কোন কোন বিষয়গুলি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ? এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন জার্মান ভোটাররা৷ শুধু তাই নয়, কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন – সে কথাও জানিয়েছেন তাঁরা৷ তবে এ দু'য়ের মধ্যে কিছুটা অসঙ্গতি দেখছেন ডয়চে ভেলের জেফারসন চেজ৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Steffen
বিজ্ঞাপন
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, ২৪শে সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রক্ষণশীল সিডিইউ দল প্রতিদ্বন্দ্বী সামাজিক গণতন্ত্রী ও তাদের মুখ্য প্রার্থী মার্টিন শুলৎসের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি ভোট পেতে চলেছে৷
নির্বাচনের ঠিক পাঁচ সপ্তাহ আগে, অর্থাৎ ১৯শে আগস্টের জরিপে দেখা যাচ্ছে, সিডিইউ দল পাবে ৩৯ শতাংশ ভোট, এসপিডি সে তুলনায় বেশ কম, মাত্র ২৪ শতাংশ৷ অথচ এসপিডি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী শুলৎস এখন একটির পর একটি বিবৃতি দিয়ে চলেছেন, জার্মানি জুড়ে জনসভা করছেন৷ কিন্তু শুলৎস ও তাঁর এসপিডি যাই করুন না কেন, ফলং নাস্তি৷ ম্যার্কেল ও তাঁর সিডিইউ দল পূর্বাপর এগিয়ে৷ সাংবাদিকরা বলছেন, নির্বাচনের ইতিমধ্যেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে৷ সাট্টাওয়ালারা এখন ম্যার্কেলের জেতার ওপর এক ইউরোতে এক ইউরো আট সেন্ট রেট দিচ্ছে৷ কিন্তু এ সবের অর্থ কি সামাজিক গণতন্ত্রীদের সুনিশ্চিত ভরাডুবি?
জার্মানির সর্বাধিক জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড ‘বিল্ড' পত্রিকা গত ২০শে আগস্ট একটু অন্য ধরনের একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে৷ দৃশ্যত জার্মান ভোটারদের কাছে যে বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ, তার সব ক'টি প্রথাগতভাবে বস্তুত এসপিডির একচেটিয়া৷
মাত্র ২৯ শতাংশ বলেছেন যে, তাঁদের মতে, অভিবাসন সীমিত করা উচিত
সমান সুযোগ, সমানাধিকার
‘বিল্ড' পত্রিকার জরিপে ১,০০৯ জন উত্তরদাতার ৭৫ শতাংশ বলেছেন, ‘সব শিশুদের জন্য সমান শিক্ষার সুযোগ' তাদের কাছে একটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ জরিপের প্রশ্ন ছিল, কোন কোন বিষয়গুলি তাদের ভোটদানের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে৷
এসপিডি সামাজিক ন্যায়কে তাদের নির্বাচনি প্রচার অভিযানের মূলমন্ত্র করেছে৷ জরিপে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে প্রবীণদের দারিদ্র্য স্থান নিয়েছে, যা কিনা আবার একটি সামাজিক সমতা সংক্রান্ত বিষয়৷ সবে তৃতীয় স্থানে পাওয়া যাচ্ছে সিডিইউ দলের মুখ্য বিষয়: নিরাপত্তা৷
জার্মান নির্বাচনের প্রচারণা প্ল্যাকার্ড
আসল? বিদেশিবিদ্বেষী? সেকেলে? জার্মানির নির্বাচনের জন্য তৈরি পোস্টারে এ রকম আরো অনেক শব্দ দেখা যাচ্ছে৷ ভোটারদের দলে ভেড়াতে বড় দলগুলোর পোস্টারে কী দেখা যাচ্ছে দেখে নেই চলুন৷
ছবি: picture alliance/dpa/B.Pedersen
খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল (সিডিইউ)
