1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মোল্লারহাটে ‘গৃহবধূ ধর্ষণ'

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ অক্টোবর ২০১৬

মোল্লারহাটের একটি গ্রামে গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখার পাশাপাশি কলামও লেখা হয়েছে৷ ডয়চে ভেলের পক্ষ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করা হয়েছে৷

Symbolbild Protest gegen Vergewaltigung
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/Pacific Press/E. McGregor

প্রকৃত ঘটনা জানতে গিয়ে ঘটনার শিকার নারীর স্বামী, এক প্রতিবেশী, এক স্থানীয় সাংবাদিক এবং মোল্লার হাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়েছে৷ তবে রহস্যাবৃত ঘটনাটি এখনো তদন্তাধীন বলে ডয়চে ভেলে সংখ্যালঘু পরিবারের ওই নারী এবং অভিযুক্ত তরুণের নাম প্রকাশ করছে না৷

ঘটনাটি ৩০ সেপ্টেম্বর রাতের৷ আর খবর প্রকাশ হয়েছে ১৫ দিন পর ১৪ অক্টোবর৷  ‘শিরোনাম ‘স্বামীকে বাঁচাতে ধর্ষকের তলোয়ারের কোপে গৃহবধুর পা কর্তন'৷ একই ঘটনার আরেকটি শিরোনাম ‘বাগেরহাটে ১৫ দিন ধরে সংখ্যালঘু এক গৃহবধুকে ধর্ষণ!' আর এ নিয়ে কেউ কলাম লিখেছেন৷ আবার ফেসবুকে কেউ দিয়েছেন পোস্ট৷ এই পরিস্থিতিতেই ডয়চে ভেলের প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের প্রচেষ্টা৷

Bisnu Prosad Chalrobarti - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা বাগেরহাট থেকে আরো ৪০ কিলোমিটার পরে মোল্লারহাটের চুনখোলা ইউনিয়নের শোলাবাড়িয়া গ্রাম৷ ওই গ্রামের এই ঘটনা অনুসন্ধানে বুধবার সেখানে যান একাত্তর টেলিভিশনের বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি বিষ্ণুদাস চক্রবর্তী৷ তিনি ঘটনাস্থল থেকেই টেলিফোনে কথা বলেন ডয়চে ভেলের এই প্রতিবেদকের সঙ্গে৷ তিনি জানান, ‘‘আমি কথিত ঘটনার শিকার নারী, তার স্বামীসহ এলাকার অনেকের সঙ্গে কথা বলেছি৷ কেউ ধর্ষণের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেননি৷ তারা বলেছেন ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি৷''

তাহলে কী ঘটেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘২৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১২টার (৩০ সেপ্টেম্বর) পরের ঘটনা- কাঠের দোতলা বাড়ির নীচে  (আহত নারীর স্বামী) তার ছেলেকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন৷ আর দোতলায় ঘুমাচ্ছিলেন তার স্ত্রী৷ তখন ঘুম ভেঙ্গে গেলে দোতলায় দু'জন নারী পুরুষের কথা শুনতে পেয়ে সিড়ি ( বাঁশের মই) বেয়ে দোতলায় উঠে দেখেন তাঁর স্ত্রী এবং প্রতিবেশী  (অভিযুক্ত) পাশাপাশি বসে গল্প করছেন৷ (অভিযুক্ত ব্যক্তি)  নীচে নামতে গেলে তিনি (আহত নারীর স্বামী) তাকে আটকানোর চেষ্টা করলে সে ছুরি দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করে৷ ঠিক সেই সময় তার স্ত্রীও নামতে গেলে ছুড়ির আঘাত স্ত্রীর পায়ে লাগে এবং তিনি গুরুতর জখম হন৷ এই ফাঁকে সে (অভিযুক্ত) পালিয়ে যায়৷''

মনির মুন্সি

This browser does not support the audio element.

