শরীরে খানিকটা বেশি ‘‘উইন্টার ফ্যাট'' জমে যাওয়ায় মোটা হয়ে গিয়েছিল ইঁদুরটি৷ তাই ম্যানহোলের ফুটো দিয়ে বের হতে গিয়ে আটকে যায় সেটি৷ শেষমেষ বেশ কয়েকজন দমকলকর্মীর চেষ্টায় উদ্ধার হয় ইঁদুরটি৷
বিজ্ঞাপন
জার্মানির একটি ছোট শহরে ইঁদুর উদ্ধারের এই খবর সাড়া জাগিয়েছে গোটা বিশ্বে৷ নর্দমার বাসিন্দা পুরুষ ইঁদুরটি সপ্তাহান্তে বাইরে বের হতে গিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিল৷ সেটি ম্যানহোলের ফুটোতে আটকে গেলে খবর দেয়া হয় উদ্ধারকর্মীদের৷ জার্মানির বন্সহাইম শহরের এই ঘটনা বিশ্ব মিডিয়াতে ফলাও করে প্রকাশ হয়েছে৷
প্রাণীরক্ষা বিশেষজ্ঞ মিশায়েল সেয়ার বার্তা সংস্থা ডিপিএকে বলেন, ‘‘ইঁদুরটির শরীরের অনেক ‘উইন্টার ফ্যাট' জমে গিয়েছিল৷ ফলে সেটি ম্যানহোলে এমনভাবে আটকে যায় যে ভেতরেও ফিরতে পারছিল না, বাইরেও আসতে পারছিল না৷''
প্রথমে অবশ্য একজন প্রাণীরক্ষক ইঁদুরটিকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন৷ কিন্তু তিনি ব্যর্থ হওয়ার পর পাশের শহরের দমকলবাহিনীকে খবর দেয়া হয়৷ খবর পেয়ে আটদলের এক উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুরো ম্যানহোলটি তুলে ফেলে এবং চাপ দিয়ে ইঁদুরটিকে মুক্ত করে৷ উদ্ধারের সময় ইঁদুরটি কোনো আঘাত পায়নি৷
এক বিবৃতিতে দমকল বাহিনী জানিয়েছে, ‘‘ইঁদুরটিকে উদ্ধারের পর জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়েছে৷ সেটিকে উদ্ধারে ২৫ মিনিটের মতো সময় লেগেছে৷''
পরবর্তীতে একটি প্রাণীরক্ষা গ্রুপ ইঁদুরটির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করলে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়৷ অনেকেই উদ্ধারকারী দলের প্রশংসা করে লিখেছেন, প্রত্যেক প্রাণীই সাহায্য পাওয়ার দাবি রাখে৷
প্রসঙ্গত, বন্সহাইমে এমন এক সময় ইঁদুরটি উদ্ধার করা হলো যখন জার্মানির আরেক শহর ডর্টমুন্ডে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ইঁদুর হত্যা শুরু হয়েছে৷ ফেসবুকে অনেকে ইঁদুর উদ্ধারে প্রশংসার পাশাপাশি ইঁদুর হত্যার সমালোচনাও করেছেন৷
সবচেয়ে লম্বা পথ পাড়ি দেয় যে দশটি প্রাণী
মানুষ দূরের যাত্রায় পাড়ি দেয় প্লেন, ট্রেন বা বাসে চড়ে৷ ছবিঘরে দেখুন এমন দশটি প্রাণী, যারা মানুষের চেয়ে ঢের লম্বা পথ পাড়ি দেয় কোনো যানবাহন ছাড়াই...
