিকে চিনতে হলে ‘সংঘ পরিবার’-এর অন্তর্গত হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলির উৎস আরএসএস অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে জানা দরকার৷ বিশ্বের বৃহত্তম এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মারাঠি চিকিৎসক কেশব হেডগেওয়ার৷ ১৯২৫ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি৷ ভি ডি সাভারকরের ‘হিন্দুত্ব’ চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণই আরএসএস-এর প্রধান উদ্দেশ্য৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে দূরত্ব
কংগ্রেসের নেতৃত্বে চলা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে দূরে ছিল আরএসএস৷ ১৯৪০-এর দশকে সংগঠনের নেতা হিসেবে এম এস গোলওয়ালকর হিন্দু রাষ্ট্র গড়তে ব্রিটিশ বিরোধিতার বদলে ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষার ডাক দেন৷ উল্লেখ্য, পরবর্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া অটলবিহারী বাজপেয়ী ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময় সত্যাগ্রহীদের সাথে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ লিখিত মুচলেকা দিয়ে আন্দোলনে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাড়া পান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M.Desfor
দেশভাগ ও আরএসএস
দেশভাগের সময় আরএসএস পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুদের সাহায্য করে৷ আরএসএস ও বর্তমানের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কর্মীরা মনে করেন, দেশভাগ মুসলিমদের প্রতি নরম আচরণের ফল৷ এজন্য গান্ধী ও নেহরুকে বিশেষভাবে দায়ী মনে করেন তাঁরা৷ স্বাধীনতার পর কংগ্রেসকে ঠেকাতে ১৯৫১ সালে জনসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়৷ সেই জনসংঘই আসলে বিজেপির উৎস৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
জরুরি অবস্থা ও জনতা পার্টির জন্ম
১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করেন৷ বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে জনসংঘের অসংখ্য সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা শেষে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন৷ কংগ্রেসকে হারাতে অন্যান্য দলের সঙ্গে মিলে যায় জনসংঘ, জন্ম নেয় জনতা পার্টি৷ নির্বাচনে জিতেও যায় জনতা পার্টি৷ প্রধানমন্ত্রী হন মোরারজি দেশাই৷ স্বাধীন ভারতে সূচিত হয় হিন্দুত্ববাদীদের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ জয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিজেপির জন্ম
১৯৮০’র পর দল ও আরএসএসের দ্বৈত সদস্য হবার বিধান না থাকায় জন্ম নেয় ভারতীয় জনতা পার্টি৷ নতুন দলে নতুন সদস্য যোগ দিলেও, গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল পুরোনোদের দাপট৷ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন বাজপেয়ী৷ মূলত, ইন্দিরা হত্যার পর ভোটে খারাপ করার কারণেই নেতৃত্বে এই পরিবর্তন৷ তবে বিজেপির উত্থান শুরু ১৯৮৪ সালে৷ সে বছর দলের সভাপতি হন লালকৃষ্ণ আডবানি৷ রাম জন্মভূমির দাবিকে ঘিরে তাঁর নেতৃত্বেই শক্তিশালী হতে থাকে বিজেপি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Raveendran
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও বাবরি মসজিদ
নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকেই বিজেপি সরাসরি ধর্মের রাজনীতিতে নামে৷ বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির গঠনের দাবিতে সারা দেশ থেকে অযোধ্যার পথে রওয়ানা দেয় হাজার হাজার ‘করসেবক’৷ পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে উত্তেজিত জনতা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে৷ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হন দু’ হাজারেরও বেশি মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/D .E. Curran
সরকার গঠন ও জোটের রাজনীতি
সাম্প্রদায়িক আবেগকে হাতিয়ার করে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজেপি ১৬১টি লোকসভা আসনে জয়ী হয়৷ প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন অটলবিহারী বাজপেয়ী৷ কিন্তু ১৩ দিন পর, লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার গঠন করতে পারেনি বিজেপি৷ ১৯৯৬ সালে আঞ্চলিক দলগুলির একটি জোট সরকার গঠন করে৷ কিন্তু সেই সরকারের স্থায়িত্ব দীর্ঘ হয়নি৷ ১৯৯৮ সালে আবার নির্বাচন হয়৷
ছবি: UNI
প্রথম এনডিএ সরকার
নির্বাচনে জিতে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকার গড়ে৷ জোটে অংশগ্রহণ করে সমতা পার্টি, অকালী দল, শিব সেনা, নিখিল ভারত আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কড়গম (এআইএআইডিএমকে), বিজু জনতা দল ও শিব সেনা৷ ১৯৯৯ সালে তাঁরা সংসদে ৩০৩টি আসন জিতলে বাজপেয়ী তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন৷ পাঁচ বছরের পূর্ণমেয়াদী এই জোট সরকার প্রতিরক্ষা ও সন্ত্রাসের মোকাবিলার পাশাপাশি নব্য-উদার অর্থনীতির ওপর জোর দেয়৷
ছবি: Imago/photothek/T. Koehler
দুর্নীতি ও দাঙ্গায় কোণঠাসা বিজেপি
বিজেপির জয়রথে প্রথম ‘বাধা’ গোধরা দাঙ্গা৷ তীর্থযাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগাকে ঘিরে প্রায় ২০০০ মানুষ মারা যান৷ তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতার নাম এই দাঙ্গার সাথে জড়ায়৷ বিজেপি-প্রধান বঙ্গারু লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ৷ সব মিলিয়ে বিপন্ন বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোট ২০০৪ সালে নতুন সরকার গড়ে৷ প্রধানমন্ত্রী হন মনমোহন সিং৷
ছবি: AP
নেতৃত্বে কে? মোদী, না আডবাণী?
২০১৪’র লোকসভা নির্বাচনে জেতার পর নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে বিজেপি৷ অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দলের নেতৃত্বের দায়ভার বর্ষীয়ান নেতা এল কে আডবানির ওপর বর্তানোর কথা উঠলেও, বাস্তবে তা হয়নি৷
ছবি: AP
মোদীর উত্থান
বিজেপির ইতিহাসে ব্যক্তিকেন্দ্রীক নির্বাচনী প্রচার মোদীর ক্ষেত্রেই প্রথম৷ পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতির সুযোগ নিয়ে মোদীর ‘গুজরাট মডেল’-কে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরা হয় প্রচারে৷ সুবক্তা মোদী শীঘ্রই হয়ে ওঠেন তরুণ প্রজন্ম থেকে সংবাদমাধ্যম, সকলের প্রিয়পাত্র৷ নির্বাচনের আগে বিজেপি হিন্দু জাতীয়তাবাদকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে গেলেও, মোদীর প্রাক-নির্বাচন বক্তব্যের বড় অংশ জুড়েই ছিল ‘হিন্দুত্ব’৷
ছবি: picture alliance/AA/M. Aktas
মোদী থেকে ‘মোদীজি’
২০১৪ সালে বিজেপি ২৮২টি আসন জিতে ক্ষমতায় আসে৷ ভোটারদের কংগ্রেসের প্রতি অনাস্থার পাশাপাশি বিজেপির সাফল্যের আরেকটি কারণ ছিল আরএসএসের নিঃশর্ত সমর্থন৷ নরেন্দ্র মোদীই হন প্রধানমন্ত্রী৷ পিউ গবেষণা কেন্দ্রের একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, প্রথম বছরের তুলনায় বর্তমানে মোদীর জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে, যা ২০১৯-র নির্বাচনে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির জন্যও নিঃসন্দেহে ভাবনার বিষয়৷