1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যক্ষ্মা রোগের নতুন টিকা

১৪ মে ২০১৮

যক্ষ্মা রোগকে এককালে বলা হত রাজরোগ৷ যক্ষ্মা রোগের একমাত্র টিকার বয়স ১০০ পার হতে চলেছে৷ তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গবেষণা প্রকল্পে একটি নতুন, ‘জীবন্ত’ টিকা তৈরি নিয়ে কাজ চলেছে৷

ছবি: Getty Images/AFP/C. Bouroncle

যক্ষ্মার নতুন টিকা তৈরির চেষ্টা

04:25

This browser does not support the video element.

স্পেনের উত্তরে একটি হাসপাতালে এমন একটি রোগের চিকিৎসা করা হয়, যা বস্তুত ইউরোপ থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে – অথবা যাবার কথা৷

যক্ষ্মা রোগী আলফ্রেদো কাবালেইরো বেসাদা বলছিলেন, ‘‘যক্ষ্মা ধরা পড়ার পরে আমার শুধু দু'টো উপায় ছিল: হয় বহুদিন ধরে হাসপাতালের কামরায় বদ্ধ থাকা, যেখানে মানুষজনকে বিশেষ মুখোশ পরে আমার সঙ্গে দেখা করতে হবে; নয়তো বাড়িতে একা একা থাকা আর চিকিৎসার জন্য প্রতিদিন হাসপাতালে এসে একজন নার্সের উপস্থিতিতে একটি ইনজেকশন নেওয়া ও ২২ রকম ওষুধের বড়ি খাওয়া৷ আমি দ্বিতীয় পন্থাটাই বেছে নিই৷ তবে বাড়ির বাইরে, যেমন রুটির দোকান কিংবা অন্য কোথাও যেতে হলে আমাকে মুখোশ পরে যেতে হয়৷’’

যক্ষ্মা রোগে পৃথিবীতে বছরে ১৫ লাখ মানুষ প্রাণ হারান৷ শুধুমাত্র ইউরোপেই প্রতি বছর এক লাখ নতুন যক্ষ্মা রোগের ঘটনা ধরা পড়ে৷ ফুসফুস বিশেষজ্ঞ রাফায়েল ভাস্কেস জানালেন, ‘‘যক্ষ্মা রোগে ফুসফুস ঝাঁঝরা হয়ে যায়৷ রক্তচলাচলের ফলে যক্ষ্মা রোগ ফুসফুস থেকে শরীরের অন্যান্য অংশে, যেমন মস্তিষ্ক কিংবা হাড়ে বা যেখানেই রক্ত প্রবাহিত হয়, সেখানে ছড়িয়ে পড়তে পারে৷’’

হাসপাতালের কাছে এই বায়ো-ফার্মাসিউটিক্যাল ল্যাবরেটরিতে যক্ষ্মা রোগ নিয়ে গবেষণা চলেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্পটিতে বিজ্ঞানীরা যক্ষ্মা রোগের নাটকীয় ফলশ্রুতির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছেন৷

সারাগোসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজিস্ট কার্লোস মার্তিন বললেন, ‘‘আশির দশকের গোড়ায় আমি যখন ডাক্তারির ছাত্র ছিলাম, তখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন ২০০০ সালের মধ্যে যক্ষ্মা নির্মূল করার কথা ভাবছিল৷ এখন বিশেষজ্ঞরা যক্ষ্মা নির্মূল করার সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ২০৫০ সালের কথা বলছেন৷  কিন্তু সেজন্য আরো তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা করতে হবে; ওষুধ প্রতিরোধের ক্ষমতা সম্পন্ন নতুন ধরনের যক্ষ্মার জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ ও টিকার ব্যবস্থা করতে হবে৷’’

নতুন টিকা

প্রকল্পের প্রথম ফল হলো একটি নতুন টিকা, যা এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানটিতে তৈরি করা হয়েছে৷ এই নতুন টিকা যক্ষ্মা রোগেরএকমাত্র পরিচিত টিকার মতো নয় – সে টিকার বয়সও আজ ১০০ পার হয়েছে! নতুন টিকাটি যক্ষ্মা রোগের জীবাণুর একটি দুর্বলতর সংস্করণ৷ এই নতুন টিকা আরো বেশি নিরাপদ ও কার্যকর হবে বলে গবেষকদের আশা৷

ফার্মাকোলজিস্ট মারিয়া ইউগেনিয়া পুয়েন্তেস বললেন, ‘‘টিকা তৈরির জন্য যক্ষ্মা রোগের জীবন্ত জীবাণু ব্যাপক হারে উৎপাদন করাটা সহজ নয়৷ এটা এমন এক মাইক্রো-অর্গানিজম, যা খুব ধীরে ধীরে বাড়ে৷ তা নিয়ে টিকা তৈরির জন্য এক থেকে দু'মাস অপেক্ষা করতে হয়৷ এছাড়া আমরা একটি ‘জীবন্ত’ টিকার কথা বলছি৷ সে টিকা বাস্তবিক কর্মক্ষম হওয়ার জন্য উৎপাদন প্রক্রিয়া চলাকালীন জীবাণুগুলিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, সজীব রাখতে হবে৷’’

ভিগো থেকে ১,৮০০ কিলোমিটার দূরে, সুইজারল্যান্ডের লোসান শহরে স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে প্রথম ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ শুরু হয়েছে৷ দেখা হচ্ছে, টিকাটা কতোটা নিরাপদ এবং দেহের যে অণুগুলি আমাদের যক্ষ্মা  থেকে বাঁচায়, সেগুলি এই টিকার ফলে সক্রিয় হচ্ছে কিনা৷

ইমিউনোলজিস্ট ফ্রঁসোয়া স্পের্তিনির মতে, ‘‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম পর্যায়ে আমরা যদি দেখাতে পারি যে, স্বেচ্ছাসেবীদের দেহে এই রক্ষাকারী অণুগুলি রয়েছে, তাহলে খুব ভালো হয়৷ তার মানে, বাস্তব রোগীদের ক্ষেত্রে যাদের এই অণুগুলি আছে, তারা অধিকতর সুরক্ষা পাবেন৷ আমরা সেটাই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি৷’’

বৈজ্ঞানিক বৈধতা পাবার জন্য নতুন টিকাকে তিনটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পাস হতে হবে৷ তার দশ বছরের মধ্যেই বাজারে ছাড়ার জন্য টিকা তৈরির কাজ শুরু হতে পারবে বলে গবেষকদের আশা৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