জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ছে৷ একটি নতুন জরিপ বলছে, অর্ধেক জার্মান চান না যে, ম্যার্কেল চ্যান্সেলর হিসেবে তাঁর চতুর্থ কর্মকাল সমাপ্ত করেন৷ কিন্তু তাঁর দলের দায়িত্ব নেবে কে – অথবা জার্মানির?
বিজ্ঞাপন
বুধবার প্রকাশিত একটি নতুন ইউগভ জরিপে দেখা যাচ্ছে, ৪৭ শতাংশ জার্মান চান না যে, ম্যার্কেল চ্যান্সেলর হিসেবে একটি চতুর্থ কর্মকাল খুবই করুণ৷ অপরদিকে ৩৬ শতাংশ জার্মান বলেছেন যে, তারা ম্যার্কেলকে চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর পদে দেখতে চান৷
অবশ্য তার আগে ম্যার্কেলকে সরকার গঠন করতে হবে৷ তাতে কিছু সময় লাগতে পারে৷ একটি নতুন মহাজোট গঠন সম্পর্কে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দলের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ-আলোচনা শুরু হচ্ছে আগামী ৭ই জানুয়ারি তারিখে – যদিও বাস্তবিক আলাপ-আলোচনা ফেব্রুয়ারির আগে শুরু হবে না, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ অর্থাৎ ইস্টার পরবের আগে (১লা এপ্রিল, ২০১৮) নতুন সরকার গঠন না-ও হতে পারে৷
বস্তুত সবকিছু যে ঠিকঠাক চলবে, তার কোনো গ্যারান্টি নেই৷ ইতিপূর্বে ম্যার্কেলের খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ), বাভেরিয়ার খ্রিষ্টীয় সামাজিক ইউনিয়ন (সিএসইউ), সবুজ দল ও মুক্ত গণতন্ত্রী দল (এফডিপি) একটি তথাকথিত ‘জামাইকা জোট' গঠন সম্পর্কে ধুমধাম করে আলাপ-আলোচনা চালায় বটে – কিন্তু তা ভেস্তে যায় গত নভেম্বরে, যখন এফডিপি দল বেঁকে বসে৷ অপরদিকে এফডিপি দল শেষ মুহূর্তে তাদের নীতি পালটেছে, বলে অন্য দলগুলির তরফ থেকে অভিযোগ ওঠে৷
যেভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাস্ত করেন ম্যার্কেল
এমনকি ২০১৭ সালের নির্বাচনের আগেও তাঁর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো রাজনীতিবিদদের নিষ্ক্রিয় বা পাশে সরিয়ে দিয়েছেন জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ নিজের দল বা বিরোধী দলের অনেক নেতাকেই নানাভাবে ঠেকিয়েছেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ANP/R. De Waal
‘কোল গার্ল’ যখন গুরুকে ছাড়লেন
দীর্ঘদিন চ্যান্সেলর পদে থাকে হেলমুট কোল ম্যার্কেলকে মন্ত্রিসভায় প্রথম সুযোগ দিয়েছেন এবং তাঁর উত্থানে সহায়তা করেছিলেন৷ কিন্তু ১৯৯৮ সালে চ্যান্সেলর পদ হারানোর পর ম্যার্কেল এবং সিডিইউ তাঁর বিপক্ষে চলে যায়৷ কোল কিছু সূত্র থেকে নগদ অর্থ সাহায্য নিয়েছিলেন৷ কিন্তু সে সব সূত্রের বিস্তারিত তিনি জানাননি যা দলের জন্য ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছিলেন সেসময় সিডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Altwein
গেয়ারহার্ড শ্র্যোডার – রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি
২০০৫ সালের নির্বাচনে এসপিডি’র চ্যান্সেলর শ্র্যোডারকে পরাস্ত করেন ম্যার্কেল৷ তবে এই পরাজয়ে শ্র্যোডারের নিজের দাম্ভিকতাও কিছুটা ভূমিকা রেখেছিল৷ সেই নির্বাচনে খুব অল্প ব্যবধানে সিডিইউ’র কাছে হেরে যায় এসপিডি৷ যদিও নির্বাচনের আগে টিভি বিতর্কে তিনি দাবি করেছিলেন, যে জার্মানরা চায় তিনি ক্ষমতায় থাকুন৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি এবং তিনি রাজনীতি থেকে বিদায় নেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার - দীর্ঘদিনের সঙ্গী
শুরুতে ম্যার্কেলের অধীনে চারবছর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন ফ্রাঙ্ক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার৷ এরপর ২০০৯ সালের জাতীয় নির্বাচনে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করেন সামাজিক গণতন্ত্রীদের এই রাজনীতিবিদ৷ কিন্তু সেই নির্বাচনে সুবিধা করতে পারেনি স্টাইনমায়ারের দল৷ পরবর্তীতে ২০১৩ সালে আবারো ম্যার্কেলের অধীনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন স্টাইনমায়ার৷ আর চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে তিনি জার্মানির প্রেসিডেন্ট৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Kembowski
গ্যুন্টার ও্যটিঙার - পথের কাঁটা দূর হলো
ম্যার্কেল যে শুধু তাঁর সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেন এমন নয়৷ বরং নিজের দলে থাকা সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের লোভনীয় অন্য কোন পদেও পাঠিয়ে দেন৷ তাঁর সহকর্মী বাডেন-ভ্যুর্টেমব্যার্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গ্যুন্টার ও্যটিঙারকে ২০১০ সালে তিনি ইউরোপীয় কমিশনে বড় পদে পাঠিয়ে দেন৷ অথচ ও্যটিঙারের সেই পদ পাওয়ার মতো কোনো অভিজ্ঞতাই ছিল না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Seeger
রোনাল্ড কখ - বাতিলের তালিকায় ফেলে দেয়া
দুই কারণে রোনাল্ড কখ পরিচিত৷ প্রথমত, তিনি দলাই লামার বন্ধু৷ দ্বিতীয়ত, সরকারের দ্বৈত নাগরিকত্ব চালুর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কয়েক মিলিয়ন স্বাক্ষর সংগ্রহের জন্য৷ হেসে রাজ্যের এই রাজ্য প্রধান কখনো ম্যার্কেলের উত্থানে বাধা না হলেও হঠাৎ করেই মনে করেছিলেন তাঁকে বার্লিনে বড় পদের জন্য ডাকা হবে৷ কিন্তু ম্যার্কেলকে তাঁকে সেরকম কোন সুযোগ দেননি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ - একজন দুর্ভাগা রাষ্ট্রপতি
ক্রিস্টিয়ান ভুল্ফ প্রেসিডেন্ট হিসেবে ম্যার্কেলের প্রথম পছন্দ ছিলেন না৷ কিন্তু ২০১০ সালে হর্স্ট ক্যোলার পদত্যাগ করার পর সিডিইউ বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারায় ভুল্ফ সুযোগ পেয়ে যান৷ ভুল্ফ তখন লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের রাজ্যপ্রধান৷ পরবর্তীতে অবশ্য দুর্নীতির দায়ে প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে হয় তাঁকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পেয়ার স্টাইনব্রুক – সঠিক মানুষ, ভুল সময়
২০১৩ সালে ম্যার্কেল যখন তাঁর ক্যারিয়ারের তুঙ্গে, তখন এসপিডি থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বেছে নেয়া হয় পেয়ার স্টাইনব্রুক’কে৷ ম্যার্কেলের অধীনে একসময় অর্থমন্ত্রী থাকা এই রাজনীতিবিদের চ্যান্সেলর পদ পাওয়ার সব যোগ্যতাই ছিল৷ কিন্তু সময়টা ঠিক ছিল না৷ ম্যার্কেলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সুবিধা করতে পারেননি তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
