ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় পেয়ে গ্রুপসেরা হয়েই শেষ ষোল নিশ্চিত করেছে জার্মানি৷ তবে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষকের দৃঢ়তায় ব্যবধান বড় করতে পারেনি ইওয়াখিম ল্যোভের দল৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার রাতে ১-০ ব্যবধানে জার্মানদের জয়ের নায়ক মারিও গোমেজ৷ প্রথমার্ধে একমাত্র গোলটি করেন তিনি৷ শেষ ১৬ বা প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়েছে ৯টি দল৷ দলগুলো হলো সুইজারল্যান্ড, পোল্যান্ড, ওয়েলস, ক্রোয়েশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, ইটালি, স্পেন ও ইংল্যান্ড৷ আগামী শনিবার, অর্থাৎ ২৫ জুন থেকে শুরু হচ্ছে এই পর্বের খেলা৷ সেদিন মুখোমুখি হচ্ছে সুইজারল্যান্ড ও পোল্যান্ড৷
এখন পর্যন্ত ৭ পয়েন্ট নিয়ে ‘এ' গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে স্বাগতিক ফ্রান্স আর ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড৷ গ্রুপ ‘বি'- তে শীর্ষে রয়েছে ওয়েলস, তাদের পয়েন্ট ৬৷ এই গ্রুপে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ইংল্যান্ড৷ ‘ই' গ্রুপে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ইটালি, ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বেলজিয়াম৷ ‘এফ' গ্রুপে এখনো শীর্ষে থাকা হাঙ্গেরির পয়েন্ট ৪, দ্বিতীয় অবস্থানে ২ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে আইসল্যান্ড৷
তবে নর্দান আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে জার্মানদের খেলা হতাশ করেছে দেশটির ফুটবল বোদ্ধাদের৷ বেশিরভাগ গণমাধ্যমই লিখেছে, ১০ জুলাইয়ের ফাইনালে পৌঁছাতে হলে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে জার্মান ফুটবলারদের৷ ২৬ বার সুযোগ পেয়েও বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে মাত্র ১টি গোল করায় সমালোচনার ঝড় উঠেছে দলটির বিরুদ্ধে৷
বেশ কয়েকটি সহজ সুযোগ পেয়েও জার্মান ফুটবলাররা প্রতিপক্ষের জালে মাত্র একবারই বল জড়াতে পেরেছেন৷ মঙ্গলবার গ্রুপের অন্য ম্যাচে ইয়াকুবের একমাত্র গোলে ইউক্রেনকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করেছে পোল্যান্ড৷ ৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের নকআউট পর্বে খেলার আশা এখনো শেষ হয়ে যায়নি৷ ছয়টি গ্রুপের সেরা দুটি করে দল এবং ছয় গুপে তৃতীয় স্থানে থাকা দলগুলোর মধ্যে সেরা চারটি দল পরের পর্বে উঠবে৷
এদিকে, শিরোপা ধরে রাখা কতটা কঠিন হবে তার একটা আভাস গ্রুপ পর্বেই পেয়ে গেছে স্পেন৷ ২-১ ব্যবধানে তাদের হারিয়ে গ্রুপ শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া৷ এই হারে ‘ডি' গ্রুপের রানার্স-আপ হওয়ায় শেষ ষোলোতে বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের খেলতে হবে ইউরোপের আরেক পরাশক্তি ইতালির বিপক্ষে৷ মঙ্গলবার রাতে আলভারো মোরাতার গোলে এগিয়ে যায় স্পেন৷ বিরতির খানিক আগে সমতা ফেরান নিকোলা কালিনিচ৷ শেষ দিকে ক্রোয়েশিয়ার জয় নিশ্চিত করেন ইভান পেরিসিচ৷
ইউরো ২০১৬-তে জার্মানির ২৩ জন
