1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুদের জন্য ‘মার্সি কিলিং’

ব্যার্নড রিগার্ড/ আরবি২ ডিসেম্বর ২০১৩

বেলজিয়ামে মার্সি কিলিং বা যন্ত্রণামুক্তির জন্য স্বেচ্ছামৃত্যু আইনসিদ্ধ৷ এখন মরণাপন্ন বাচ্চা রোগীরাও যাতে মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিতে পারে সে ব্যাপারে তর্ক বিতর্ক চলছে দেশটিতে৷

Drei junge Patienten spielen am Donnerstag (16.12.2010) in München (Oberbayern) in der Tagesklinik für Krebspatienten im Haunerschen Kinderkrankenhaus miteinander. Foto: Tobias Hase dpa/lby
ছবি: picture-alliance/dpa

যে সব বাচ্চা দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত, ব্যথা বেদনায় কাতর তাদের কেন বড়দের মতো মৃত্যু বরণ করার সুযোগ দেওয়া হবে না? এই প্রশ্ন করেন ব্রাসেলসের মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্সি কিলিং সংক্রান্ত গবেষণা গ্রুপের প্রফেসর ইয়ান ব্যার্নহাইম৷

‘‘কঠিন রোগে আক্রান্ত শিশুরা অবাক করার মতো স্পষ্ট চিন্তা ভাবনা করতে পারে৷ ক্যালেন্ডারের বয়সের চেয়ে তারা যেন অনেক বেশি পরিণত৷ মানসিক দিয়ে দিয়ে তারা অনেক বেশি পরিপক্ক ও বয়স্ক৷ মৃত্যুর ইচ্ছা প্রকাশ করলে এই সব বাচ্চাদের সাহায্য করার পক্ষে শিশু চিকিৎসকদের অধিকাংশই'', ডয়চে ভেলেকে জানান ক্যানসার গবেষক ব্যার্নহাইম৷

বেশ কয়েকটি দেশে এই আইন রয়েছে

বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় বেশ কয়েকটি দেশে মার্সি কিলিং-এর অনুমোদন রয়েছে৷ সম্প্রতি ১৬ জন খ্যাতনামা শিশু চিকিৎসক বেলজিয়ামের দুটি পত্রিকায় খোলা চিঠির মাধ্যমে শিশুদের ক্ষেত্রেও মার্সি কিলিং-এর পক্ষে মতামত দেন৷

এর বিরুদ্ধে ধর্মীয় সংগঠনগুলি এক যোগে তীব্র প্রতিবাদ জানান৷ এর মধ্যে রয়েছে ক্যাথলিক, প্রোটেস্টান্ট, অর্থডক্স খ্রিষ্টান, ইহুদি ও মুসলিমদের প্রতিনিধি৷ তাঁদের মতে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের মৃত্যুতে সাহায্য করা নৈতিক কারণেই প্রত্যাখ্যান করা উচিত৷

ব্রাসেলস-এর ‘ইউরোপিয়ান ইন্সটিটিউট অফ বায়োএথিক্স'-এর মুখপাত্র কারিন ব্রোশিয়ে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘একটি বাচ্চা বেলজিয়ামে কোনো বাড়ি কিনতে পারে না, অ্যালকোহল কিনতে পারে না৷ এই ধরনের আইন পাশ হলে তারা স্বেচ্ছা মৃত্যুর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে৷ এটা একটা সমস্যা৷''

অন্য দেশে এই আইন এত শিথিল নয়

বেলজিয়ামে ১১ বছর ধরে ডাক্তারদের সাহায্যে মার্সি কিলিং আইনসিদ্ধ৷ ২০১২ সালে ১৪৩২ জন এইভাবে মৃত্যুবরণ করেন৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির মধ্যে নেদারল্যান্ডস ও লুক্সেমবুর্গের পাশাপাশি বেলজিয়ামের মার্সি কিলিং-এর আইন কানুন বেশ উদার৷ ইইউ-এর অন্যান্য দেশে এক্ষেত্রে আইন কানুন অতটা শিথিল নয়, বা একেবারেই নিষিদ্ধ৷

