ম্যালেরিয়ার নতুন ওষুধ
১২ জুলাই ২০১২তাঁদেরই একজন কলকাতার মেডিকাল কলেজের সার্জিকাল প্যাথলজিস্ট ড. রত্নদীপ গাঙ্গুলি৷ সিনরিয়াম প্রসঙ্গে ড. গাঙ্গুলি প্রথমেই বললেন, এখনো পর্যন্ত ম্যালেরিয়ার সবচেয়ে আধুনিক ওষুধ ছিল আর্টেমিসিন ভিত্তিক ওষুধগুলো৷ সেগুলোর একটা অসুবিধা ছিল, ওগুলো উদ্ভিদ থেকে প্রস্তুত করা হয়৷ কাজেই সংশ্লিষ্ট উদ্ভিদের চাষ কম হলে ওষুধের উৎপাদন কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷ সিনরিয়ামের স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘমেয়াদি, দুটি উপাদান আছে, কিন্তু দুটিই সিন্থেটিক, অর্থাৎ কৃত্রিমভাবে তৈরি করা সম্ভব৷
সিনরিয়ামের দ্বিতীয় সুবিধা হল, এটিকে সিঙ্গল ডোজ মেডিসিন বা একবার খাওয়ার মতো ওষুধ হিসেবেও ব্যবহার করা চলে৷ ড. গাঙ্গুলি বললেন, চিকিৎসকদের পরিভাষায় - ‘পেশেন্ট কমপ্লায়ান্স' বা রোগীর চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চলার কথা৷ এক ডোজের ওষুধে ও'ব্যাপারটা সহজ হয়ে যায়, রোগী যে একটু অসুখ সারলেই ওষুধ খাওয়া কিংবা ডাক্তারের কাছে আসা ছেড়ে দেবে, বিশেষ করে গ্রাম্য জায়গায় যে ব্যাপারটা ঘটে থাকে, সিনরিয়ামের ক্ষেত্রে সে বিপদটা থাকবে না৷
সাধারণভাবে ভারত কিংবা পশ্চিমবঙ্গে ম্যালেরিয়ার পরিস্থিতি সম্পর্কে ড. গাঙ্গুলি বললেন, পরিসংখ্যান বলছে, রোগ কোথাও বেশি ছড়িয়েছে, কোথাও আবার কমে গেছে, এ'ভাবেই চলে৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে ম্যালেরিয়া নির্মূল হবার সম্ভাবনা বিশেষ নেই৷ তাই ড. গাঙ্গুলি ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার চেয়ে রোগ প্রতিরোধকেই বেশি গুরুত্ব দেন, যার মূল পন্থা হল ঘরবাড়িতে অথবা তার কাছে পচা জল জমতে না দেওয়া, মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করা৷ তাঁর মতে, মশার কামড় না খাওয়ার সবচেয়ে ‘স্বাস্থ্যকর' পদ্ধতি হল মশারি ব্যবহার করা৷
আর যদি ম্যালেরিয়া হয়ে যায়, যদি জ্বর হয়, তবে দিন তিনেকের বেশি অপেক্ষা না করে ডাক্তারের কাছে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো উচিৎ৷
সাক্ষাৎকার: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