যাত্রীদের খাবার চাহিদা নিয়ে লুফথানসার গবেষণা
২৩ অক্টোবর ২০১০বিমানযাত্রীদের খাবার ও পানীয় চাহিদা নিয়ে নানা প্রশ্নের জবাব পেতেই গবেষণায় নেমেছে লুফথানসা৷ গবেষণার কাজে লুফথানসাকে সহযোগিতা করছে ফ্রাউনহফার ইন্সটিটিউট৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রায় ১০ হাজার মিটার উঁচু দিয়ে উড়ার সময় বিমানের ভেতরের আর্দ্রতা ১৫ শতাংশ কমে যায়৷ এছাড়া বায়ু চাপ কমে যাওয়ায় শরীরের তরল পদার্থ উপরের দিকে ধাবিত হয়৷ আর্দ্রতা কম থাকায় যাত্রীরা বেশ তাড়াতাড়ি তৃষ্ণার্ত হয়৷ গলা শুকিয়ে আসে৷ আর সে কারণে মস্তিষ্কের গন্ধ এবং স্বাদ গ্রহণকারী কোষ পর্যন্ত খাবারের ঘ্রাণ পৌঁছতেও বিলম্ব হয়৷
এব্যাপারে প্রধান গবেষক ফ্লোরিয়ান মায়ার বলেন, ঠিক ঠাণ্ডা লাগলে যেমনটি হয়, অনেকটা সেরকমই স্বাদ এবং ঘ্রাণ পেতে বাধা তৈরি হয়৷ আর সে কারণেই ভূমিতে খাবারে যতোটা লবণ-ঝাল কিংবা মসলা প্রয়োজন হয়, তার চেয়ে বিমানযাত্রীদের কাছে তার চাহিদা বেশি৷ তাই দেখা গেছে, বিমানযাত্রীরা বেশি মসলাযুক্ত থাই এবং ভারতীয় খাবারই পছন্দ করছেন৷ অবশ্য, লুফথানসা এমনিতেই তরকারি জাতীয় খাবার সরবরাহ করে কম৷ তবে তারা যা করছে তা হলো, বিমানযাত্রীদের জন্য যে রুটি সরবরাহ করছে তাতে একটু বেশি করে লবণ যোগ করছে৷
ঠিক একই সূত্র থেকে বিমানযাত্রীদের টমেটো জুস বেশি খাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন মায়ার৷ কারণ হিসেবে তিনি বলছেন যেহেতু টমেটো জুসে লবণ এবং মরিচের পরিমাণ বেশি থাকে তাই সেটি বিমানযাত্রীদের কাছে বেশ উপভোগ্য হচ্ছে৷ টমেটো জুসকে নিয়ে আরো পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, বায়ুচাপের তারতম্যের সাথে সাথে টমেটো জুসের স্বাদেও পরিবর্তন ঘটে৷ তাই ঠিক যে পরিমাণ লবণ-ঝালযুক্ত টমেটো জুস ভূমিতে বসে খেলে তেমন বেশি পছন্দনীয় হচ্ছে না বিমানে বসে তা খেলেই বেশ মজাদার ঠেকছে৷ কারণ একই৷ বিমানে চাপ কমে যাওয়ার ফলে অতিরিক্ত লবণ-ঝাল একটু কমে আসে৷ তাই তখন সেটি যাত্রীদের কাছে বেশ লোভনীয় হয়ে উঠছে৷ যাহোক বিশ্লেষকদের ধারণা, বিমানযাত্রীদের চাহিদার দিকে খেয়াল রেখে খাবার ও পানীয় পরিবেশন করলে ঠিক খাবার তালিকার কারণেই একদিন ভ্রমণকারীরা হয়তো নির্দিষ্ট বিমানসংস্থাকে বেছে নেবে এমনকি একটু বেশি ভাড়া হলেও৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক