মোবাইল ফোন যখন আয়ের উৎস
২৪ মার্চ ২০১৫ পেটার গেয়ারহার্ট কাজে নেমেছেন৷ তিনি ‘স্ট্রিটস্পটার’ নামের এক অ্যাপ-এর জন্য ছবি তোলেন৷ দর্শনীয় স্থান, দোকান-বাজার অথবা বিজ্ঞাপন৷ এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলি তাদের বিপণনের প্রভাব দেখতে পারে৷ আর পেটার কিছু বাড়তি আয় করে নিতে পারেন৷ মোবাইল ফোনের পর্দায় তিনি দেখে নিচ্ছেন, আর কোথায় ছবি তুলতে হবে৷ পেটার বলেন, ‘‘এই ব্রোশিয়োর-টার দ্রুত ছবি তুলে ‘স্ট্রিটস্পটার’-এ পাঠাতে হবে৷ তবে অক্ষরগুলো স্পষ্ট হতে হবে৷ আমি পাবো ২ ইউরো ও অভিজ্ঞতার জন্য ২০ পয়েন্ট৷’’
আধ ঘণ্টার কাজের জন্য ২ ইউরো৷ ৪৬ বছর বয়স্ক এই কেয়াটারটেকারের কাছে এই অ্যাপ কম্পিউটার গেম-এর মতো৷ তবে সেই আয় সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট নয়৷ পেটার বলেন, ‘‘সে গুড়ে বালি৷ বাড়ি ফেরার পথে বড়জোর কয়েক ইউরো রোজগার হয়৷ আসলে এটা একটা হবি, সঙ্গে কিছু আয়ও হয়৷’’
তাঁর তোলা ছবি নুরেমবার্গ শহরে ‘স্ট্রিটস্পটার’ কোম্পানির সদর দপ্তরে পৌঁছয়৷ কর্মীরা সেগুলি পরীক্ষা করে বাড়ি কেনাবেচার কোম্পানি বা পর্যটন সংক্রান্ত প্রকাশকের মতো ক্লায়েন্ট-দের কাছে পাঠান৷ শ্রমিক সংগঠনের কর্মকর্তা ইয়ান ইয়ুরচিক বলেন, ‘‘এর মাধ্যমে সত্যি কোনো কর্মীর কাজ উদ্বৃত্ত করে তোলা যায়৷ ফিল্ডে যে কাজ করে, তাকে নিয়ন্ত্রণ করলেই চলে অথবা তার কাজও পুরোপুরি কেড়ে নেওয়া যায়৷ শেষ পর্যন্ত যে কাজটা করে, তার কপালে সামান্য অঙ্কের পারিশ্রমিক জোটে৷ তা দিয়ে বাঁচা-মরা – কোনোটাই সম্ভব নয়৷ এভাবে কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে৷ সামান্য অ্যাপ এমন কাণ্ড করতে পারে৷’’
‘স্ট্রিটস্পটার’ পরিষেবায় শুধু গত বছরই প্রায় ১ লক্ষ নতুন ব্যবহারকারী নিজেদের নথিভুক্ত হয়েছিলেন – অর্থাৎ প্রায় ৫০ শতাংশ ‘গ্রোথ’ হয়েছে৷ জার্মানিতে এখনো এত ব্যবহারকারীর জন্য যথেষ্ট কাজ পাওয়া যায় না৷ পেটার গেয়ারহার্ট তাই একাধিক জব-অ্যাপ ঘেঁটে কাজ খোঁজেন৷ পেটার বলেন, ‘‘যে কাজে পয়সা পাওয়া যায়, বড় শহরে তা পেতে গেলে সজাগ থাকতে হবে৷ কারণ প্রতিযোগিতার অভাব নেই৷ বার্লিনে অনেক স্পটারের সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে৷ প্রত্যেকেরই নিজস্ব এলাকা রয়েছে৷ তবে ঠিক সময়ে তাদের না ধরতে পারলে দুপুরের মধ্যেই তারা উধাও হয়ে যায়৷’’
কাজ কম থাকলে ইউজারদের সংখ্যাও কমে যাবে, আগ্রহ কমে যাবে৷ নিজেদের সাফল্যের চাপেই হয়ত এই ক্ষেত্র ক্ষতির মুখ দেখবে৷