ছবি: Imago/StockTrek Images
১০. স্যামন মাছ (৩,৮০০ কিলোমিটার)
জীবনের প্রথম কিছু বছর ঠাণ্ডা জলে বাস করে এই মাছটি৷ এরপর ডিম পাড়া হলে সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয় তারা৷ তিন থেকে চার বছর পর আবার জীবনের শেষাংশের বছরগুলি কাটাতে ফিরে আসে ঠাণ্ডা জলের নদীতে৷
ছবি: Imago/ZUMA Press/J. Mather
৯. মোনার্ক প্রজাপতি (৪,৮০০ কিলোমিটার)
মূলত ক্যানাডা আর উত্তর অ্যামেরিকার নিবাসী এই প্রজাপতি শীতকাল আসার আগেই হাজার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ পথ পার করে এসে পৌঁছয় মেক্সিকোতে৷ মাত্র কয়েক মাস বাঁচতে পারা এই বিশেষ প্রজাপতি পৃথিবীর চৌম্বকীয় শক্তির সাহায্যে দিক নির্ধারণ করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/O. Torres
৮. রেইনডিয়ার (৫,০০০ কিলোমিটার)
ইউরোপ, এশিয়া আর উত্তর অ্যামেরিকার শীতল অঞ্চলে পাওয়া যায় এই রেইনডিয়ার৷ বরফ গলা শুরু হলে সবুজ ঘাসের আশায় একদিনে ৭০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করতে পারে এই জন্তুটি৷
ছবি: picture-alliance/ dpa
৭. সেমিপালমেটেড স্যান্ডপাইপার (৫,৩০০ কিলোমিটার)
সমুদ্রের ধারে বাস করে এই পাখি৷ শীতকাল শুরু হওয়ার ঠিক আগেই মূল বাসস্থান ক্যানাডা ছেড়ে অ্যামেরিকার দক্ষিণের উদ্দেশ্যে উড়াল দেয় এই পাখি৷ ঝাঁক মেনে চলা পাখিটি একবারে গোটা আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেয়ার ক্ষমতা রাখে৷
ফড়িংয়ের কিছু বিশেষ প্রজাতি চার প্রজন্ম ধরে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় উড়ে বেড়ায়৷ শীতকালে এরা দক্ষিণ এশিয়ার দিকে উড়ে আসতে শুরু করে৷ মোনার্ক প্রজাপতির মতো এরাও হাওয়া ও পৃথিবীর চৌম্বকীয় শক্তির সাহায্যে দিক নির্ধারণ করে৷
ছবি: Getty Images/AFP/J. Guez
৫. লেদারব্যাক কচ্ছপ (২০,০০০ কিলোমিটার)
সমুদ্রে বাস করা এই কচ্ছপটি প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগর অনায়াসেই পাড়ি দেয়৷ খাবারের খোঁজে এই কচ্ছপটি আটলান্টিক মহাসাগরের এক প্রান্ত থেকে ক্যালিফোর্নিয়ার পাশের প্রশান্ত মহাসাগরে এসে জেলিফিশ শিকার করে৷
ক্যালিফোর্নিয়ার অধিবাসী এই সিন্ধুঘোটক তার যাত্রা এখান থেকে শুরু করে বছর ঘুরে আবার একই স্থানে ফিরে আসে৷ গড়ে ২১,০০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া এই প্রাণীটি বছরের বেশ কিছু মাস সমুদ্রে বাস করে৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO/E. u. H. Pum
৩. হাম্পব্যাক তিমি (২৩,০০০ কিলোমিটার)
স্তন্যপায়ী এই জীবের রয়েছে সবচেয়ে দীর্ঘ অভিবাসনের রেকর্ড৷ এই প্রজাতির তিমি মাছ বিশ্বের পাঁচটি মহাসাগরকেই ছুঁয়ে যায়৷
ছবি: Imago/StockTrek Images
২. সুটি শিয়ারওয়াটার (৬৫,০০০ কিলোমিটার)
দেখতে অনেকটা পায়রার মতন এই পাখি নিউজিল্যান্ডের আশেপাশে পাওয়া যায়৷ প্রতিদিন গড়ে ৯০০ থেকে ১,০০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে সক্ষম৷
ছবি: Imago/All Canada Photos
১. আর্কটিক টের্ন (৭১,০০০ কিলোমিটার)
মাত্র ১১৩ গ্রাম ওজনের এই পাখিটি কীভাবে বিশ্বের সব প্রাণীদের চেয়ে লম্বা পথ পাড়ি দেয়, তা বিজ্ঞানীদের কাছে এক বিস্ময়৷ আর্কটিক সার্কল থেকে তার যাত্রা শুরু করে অ্যান্টার্কটিক সার্কলে গিয়ে পৌঁছয় এই পাখিটি৷