ম্যালেরিয়া নির্মূলে নতুন অগ্রগতি
২১ ডিসেম্বর ২০০৮গোটা বিশ্বে প্রাণঘাতি রোগগুলোর অন্যতম হচ্ছে ম্যালেরিয়া৷ মূলত মশার কামড় থেকে এ রোগ মানুষের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে৷ ম্যালেরিয়ার জীবাণু মানুষের শরীরে প্রবেশ করার পর তা গোটা দেহে ছড়িয়ে পড়ে৷ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হলে রোগীর শরীরে জ্বর আসে, কাঁপুনির সৃষ্টি হয় এবং হাড়ের জোড়াগুলেতে ব্যাথা করতে থাকে৷ এছাড়া রোগী বমিও করে৷ ম্যালেরিয়ার মাত্রা বেশী হয়ে গেলে তা মানুষের মস্তিষ্কে মারাত্মক সংক্রামণ ঘটে৷ ফলে এক পর্যায়ে রোগী মারাও যেতে পারে৷
সাধারণত এশিয়া, আফ্রিকা ও আমেরিকার গৃষ্মপ্রধান দেশগুলোতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি দেখা যায়৷ বিশেষ করে আফ্রিকান সাব সাহারান এলাকাতে এ রোগের প্রাদুর্ভাব অত্যন্ত বেশি৷ এছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতেও এ রোগে আক্রান্তের হার উঁচু৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক হিসেব অনুযায়ী ২০০৬ সালে গোটা বিশ্বে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ২৪ কোটিরও বেশি মানুষ যাদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছে আট লাখ ৮১ হাজার লোক৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণঘাতী এ রোগের শিকার হচ্ছে শিশুরা৷
নতুন আশার আলো দেখছেন গবেষকরা
ম্যালেরিয়া ধরা পড়ার পর তা সারিয়ে তুলতে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে থাকে চিকিত্সকরা৷ কিন্তু এ রোগের চূড়ান্ত প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি যার ফলে ম্যালেরিয়া পুরোপুরি নির্মূল করাও সম্ভব হয়নি৷ বিজ্ঞানীরা ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক আবিষ্কারে দিন রাত গবেষণা করে যাচ্ছেন৷ তবে সম্প্রতি এক প্রতিষেধকের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী হয়ে উঠেছেন গবেষকরা৷
আফ্রিকার কেনিয়া এবং তানজানিয়াতে এ প্রতিষেধক পরীক্ষা করে দেখা গেছে শতকরা সর্বোচ্চ ৬৫ ভাগ পর্যন্ত শিশু ম্যালেরিয়া থেকে রক্ষা পেয়েছে৷ গবেষকরা জানিয়েছেন, ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে এখন পর্যন্ত যত টিকা খাওয়ানো হয়েছে তার মধ্যে এটি সবচে বেশি সফল৷ আরটিএসএস নামে এ টিকা তৈরি করেছে গ্ল্যাক্সো স্মিথ ক্লাইন নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান৷ এখানকার গবেষক জো কোহেন বলেছেন, যেসব শিশুদের এ টিকা খাওয়ানো হয়েছে তার ফলাফল আগামী কয়েক বছর পর্যন্ত থাকবে বলে আমাদের বিশ্বাস৷ তবে এ প্রতিষেধক পুরোপুরি ম্যালেরিয়াকে নির্মূল করতে পারবে এখনই তেমনটি ভাবছেন না গবেষকরা৷ তবে তাঁরা আশাবাদী এ প্রতিষেধক আবিষ্কার ম্যালেরিয়া নির্মূলে তাদেরকে অনেকটা এগিয়ে দেবে৷ হয়তো একদিন গুটি বসন্ত কিংবা পোলিওর মত ম্যালেরিয়াও এ পৃথিবী থেকে পুরোপুরি বিদায় নেবে৷