একটি নতুন জরিপে দেখা গেছে যে, চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দল তাদের জনপ্রিয়তা ফিরে পেতে শুরু করেছে৷ অপরদিকে এসপিডি দল ও তাদের নতুন নেতা মার্টিন শুলৎসের সমর্থন কমতির দিকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Karmann
বিজ্ঞাপন
মধ্যপ্রাচ্যে একটানা রাজনৈতিক অস্থিরতা৷ প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগোচ্ছে তুরস্ক৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দৃশ্যত দিনের পর দিন পশ্চিমের যৌথ মূল্যবোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন৷ এই পরিস্থিতিতে জার্মানরা আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে চ্যান্সেলর হিসেবে পেয়ে দৃশ্যত খুশি৷ ইনফ্রাটেস্ট-ডিমাপ জরিপ সংস্থা ও জার্মানির সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এআরডি-র সাম্প্রতিক একটি জরিপে এ কথা জানা গিয়েছে৷
যেখানে নারীরা দেশ শাসন করেন
বিশ্বের স্বাধীন রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৫টি৷অধিকাংশ দেশই শাসন করছেন পুরুষরা৷ তবে, নারী সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানের সংখ্যা হাতেগোনা হলেও যারা আছেন তারা বেশ ক্ষমতাধর৷ চলুন দেখে নিই তাঁদের৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Hoslet
আঙ্গেলা ম্যার্কেল
বর্তমানে ৬২ বছর বয়সি জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথম নিয়োগ পান ২০০৫ সালে৷ তিনিই জার্মানির প্রথম নারী সরকার প্রধান৷ চতুর্থবারের মতো এই পদে থেকে যেতে পারেন তিনি৷ সাবেক পূর্ব জার্মানিতে বেড়ে ওঠা এক যাজকের মেয়ে ম্যার্কেল রসায়নে পিএইচডি ডিগ্রি নিয়েছিলেন৷ টাইম ম্যাগাজিন তাঁকে ২০১৫ সালে ‘‘পারসন অফ দ্য ইয়ার’’ ঘোষণা করে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O.Hoslet
টেরেসা মে
টেরেসা মে হচ্ছেন মার্গারেট থ্যাচারের পর যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ ৬০ বছর বয়সি সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত বছরের জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন৷ ঐতিহাসিক ব্রেক্সিট গণভোটের পক্ষে সে দেশের জনগণ রায় দেয়ার পর তিনি ক্ষমতায় আসেন৷ তিনি ঠিক কতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেন তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন রয়েছে৷ চলতি মাসে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে হারলে তাঁকে বিদায় নিতে হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Tyagi
সাই ইং-ভেন
সাই ইং-ভেন হচ্ছেন ‘রিপাবলিক অফ চায়না’ বা তাইওয়ানের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট৷ ২০১৬ সালের মে মাসে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের পর দ্বীপটির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে বেইজিং, কেননা চীন মনে করে দ্বীপটি স্বাধীন নয়৷ তবে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সে দেশের কাছে নতি স্বীকার করবেন না বলে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন সাই৷
ছবি: Reuters/T. Siu
এলেন জনসন সার্লিফ
৭৮ বছর বয়সি এই নারী ২০০৬ সাল থেকে লাইবেরিয়ার রাষ্ট্রপতি৷ তিনি আফ্রিকার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান৷ ২০১১ সালে সার্লিফ এবং লাইবেরিয়া ও ইয়েমেনের আরো দুই নারী শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার জয় করেন৷ অহিংস পথে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সংগ্রাম এবং শান্তিপ্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করায় এই সম্মাননা দেয়া হয় তাঁদের৷
ছবি: Reuters/N. Kharmis
দালিয়া গ্রেবাউসকাইতি
লিথুনিয়ার প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান দালিয়া গ্রেবাউসকাইতি৷ কারাতে ব্লাক বেল্ট থাকায় এবং কথাবার্তায় কঠোর মনোভাব প্রকাশ করায় তাঁকে অনেকেই ‘আয়রন লেডি’ বলেন৷ ৬১ বছর বয়সি গ্রেবাউসকাইতি ২০০৯ সালে প্রথমে দায়িত্ব নেন এবং ২০১৪ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন৷