জার্মানির কোচ ইওয়াখিম ল্যোভ ২০১৬ সালের ইউরোপীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য তাঁর দল ঘোষণা করেছেন৷ ডর্টমুন্ডের মার্কো রয়েসসহ চারজন খেলোয়াড়কে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Eisenhuth
মানুয়েল নয়ার
নয়ার যে দলে থাকবেন, সেটা কোলের শিশুরাও বলে দিতে পারতো৷ জার্মানির নাম্বার ওয়ান জার্সিধারী নয়ার কোচ ইওয়াখিম ল্যোভের তালিকাতেও সবার ওপরে৷ বিশ্বের সেরা গোলরক্ষকদের মধ্যে পড়েন, সেই সঙ্গে প্রায় ফুলব্যাকের মতো পেনাল্টি এরিয়া থেকে বেরিয়ে ট্যাকল করতে পারেন মানুয়েল নয়ার৷
ছবি: picture-alliance/dpa/T. Eisenhuth
মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন
নয়ারের বিকল্প৷ বার্সেলোনাতেও ‘ফার্স্ট চয়েস’ নন, শুধুমাত্র চ্যাম্পিয়নস লিগ আর স্প্যানিশ কাপের ম্যাচগুলোতে বার্সেলোনার গোলপোস্টের নীচে থাকেন৷ সেখানে নাম্বার ওয়ান হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা না করতে পারলে, জার্মান একাদশে নয়ারের স্থান নেওয়া তাঁর জন্য দুরাশা৷ তবুও ল্যোভ তাঁর উপর অনেক আশা রাখেন৷
ছবি: M. Rose/Bongarts/Getty Images
ব্যার্ন্ড লেনো
নয়ারের পর মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেনকে ডিঙিয়ে গোলে দু’নম্বর জায়গাটা বুন্ডেসলিগায় লেভারকুজেন দলের গোলরক্ষক ব্যার্ন্ড লেনোও দখল করে নিতে পারেন৷ জার্মানির ইয়ুথ টিমের আমল থেকেই লেনো আর টের স্টেগেনের মধ্যে লড়াই চলছে৷ তবে লেভারকুজেনের গোলে লেনোই অবিসংবাদিত নাম্বার ওয়ান, বার্সেলোনায় টের স্টেগেন যা নন৷
ছবি: picture alliance/Pressefoto/R. Rudel
জেরোম বোয়াটেং ও মাট্স হুমেল্স
বোয়াটেং (বাঁয়ে) আর হুমেল্স হলেন জার্মানির ডিফেন্সের প্রাণকেন্দ্র৷ জার্মানির ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন এই দু’জন৷ বুন্ডেসলিগার আগামী মরশুমে বায়ার্নের ব্যাক লাইনের ব্যাকবোনও হবেন এই দু’জন৷ হুমেল্স এতদিন বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডে ছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/Sven Simon
বেনেডিক্ট হ্যোভেডেস ও ইয়োনাস হেক্টর
জার্মান অথবা ইউরোপীয় ফুটবলে ব্যতিক্রমী ফুলব্যাক খুব বেশি ুপাওয়া যায় না, জার্মান একাদশে মোট ১৪ বছর ধরে যা ছিলেন সাবেক অধিনায়ক ফিলিপ লাম৷ ছবিতে হেক্টর বাঁয়ে ও হ্যোভেডেস ডানে৷ হেক্টর খেলেন কোলনে; হ্যোভেডেসের ক্লাব হলো শালকে৷ হোয়ভেডেস ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ দলেও ছিলেন৷
ছবি: picture alliance/Eibner-Pressefoto
এমরে চান
আরেক ফুলব্যাক, ব্যাকলাইনের যে কোনো পজিশনে খেলতে পারেন৷ আপাতত খেলেন এফসি লিভারপুলের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে৷ বহুমুখী খেলোয়াড়, খুবই কাজের৷
আ এস রোমা-র আন্টোনিও রুডিগার (ডানে) ফুলব্যাক হিসেবে অথবা সেন্ট্রাল ডিফেন্সে খেলতে পারেন৷ ভ্যালেন্সিয়ার শ্কোদ্রান মুস্তাফি মাঝমাঠে খেলতে পছন্দ করলেও উইংয়েও খেলেছেন৷ ২০১৪ সালের দল থেকে মুস্তাফিকে প্রথমে বাদ দেওয়া হয়েছিল, পরে মার্কো রয়েসের ইনজুরির জন্য মুস্তাফি দলে আসেন ও জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে তাঁর অবদান রাখেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Ibing
