সিএএ-র বিরুদ্ধে এ বার পরিকল্পনামাফিক ও সঙ্ঘবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামতে চাইছে বিরোধী দলগুলি৷ দিল্লিতে বৈঠক করে এ বার সেই কৌশল ঠিক হবে৷ সেই বৈঠকে যোগ দেবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধ্যোপাধ্যায়ও৷
বিজ্ঞাপন
মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্ররা পথে নেমেছে অনেক দিন হল৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল, ডিএমকে, কংগ্রেসও আলাদাভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ কিন্তু ছাত্রদের পাশাপাশি দেশজুড়ে সঙ্ঘবদ্ধভাবে ও পরিকল্পনামাফিক আন্দোলনে নামেনি বিরোধীরা৷ তার ওপর জানুয়ারির শেষে সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হচ্ছে৷ সেখানেও সিএএ নিয়ে বিরোধ কীভাবে করা হবে সেই প্রশ্ন উঠেছে৷ এ বার সেই খামতি দূর করতে সামনাসামনি বসে আলোচনা করে সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ করতে চাইছেন সনিয়া গান্ধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়রা৷ নরেন্দ্র মোদী দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম সংসদের বাইরে এক হয়ে আন্দোলনের কৌশল নিতে চলেছেন তাঁরা৷ এখনও পর্যন্ত ঠিক আছে, আগামী সোমবার সংসদ ভবনের অ্যানেক্সিতে এই বৈঠক হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার একদিন আগে অর্থাৎ রবিবারই দিল্লি পৌঁছে যাচ্ছেন৷
গর্জে উঠল জেএনইউ
রবিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত গুন্ডাদের হাতে তছনছ হয়েছে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু দমে যায়নি জেনএনইউ। দিনভর প্রতিবাদে সামিল হলেন ছাত্র-শিক্ষক সকলেই।
ছবি: DW/S. Ghosh
হাতে হাত প্রতিবাদ
গুন্ডাদের আক্রমণের প্রতিবাদে সোমবার জেনএনইউ-এর ছাত্র-শিক্ষক একসঙ্গে এ ভাবেই গড়ে তুললেন মানবশৃঙ্খল।
ছবি: DW/S. Ghosh
ক্ষুব্ধ শিক্ষকেরা
রবিবারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। তাঁদের গায়েও হাত দেওয়া হয়েছে রবিবার। এ দিন শিক্ষকেরা সাংবাদিক বৈঠক করেন।
ছবি: DW/S. Ghosh
ধরতে হবে গুন্ডাদের
ঘটনার পর বহু সময় কেটে গিয়েছে। এখনও একজনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। ছাত্রদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব তাদের গ্রেফতার করতে হবে।
ছবি: DW/S. Ghosh
চলবে ধর্না
দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার এবং তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস বয়কট এবং বিক্ষোভ কর্মসূচি চলবে, জানিয়ে দিলেন ছাত্ররা।
ছবি: DW/S. Ghosh
উপচার্যের পদত্যাগ
ছাত্র এবং শিক্ষকদের একাংশের দাবি, বর্তমান উপাচার্যকে এই ঘটনার জন্য পদত্যাগ করতে হবে।
ছবি: DW/S. Ghosh
মিছিলে মিছিল
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক মিছিল করেন ছাত্র এবং শিক্ষকরা। স্লোগান ওঠে আজাদির।
ছবি: DW/S. Ghosh
নিশানায় মোদী-শাহ
শুধু উপাচার্য নয়, ছাত্রদের হাতের পোস্টারে নিশানায় ছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহও।
ছবি: DW/S. Ghosh
পুলিশ নিষ্ক্রিয়
ছাত্র এবং শিক্ষক সকলেই এ দিন অভিযোগ করেন, রবিবার পুলিশ নীরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছে।
ছবি: DW/S. Ghosh
8 ছবি1 | 8