প্রফেসর ইয়ান ব্যার্নহাইম বলেন, ‘‘অসহ্য শারীরিক বা মানসিক যন্ত্রণার হাত থেকে মুক্ত করার জন্য মার্সি কিলিং অবিবেচকের মতো প্রয়োগ করা হয় না৷ ডাক্তাররা যদি বুঝতে পারেন রোগীর মৃত্যু এতটা সন্নিকটে নয়, তাহলে তৃতীয় একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেন তাঁরা৷ সাধারণত কোনো মনস্তস্ত্ববিদের৷ তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য এক মাস চিন্তা ভাবনা করার সময় পাওয়া যায়৷''

মার্সি কিলিং-এর বিরোধীরা যুক্তি দিয়ে বলেন, অসুস্থদের স্বেচ্ছা মৃত্যুতে সাহায্য করার চেয়ে চিকিৎসা করা উচিত৷

প্রবণতাও বৃদ্ধি পাবে

কারিন ব্রোশিয়ে সতর্ক করে বলেন, মার্সি কিলিং-এর আইনকানুন আরো শিথিল করলে এটিকে প্রয়োগ করার প্রবণতাও বেড়ে যাবে৷'' এর চেয়ে পালিয়াটিভ বা যন্ত্রণানশক চিকিৎসার প্রসার করার দিকে মন দেওয়া উচিত৷ কৃত্রিম উপায়ে খাওয়ানো ও শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার ব্যবস্থা বাতিল করা উচিত৷

ক্যানসারের চিকিৎসক ব্যার্নহাইমও পালিয়াটিভ চিকিৎসার উন্নয়নের পক্ষে৷ তাঁর মতে, যাঁরা অসহনীয় মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে মৃত্যু বরণ করতে চান, তাঁদের মধ্যে ৩০ শতাংশের আবেদনই নাকচ করে দেওয়া হয়৷ এঁদের মধ্যে অনেকেই আবার সিদ্ধান্ত নেন বেঁচে থাকার৷ মার্সি কিলিংটা তাঁদের জন্য হলো শেষ পন্থা৷ এই সুযোগ থাকাটা তাঁদের নিশ্চিন্ত করে৷

আরো আলাপ আলোচনার প্রয়োজন

এই আইনের বিরোধীরা বেলজিয়ামের সমাজে আরো আলাপ আলোচনার আহ্বান জানান৷ রোগীদের পরিবার পরিজন, হাসপাতালের কর্মী, চিকিৎসকরা এই আইনের ফলে চাপের মুখে পড়েন৷ অনেক ডাক্তার সক্রিয়ভাবে মৃত্যুর সহায়তা করতে চান না৷ এমনকি ব্যথা বেদনা লাঘবের জন্য হলেও নয়৷ পরিসংখ্যানের বাইরে থাকা মার্সি কিলিং-এর সংখ্যাটা অনেক বেশি বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা৷ এ ব্যাপারে আরো গবেষণা হওয়া প্রয়োজন৷ মনে করেন এথিক ইন্সটিটিউটের কারিন ব্রোশিয়ে৷

বেলজিয়ামে মার্সি কিলিং বা যন্ত্রণামুক্তির জন্য স্বেচ্ছামৃত্যু আইনসিদ্ধছবি: picture-alliance/dpa

তিনি এমন রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছেন, যারা তাদের চিকিৎসা ঠিকমত হচ্ছে না বলে শঙ্কিত৷ মার্সি কিলিং হাসপাতালগুলির জন্য দীর্ঘস্থায়ীভাবে দেখলে অর্থ সাশ্রয়ীও বটে৷ শিশু ও প্রাথমিক অবস্থায় ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য আইনটি শিথিল করলে এর সীমানা আরো বিস্তৃত হবে৷ আরো আলাপ আলোচনার পর বেলজিয়াম সংসদ কয়েক মাসের মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে৷ জরিপ অনুযায়ী বেলজিয়ামের তিন চতুর্থাংশ মানুষ এই আইন শিথিল করার পক্ষে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