মাত্র ১০০ দিনের ভিত্তিতে মোদী সরকারের সাফল্য ও ব্যর্থতার চুলচেরা বিচার কতটা যুক্তিসঙ্গত, তা নিয়ে দ্বিমত আছে৷ যে'রকম বিপুল সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়ে মোদী ক্ষমতায় এসেছেন, ভারতীয়দের প্রত্যাশা যে পাহাড়প্রমাণ- তা বলাই বাহুল্য৷
বিজ্ঞাপন
মোদী সরকারের ১০০ দিনের কাজের মূল্যায়ন নিয়ে জনমনে কৌতূহলের সীমা নেই৷ ড. মনমোহন সিং-এর সাবেক কংগ্রেস-জোট সরকারের নীতি পঙ্গুত্ব, আর্থিক নিশ্চলতা এবং উচ্চমহলে দুর্নীতির অভিযোগ কাটিয়ে অর্থনীতির হাল ফিরিয়ে উন্নয়নের চাকায় গতি আনার চেষ্টা করে চলেছেন মোদী৷ আম জনতার উন্নতির সঙ্গে শিল্পমহলের আস্থা ফিরছে৷ ১০০ দিনেই প্রধানমন্ত্রী মোদী শক্ত হাতে হাল ধরে প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজিয়েছেন৷ প্রশাসনকে নতুন দিশা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন৷ কিছুটা হলেও ফিরে এসেছে আমলাতন্ত্রের আত্মবিশ্বাস৷ একাধিক ক্ষমতা কেন্দ্রের বদলে এককভাবে শক্ত হাতে সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন তিনি৷
এই যেমন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ভরতুকি ইস্যুতে উন্নত দুনিয়ার রক্তচক্ষুর পরোয়া না করে ভারতের ভরতুকি নীতিতে অনড় থাকেন মোদী৷ তবু বিতর্ক তাঁর পিছু ছাড়েনি৷ প্রশ্ন উঠেছে দেশের অর্থনীতিকে তিনি কি চাঙ্গা করতে পেরেছেন? পারলে কতটা? রাজস্ব ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনার কথা বলা হয়েছে বটে, তবে সেটা কতটা সম্ভব হবে সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে৷ মুদ্রাস্ফীতি আগের মতোই আছে৷ জাতীয় প্রবৃদ্ধি গত ১০০ দিনে বেড়েছে খুবই সামান্য৷ তবে মোদীর ১০০ দিনের অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোডম্যাপে রয়েছে বিদেশি লগ্নি টানার জন্য পরিকাঠামো ক্ষেত্র খুলে দেয়া, বিমা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নি ২৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪৯ শতাংশ করতে বিমা বিল সংসদে পাশ করানো এবং পণ্য পরিষেবা কর চালু করা ইত্যাদি৷ হালে জাপানে গিয়ে ৩,৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের লগ্নি প্রস্তাব ঝুলি ভরে এনেছেন মোদী৷ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এটা মোদীর সাফল্যের সূচক৷ ভারত-জাপান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নিয়ে গেছেন নতুন উচ্চতায়৷
একজন নরেন্দ্র মোদী
উগ্র সাম্প্রদায়িক আদর্শ এবং বিভাজনের রাজনীতির কারণে ভারতের বহু মানুষের কাছে তিনি খলনায়ক৷ ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে নিজেকে নতুন মোড়কে সামনে এনে সেই নরেন্দ্র মোদীই শোনাচ্ছেন ভারতকে বদলে দেয়ার মন্ত্র৷
ছবি: dapd
চা ওয়ালা
১৯৫০ সালে গুজরাটের নিম্নবিত্ত এক ঘাঞ্চি পরিবারে জন্ম নেয়া নরেন্দ্র মোদী কৈশরে বাবাকে সাহায্য করতে রেল ক্যান্টিনে চা বিক্রি করেছেন৷ ঘাঞ্চি সম্প্রদায়ের রীতি অনুযায়ী ১৭ বছর বয়সে যশোদাবেন নামের এক বালিকার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়, যদিও বেশিদিন সংসার করা হয়নি৷ ছাত্র হিসেবে সাদামাটা হলেও মোদী বিতর্কে ছিলেন ওস্তাদ৷ ১৯৭১ সালে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর প্রচারক হিসাবে রাজনীতির দরজায় পা রাখেন মোদী৷
ছবি: UNI
গুজরাটের গদিধারী
১৯৮৫ সালে আরএসএস থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়ার ১০ বছরের মাথায় দলের ন্যাশনাল সেক্রেটারির দায়িত্ব পান ১৯৯৫ সালে গুজরাটের নির্বাচনে চমক দেখানো মোদী৷ ১৯৯৮ সালে নেন দলের জেনারেল সেক্রেটারির দায়িত্ব৷ ২০০১ সালে কেশুভাই প্যাটেলের স্বাস্থ্যের অবনতি হলে দলের মনোনয়নে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে আবির্ভূত হন নরেন্দ্র মোদী, যে দায়িত্ব তিনি এখনো পালন করে চলেছেন৷
