1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ম্যার্কেলের সিডিইউ এগিয়ে

২৭ আগস্ট ২০১৭

কোন কোন বিষয়গুলি তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ? এ প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন জার্মান ভোটাররা৷ শুধু তাই নয়, কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন – সে কথাও জানিয়েছেন তাঁরা৷ তবে এ দু'য়ের মধ্যে কিছুটা অসঙ্গতি দেখছেন ডয়চে ভেলের জেফারসন চেজ৷

ছবি: picture alliance/dpa/P. Steffen

সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে যে, ২৪শে সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের রক্ষণশীল সিডিইউ দল প্রতিদ্বন্দ্বী সামাজিক গণতন্ত্রী ও তাদের মুখ্য প্রার্থী মার্টিন শুলৎসের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি ভোট পেতে চলেছে৷

নির্বাচনের ঠিক পাঁচ সপ্তাহ আগে, অর্থাৎ ১৯শে আগস্টের জরিপে দেখা যাচ্ছে, সিডিইউ দল পাবে ৩৯ শতাংশ ভোট, এসপিডি সে তুলনায় বেশ কম, মাত্র ২৪ শতাংশ৷ অথচ এসপিডি দলের চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী শুলৎস এখন একটির পর একটি বিবৃতি দিয়ে চলেছেন, জার্মানি জুড়ে জনসভা করছেন৷ কিন্তু শুলৎস ও তাঁর এসপিডি যাই করুন না কেন, ফলং নাস্তি৷ ম্যার্কেল ও তাঁর সিডিইউ দল পূর্বাপর এগিয়ে৷ সাংবাদিকরা বলছেন, নির্বাচনের ইতিমধ্যেই নিষ্পত্তি হয়ে গেছে৷ সাট্টাওয়ালারা এখন ম্যার্কেলের জেতার ওপর এক ইউরোতে এক ইউরো আট সেন্ট রেট দিচ্ছে৷ কিন্তু এ সবের অর্থ কি সামাজিক গণতন্ত্রীদের সুনিশ্চিত ভরাডুবি?

জার্মানির সর্বাধিক জনপ্রিয় ট্যাবলয়েড ‘বিল্ড' পত্রিকা গত ২০শে আগস্ট একটু অন্য ধরনের একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করে৷ দৃশ্যত জার্মান ভোটারদের কাছে যে বিষয়গুলি গুরুত্বপূর্ণ, তার সব ক'টি প্রথাগতভাবে বস্তুত এসপিডির একচেটিয়া৷

মাত্র ২৯ শতাংশ বলেছেন যে, তাঁদের মতে, অভিবাসন সীমিত করা উচিত

সমান সুযোগ, সমানাধিকার

‘বিল্ড' পত্রিকার জরিপে ১,০০৯ জন উত্তরদাতার ৭৫ শতাংশ বলেছেন, ‘সব শিশুদের জন্য সমান শিক্ষার সুযোগ' তাদের কাছে একটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ জরিপের প্রশ্ন ছিল, কোন কোন বিষয়গুলি তাদের ভোটদানের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করবে৷

এসপিডি সামাজিক ন্যায়কে তাদের নির্বাচনি প্রচার অভিযানের মূলমন্ত্র করেছে৷ জরিপে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে প্রবীণদের দারিদ্র্য স্থান নিয়েছে, যা কিনা আবার একটি সামাজিক সমতা সংক্রান্ত বিষয়৷ সবে তৃতীয় স্থানে পাওয়া যাচ্ছে সিডিইউ দলের মুখ্য বিষয়: নিরাপত্তা৷

‘বিল্ড' পত্রিকার জরিপে যে ২০টি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সামাজিক ন্যায় বা সমতার প্রশ্নগুলিকে সাধারণভাবে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, রক্ষণশীল বা দক্ষিণপন্থি বিষয়গুলিকে নয়৷ মাত্র ২৯ শতাংশ বলেছেন যে, তাঁদের মতে, অভিবাসন সীমিত করা উচিত৷ মাত্র ৯ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়কে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে মনে করেন৷

এসপিডি-র পক্ষে এটা ভালো খবর হওয়ার কথা৷ জার্মানির মুখ্য রাজনৈতিক মতামত জরিপ সংস্থা ‘ফর্শুংসগ্রুপে ভাহলেন' বলছে যে, গত আট বছর ধরে এসিপিডি দলকে ‘সামাজিক বিষয়' অথবা ‘সামাজিক সমতা'-র ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দক্ষতা ও ক্ষমতা সম্পন্ন রাজনৈতিক দল বলে গণ্য করে আসা হচ্ছে৷

অপরদিকে ‘বিল্ড' জরিপের একটি ব্যাখ্যা এ-ও হতে পারে, যে ভোটার সমর্থনের ক্ষেত্রে এসপিডি-র দুর্দশার মূল কারণ তাদের মুখ্য প্রার্থী ও তাদের নির্বাচনি প্রচার পরিকল্পনার দুর্বলতা৷