টানা তিনবার ক্ষমতায় থাকা জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল নির্বাচনি পোস্টারে এখন আর কোনো অপরিচিত মুখ নন৷ তাঁর দল সিডিইউ ২০ মিলিয়ন ইউরো খরচ করে গোটা জার্মানিতে ২২,০০ প্ল্যাকার্ড বসাচ্ছে৷ এতে জার্মান চ্যান্সেলরের ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডে জার্মান পতাকা ব্যবহারে করে দলটির দেশপ্রেম বোঝানো হয়েছে৷ আর স্লোগানে প্রাধান্য পেয়েছে নিরাপত্তা, পরিবার এবং কাজের মতো বিষয়৷
ছবি: picture alliance/dpa/B.Pedersen
সামাজিক গণতন্ত্রী (এসপিডি)
সামাজিক গণতন্ত্রীরা তাদের দীর্ঘদিনের লাল আর বর্গাকারের লোগোকে পোস্টারে প্রাধান্য দিয়েছে৷ তাদের পোস্টারে শিক্ষা, পরিবার, পেনশন, বিনিয়োগ এবং বেতন বৈষম্যের মতো বিষয়াদি গুরুত্ব পাচ্ছে৷ ২৪ মিলিয়ন ইউরোর নির্বাচনি প্রচারণার পর নির্বাচনের ঠিক আগে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নাকি একটি বোমা ফাটাতে পারে এসপিডি, তবে সেসম্পর্ক কিছু এখনো জানা যায়নি৷
মুক্তগণতন্ত্রী দল (এফডিপি)
মুক্তগণতন্ত্রীদের নির্বাচনি প্রচারণায় খরচ হচ্ছে পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার৷ সাদাকালো ফটোশুটের মাধ্যমে পোস্টারে আধুনিক মার্কেটিংয়ের ছাপ ফুটিয়ে তুলেছে সেদেল৷ তাদের পোস্টারে শোভা পাচ্ছেন একজন: ক্রিস্টিয়ান লিন্ডার৷ তবে পোস্টারে ছোট করে লেখা নানা কথা পড়তে ভোটারদের বেশ কষ্টই করতে হবে৷ ‘অস্থিরতাও একটা গুণ’, লেখা হয়েছে পোস্টারে৷
সবুজ দল
সবুজ দল তাদের দলীয় নীতিকেই নির্বাচনের পোস্টারে তুলে ধরছেন৷ সেদলের স্লোগানে জায়গা করে নিয়েছে পরিবেশ, ইন্টিগ্রেশন এবং শান্তির মতো বিষয়৷ তাদের স্লোগান হচ্ছে, ‘‘পরিবেশই সবকিছু নয়, তবে পরিবেশ ছাড়া সবকিছুই অর্থহীন৷’’
জার্মানির জন্য বিকল্প (এএফডি)
তবে আসন্ন নির্বাচনের সবচেয়ে বিতর্কিত প্ল্যাকার্ড তৈরি করেছে ডানপন্থি এএফডি পার্টি৷ আপাত দৃষ্টিতে এই পোস্টারটি দেখলে মনে হবে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী হাসছেন৷ কিন্তু স্লোগান কী বলছে জানেন? ‘‘নতুন জার্মান? তাদের আমরাই তৈরি করবো৷’’ দলটির আরেক পোস্টারে বিকিনি পরা তিন নারীকে দেখা গেছে৷ আর তাতে লেখা: ‘‘বোরকা? আমরা বিকিনি পছন্দ করি৷’’
বামদল
বামদলের পোস্টারে বিভিন্ন ফস্টের বর্ণিল উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে৷ ‘‘[বর্নিল] মানুষ৷ স্পষ্টভাবে ডানপস্থি ঘৃণার বিরোধী’’, বলছে তাদের স্লোগান৷ দলটির নির্বাচনি প্রচারণায় গুরুত্ব পাচ্ছে সাশ্রয়ী ভাড়া, আরো স্বচ্ছ পেনশনের নিশ্চয়তা এবং অস্ত্র রপ্তানি বন্ধের মতো বিষয়৷
6 ছবি1 | 6
‘বিল্ড' পত্রিকার জরিপে যে ২০টি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সামাজিক ন্যায় বা সমতার প্রশ্নগুলিকে সাধারণভাবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, রক্ষণশীল বা দক্ষিণপন্থি বিষয়গুলিকে নয়৷ মাত্র ২৯ শতাংশ বলেছেন যে, তাঁদের মতে, অভিবাসন সীমিত করা উচিত৷ মাত্র ৯ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেন৷