ছবি: Reuters/E. Vidal
এর্না সোলব্যার্গ
নরওয়ের সরকারপ্রধানও একজন নারী৷ ২০১৩ সালে দ্বায়িত্ব পান তিনি৷ তবে সোলব্যার্গ দেশটির দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী৷ রাজনৈতিক আশ্রয় বিষয়ে কঠোর নীতির কারণে তাঁকে ‘আয়রন এর্না’ বলা হয়ে থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/V. Wivestad Groett
বেয়াটা শিডউয়ো
পোল্যান্ডের তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী বেয়াটা শিডউয়ো৷ ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে দায়িত্বে আছেন তিনি৷ প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি মেয়র এবং সংসদ প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/W. Dabkowski
সারা কুগোনগেলওয়া-আমাথিলা
নামিবিয়ার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী সারা কুগোনগেলওয়া-আমাথিলা ২০১৫ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছেন৷ তরুণ বয়সে সিয়েরা লিয়নে রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন তিনি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে ১৯৯৪ সালে দেশে ফেরেন ৪৯ বছর বয়সি এই নারী৷ তিনি সে দেশের প্রথম নারী সরকারপ্রধান৷
ছবি: Imago/X. Afrika
মিশেল বাচিলেট
২০১৪ সাল থেকে দায়িত্বে রয়েছেন চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেল বাচিলেট৷ তবে এটাই তাঁর প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়া নয়৷ সে দেশের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০৬ থেকে ২০১০ অবধিও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি৷
ছবি: Getty Images/AFP/C. Reyes
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ
ফোর্বস ম্যাগাজিনে ২০১৬ সালে প্রকাশিত বিশ্বের ১০০ ক্ষমতাশালী নারীর মধ্যে স্থান পেয়েছিলেন বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ ২০০৯ সাল থেকে জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম রাষ্ট্রটি শাসন করছেন তিনি৷ তবে রাজনীতিতে তিনি আছেন কয়েক দশক ধরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bildfunk
কোলিন্দা গ্রাবার-কিটারোভিচ
৪৯ বছর বয়সি এই নারী ২০১৫ সালে ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগ অবধি সরকারের বিভিন্ন পদে, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর দেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তিনি সেদেশের প্রথম নারী রাষ্ট্রপ্রধান৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
সালম চুবারবিশভিলি
জর্জিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন৷ ২০১৮ সালের নভেম্বরে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি৷
ছবি: Reuters/D. Mdzinarishvili
12 ছবি1 | 12
জরিপ অনুযায়ী, ম্যার্কেলের ‘অ্যাপ্রুভাল রেটিং' বা অনুমোদনের অনুপাত ২০১৫ সালের হেমন্তে উদ্বাস্তু সংকট শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে৷ প্রধানত সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে আগত প্রায় নয় লাখ রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীকে জার্মানিতে স্বাগত জানানোর পর ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তা অতলে নেমেছিল৷ কিন্তু এখন জার্মানদের ৬৪ শতাংশ চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেলের কর্মদক্ষতায় সন্তুষ্ট, যার অর্থ, ম্যার্কেল দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ৷ এ সপ্তাহের সূচনায় ১,৫০০ জন বাছাই করা নাগরিককে প্রশ্ন করে এই সিদ্ধান্তে আসা হয়৷
আঙ্গেলা ম্যার্কেল: সিডিইউ দলের সাফল্যের চাবিকাঠি