টোনি ক্রোস ও সামি কেদিরা
এই জুটিকে জার্মান মিডফিল্ডের প্রাণকেন্দ্র বলা চলে৷ এই মৌসুমে ইউভেন্তুসে গিয়ে কেদিরা যেন পুনর্জীবন লাভ করেছেন৷ টোনি ক্রোস আসছেন রেয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফি জয় করার পরে৷ এই জুটিই জার্মানিকে বিশ্বকাপ জিততে সাহায্য করেছিল৷
ছবি: Getty Images/Bongarts/A. Hassenstein
লুকাস পোডোলস্কি ও বাস্টিয়ান শোয়াইনস্টাইগার
জাতীয় একাদশে ‘পোল্ডি’ ও ‘শোয়াইনি’র আবির্ভাব ২০০৪ সালের ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপে৷ সেই থেকে তাঁরা জার্মানির হয়ে প্রতিটি বড় টুর্নামেন্টে খেলে আসছেন৷ তবে ফ্রান্সে তাঁরা কেমন খেলবেন, তা বলা শক্ত৷ সাম্প্রতিক কয়েক বছরে পোডোলস্কি কিছুটা খেলার ‘ধার’ হারিয়েছেন৷ ওদিকে শোয়াইনস্টাইনগার আপাতত একটি চোট কাটিয়ে উঠছেন৷ তবে ল্যোভ দৃশ্যত এই দু’জনকে হাতেই রাখতে চান৷
ছবি: picture alliance/augenklick/GES/M. Gilliar
টোমাস ম্যুলার
বায়ার্নের সাবেক কোচ লুই ফান খাল একবার ঘোষণা করেছিলেন, ‘ম্যুলার খেলবেই৷’ কথাটা বোধহয় জাতীয় দলের ক্ষেত্রেও খাটে৷ ফরোয়ার্ড লাইনে ম্যুলারের মতো গোলগেটারকে বাদ দেওয়ার উপায় নেই৷
ছবি: picture alliance/Pressefoto ULMER/M. Ulmer
মারিও গ্যোৎসে
গ্যোৎসে বায়ার্নে যাবার পর আর ঠিক তাঁর ফর্ম কিংবা জায়গা খুঁজে পাননি৷ তবুও তিনি জাতীয় টিমের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য৷ ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ে জার্মানির হয়ে চূড়ান্ত গোলটি করেছিলেন এই গ্যোৎসে৷ ইউরো ২০১৬ তাঁর জন্য একটা ব্যক্তিগত সুযোগও বটে৷
ছবি: Reuters/M. Rehle
মেসুত ও্যজিল
ওয়েজিল আর্সেনালে ঠিক সুবিধা করে উঠতে পারেননি৷ কখনো ভালো খেলেন আবার কখনো ততোটা চোখে পড়ার মতো নয়৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি জার্মান দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের মধ্যে ধর্তব্য৷ ফ্রান্সে জার্মানির সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করবে প্লে-মেকার হিসেবে ও্যজিলের পার্ফর্মেন্সের উপর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Revierfoto
মারিও গোমেস
তুরস্কে বেসিকটাস ইস্তানবুলের সঙ্গে ভালো একটা মৌসুমই কাটিয়েছেন জার্মানদের প্রিয় ‘সুপার মারিও’৷ ইউরো ২০১২-র পর এই প্রথম জার্মানির হয়ে খেলছেন এই স্ট্রাইকার৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
লিরয় সানে
শালকে-তে খেলেন, ক্রমেই উন্নতি করে চলেছেন এবং সেভাবেই ল্যোভের নজর কেড়েছেন৷ অফেন্সের খেলোয়াড়, বয়স মাত্র বিশ৷ জাতীয় দলে এই প্রথম৷
ছবি: picture alliance/Promediafoto/M. Deines
জোশুয়া কিমিচ
এ বছরই প্রথম বায়ার্নের হয়ে খেলতে শুরু করেন কিমিচ এবং কোচ পেপ গুয়ার্দিওলার প্রিয়পাত্র হয়ে ওঠেন৷ মিডফিল্ড বা ডিফেন্স দুই পজিশনেই খেলতে পারেন, তবে ল্যোভ সম্ভবত কিমিচকে মিডফিল্ডেই ব্যবহার করবেন৷
ছবি: M. Rose/Bongarts/Getty Images
ইউলিয়ান ভাইগল