এসপিডি-র পক্ষে এটা ভালো খবর হওয়ার কথা৷ জার্মানির মুখ্য রাজনৈতিক মতামত জরিপ সংস্থা ‘ফর্শুংসগ্রুপে ভাহলেন' বলছে যে, গত আট বছর ধরে এসিপিডি দলকে ‘সামাজিক বিষয়' অথবা ‘সামাজিক সমতা'-র ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দক্ষতা ও ক্ষমতা সম্পন্ন রাজনৈতিক দল বলে গণ্য করে আসা হচ্ছে৷
অপরদিকে ‘বিল্ড' জরিপের একটি ব্যাখ্যা এ-ও হতে পারে, যে ভোটার সমর্থনের ক্ষেত্রে এসপিডি-র দুর্দশার মূল কারণ তাদের মুখ্য প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনি প্রচার পরিকল্পনার দুর্বলতা৷
শুলৎসকে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন মাত্র ২২ শতাংশছবি: picture-alliance/dpa/W. Kumm
বার্তা নয়, বার্তাবহ
রক্ষণশীলরা আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তাদের প্রচার অভিযানের কেন্দ্রে রেখেছে৷ স্ট্যাটিস্টা জরিপ সংস্থা যখন প্রশ্ন করে, কোনো প্রার্থীকে তারা সরাসরি চ্যান্সেলর হিসেবে নির্বাচন করতেন, তখন উত্তরদাতাদের ৫১ শতাংশ বলেছেন, তারা ম্যার্কেলকেই নির্বাচন করবেন; শুলৎসকে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন মাত্র ২২ শতাংশ আর ২৭ শতাংশ দু'জনের কাউকেই নির্বাচন করতে রাজি নন৷ এ থেকে সন্দেহ হতে পারে যে, এসপিডি-র সমস্যা তাদের বার্তা নয়, বরং তাদের বার্তাবহ মার্টিন শুলৎস৷
এছাড়া বার্তা ও বার্তাবহ, উভয়ের প্রচারণার জন্য এসপিডি যে পন্থা বেছে নিয়েছে, রক্ষণশীলদের তুলনায় তা যেন মান্ধাতার আমলের৷ রক্ষণশীলরাই এবার নির্বাচনি প্রচারের ক্ষেত্রে আধুনিকতা ও নব্যতার পথিকৃৎ, সামাজিক গণতন্ত্রীরা তাদের তুলনায় যেন পুরাতনপন্থি৷ গত সপ্তাহে উভয় দল যখন তাদের মুখ্য নির্বাচনি পোস্টার ও পদ্ধতি ইত্যাদি ঘোষণা করে, তখনই তফাৎটা স্পষ্ট হয়ে যায়৷
জার্মানির জাতীয় নির্বাচন ২০১৭: কবে, কী হচ্ছে
তিনটি রাজ্যে নির্বাচনের পাশাপাশি জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২০১৭ সালে৷ চলুন জেনে নেই জাতীয় নির্বাচনের টাইমলাইন৷
ছবি: picture-alliance/R. Goldmann
জার্মানির বড় নির্বাচনের বছর
জার্মানিতে চলতি বছর আয়োজন করা হচ্ছে একের পর এক নির্বাচন৷ একদিকে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল চতুর্থবারের মতো চ্যান্সেলর পদে লড়ছেন, অন্যদিকে পপুলিস্ট পার্টি অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) অভিবাসীবিরোধী অবস্থানের কারণে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে৷ বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এটা নিশ্চিত যে, ২০১৭ সালের শেষে জার্মানির রাজনৈতিক অবস্থা এখনকার মতো থাকবে না৷
ছবি: Getty Images
জুন ১৯: দলের মনোনয়ন জমা দেয়ার দিন ছিল
জার্মানির সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আবেদনের শেষ দিন ছিল জুন ১৯৷ সেদিন সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে আগ্রহী দলগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আবেদন জানাতে হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Burgi
জুলাই ৭: কোন কোন দল লড়ছে?