ছবি: Reuters
দাঙ্গার কালিমা
মোদীকে নিয়ে আলোচনায় ২০০২ সালের দাঙ্গার প্রসঙ্গ আসে অবধারিতভাবে৷ স্বাধীন ভারতের সবচেয়ে ভয়াবহ সেই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় গুজরাটে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হন৷ মোদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েও তিনি দাঙ্গায় উসকানি দেন৷ তিনি এ অভিযোগ স্বীকার করেননি, আদালতও তাঁকে রেহাই দিয়েছে৷ তবে দাঙ্গার পক্ষে কার্যত সাফাই গেয়ে, হিন্দুত্ববাদের গান শুনিয়েই তিন দফা নির্বাচনে জয় পান মোদী৷
ছবি: AP
রূপান্তর
দাঙ্গার পর নিজের ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেন নরেন্দ্র মোদী৷ একজন বিতর্কিত নেতার বদলে উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসাবে তাঁকে প্রতিষ্ঠা দিতে শুরু হয় ‘গুজরাট মডেল’-এর প্রচার৷ ২০০৭ সালের পর নিজেকে একজন সর্বভারতীয় নেতা হিসাবে তুলে ধরতে নতুন প্রচার শুরু করেন এই বিজেপি নেতা, প্রতিষ্ঠা করেন ‘ব্র্যান্ড মোদী’৷গুজরাটের উন্নয়নের চিত্র দেখিয়ে কলঙ্কিত ভাবমূর্তিকে তিনি পরিণত করেন ভারতের ত্রাতার চেহারায়৷
ছবি: UNI
ভারতের পথে পথে
ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে নরেন্দ্র মোদী পাড়ি দিয়েছেন তিন লাখ কিলোমিটার পথ৷ সারা ভারতে পাঁচ হাজার ৮২৭টি জনসভায় তিনি অংশ নিয়েছেন, নয় মাসে মুখোমুখি হয়েছেন পাঁচ কোটি মানুষের৷ কট্টর হিন্দুত্ববাদী নেতা হিসাবে শুরু করলেও এবার তিনি হিন্দুত্ব নিয়ে প্রচার এড়িয়ে গেছেন সচেতনভাবে, যদিও বাংলাদেশের মানুষ, ভূখণ্ড এবং ধর্ম নিয়ে নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি নেতাদের বক্তব্য নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷
ছবি: AP
নতুন ইতিহাস
ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটই যে এবার ভারতে সরকারগঠন করতে যাচ্ছে, বুথফেরত জরিপ থেকে তা আগেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল৷ ৬৩ বছর বয়সি মোদীর নেতৃত্বে এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি৷ ৭ই এপ্রিল থেকে ১২ই মে অনুষ্ঠিত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ৮১ কোটি ৪০ লাখ৷ তাঁদের মধ্যে রেকর্ড ৬৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শেষ হাসি
নির্বাচনে বিজেপির প্রতিশ্রুতি ছিল – মোদী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের অর্থনীতি নতুন গতি পাবে, গুজরাটের আদলে তিনি ভারতকে বদলে দেবেন৷ অবশ্য সমালোচকরা বলছেন, ‘কলঙ্কিত ভাবমূর্তি’ ঢাকতে এসব মোদীর ফাঁপা বুলি৷ তাঁর স্বৈরাচারী মেজাজ, শিক্ষা ও অর্থনীতির জ্ঞান নিয়েও ঠাট্টা-বিদ্রুপ হয়েছে৷ বলা হচ্ছে, ভোটাররা টানা তৃতীয়বার কংগ্রেসকে চায়নি বলেই বিজেপি জয় পেয়েছে৷ যদিও শেষ হাসি দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর মুখেই৷
ছবি: dapd
7 ছবি1 | 7