ডর্টমুন্ডের কোচ টোমাস টুখেল ইউলিয়ান ভাইগলকে তাঁর সেন্ট্রাল মিডফিল্ডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ব্যবহার করেছেন৷ সেকেন্ড ডিভিশন থেকে বুন্ডেসলিগায় আসার পর ভাইগল দেখিয়েছেন, তিনি জাতীয় দলে থাকার যোগ্যতা রাখেন৷ তাই ডর্টমুন্ডের মাটিয়াস গিন্টার, মার্সেল শ্মেলৎসার বা এরিক ডুয়র্ম ডাক না পেলেও, জুলিয়ান ভাইগল ঠিকই ইউরো ২০১৬-য় যাচ্ছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/G. Chai von der Laage
ইউলিয়ান ড্রাক্সলার
ভল্ফসবুর্গে এ মৌসুমে বিশেষ সুবিধা করতে না পারলেও, ড্রাক্সলার স্কোয়াডে থাকছেন৷ একদিকে তাঁর আক্রমণের ক্ষমতা, অন্যদিকে ২০১৪-র বিশ্বকাপে তাঁর অবদান - দুটোই দৃশ্যত ল্যোভের স্মরণে ছিল৷
ছবি: picture alliance/Sven Simon
আন্দ্রে শ্যুয়র্লে
ভল্ফসবুর্গে শ্যুয়র্লেরও মৌসুম যে খুব ভালো কেটেছে, এমন নয়৷ তবে তিনি জাতীয় একাদশের সঙ্গে চিরকালই ভালো পার্ফর্মেন্স দেখিয়ে এসেছেন৷ বুন্ডেসলিগা মৌসুম ভালোভাবেই শেষ করেছেন৷ এবার দেখা যাক ইউরোতে কেমন খেলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/El-Saqqa
ল্যোভ-এর পছন্দ
‘‘আমার মনে হয়, খেলার ক্ষমতার পরেই আসে খেলোয়াড়ের ব্যক্তিত্ব, প্লেয়াররা যাতে মাঠের বাইরেও তাদের ছাপ রাখতে পারে-’’ বলেছেন ল্যোভ৷ দেখা যাক ফ্রান্সে কী ঘটে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. MacDougall
19 ছবি1 | 19
ইউরোর ইতিহাসে রেকর্ড ৭৩৫ মিনিট নিজেদের জাল অক্ষত রাখার পর গোল হজম করল ভিসেন্তে দেল বস্কের দল৷৭০তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার ডিফেন্ডার সিমে নিজেদের ডি বক্সে সিলভাকে ফেলে দিলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি৷ গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে স্পেনকে এগিয়ে নেওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন সার্জিও রামোস৷
৮৭তম মিনিটে কালিনিচের বাড়ানো বল ধরে বাঁ-দিক থেকে কোনাকুনি শটে গোলরক্ষক দাভিদ দে খেয়াকে পরাস্ত করে ক্রোয়েশিয়ার নাটকীয় জয় নিশ্চিত করেন পেরিসিচ৷ এই জয়ে ‘ডি' গ্রুপের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করা ক্রোয়েশিয়ার পয়েন্ট ৭৷ দ্বিতীয় স্থানে থাকা স্পেনের পয়েন্ট ৬৷
যে ১০টি কারণে আপনিও হয়ত ইউরো ২০১৬ দেখবেন
শুরু হয়ে গেছে কাউন্টডাউন৷ ইউরোপীয় ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের চূড়ান্ত লড়াই শুরু হতে আর বেশি বাকি নেই৷ ফ্রান্সে অনুষ্ঠেয় এ আসর উপভোগ করার জন্য মুখিয়ে আছেন সবাই৷ অন্তত দশটি কারণে ইউরো ২০১৬ দেখবেন অনেকে৷
ছবি: Getty Images/M. Hangt
এই প্রথম ২৪ দল
৫৬ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে থাকছে ২৪টি দল৷ চূড়ান্ত পর্বে দল বাড়ানোর লক্ষ্যে বাছাই পর্বও হয়েছে নতুন আদলে৷ সেই সুবাদে এবার ছয়টি দল বেশি থাকছে চূড়ান্ত পর্বে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
দর্শকও বেশি
প্রায় ২৫ লক্ষ দর্শক এবার স্টেডিয়ামে বসে ফ্রান্সের এই আসর উপভোগ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ ২৫ লক্ষের মধ্যে ১৫ লক্ষই হবে বিদেশি দর্শক৷ অন্যান্য দেশ থেকে ফ্রান্সে খেলা দেখতে এসে ফুটবলামোদীরা অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার খরচ করবেন বলেও বিশেষজ্ঞদের অনুমান৷
ছবি: Reuters/Kacper Pempel
