1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ম্যার্কেলের দিন শেষ?

২৯ ডিসেম্বর ২০১৭

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ছে৷ একটি নতুন জরিপ বলছে, অর্ধেক জার্মান চান না যে, ম্যার্কেল চ্যান্সেলর হিসেবে তাঁর চতুর্থ কর্মকাল সমাপ্ত করেন৷ কিন্তু তাঁর দলের দায়িত্ব নেবে কে – অথবা জার্মানির?

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল
ছবি: Reuters/F. Bensch

বুধবার প্রকাশিত একটি নতুন ইউগভ জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৪৭ শতাংশ জার্মান চান না যে, ম্যার্কেল চ্যান্সেলর হিসেবে একটি চতুর্থ কর্মকাল খুবই করুণ৷ অপরদিকে ৩৬ শতাংশ জার্মান বলেছেন যে, তারা ম্যার্কেলকে চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর পদে দেখতে চান৷

অবশ্য তার আগে ম্যার্কেলকে সরকার গঠন করতে হবে৷ তাতে কিছু সময় লাগতে পারে৷ একটি নতুন মহাজোট গঠন সম্পর্কে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা শুরু হচ্ছে আগামী ৭ই জানুয়ারি তারিখে – যদিও বাস্তবিক আলাপ-আলোচনা ফেব্রুয়ারির আগে শুরু হবে না, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ অর্থাৎ ইস্টার পরবের আগে (১লা এপ্রিল, ২০১৮) নতুন সরকার গঠন না-ও হতে পারে৷

বস্তুত সবকিছু যে ঠিকঠাক চলবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই৷ ইতিপূর্বে ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ), বাভেরিয়ার খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন (সিএসইউ), সবুজ দল ও মুক্ত গণতন্ত্রী দল (এফডিপি) একটি তথাকথিত ‘জামাইকা জোট' গঠন সম্পর্কে ধুমধাম করে আলাপ-আলোচনা চালায় বটে – কিন্তু তা ভেস্তে যায় গত নভেম্বরে, যখন এফডিপি দল বেঁকে বসে৷ অপরদিকে এফডিপি দল শেষ মুহূর্তে তাদের নীতি পালটেছে, বলে অন্য দলগুলির তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে৷

ম্যার্কেলকে নিয়ে প্রশ্ন

চলতি সপ্তাহে এফডিপি পালটা কামান দাগে, যখন দলের নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার ও উপ-নেতা ভল্ফগাং কুবিকি, উভয়েই ইঙ্গিত দেন যে, নতুন নির্বাচন হলে এফডিপি দল ম্যার্কেলের নেতৃত্বাধীন কোনো সরকারে যোগদান করবে না৷ এমনকি সিডিইউ দল ম্যার্কেলের নেতৃত্বে এগিয়ে যেতে পারবে কিনা, সে বিষয়ে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন৷

‘‘১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর মিসেস ম্যার্কেল স্বভাবতই তাঁর নিজের (অতীত) পদক্ষেপের বিরোধিতা করতে চান না৷ কিন্তু আমরা একটি নবায়ন প্রকল্পের অঙ্গ হতে চাই,'' লিন্ডনার সপ্তাহান্তে ‘ফ্রাংকফুর্টার আলগেমাইনে সনটাগ্সসাইটুং' পত্রিকাকে বলেন৷

কুবিকি বুধবার ফুঙ্কে মিডিয়া গ্রুপকে অনুরূপ কথা বলেন৷ প্রবীণ রাজনীতিক কুবিকির স্পষ্টবক্তা বলে নাম আছে৷ কুবিকি জামাইকা জোট সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনার ব্যর্থতার জন্য ম্যার্কেলকে দায়ি করেন ও মুচকি হেসে যোগ করেন, ‘‘সিডিইউ কিভাবে তাদের ৩০ শতাংশ ভোটের দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে চায়, সেটা তাদের ব্যাপার৷'' (প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের জরিপে দেখা যাচ্ছে, সিডিইউ দলের জনসমর্থন প্রায় ৩৩ শতাংশ,  সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে সিডিইউ ঠিক যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিল – যা ছিল ১৯৪৯ সাল যাবৎ দলের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ফলাফল)৷

কুবিকি যখন জামাইকা জোট সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা ভণ্ডুল হবার জন্য চ্যান্সেলরকে দায়ি করেন, তখন সে অভিযোগে যে কিছুটা সত্যতা ছিল না, এমন নয়৷ ম্যার্কেলের শাসন করার পদ্ধতি ও তাঁর দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার কারণ হল তিনি সংসদে নিরাপদ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্বলিত একটি মধ্যমপন্থি জোট সরকারে থেকে শান্ত ও প্রায় নিষ্ক্রিয়ভাবে আপোশের মাধ্যমে শাসন চালিয়ে থাকেন৷ সংখ্যালঘু সরকারের প্রধান হিসেবে তাঁকে প্রতিটি আইন পাস করার জন্য বিভিন্ন সংসদীয় গোষ্ঠীর দ্বারস্থ হতে হবে৷

কিন্তু আর কে আছে?