১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদীর প্রথম ভাষণে সকলের নজর কেড়েছে হিন্দু জাতীয়তাবাদ মুক্ত মোদীর নতুন ভাবমূর্তি, যেটা কলঙ্কিত হয়েছিল ২০০২ সালে গুজরাট দাঙ্গায়৷ সেই সাম্প্রদায়িক খোলস ঝেড়ে ফেলে সব মানুষের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন তিনি৷ এটাই মোদীর সেরা কৃতিত্ব৷ তাঁর ভাষণে বিভেদকামী একটি শব্দও তিনি উচ্চারণ করেননি৷ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে গেছেন সামাজিক ইস্যু নিয়ে৷ ভারতে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে মহিলাদের বিকাশ এবং স্বশক্তিকরণের কথা বলেছেন৷ অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবাইকে যুক্ত করার জন্য ‘জন ধন যোজনার' কথাও বলেছেন, যেখানে দেশের সব পরিবারের জন্য থাকবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট৷ এই ভাষণের ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে দুই লাখ অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব হয়েছে৷ অর্থাৎ, ঋণের জন্য আর মহাজনদের কবলে পড়তে হবে না৷ গরিব চাষীদের ঋণের দায়ে বেছে নিতে হবে না আত্মহত্যার পথ৷ ঋণ দেবে ব্যাংক৷ এর ফলে মোদীর টুপিতে এখন সাফল্যের নতুন পালক৷
পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়ে চলার বার্তা দেয় মোদী সরকার, যার প্রশংসা হয় সর্বস্তরে৷ তাতে সাড়া দিয়ে প্রতিবেশী সব দেশ মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল৷ কিন্তু কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দিল্লির আপত্তি সত্ত্বেও পাকিস্তানি হাই-কমিশনারের বৈঠকের জেরে সেই সুরটা যেন কেটে গেছে৷ বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক জিইয়ে রাখতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের ঢাকা সফর তাৎপর্যবাহী৷ তবে তিস্তা নদীর জলবণ্টন এবং স্থলসীমা চুক্তির বাস্তবায়ন মোদী সরকারের বিদেশ নীতির অন্যতম চ্যালেঞ্জ৷ এ মাসেই মোদী মিলিত হবেন একাধিক বিশ্বনেতার সঙ্গে৷ দিল্লিতে বৈঠক করছেন জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, চীনের প্রেসিডেন্ট এবং ওয়াশিংটনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে৷ বলা বাহুল্য, বিশ্ব আঙ্গিনায় তৃতীয় বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ভারতের গুরুত্ব যাতে বহাল থাকে, সেটা সুনিশ্চিত করতে চান মোদী৷
ভারতের নির্বাচন ২০১৪
ভারতে একমাসেরও বেশি সময় ধরে নয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে৷ ৭ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ৷ ভোট গণনা হবে ১৬ মে৷ ৮০ কোটি ভোটার এই নির্বাচনে অংশ নেবেন৷
ছবি: DW/A. Chatterjee
জনগণের সরকার
ভারতের সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর৷ পার্লামেন্টে দুটি কক্ষ রয়েছে৷ উচ্চকক্ষকে বলা হয় রাজ্যসভা আর নিম্নকক্ষ লোকসভা হিসেবে পরিচিত৷ নিম্নকক্ষে যে দল বা জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় তারাই দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করে৷
ছবি: AP
দৌড়ে এগিয়ে
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই এগিয়ে৷ তবে তিনি যদি প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে যুক্তরাষ্ট্রকে ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের পথটা নতুনভাবে বিবেচনা করতে হবে৷ কেননা ২০০২ সালে গুজরাটে দাঙ্গার কারণে যুক্তরাষ্ট্র নরেন্দ্র মোদীকে বয়কট করেছে৷
ছবি: Reuters
কংগ্রেস নেতা
দীর্ঘ সময় ধরে কংগ্রেসের হাল ধরা সোনিয়া গান্ধী এবার দলের দায়িত্বের বোঝা তুলে দিয়েছেন নিজ পুত্র রাহুল গান্ধীর কাঁধে৷ ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রপৌত্র, প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী পৌত্র এবং সবচেয়ে কমবয়সি প্রধানমন্ত্রীর ছেলে রাহুল৷ কিন্তু গত ১০ বছর ধরে রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট থেকেও সেখানে বড় কোনো ভূমিকা রাখতে পারছেন না তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দুর্নীতি বিরোধী নেতা