7 ছবি1 | 7
ম্যার্কেলকে নিয়ে প্রশ্ন
চলতি সপ্তাহে এফডিপি পালটা কামান দাগে, যখন দলের নেতা ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনার ও উপ-নেতা ভল্ফগাং কুবিকি, উভয়েই ইঙ্গিত দেন যে, নতুন নির্বাচন হলে এফডিপি দল ম্যার্কেলের নেতৃত্বাধীন কোনো সরকারে যোগদান করবে না৷ এমনকি সিডিইউ দল ম্যার্কেলের নেতৃত্বে এগিয়ে যেতে পারবে কিনা, সে বিষয়ে তারা সন্দেহ প্রকাশ করেন৷
‘‘১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর মিসেস ম্যার্কেল স্বভাবতই তাঁর নিজের (অতীত) পদক্ষেপের বিরোধিতা করতে চান না৷ কিন্তু আমরা একটি নবায়ন প্রকল্পের অঙ্গ হতে চাই,'' লিন্ডনার সপ্তাহান্তে ‘ফ্রাংকফুর্টার আলগেমাইনে সনটাগ্সসাইটুং' পত্রিকাকে বলেন৷
কুবিকি বুধবার ফুঙ্কে মিডিয়া গ্রুপকে অনুরূপ কথা বলেন৷ প্রবীণ রাজনীতিক কুবিকির স্পষ্টবক্তা বলে নাম আছে৷ কুবিকি জামাইকা জোট সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনার ব্যর্থতার জন্য ম্যার্কেলকে দায়ি করেন ও মুচকি হেসে যোগ করেন, ‘‘সিডিইউ কিভাবে তাদের ৩০ শতাংশ ভোটের দুর্দশা থেকে মুক্তি পেতে চায়, সেটা তাদের ব্যাপার৷'' (প্রসঙ্গত, চলতি সপ্তাহের জরিপে দেখা যাচ্ছে, সিডিইউ দলের জনসমর্থন প্রায় ৩৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে সিডিইউ ঠিক যে পরিমাণ ভোট পেয়েছিল – যা ছিল ১৯৪৯ সাল যাবৎ দলের সবচেয়ে নিকৃষ্ট ফলাফল)৷
কুবিকি যখন জামাইকা জোট সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা ভণ্ডুল হবার জন্য চ্যান্সেলরকে দায়ি করেন, তখন সে অভিযোগে যে কিছুটা সত্যতা ছিল না, এমন নয়৷ ম্যার্কেলের শাসন করার পদ্ধতি ও তাঁর দীর্ঘকাল ক্ষমতায় থাকার কারণ হল তিনি সংসদে নিরাপদ সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্বলিত একটি মধ্যমপন্থি জোট সরকারে থেকে শান্ত ও প্রায় নিষ্ক্রিয়ভাবে আপোশের মাধ্যমে শাসন চালিয়ে থাকেন৷ সংখ্যালঘু সরকারের প্রধান হিসেবে তাঁকে প্রতিটি আইন পাস করার জন্য বিভিন্ন সংসদীয় গোষ্ঠীর দ্বারস্থ হতে হবে৷
কিন্তু আর কে আছে?
বস্তুত সবাই – এমনকি গোপনে গোপনে ম্যার্কেল নিজেও – যদি উপলব্ধি করে থাকেন যে, ‘ম্যার্কেল আর সে ম্যার্কেল নন,' সেক্ষেত্রেও সিডিইউ প্রধান হিসেবে কে যে তাঁর স্থান নিতে পারে, সে ব্যাপারে কেউ নিশ্চিত নন৷ অথচ সিডিইউ এখনও জার্মানির বৃহত্তম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল৷
খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রীদের পরের প্রজন্মে কে অথবা কারা যে হাল ধরতে পারে, কুবিকি সে ব্যাপারে কিছু পরামর্শ দিতেও দ্বিধা করেননি৷ যেমন তিনি ৩৭ বছর বয়সি ইয়েন্স স্পান-এর কথা বলেছেন, যিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রসচিব হিসেবে বিগত কয়েক মাসে মিডিয়ায় মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন, প্রধানত তাঁর বিভিন্ন পপুলিস্ট, প্ররোচনামূলক মন্তব্যের মাধ্যমে৷ সিডিইউ দলের নেতৃত্ব নিয়ে ভবিষ্যৎ কাজিয়ায় তাঁর নিঃসন্দেহে একটি ভূমিকা থাকবে, বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷
এছাড়া আছেন ৪৪ বছর বয়সি ডানিয়েল গ্যুন্টার, যিনি উত্তরে শ্লেষভিগ-হলস্টাইন রাজ্যে একটি জামাইকা জোট নিয়ে শাসন চালাচ্ছেন৷ রাজ্য পর্যায়ে যা সম্ভব হয়েছে, তা ফেডারাল পর্যায়ে সম্ভব করার জন্য গ্যুন্টারের ডাক পড়তে পারে বৈকি৷
‘রাইনিশে পোস্ট' পত্রিকা গত গ্রীষ্মে এই দুই সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্দ্বীর একটি যৌথ সাক্ষাৎকার নেয়৷ গ্যুন্টারকে সেই সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমরা দেখছি – ঐতিহাসিকভাবে যা বিরল – যে একজন সিডিইউ চ্যান্সেলরের আমলে রাজ্য পর্যায়ে এক দল নতুন মুখ্যমন্ত্রী গড়ে উঠছেন, যারা সরকারি দায়িত্বে অন্যান্য বহু তরুণ সদস্যদের সঙ্গে ম্যার্কেল-পরবর্তী যুগে (সিডিইউ দলের) পূর্ণ সম্ভাবনার গ্যারান্টি দিতে সক্ষম৷''
সিডিইউ-তে আরেকটি নাম মাঝেমধ্যে শোনা যাচ্ছে: তিনি হলেন ৫৫ বছর বয়সি আনেগ্রেট ক্রাম্প-কারেনবাউয়ার, যিনি ২০১৭-র গোড়ার দিকে পশ্চিমের ছোট্ট সারলান্ড রাজ্যে সিডিইউ দলের জয়ে মুখ্য ভূমিকা নেন৷ কিন্তু তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বাকি দলের তুলনায় কিছুটা বামঘেঁষা হওয়ার ফলে, তিনি ম্যার্কেলের নীতির পুনরাবৃত্তি করবেন বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে – যাকে ঠিক নবায়ন বলা চলবে না৷
ম্যার্কেল স্বয়ং আপাতত তাঁর স্বামী ইওয়াখিম সাউয়ার-এর সঙ্গে ছুটিতে গেছেন৷ সাউয়ার গত অক্টোবর মাসে পদার্থবিদ্যা ও বুনিয়াদি রসায়নের অধ্যপনা থেকে অবসর গ্রহণ করেন৷ বলতে কি, তিনি আবার নির্বাচনে দাঁড়াবেন, নাকি তাঁর স্বামীর মতো অবসর গ্রহণ করবেন, তা নিয়ে ম্যার্কেল নিজেও নাকি অনেকদিন দোনামোনা করেছেন৷ শেষমেষ দেখা যায়, দৃশ্যত রাজনীতির নেশা বা পেশা, দু'টোর কোনোটাই তাঁকে এত সহজে মুক্তি দিচ্ছে না৷
বেন নাইট/এসি
প্রতিবেদনটি নিয়ে কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷
জার্মানিতে যে সব নারী চ্যান্সেলর হতে চান
জার্মানির সাতটি মুখ্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে চারটি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হলেন মহিলা৷ চলুন, পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক...
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Anspach
‘মা ম্যার্কেল’
জার্মানির প্রথম মহিলা চ্যান্সেলর হিসেবে ২০০৫ সালে শপথ গ্রহণ করার পর ১২ বছর কেটে গেছে – ম্যার্কেল এখনও সেই পদেই অধিষ্ঠিত রয়েছেন৷ এমনকি নিজের দলের লোকেরাও আজ তাঁকে ‘মুটি’ বা ‘মা’ বলে অভিহিত করে – মা বলতে জাতির জননী – এবং সেটা ঠাট্টা বা অশ্রদ্ধা করে নয়৷ আর্থিক সংকট থেকে শুরু করে উদ্বাস্তু সমস্যা অবধি হাল ধরে রেখে জার্মানিকে বাঁচিয়ে চলেছেন ‘মা’ – এই হলো জনমানসে ম্যার্কেলের ভাবমূর্তি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Bergmann
আরো চার বছর?