শুলৎসকে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন মাত্র ২২ শতাংশছবি: picture-alliance/dpa/W. Kumm

বার্তা নয়, বার্তাবহ

রক্ষণশীলরা আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে তাদের প্রচার অভিযানের কেন্দ্রে রেখেছে৷ স্ট্যাটিস্টা জরিপ সংস্থা যখন প্রশ্ন করে, কোনো প্রার্থীকে তারা সরাসরি চ্যান্সেলর হিসেবে নির্বাচন করতেন, তখন উত্তরদাতাদের ৫১ শতাংশ বলেছেন, তারা ম্যার্কেলকেই নির্বাচন করবেন; শুলৎসকে নির্বাচন করার কথা ভাবছেন মাত্র ২২ শতাংশ আর ২৭ শতাংশ দু'জনের কাউকেই নির্বাচন করতে রাজি নন৷ এ থেকে সন্দেহ হতে পারে যে, এসপিডি-র সমস্যা তাদের বার্তা নয়, বরং তাদের বার্তাবহ মার্টিন শুলৎস৷

এছাড়া বার্তা ও বার্তাবহ, উভয়ের প্রচারণার জন্য এসপিডি যে পন্থা বেছে নিয়েছে, রক্ষণশীলদের তুলনায় তা যেন মান্ধাতার আমলের৷ রক্ষণশীলরাই এবার নির্বাচনি প্রচারের ক্ষেত্রে আধুনিকতা ও নব্যতার পথিকৃৎ, সামাজিক গণতন্ত্রীরা তাদের তুলনায় যেন পুরাতনপন্থি৷ গত সপ্তাহে উভয় দল যখন তাদের মুখ্য নির্বাচনি পোস্টার ও পদ্ধতি ইত্যাদি ঘোষণা করে, তখনই তফাৎটা স্পষ্ট হয়ে যায়৷

শুলৎসকে যেভাবে তুলে ধরা হয়েছে, তাতে এসপিডি দলের বামপন্থি, শ্রমিক আন্দোলন অতীতের ছোঁয়া৷ ‘‘সোজা ভ্যুর্জেলেন থেকে'', এই স্লোগানটির অর্থ, শুলৎস একটি ছোট শহর থেকে এসেছেন – অর্থাৎ তিনি মফস্বলের মানুষ এবং আন্তরিক৷ এসপিডির সাম্প্রতিক ‘প্রেস ইভেন্টে' সাংবাদিকদের প্রথমে দলের বিভিন্ন টেলিভিশন স্পট ও পরে দলীয় হেডকোয়ার্টার্স ঘুরিয়ে দেখানো হয়৷ পরে সকলকে বাসে করে বাড়ি বাড়ি প্রচার অভিযানের একটা ধারণা দেওয়া হয়৷

সে তুলনায় রক্ষণশীল সিডিইউ দলের প্রচারণা এবার ভবিষ্যৎমুখি, হাই-টেক, চকমকে৷ বার্লিনের কেন্দ্রে একটি অব্যবহৃত ভবনে এক অত্যাধুনিক বিজ্ঞাপন সংস্থাকে দিয়ে একটি ‘ইভেন্টের' আয়োজন করায় সিডিইউ৷ সেখানে সুন্দরী হোস্টেস থেকে শুরু করে ইন্টারঅ্যাক্টিভ ইন্সটলেশন বা ভিডিও-স্ক্রিন গেমস, কোনো কিছুরই অভাব ছিল না৷ আর সবার নজর কাড়ার জন্য ছিল একটি সাড়ে সাতশ' কিলোগ্রাম ওজনের ‘স্পন্দনরত হৃদযন্ত্র', তার চতুর্দিকে এলইডি স্ক্রিনে ‘জার্মান সমাজের হৃদযন্ত্র', অর্থাৎ তার অর্থনীতি সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া যাবে৷ নির্বাচনি ইস্তাহারের দিন গেছে, তার পরিবর্তে আজকাল ‘টুইট-আপ' আর ‘ইনস্টাওয়াক'-এর ব্যবস্থা করছে আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সিডিইউ দল৷ পরে ম্যার্কেল একটি ‘টাউনহল মিটিং'-এ চারজন জার্মান ইউটিউব তারকার সঙ্গে কথা বলেন৷

রক্ষণশীলদের এই অত্যাধুনিক প্রচার অভিযানের জবাব দিতে হবে সামাজিক গণতন্ত্রী দল ও তাদের প্রার্থীকে, নয়ত আজ যা জরিপ, কাল তা ভোটের ফলাফলে পরিণত হতে আর বেশি দেরি নেই৷

জেফারসন চেজ/এসি

জার্মানির নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