কোনও সন্দেহ নেই, এই বৈঠকে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে সনিয়া গান্ধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ বর্তমান পরিস্থিতিতে সিএএ নিয়ে বিরোধীদের আন্দোলন কী ধরনের হওয়া উচিত? প্রাক্তন বিদেশ ও অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''বিরোধীদের উচিত, দেশের সব জায়গায় ছাত্রদের পাশে থাকা৷ তাঁদের আন্দোলনকে সমর্থন করা৷ বিরোধীরা বরং বেশি করে সংসদে বিরোধিতা করুন৷ একযোগে প্রতিবাদ করুন৷ বাজেট অধিবেশনে এই কাজটা তাঁরা যত ভালোভাবে করতে পারবেন, তত বেশি সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবেন৷''
প্রবীণ সংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র অবশ্য মনে করছেন, বিরোধীরা ছাত্র-আন্দোলনের ফায়দা তুলতে চইবেন, সেটা স্বাভাবিক৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেছেন, ''এ বার ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্যেও একটা বৈশিষ্ট্য আছে৷ এখানে সে অর্থে কোনও নেতা নেই৷ অনেক ছাত্রছাত্রী আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন, যাঁরা সচরাচর কোনও প্রতিবাদ, বিক্ষোভে থাকেন না৷ সংবিধান হাতে নিয়ে বা সংবিধান রক্ষার কথা বলে তাঁরা আন্দোলনে নামছেন৷ সংবিধানকেই নেতা বলা যায়৷ এঁদের বলা যেতে পারে, বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের জাতীয়তাবাদের বাইরে থাকা জাতীয়তাবাদী৷ ফলে তাঁদের আন্দোলন কোথায় দাঁড়ায়, তা দেখার বিষয়৷''
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা কী করবেন, সেটাও দেখার৷ কারণ, কিছুদিন আগে সিএএ পাস করাবার সময় দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু বিরোধী দলের অনেক সদস্য গরহাজির ছিলেন৷ তারপর তাঁদের নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে৷ সেই সব সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে সিএএ নিয়ে মোদীকে চাপে ফেলা আপাতত সনিয়া গান্ধীদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ৷
আন্দোলন অব্যাহত জামিয়া মিলিয়ায়
রবিবার তাঁদের বিক্ষোভে নির্মম ভাবে লাঠি চালিয়েছিল পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে তছনছ করেছিল গ্রন্থাগার। সোমবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ছাত্রদের বিক্ষোভ চলছে। নাগরিকত্ব বিলের পাশাপাশি তাঁদের নিশানায় পুলিশও।
ছবি: DW/S. Ghosh
হাতে হাতে ব্যারিকেড
হাতে হাত ধরে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন ছাত্ররা। রাস্তায় রং দিয়ে লেখা হচ্ছে স্লোগান।
ছবি: DW/S. Ghosh
রাস্তা জুড়ে স্লোগান
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন প্রতিবাদীরা। গোটা রাস্তা জুড়ে এ ভাবেই লেখা হচ্ছে দাবি।
ছবি: DW/S. Ghosh
রোষ গণমাধ্যমের উপরেও
ভারতীয় গণমাধ্যম তাঁদের কথা ঠিক ভাবে তুলে ধরছে না, সেই ক্ষোভও রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের।
ছবি: DW/S. Ghosh
প্রতিবাদে জাতীয় পতাকা
প্রতিবাদের হাতিয়ার হিসেবে আম্বেডকরের ছবি, জাতীয় পতাকাকে ব্যবহার করছেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, সরকার হিন্দু মুসলিম বিভেদ করতে চাইছে, কিন্তু তারা তা হতে দেবে না।
ছবি: DW/S. Ghosh
পাশে বন্ধুরা
জামিয়ার প্রতিবাদে অংশ নিয়েছেন জেএনইউ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাও। মিছিল করে প্রতিবাদের মঞ্চে আসছেন তাঁরা।
ছবি: DW/S. Ghosh
ক্ষোভ উপাচার্যের বিরুদ্ধেও
উপাচার্যের বিরুদ্ধেও পোস্টার লিখছেন ছাত্ররা। তাঁদের অভিযোগ, উপাচার্য আরএসএস এর ভাষায় কথায় বলছেন।
ছবি: DW/S. Ghosh
লড়কে লেঙ্গে
বহু ছাত্র এখনও হাসপাতালে ভর্তি। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। প্রতিবাদীদের দাবি, সরকার তাঁদের কথা না শোনা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলতে থাকবে।