জরিপ বলছে, ম্যার্কেলের সিডিইউ দল আগামী ২৪শে সেপ্টেম্বরের নির্বাচনেও ৪০ শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেতে চলেছে৷ অর্থাৎ চ্যান্সেলর হিসেবে ম্যার্কেলের একটি চতুর্থ কর্মকালের পর্যাপ্ত সম্ভাবনা রয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Anspach
‘সবুজ দলের আঙ্গেলা’
জার্মানির সবুজ পার্টি যে পশ্চিমি বিশ্বের সফলতম পরিবেশবাদী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে গণ্য, তার একটি কারণ হলো, জার্মানির সবুজদের ডান কিংবা বাম, কোনোদিকেই ফেলা চলে না৷ ঠিক সেইভাবেই সবুজদের কাট্রিন গ্যোরিং-একহার্ড একদিকে কট্টর পরিবেশবাদী, অন্যদিকে আবার গভীরভাবে ধর্মানুরাগী৷
ছবি: imago/S. Simon
সবুজদের ডবল টিকিট
জার্মানির সবুজদের এবার একজনের বদলে দু’জন মুখ্য প্রার্থী: কাট্রিন গ্যোরিং-একহার্ড ও চেম ও্যজদেমির, একজন মহিলা ও একজন পুরুষ, কিন্তু দু’জনেই মধ্যমপন্থি, এই দু’জনেই আবার দলের যুগ্ম সভাপতি৷ শোনা যাচ্ছে, সবুজরা নাকি এবার ম্যার্কেল সরকারে জোট সহযোগী হবার আশা করছে৷
ছবি: picture-alliance/Sven Simon
বামপন্থি নেত্রী
বামদলের প্রধান সারা ভাগেনক্নেশ্ট কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির ইয়েনা শহরে বড় হয়েছেন৷ তাঁর বাবা ইরানি বংশোদ্ভূত ও মা জার্মান, তাই তাঁর নামের বানান কিন্তু প্রচলিত জার্মান ‘সারাহ’ নয়, বরং ইরানি ধাঁচের ‘সাহরা’৷ তিনি একবার মন্তব্য করেছিলেন, সমাজতন্ত্রের আদর্শের সঙ্গে সাবেক পূর্ব জার্মানির ‘‘কোনো সম্পর্ক নেই’’৷ অপরদিকে তিনি ‘‘শিকার ধরা পুঁজিবাদের’’ বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে চলেছেন৷
ছবি: DW/R.Oberhammer
বিরোধীর ভূমিকায় চিরকাল?
বামদল গত চার বছর ধরে জার্মান সংসদে বৃহত্তম বিরোধী দল৷ ২০১৩ সালে সামাজিক গণতন্ত্রী এসপিডি দল বলেছিল, তারা কোনোমতেই বামদলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করবে না৷ এবার কিন্তু এসপিডি এ বিষয়ে নীরব৷ হয়ত এসপিডি সিডিইউ-সিএসইউ-এর চেয়ে কম আসন পেলেও অন্য একটি জোট সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখছে৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Steffen
‘জার্মানির জন্য বিকল্প’
অ্যালিস ভাইডেলকে উগ্র দক্ষিণপন্থি, বহিরাগত বিদ্বেষি এএফডি দলের মুখাবয়ব বলা চলে কিনা, তা নিয়ে বিতর্ক আছে৷ উচ্চশিক্ষিতা ভাইডেল নিজে সমকামী; তাঁর দল সমকামী বিবাহের বিরোধী৷ এএফডি দল যখন মূলত ইউরো মুদ্রা বিরোধী দল ছিল, তখন ভাইডেল যোগদান করেন৷ সেযাবৎ তাঁর দলে দক্ষিণপন্থি প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে ও দলের একাধিক সদস্যকে সম্প্রতি জাতিবাদী ও বহিরাগত বিদ্বেষি মন্তব্য করতে শোনা গেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Zinken
ভাইডেল একা নন
এএফডি দলও এবার চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে দু’জনকে মনোনীত করেছে, ভাইডেল ও এএফডি দলের যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা আলেক্সান্ডার গাউল্যান্ড৷ ভাইডেল তাঁর দলকে কেন্দ্র করে সব বিতর্ক থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার চেষ্টা করে যথেষ্ট সফল হয়েছেন – যদিও সম্প্রতি একটি টেলিভিশন বিতর্কে তাঁকে সঞ্চালিকার উপর বিরূপ হয়ে স্টুডিও ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়৷