২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির রাজ্যসভা নির্বাচনে অভিষেক হয় দুর্নীতি বিরোধী দল আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের৷ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু মাত্র ৪৯ দিনের মাথায় পদত্যাগ করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘কিং মেকার’ দল
বামপন্থি চারটি দল এবং সাতটি আঞ্চলিক দল মিলে থার্ড ফ্রন্ট গঠন করেছে, যা বিজেপি এবং কংগ্রেসের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ৷ লোকসভায় এখনই তাদের আধিপত্য আছে৷ ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা থাকলে তারা হয়ে উঠতে পারে ‘কিং মেকার’৷ অর্থাৎ তারা যে দল সমর্থন করবে তারাই গঠন করবে সরকার৷
ছবি: Sajjad HussainAFP/Getty Images
সামাজিক গণমাধ্যমের ভূমিকা
এ বছর নির্বাচনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে৷ এটিকে নির্বাচনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে কোনো দলই পিছিয়ে নেই৷ এ বছর প্রথম ভোট দেবেন এমন মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি৷ এদের মধ্যে ৪০ ভাগ শহরে বাস করে, যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সক্রিয়৷ ফলে নতুন এই প্রজন্ম এবারের নির্বাচনে একটা বড় ভূমিকা রাখছে৷
মেশিনের মাধ্যমে ভোট
লোকসভার ৫৪৫ টি আসনের প্রতিনিধি নির্বাচনে ভারতের মানুষ ভোট দেবেন ৫ সপ্তাহ ধরে৷ ইলেকট্রনিক মেশিন পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ চলবে৷ ফলাফল জানা যাবে ১৬ মে৷
ছবি: AP
সংখ্যালঘুদের উপর নির্ভরশীলতা
ভারতে ১৩ শতাংশ ভোটদাতা মুসলিম৷ ১০০টি সংসদীয় কেন্দ্রে ১৫-২০ শতাংশ, ৩৫টি কেন্দ্রে ৩০ শতাংশ এবং ৩৮টি আসনে মুসলিম ভোটদাতাদের সংখ্যা ২০ থেকে ৩০ শতাংশের মতো৷ কাজেই আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম ভোটবাক্স নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন ভোট বিশেষজ্ঞরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘নমো’ উন্মাদনা
যখন থেকে বিজেপি নরেন্দ্র মোদীকে (নমো) তাদের সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেয়; তখন থেকেই সে দেশের গণমাধ্যমের একটি বড় অংশ হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ব্র্যান্ড হিসেবে ‘নমোকে’ তুলে ধরার উদ্যোগ নেয়৷ বিজেপির প্রচার-কুশীলবদের রি-ব্র্যান্ডিং অভিযানের তোড়ে নৈতিকতার প্রশ্নগুলো হাওয়ায় মিলিয়ে গেছে৷
ছবি: Sam Panthaky/AFP/Getty Images
9 ছবি1 | 9
বিশিষ্ট রাজনীতির অধ্যাপক উদয়ন বন্দোপাধ্যায় ডয়চে ভেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মোদীর ১০০ দিনের কাজকর্মের খতিয়ান দিতে গিয়ে জানান, ‘‘মোদী সরকারের মূল অভিমুখ স্পষ্ট নয়৷ তবে উদার বাজার অর্থনীতি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নি বাড়ানোর চেষ্টা অবশ্যই একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ৷ অন্যদিকে পররাষ্ট্রনীতিতে একটা দোলাচলের পরিস্থিতি রয়েছে৷ ২০ বছর আগে যা ছিল তার সঙ্গে বিশেষ ফারাক নেই৷ কাশ্মীর সমস্যা, গাজায় মানবাধিকার ইত্যাদি ইস্যুতে মোদী সরকার কড়া অবস্থান নেয়নি৷ শিক্ষা ক্ষেত্রে তলে তলে একটা গৈরিকিকরণের চেষ্টা চলেছে৷ কাজেই মোদীর সুশাসন বুঝতে ১০০ দিন যথেষ্ট নয়৷ তার ওপর মোদীর মধ্যে একটা একনায়কতান্ত্রিক মানসিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সেটা জনকল্যাণের পথে অন্তরায় হতে পারে৷''
১০০ দিনের কাজের নিরিখে অধ্যাপক বন্দোপাধ্যায় মোদী সরকারকে দিয়েছেন দশের মধ্যে অর্ধেকের কম৷ তাই আরো ১০০ দিন অপেক্ষা করা বাঞ্ছনীয়৷