সেপ্টেম্বরের নির্বাচনের বদলে যদি তাদের আজ ভোট দিতে হয়, তবে তারা কোন রাজনৈতিক দলকে ভোট দেবেন – এ প্রশ্নের উত্তরে ৩৮ শতাংশ জার্মান বলেছেন, তারা সিডিইউ বা তার বাভেরীয় সংস্করণ সিএসইউ দলকে ভোট দেবেন৷ সে তুলনায় এসপিডি দলের সমর্থন ২৪ শতাংশ ছাড়াতে পারেনি৷ এক্ষেত্রে মার্টিন শুলৎসের তুলনায় ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তা বিশেষ ভূমিকা রেখেছে বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷ আরেকটি বিকাশধারায় উদারপন্থি এফডিপি দলের জনসমর্থন বেড়ে ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে – যদিও মুক্ত গণতন্ত্রীরা গত সাড়ে তিন বছর ধরে জার্মান সংসদে অনুপস্থিত৷
অভিবাসনবিরোধী দলগুলি জনপ্রিয় নয়
জরিপে বর্তমান দুই বিরোধী দল, বাম ও সবুজদের জনসমর্থন যথাক্রমে আট ও সাত শতাংশ৷ এর একটা কারণ সম্ভবত এই যে, বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার সময় ভোটাররা সাধারণত ক্ষমতাসীন সরকারের উপরেই নির্ভর করে থাকেন৷
জার্মানির জন্য বিকল্প, অর্থাৎ এএফডি আদতে একটি অভিবাসন বিরোধী ‘পপুলিস্ট' দল৷ এই নতুন জরিপে তারা নয় শতাংশ সমর্থন পেয়েছে৷ অর্থাৎ এএফডি যে বুন্ডেসটাগে কিছু আসন পাবে, তা নিশ্চয় করে বলা যায়, যদিও তাদের জনপ্রিয়তা ইউরোপের অন্যান্য পপুলিস্ট দল – যেমন ফ্রান্সের ফ্রঁ নাসিনাল বা ন্যাশনাল ফ্রন্টের তুলনায় অনেক কম৷
ম্যার্কেল ও মার্কিন প্রেসিডেন্টদের রসায়ন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির বিশেষ সম্পর্কের ভিত্তি যথেষ্ট মজবুত হলেও শীর্ষ নেতাদের সম্পর্কের রসায়নের উপর তার বিবর্তন অনেকটাই নির্ভর করে৷ আঙ্গেলা ম্যার্কেল তাঁর ক্ষমতাকালে চারজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের দেখা পেলেন৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
প্রথম সাক্ষাৎ
২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিরোধী দলীয় নেত্রী হিসেবে আঙ্গেলা ম্যার্কেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ সে সময়ে জার্মান চ্যান্সেলর ছিলেন গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার৷
ছবি: AP
চ্যান্সেলর ও প্রেসিডেন্ট
২০০৮ সালের জুন মাসে বার্লিনের কাছে মেসেব্যার্গ-এ জার্মান সরকারের অতিথি নিবাসে মিলিত হয়েছিলেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডাব্লিউ বুশ৷ বুশ দুই দিনের সফরে জার্মানি এসেছিলেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Bergmann
পারিবারিক পরিবেশে বুশ-ম্যার্কেল
২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় জর্জ ডাব্লিউ বুশ ম্যার্কেলকে নিজের খামারবাড়িতে স্বাগত জানান৷ স্ত্রী লরা ও ম্যার্কেলের স্বামী ড. ইওয়াখিম সাউয়ারকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই গাড়ি চালিয়েছিলেন বুশ৷
ছবি: AP
উষ্ণতার বহিঃপ্রকাশ
২০০৮ সালেই রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে জি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে জর্জ ডাব্লিউ বুশ আচমকা ম্যার্কেল-এর কাঁধ মালিশ করে বসেন৷ তাঁর এই স্বতঃস্ফূর্ত উষ্ণতার প্রকাশে ম্যার্কেল অবশ্য কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন৷
নতুন সম্পর্ক
২০০৯ সালে জার্মানির বাডেন বাডেন শহরে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা৷ ম্যার্কেল তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান৷
ছবি: picture-alliance/ dpa
ম্যার্কেল-ওবামা রসায়ন
একই বছর ওয়াশিংটন সফরে জান ম্যার্কেল৷ ধীরে ধীরে ওবামা ও ম্যার্কেলের ব্যক্তিগত উষ্ণতা গড়ে উঠতে শুরু করে৷
ছবি: AP
বিশেষ সম্মান
২০১১ সালে ওয়াশিংটন সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান ‘মেডেল অফ ফ্রিডম’ হাতে পান আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ কিন্তু তার ঠিক পরে এনএসএ কেলেঙ্কারির ফলে ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে ম্যার্কেলের সম্পর্ক কিছুটা শীতল হয়ে পড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নতুন পরিস্থিতি