সংসদ নির্বাচনে কোন কোন দল অংশ নিতে পারবে তা ঘোষণা করা হবে এই দিনে৷ যদি কোন দল নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট না হয় তাহলে পরবর্তী চারদিনের মধ্যে জার্মানির সাংবিধানিক আদালতে নালিশ করতে পারবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Deck
জুলাই ১৭: কারা কারা থাকছেন?
চলতি বছরের ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের কোন কোন প্রার্থী কোন কোন এলাকায় লড়বেন, তা চূড়ান্ত করতে হবে৷ জার্মানিতে একসঙ্গে দু’টি ভোট দেয়ার সুযোগ রয়েছে৷ প্রথমটি প্রার্থীকে, দ্বিতীয়টি দলকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg
জুলাই ২৭: ব্যালটে নাম উঠানোর লড়াই
যেসব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে সাংবিধানিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে, তাদের বিষয়ে রায় ঘোষণা করা হবে এই দিনে৷ ২০১৩ সালে এই পন্থা চালু করা হয়েছিল৷ সেবছর এগারোটি দল আদালতের স্মরণাপন্ন হলেও কেউই মামলা জেতেনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/W. Steinberg
আগস্ট ১৩: আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা
জার্মানিতে নির্বাচন শুরুর ছয় সপ্তাহ আগ পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিক প্রচারণার পোস্টার বা টেলিভিশন বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারে না৷ চলতি বছরের জাতীয় নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর তারিখ ১৩ আগস্ট৷ এই দিন থেকে দলগুলো তাদের প্রচারণায় কোনো ঘাটতি রাখবে না৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Balk
আগস্ট ২০: কে ভোট দিতে পারবেন?
নির্বাচনের মাসখানেক আগে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তালিকা চূড়ান্ত হবে৷ ভোটার লিস্ট ঘোষণা করবে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ৷ জার্মানিতে ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সি যে কোনো জার্মান নাগরিক ভোট দিতে পারবেন৷ সে হিসেবে চলতি বছর ভোটারের সংখ্যা সাড়ে ৬১ মিলিয়ন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K.-D. Gabbert
সেপ্টেম্বর ৩: তিন সপ্তাহ বাকি
এই সময়ের মধ্যে সকল ভোটার পোস্টে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনে ভোট দেয়ার সার্টিফিকেট পাবেন৷ যারা তখন অবধি ভোটার লিস্টে নিজেদের নাম পাননি, তারা রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ পাবেন৷ আর যারা পোস্টের মাধ্যমে ভোট দিতে চান, তারা ব্যালট পেপার চাইতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/R. Goldmann
সেপ্টেম্বর ২৪: নির্বাচনের দিন
অবশেষে সেই মহেন্দ্রক্ষণ৷ জার্মানির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৪ সেপ্টেম্বর৷ সেদিন সকাল আটটায় নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হবে, চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত৷ ভোটগণনা সেদিনই শেষ হবে এবং নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ রাতে প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সেপ্টেম্বর ২৫: বিজয়ী এবং বিজিত
সকল প্রতিনিধি এবং দলগত ভোট গণনা শেষে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা দেয়া হবে ২৫ সেপ্টেম্বর৷ যদি কোনো প্রার্থী তাঁর নির্বাচনী এলাকায় জিততে ব্যর্থ হন, তা সত্ত্বেও দলগত জয়ের কারণে তিনি সংসদে একটি আসন পেতে পারেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
অক্টোবর ২৪: নতুন সাংসদরা সংসদে
নির্বাচন শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে নতুন সাংসদদের সংসদে মিলিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে৷ এ বছর সেই দিনটি হচ্ছে অক্টোবর ২৪৷ সেদিন গোপন ব্যালটের মাধ্যমে জার্মানির পরবর্তী চ্যান্সেলর নির্বাচিত হবেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
নভেম্বর ২৪: সবকিছু কি সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হয়েছে?