এরপর ১২ অক্টোবর ওই নারীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়৷ তবে তিনি এখন পাশের তেরখাদা উপজেলায় তার মায়ের বাড়িতে আছেন৷ সেখানেও গিয়েছিলেন সাংবাদিক বিষ্ণুদাস চক্রবর্তী৷  তিনি জানান, ‘‘ওই নারীও জানিয়েছেন কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি৷ আমাদের পাশাপশি বসে গল্প করতে দেখেন আমার স্বামী৷ তারপর সে পালাতে গিয়ে আমার পায়ে ছুরিকাঘাত করে৷ গত ৬ মাস ধরে সোবহানের সঙ্গে আমার পরিচয়৷ সে আমাদের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতো৷''

কয়েকটি পত্রিকার খবরে বলা হয়, মোল্লারহাট উপজেলা মটর শ্রমিকলীগের সাধারণ সম্পাদক মনির মুন্সি ওই রাতে এক নারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ কিন্তু মনির মুন্সি ডয়চে ভেলেকে জানান,‘‘আমি ঘটনার রাতে ওই বাড়িতে যাইনি৷ যাই পরের দিন৷ আর ধর্ষণ বা ১৫ দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি৷ আহত হওয়ার পর ১৫ দিন ধরে তাকে চিকিৎসার জন্য বাইরে নেয়া হয়নি৷ আমি ১৫দিন পর তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাই৷ তাই হয়তো ১৫ দিন নিয়ে ভুল সংবাদ পরিবেশন হয়েছে৷''

ওসি আ ন ম খায়রুল আনাম

This browser does not support the audio element.

তবে তিনি অভিযোগ করেন,‘‘নারীর সঙ্গে ভয়ভীতি দেখিয়ে সে (অভিযুক্ত) সম্পর্ক গড়ে তোলে৷ আসা যাওয়া করে৷ সে খারাপ চরিত্রের ছেলে৷ এর আগেও ভয়ভীতি দেখিয়েছে৷''

মোল্লার হাট থানার ওসি আ ন ম খায়রুল আনাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নারীর স্বামী বাদী হয়ে মামলা করেছেন৷ মামলায় ধর্ষণের কথা বলা হয়নি৷ বলা হয়েছে, তার বাড়িতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে স্ত্রীর সঙ্গে বসে কথা বলা এবং পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করার কথা৷''

তিনি বলেন, ‘‘ঘটনা ৩০ সেপ্টেম্বর রাত ১টা বলা হলেও মামলা করা হয়েছে ১৩ অক্টোবর৷ আসামিকে আমরা এখনো গ্রেপ্তার করতে পারিনি৷ মামলার তদন্ত চলছে৷ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি৷ ধর্ষণ বা আটকে রেখে ধর্ষণের কোনো আলামত এখানো পাইনি৷ আর ধর্ষণের অভিযোগও করা হয়নি৷''

আহত নারীর স্বামী

This browser does not support the audio element.

সবশেষে ওই নারীর স্বামীর সঙ্গেও ডয়চে ভেলের প্রতিবেদকের টেলিফোনে কথা হয়৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘ দীর্ঘদিন ধরে সে (অভিযুক্ত) আমাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছিল৷ সে বলছিল আমাদের বাড়ি যখন খুশি আসবে৷ ঘটনার রাতে আমি বাড়ির নীচতলায় ঘুমিয়ে ছিলাম৷ আর আমার স্ত্রী দোতলায়৷ রাত ১২টার পর ঘুম ভেঙ্গে গেলে আমি উপরে কথার শব্দ শুনতে পেয়ে গিয়ে দেখি সে আমার স্ত্রীর সঙ্গে বসে আছে৷ আমাকে দেখে পালাতে দিয়ে আমার স্ত্রীর পায়ে কোপ দেয়৷''

তিনি বলেন, ‘‘গত ১২ দিন ধরে সে (অভিযুক্ত) পলাতক আছে৷ আগে ভয়ে মামলা করিনি, পরে করেছি৷'' তিনি আরো জানান, পাশেই তেরখাদা উপজেলায় তার শ্বশুর বাড়ি৷ সেখানেই এখন তার স্ত্রী আছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