২০১৫ সালে বাভেরিয়ার মনোরম পরিবেশে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন ওবামা৷ ততদিনে ভ্লাদিমির পুটিনের সঙ্গে বেড়ে চলা সংঘাতের কারণে রাশিয়া একঘরে হয়ে পড়েছে৷
ছবি: Reuters/M. Kappeler
আবেগঘন বিদায়
২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যকালের শেষ পর্যায়ে বার্লিন সফরে আসেন বারাক ওবামা৷ পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে তিনি ম্যার্কেলের নাম উল্লেখ করেন৷
ছবি: Reuters/F. Bensch
নতুন চ্যালেঞ্জ
২০১৭ সালটি অ্যামেরিকা ও জার্মানি – দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ ছিল৷ জানুয়ারি মাসে ওয়াশিংটনে ক্ষমতায় এলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ ম্যার্কেলও আবার ক্ষমতায় এলেন।
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler/R. Sachs
বিরোধ
২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ট্রাম্পের আমলে অ্যামেরিকা ও জার্মানির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ন্যাটো নিয়ে ট্রাম্প ও ম্যার্কেলের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। ট্রাম্পের অ্যামেরিকা ফার্স্ট নীতিও ম্যার্কেল মানতে পারেননি। জার্মানি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করেছেন ট্রাম্প। ফলে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয়েছে।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Vucci
বাইডেনের আমলে
২০২১ সালে জি৭ বৈঠকের ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সঙ্গে ম্যার্কেলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। এবার ম্যার্কেল অ্যামেরিকা গেছেন। চ্যান্সেলার হিসাবে তার সম্ভবত এটাই শেষ সফর। বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকে করবেন তিনি। সেখানে কি সম্পর্কের বরফ গলবে?
ছবি: Adam Schultz/White House/Planet Pix/Zuma/picture alliance
12 ছবি1 | 12
এসপিডি-র ওঠানামা
ইউরোপীয় সংসদের সাবেক অধ্যক্ষ মার্টিন শুলৎস এ বছরের গোড়ায় কিছুটা অপ্রত্যাশিতভাবেই এসিপিডি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হওয়ার কথা ঘোষণা করে৷ গত মার্চে একটি দলীয় সম্মেলনে তিনি প্রতিনিধিদের ১০০ শতাংশ সমর্থন পেয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করেন৷ শুলৎস দলপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেবার পর দশ হাজারের বেশি নতুন সদস্য এসপিডি-তে যোগদান করেছেন, বলে প্রকাশ৷ পাশাপাশি এসপিডি দলের জনসমর্থনও বাড়তে থাকে এবং এক পর্যায়ে ম্যার্কেলের সিডিইউ দলকে ছাড়িয়ে যায়৷
কিন্তু শুলৎসের জনপ্রিয়তা হঠাৎই পড়তে শুরু করে৷ অপরদিকে ম্যার্কেল ওয়াশিংটনে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও ইটালিতে জি-সেভেন শীর্ষবৈঠক উপলক্ষ্যে সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন৷ আজ এসপিডি দলের জনসমর্থন সিডিইউ দলের চেয়ে ১৪ শতাংশ পিছিয়ে; জার্মানদের মাত্র ৩৬ শতাংশের মতে শুলৎস প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করছেন৷
ট্রাম্প ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে নতুন সংশয়
জরিপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি জার্মানদের মনোভাব সম্পর্কেও প্রশ্ন করা হয়েছিল৷ উত্তরদাতাদের মাত্র পাঁচ শতাংশ বলেছেন যে, তাঁরা নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের উপর আস্থা রাখেন৷ মাত্র ২১ শতাংশের মতে, দেশ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আস্থাভাজন – যদিও অতীতে দীর্ঘকাল ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে জার্মানির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র বলে বিবেচনা করা হয়ে এসেছে৷ প্রসঙ্গত, ঐ একই পরিমাণ জার্মান, অর্থাৎ ২১ শতাংশ রাশিয়াকে আস্থাভাজন বলে বিবেচনা করেন৷ সেক্ষেত্রে এমানুয়েল মাক্রোঁ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর এই জরিপে উত্তরদাতাদের ৯৪ শতাংশ বলেছেন যে, তারা ফ্রান্সের উপর আস্থা রাখেন৷