যদি কেউ জাতীয় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে চান, তাহলে তার হাতে সময় থাকে নির্বাচন পরবর্তী দুই মাস৷ ভোটাররাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট যে কেউ নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার রাখেন এই সময়ের মধ্যে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Dedert
12 ছবি1 | 12
শুলৎসকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে এসপিডি দলের বামপন্থি, শ্রমিক আন্দোলন অতীতের ছোঁয়া৷ ‘‘সোজা ভ্যুর্জেলেন থেকে'', এই স্লোগানটির অর্থ, শুলৎস একটি ছোট শহর থেকে এসেছেন – অর্থাৎ তিনি মফস্বলের মানুষ এবং আন্তরিক৷ এসপিডির সাম্প্রতিক ‘প্রেস ইভেন্টে' সাংবাদিকদের প্রথমে দলের বিভিন্ন টেলিভিশন স্পট ও পরে দলীয় হেডকোয়ার্টার্স ঘুরিয়ে দেখানো হয়৷ পরে সকলকে বাসে করে বাড়ি বাড়ি প্রচার অভিযানের একটা ধারণা দেওয়া হয়৷
সে তুলনায় রক্ষণশীল সিডিইউ দলের প্রচারণা এবার ভবিষ্যৎমুখি, হাই-টেক, চকমকে৷ বার্লিনের কেন্দ্রে একটি অব্যবহৃত ভবনে এক অত্যাধুনিক বিজ্ঞাপন সংস্থাকে দিয়ে একটি ‘ইভেন্টের' আয়োজন করায় সিডিইউ৷ সেখানে সুন্দরী হোস্টেস থেকে শুরু করে ইন্টারঅ্যাক্টিভ ইন্সটলেশন বা ভিডিও-স্ক্রিন গেমস, কোনো কিছুরই অভাব ছিল না৷ আর সবার নজর কাড়ার জন্য ছিল একটি সাড়ে সাতশ' কিলোগ্রাম ওজনের ‘স্পন্দনরত হৃদযন্ত্র', তার চতুর্দিকে এলইডি স্ক্রিনে ‘জার্মান সমাজের হৃদযন্ত্র', অর্থাৎ তার অর্থনীতি সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যাবে৷ নির্বাচনি ইস্তাহারের দিন গেছে, তার পরিবর্তে আজকাল ‘টুইট-আপ' আর ‘ইনস্টাওয়াক'-এর ব্যবস্থা করছে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দল৷ পরে ম্যার্কেল একটি ‘টাউনহল মিটিং'-এ চারজন জার্মান ইউটিউব তারকার সঙ্গে কথা বলেন৷
রক্ষণশীলদের এই অত্যাধুনিক প্রচার অভিযানের জবাব দিতে হবে সামাজিক গণতন্ত্রী দল ও তাদের প্রার্থীকে, নয়ত আজ যা জরিপ, কাল তা ভোটের ফলাফলে পরিণত হতে আর বেশি দেরি নেই৷
জেফারসন চেজ/এসি
জার্মানির নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷
জার্মানির যে সাত রাজনৈতিক দলের নামও শোনেননি আপনি
জার্মানরা শুধু সিডিইউ বা এসপিডি নয়, কিছু ছোট এবং বিরল দলকেও ভোট দিতে পারে৷ এই যেমন, প্রাণী সুরক্ষা পার্টি কিংবা মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি৷ ভাবছেন, এরা কারা? চলুন দেখে নিই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
