মশা মারতে কামান দাগার কথা মুখে বললেও কার্যক্ষেত্রে বিপজ্জনক মশা মোকাবিলা করা এতকাল বেশ কঠিন ছিল৷ জার্মান বিজ্ঞানীরা ক্ষতিকারক পোকাদের নির্মূল করতে অভিনব এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন৷
বিজ্ঞাপন
পোকার মাধ্যমেই ডেঙ্গু বা ম্যালেরিয়ার মতো বিপজ্জনক সংক্রামক রোগ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়ে পড়ে৷ প্রতি বছর প্রায় ১০০ কোটি মানুষ এমন পোকাবাহিত রোগে সংক্রমিত হন৷ ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটে৷
জার্মানির বন ও লাইপসিশ শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ক্ষতিকারক পোকাদের মোকাবিলা করতে এক সম্পূর্ণ নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পেয়েছেন৷ লাইপসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মাটিয়াস বেয়ার বলেন, ‘‘আগে মানুষ কীটনাশক ব্যবহার করে ঢালাওভাবে সব পোকা ধ্বংস করতো৷ প্রয়োজনীয় পোকাও মরে যেত৷ নতুন পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট পরজীবী পোকা ধ্বংস করা সম্ভব হবে, যারা গাছের ফল নষ্ট করে বা রোগ বহন করে৷
গবেষকরা এই লক্ষ্যে পোকার চারিপাশের কাইটিন বর্মে রদবদল ঘটাচ্ছেন৷ কাইটিন খোলস পোকার আকার নির্ধারণ করে এবং ধাক্কা, বিষাক্ত পদার্থ বা জীবাণু থেকে তাদের রক্ষা করে৷ এই বর্ম ত্বকের কোষ দিয়ে তৈরি, যা এক পদার্থের নিঃসরণ ঘটায়৷ কাইটিন স্তরের গঠনে তথাকথিত প্রতিরোধী প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে বাইরে এক অক্ষত খোলস তৈরি করে সেটি৷ এই প্রোটিনের অভাব ঘটলে কাইটিন স্তরে ফাটল দেখা যায়৷ ড. মাটিয়াস বেয়ার বলেন, ‘‘প্রোটিন না থাকলে বিভিন্ন কাইটিন স্তরগুলির মধ্যে আর বাঁধন থাকে না৷ কিউটিকুলাও তৈরি হয় না৷ সেটা ভেঙে পড়লে সুরক্ষাও লোপ পায়৷
ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য
সাম্প্রতিক সময়ে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে আশানুরুপ সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ৷ ফলে মৃত্যুহার কমার পাশাপাশি, আক্রান্তের হারও কমে যাচ্ছে৷ মূলত সরকার ও বেসরকারি সহায়তায় এসেছে সাফল্য৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Reuters
ঘাতক রোগ ম্যালেরিয়া
ম্যালেরিয়া পৃথিবীজুড়ে এখনো একটি ঘাতক রোগ হিসেবে পরিচিত৷ বিশ্বে প্রতিবছর গড়ে কমপক্ষে পাঁচ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ার কারণে প্রাণ হারান৷ জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, ২০১০ সালে ২১ কোটি ৯০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিল, এর মধ্যে ৬ লাখ ৬০ হাজার মৃত্যুবরণ করে৷ মৃতের এই সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে অবশ্য তথ্যের ভিন্নতা রয়েছে৷
ছবি: Paula Bronstein/Getty Images
বাংলাদেশে ম্যালেরিয়া
বাংলাদেশের বেসরকারি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দশ বছর আগে সারা দেশে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ আক্রান্ত হত ম্যালেরিয়ায় এবং মারা যেত প্রায় পাঁচশ৷ তবে ২০০৭ সাল থেকে ম্যালেরিয়া শনাক্ত ও চিকিৎসা সুবিধা বাড়ায় এই রোগে মৃত্যুহার যেমন কমেছে, তেমনি রোগের বিস্তারও নিয়ন্ত্রণ করা গেছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: Getty Images
সমন্বিত উদ্যোগে সাফল্য
মূলত সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হচ্ছে৷ বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি বেশি৷ তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড় ও বনাঞ্চল সহ সীমান্তবর্তী কয়েকটি জেলায় ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ এখনো পুরোপুরি দূর করা যায়নি৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: Paula Bronstein/Getty Images
কীটনাশকযুক্ত মশারি
ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ কমাতে এখন ভালো ভূমিকা রাখছে কীটনাশকযুক্ত মশারি৷ আগে এসব মশারি ধোয়া নিয়ে যে জটিলতা ছিল তাও দূর হয়েছে৷ ‘লাইফ-নেট’ নামক এক ধরনের মশারি তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা, যার কৃত্রিম তন্তুতেই ঢোকানো থাকে কীটনাশক৷ এই মশারি ধোয়াও যায় নিশ্চিন্তে৷ আর মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার সবচেয়ে সেরা উপায় আজও মশারি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ম্যালেরিয়ার টিকা
তবে ম্যালেরিয়া থেকে বাঁচার সবচেয়ে সহজ পন্থা হলো টিকা তৈরি করা৷ সুদীর্ঘ ত্রিশ বছর গবেষণার পর সম্প্রতি একটি টিকা আবিষ্কৃত হয়েছে, যা মানুষের শরীরে রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করতে সক্ষম৷ ব্রিটিশ ওষুধ কোম্পানি গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন বা জিএসকে-র আশা, তাদের এই টিকা ২০১৫ সালের মধ্যে সর্বত্র ব্যবহৃত হবে৷
ছবি: Reuters
নতুন আশঙ্কা
ম্যালেরিয়ার টিকা আবিষ্কার যেমন আশার কথা শোনাচ্ছে তেমনি নতুন ধরনের ম্যালেরিয়ার খবর জাগাচ্ছে শঙ্কা৷ ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকা সম্প্রতি এক রিপোর্টে নতুন ধরনের ম্যালেরিয়া জীবাণুর কথা জানিয়েছে৷ জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের বরাতে পত্রিকাটি জানায়, ভৌগলিক অবস্থানগত দিক দিয়ে বাংলাদেশ এক নতুন ধরনের ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিজ্ঞানীদের সাফল্য
বিজ্ঞানীরাও থেমে নেই৷ ম্যালেরিয়া সৃষ্টিকারী এমন একটি প্রোটিন বা এনজাইমের সন্ধান তাঁরা পেয়েছেন, যার চক্র থামানো গেলে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ বা নির্মূল করা সম্ভব৷ ঐ এনজাইমের নাম ফসফেটিডাইলিনোজাইটল-ফোর-কাইনাস বা পিআইফোরকে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: DW/G. Manco
জার্মানিতেও উপদ্রব
জার্মানিতেও ম্যালেরিয়া নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে৷ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিকারক হয়ে উঠছে জার্মান মশারাও৷ মারাত্মক জীবাণু বহন করছে তারা৷ বিভিন্ন দেশের মশারা পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের সাথে জার্মানিতে চলে আসে৷ কিছুদিন তারা বেঁচেও থাকে৷ তারপর আবার শীত এলে বিলীন হয়ে যায়৷
সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের চেয়ারম্যান বিল গেটস মনে করেন, বিশ্বে ইন্টারনেট সংযোগ বৃদ্ধির চেয়ে বেশি জরুরি ম্যালেরিয়া নিরাময়৷ সম্ভবত তিনি চাচ্ছেন, বিশ্বের বিত্তশালীরা ইন্টারনেটের প্রসারের পাশাপাশি এই বিষয়টির দিকেও মনোযোগ দিক৷ গেটস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বিল গেটস এবং তাঁর স্ত্রী বিভিন্ন দেশে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন৷
ছবি: Reuters
9 ছবি1 | 9
প্রাপ্তবয়স্ক পোকা এবং লার্ভা বা শূককীট – দুইয়ের ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য৷ কারণ লার্ভারও কাইটিন স্তর থাকে৷ কাইটিন স্তর তৈরির কাজে লার্ভার প্রতিরোধী প্রোটিন না থাকলে সেই পোকা ছোটই থেকে যায়৷ বিজ্ঞানীরা তাদের ‘মিউট্যান্ট' বলছেন৷ তাদের সেই জিনের অভাব রয়েছে, যা সাধারণত প্রতিরোধী প্রোটিন তৈরির নির্দেশিকা স্থির করে৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ানিনা ইয়াসমিন পেশ বলেন, ‘‘সবুজ আলোর অভাব দেখে মিউট্যান্টদের চেনা যায়৷ যেমন এটি একটি মিউট্যান্ট৷ দেখা যাচ্ছে, এটি বিশেষ নড়াচড়াও করছে না৷ একই বয়স হওয়া সত্ত্বেও অন্য লার্ভাগুলি উজ্জ্বল সবুজ, সেগুলি খুবই দ্রুত এবং আকারেও অনেক বড়৷ ফলে মিউট্যান্টদের বিকাশে ত্রুটি বোঝা যায়৷''
এই লার্ভা ছুঁলেই ভেঙে যায়৷ তখন তাদের ত্রুটি চেনা যায়৷ কারণ সুরক্ষার স্তর আর কাজ করে না৷ প্রকৃতির মধ্যে পোকার এই লার্ভা উড়তে অথবা মশা হিসেবে বেড়ে উঠতে পারবে না৷