বস্তুত সবাই – এমনকি গোপনে গোপনে ম্যার্কেল নিজেও – যদি উপলব্ধি করে থাকেন যে, ‘ম্যার্কেল আর সে ম্যার্কেল নন,' সেক্ষেত্রেও সিডিইউ প্রধান হিসেবে কে যে তাঁর স্থান নিতে পারে, সে ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন৷ অথচ সিডিইউ এখনও জার্মানির বৃহত্তম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল৷

খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রীদের পরের প্রজন্মে কে অথবা কারা যে হাল ধরতে পারে, কুবিকি সে ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিতেও দ্বিধা করেননি৷ যেমন তিনি ৩৭ বছর বয়সি ইয়েন্স স্পান-এর কথা বলেছেন, যিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রসচিব হিসেবে বিগত কয়েক মাসে মিডিয়ায় মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন, প্রধানত তাঁর বিভিন্ন পপুলিস্ট, প্ররোচনামূলক মন্তব্যের মাধ্যমে৷ সিডিইউ দলের নেতৃত্ব নিয়ে ভবিষ্যৎ কাজিয়ায় তাঁর নিঃসন্দেহে একটি ভূমিকা থাকবে, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

এছাড়া আছেন ৪৪ বছর বয়সি ডানিয়েল গ্যুন্টার, যিনি উত্তরে শ্লেষভিগ-হলস্টাইন রাজ্যে একটি জামাইকা জোট নিয়ে শাসন চালাচ্ছেন৷ রাজ্য পর্যায়ে যা সম্ভব হয়েছে, তা ফেডারাল পর্যায়ে সম্ভব করার জন্য গ্যুন্টারের ডাক পড়তে পারে বৈকি৷

‘রাইনিশে পোস্ট' পত্রিকা গত গ্রীষ্মে এই দুই সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বীর একটি যৌথ সাক্ষাৎকার নেয়৷ গ্যুন্টারকে সেই সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা দেখছি – ঐতিহাসিকভাবে যা বিরল – যে একজন সিডিইউ চ্যান্সেলরের আমলে রাজ্য পর্যায়ে এক দল নতুন মুখ্যমন্ত্রী গড়ে উঠছেন, যারা সরকারি দায়িত্বে অন্যান্য বহু তরুণ সদস্যদের সঙ্গে ম্যার্কেল-পরবর্তী যুগে (সিডিইউ দলের) পূর্ণ সম্ভাবনার গ্যারান্টি দিতে সক্ষম৷''

সিডিইউ-তে আরেকটি নাম মাঝেমধ্যে শোনা যাচ্ছে: তিনি হলেন ৫৫ বছর বয়সি আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার, যিনি ২০১৭-র গোড়ার দিকে পশ্চিমের ছোট্ট সারলান্ড রাজ্যে সিডিইউ দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা নেন৷ কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বাকি দলের তুলনায় কিছুটা বামঘেঁষা হওয়ার ফলে, তিনি ম্যার্কেলের নীতির পুনরাবৃত্তি করবেন বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে – যাকে ঠিক নবায়ন বলা চলবে না৷

ম্যার্কেল স্বয়ং আপাতত তাঁর স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ার-এর সঙ্গে ছুটিতে গেছেন৷ সাউয়ার গত অক্টোবর মাসে পদার্থবিদ্যা ও বুনিয়াদি রসায়নের অধ্যপনা থেকে অবসর গ্রহণ করেন৷ বলতে কি, তিনি আবার নির্বাচনে দাঁড়াবেন, নাকি তাঁর স্বামীর মতো অবসর গ্রহণ করবেন, তা নিয়ে ম্যার্কেল নিজেও নাকি অনেকদিন দোনামোনা করেছেন৷ শেষমেষ দেখা যায়, দৃশ্যত রাজনীতির নেশা বা পেশা, দু'টোর কোনোটাই তাঁকে এত সহজে মুক্তি দিচ্ছে না৷

বেন নাইট/এসি

প্রতিবেদনটি নিয়ে কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