প্রাণী সুরক্ষা দল
জার্মানিতে প্রাণী অধিকার বিষয়ক অ্যাক্টিভিস্টরা সুযোগ পেলে পুরো হাইওয়ে বন্ধ করে দেন যাতে ব্যাঙেরা নিরাপদে রাস্তা পার হতে পারে৷ এমন দেশে তাই ‘অ্যানিমেল প্রোটেকশন পার্টি’ বা প্রাণী সুরক্ষা দল থাকবে না, তা কি হতে পারে? তবে গ্রিন পার্টির কারণে এ দলের পালে হাওয়া কম থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/P. Pleul
দ্য রিপাবলিকানস
ব্যাপারটা কিছুটা বিভ্রান্তিকর৷ জার্মানির রয়েছে নিজস্ব রিপাবলিকান পার্টি, নাম আরইপি৷ তবে এই দলের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনো সম্পর্ক নেই৷ জার্মান রিপাবলিকনরা হচ্ছেন ডানপন্থি জাতীয়তাবাদী, যারা নিজেদের ‘রক্ষণশীল দেশপ্রেমিক’ এবং দেশের ‘সংস্কৃতি এবং আত্মপরিচয়’ রক্ষায় লড়াইরত বলে মনে করেন৷
ছবি: DW
দ্য পার্টি
হ্যাঁ, এই দলের নাম ‘দ্য পার্টি’৷ জার্মানির স্যাটায়ার ম্যাগাজিন ‘টাইটানিক’ এর সম্পাদকরা ২০০৪ সালে এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন৷ দলটির প্রধান হচ্ছেন মার্টিন স্যোনেবর্ন (ছবিতে)৷ ২০১৪ সালে তিনি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টে দলটির জন্য একটি আসন নিশ্চিত করেন৷ ভবিষ্যতে দলটির অবস্থা আরো ভালো হতে পারে৷
ছবি: picture-alliance/Sven Simon/M. Ossowski
গণভোট দল
জার্মানির রেফারেন্ডাম পার্টি বা গণভোট দলের কাছে সুইজারল্যান্ড এক বিশাল অনুপ্রেরণা৷ দলটি চায় দেশের সব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গনভোটের মাধ্যমে জনগণ নেবে৷ সুইজারল্যান্ডে ২০১৬ সালে তেরোটি গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মার্ক্সিস্ট-লেনিনিস্ট পার্টি
জার্মানির এমএলপিডি একটি ছোট দল, যদিও দেশটির অর্ধেক মানুষ এক সময় কমিউনিস্ট ছিলেন৷ মানে ১৯৪৯ থেকে ১৯৮৯ সাল অবধি যখন জার্মানি দুই ভাগে বিভক্ত ছিল৷ তৎকালীন পূর্ব জার্মানি তখন শাসন করেছিল সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি৷ বর্তমানে উগ্র বামপন্থি এমএলপিডি’র জার্মান রাজনীতিতে কোনো ভূমিকা নেই৷
ছবি: picture-alliance/dpa/H. Link
ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি
‘অ্যালায়েন্স সি - ক্রিশ্চিয়ানস ফর জার্মানি’ একটি ক্রিশ্চিয়ান পার্টি, যেটির যাত্রা শুরু হয় ২০১৫ সালে৷ খ্রিষ্টান-মৌলবাদীদের একটি দল এবং শ্রমিক, পরিবেশ এবং পরিবারভিত্তিক একটি দল একত্র হয়ে এই দল গড়ে৷ বাইবেলের মান রক্ষা করে দেশ পরিচালনা করতে চায় এই দল৷