মাইক্রোস্কোপের নীচে কোনো সুস্থ লার্ভার বাইরের কাইটিন স্তর বা কিউটিকুলা মসৃণ ও অক্ষত দেখায়৷ কিন্তু বিজ্ঞানীরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছেন যে, অসুস্থ মিউট্যান্টের কাইটিন স্তর বিকৃত ও তার বেশ কয়েকটি ভাঁজ রয়েছে৷ এর পরিণতির গুরুত্ব রয়েছে৷ ড. মাটিয়াস বেয়ার বলেন, ‘‘এই কিউটিকুলা ধ্বংস হলে তাদের শরীরের তরল বেরিয়ে আসে৷ সেটি লার্ভা ফাটিয়ে দেয়৷ অথবা মাইক্রো অরগ্যানিজম ঢুকে পড়ে তাকে সংক্রমিত করতে পারে৷ তখন তার মৃত্যু হয়৷
রোগের নাম ‘চিকুনগুনিয়া জ্বর’
ডেঙ্গু জ্বরের কথা আমরা কমবেশি সবাই জানি৷ চিকুনগুনিয়া জ্বর অনেকটা তার মতোই৷ নতুন এই রোগ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, কারণ আফ্রিকার এই জ্বর ইতিমধ্যে ঢাকায় ঢুকে পড়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
মশাবাহিত রোগ
এডিস অ্যালবোপিকটাস ও এডিস এজিপটি নামক মশার কামড়ে চিকুনগুনিয়া জ্বর হয়ে থাকে৷ তবে কেবল নারী এডিস মশাই এই জ্বরের জন্য দায়ী৷
ছবি: picture-alliance/AP
লক্ষণ
মশার কামড় খাওয়ার পাঁচ দিন পর থেকে শরীরে এই রোগের লক্ষণ ফুটে ওঠে৷ এক্ষেত্রে মাথাব্যথা, সর্দি, বমি বমি ভাব, হাত ও পায়ের গিঁটে এবং আঙুলের গিঁটে ব্যথা, ফোসকা পড়া ও শরীর বেঁকে যেতে পারে৷ জ্বর উঠতে পারে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত৷ থাকতে পারে ২ থেকে ১২ দিন৷ তবে সাধারণত ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত জ্বর থাকে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ডেঙ্গু নয়
অনেকে চিকুনগুনিয়া জ্বরকে ডেঙ্গু জ্বর মনে করতে পারেন৷ কারণ এদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে৷ তবে ডেঙ্গুর সঙ্গে চিকুনগুনিয়ার মূল পার্থক্য হলো, এই জ্বরে হাড়ের জোড়াগুলো ফুলে যায়, ডেঙ্গু জ্বরে যেটা হয় না৷
ছবি: picture-alliance/dpa
চিকিৎসা
রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রোগটি শনাক্ত করা যায়৷ এখন পর্যন্ত চিকুনগুনিয়ার কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি৷ তাই চিকুনগুনিয়া সারাতে সাধারণ জ্বরের চিকিত্সা নিলেই চলবে৷ বিশ্রাম, প্রচুর তরল খাবার ও প্যারাসিটামল সেবন করা যেতে পারে৷ তবে চিকুনগুনিয়া জ্বর প্রতিরোধে এডিস মশার প্রজনন বন্ধ করতে হবে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/DW
ঢাকায় চিকুনগুনিয়া
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআর গত বছর এই রোগের উপর একটি সমীক্ষা চালায়৷ এ সময় ঢাকার মোট ৬০১ জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ এদের মধ্যে ২০৭ জনই চিকুনগুনিয়া জ্বরে আক্রান্ত বলে পরীক্ষায় জানা যায়৷ সে হিসেবে ঢাকার প্রায় ৩৩ শতাংশ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ইতিহাস
১৯৫২-৫৩ সালে আফ্রিকার তাঞ্জানিয়ায় প্রথম এই রোগের আবির্ভাব ঘটে৷ বাংলাদেশে প্রথম এ রোগে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং ঢাকার দোহার ও কেরানীগঞ্জে৷ পরে ২০১১ সালের নভেম্বরে নতুন করে পাবনার সাঁথিয়ায় আবারও চিকুনগুনিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়৷ আর ঢাকায় প্রথম দেখা দেয় ২০১৩ সালের আগস্টে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
6 ছবি1 | 6
বন শহরে বিজ্ঞানীরা ‘ফ্রুট ফ্লাই' নিয়ে গবেষণা করছেন৷ তাদের অজ্ঞান করে প্রজননের স্বার্থে পুরুষ ও নারীদের আলাদা করা হয়৷ এই মাছি বাকি পোকাদের মতোই তাদের কাইটিন বর্ম গড়ে তোলে৷ ফলে তাদের ক্ষেত্রে চালানো পরীক্ষার ফলাফল মশা বা অন্যান্য ক্ষতিকারক পোকার উপরও প্রয়োগ করা সম্ভব৷ ড. বেয়ার বলেন, ‘‘এই পদ্ধতির মূলমন্ত্র হলো, আমরা প্রাপ্তবয়স্ক পোকাদের ধ্বংস করছি না, যারা চারিদিকে উড়ে বেড়ায় ও ক্ষতি করে৷ আমরা লার্ভা নির্মূল করছি, যাতে তারা বেড়ে না উঠতে পারে৷ ফলে পরবর্তী প্রজন্ম গড়ে উঠতে পারবে না৷''
গবেষকরা এবার এমন অ্যাক্টিভ এজেন্ট খুঁজছেন, যা প্রতিরোধী প্রোটিন নির্মূল করে দেবে৷ প্রত্যেক প্রজাতির পোকার প্রোটিন আলাদা হওয়ায় সুনির্দিষ্টভাবে একটি প্রজাতির মোকাবিলা করা সম্ভব৷ যেমন ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুবাহী মশা৷