প্রায় সারা বিশ্বেই দেখা যাবে
বিশ্বের অন্তত ২৩০টি অঞ্চলে সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হবে ইউরো ২০১৬-র খেলা৷ প্রতিটি ম্যাচ গড়ে অন্তত ১৫ কোটি মানুষ দেখবেন৷
ছবি: Imago/A. Heyder
হবে নতুন ইতিহাস
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে এ পর্যন্ত ২৩৫টি ম্যাচ হয়েছে৷ ২৩৫টি ম্যাচে ২ দশমিক ৪৬ গড়ে গোল হয়েছে ৫৭৯টি৷ এবার দল বাড়ছে৷ সুতরাং আশা করা হচ্ছে এক আসরে সবচেয়ে বেশি গোলের নতুন ইতিহাসও হবে৷
ছবি: Imago
হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
লড়াইটা জমজমাট করার সব রকম প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে৷ প্রতিটি দলকে গ্রুপ পর্বে নিজেদের তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে তিনটি স্টেডিয়ামে৷ প্রতিটি ম্যাচের পরে সব দলই দু দিনের বিশ্রাম পাবে৷
ছবি: Franck Fife/AFP/Getty Images
নতুনের আবাহন
এবার এক আসরেই অভিষেক হচ্ছে পাঁচটি নতুন দলের৷ বাছাই পর্ব উতরে যাওয়ায় এবার প্রথম বারের মতো ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে আলবেনিয়া, আইসল্যান্ড, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও ওয়েলস৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Guez
জার্মানি আর স্পেনের লড়াই
ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি চারবার করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে স্পেন এবং জার্মানি৷ ফিফা বিশ্বকাপের সর্বশেষ দুই চ্যাম্পিয়নও তারা৷ স্পেন সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল ২০১২ সালে৷ আর ফিফা বিশ্বকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি সর্বশেষ ইউরো সাফল্য পেয়েছিল ২০ বছর আগে, অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে৷ দু’দলের সামনেই এবার পঞ্চম শিরোপা জয়ের সুযোগ৷
ছবি: Reuters
সেরা স্কোরারদের লড়াই
বাছাই পর্বে যে তিনজন সবচেয়ে বেশি গোল করেছিলেন তাঁরা তিনজনই থাকছেন চূড়ান্ত পর্বে৷ পোল্যান্ডের রবার্ট লেভান্ডোস্কি বাছাই পর্বে করেছিলেন ১৩ গোল, এছাড়া সুইডেনের ইব্রাহিমোভিচ ১১ বার আর জার্মানির টোমাস ম্যুলার ন’বার বল পাঠিয়েছিলেন প্রতিপক্ষের জালে৷ চূড়ান্ত আসরে তাঁদের লড়াই দেখার আকর্ষণটাও অন্যরকমই হবে৷
ছবি: Reuters/Russell Cheyne
বিশেষ আসর, বিশেষ পুরস্কার
ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফির মর্যাদাও অনেক৷ চ্যাম্পিয়ন দলের হাতে তুলে দেয়া হয় অঁরি দেলনে কাপ৷ প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত উয়েফার মহাসচিব ছিলেন দেলনে৷ ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের সেরার পুরস্কারে তাঁকে স্মরণ করা হয়৷
ছবি: Getty Images/M. Hangt
তারকাদের বিদায়
এবার অনেক বড় তারকাই হয়ত শেষ বারের মতো অংশ নেবেন ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে৷ জার্মানির অধিনায়ক বাস্তিয়ান শোয়াইনস্টাইগার, ইটালির অধিনায়ক জিয়ানলুয়িজি বুফন আর সুইডেনের অধিনায়ক স্লাতান ইব্রাহিমোভিচসহ বেশ কয়েকজন তারকা ফুটবলারেরই হয়ত ক্যারিয়ারের শেষ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ হবে এটি৷