1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাস ভাড়া বাড়তির চেয়ে বেশি!

৮ নভেম্বর ২০২১

বাস-মিনিবাসে যে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে তার চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে৷ আর সিএনজি চালিত বাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছে৷ একই সঙ্গে অটোরিকশা, হিউম্যান হলার ও ব্যাটারি চালিত যানবাহনেও ভাড়া বেড়েছে৷

Bangladesch | Coronavirus | Öffentlicher Nahverkehr in Dhaka
ফাইল ফটোছবি: Harun Ur Rashid Swapan/DW

যাত্রীরা পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের কাছে অসহায়৷ তারা প্রতিবাদও করতে পারছেন না৷ যাত্রীরা সিএনজি চালিত বাসে বেশি ভাড়া দিতে না চাইলে তাদের নেমে যেতে বলা হচ্ছে৷
সকালেই অফিস যাত্রীরা হোঁচট খান৷ তাদের কয়েকজন সিএনজি চালিত বাসে ভাড়া বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন করলে বাসের কন্ডাকটররা জানান, সব বাসেরই ভাড়া বেড়েছে৷ সিএনজি এবং ডিজেল চালিত বলে আলাদা বলে কিছু নেই৷ যাত্রীরা জানান ১০ টাকার ভাড়া ১৫টাকা, ২০ টাকার ভাড়া ৩০ টাকা হয়ে গেছে৷ আর প্রতিবাদ করলে হেলপাররা বাস থেকে নেমে যেতে বলছেন৷
জহিরুল ইসলাম জানান, সোমবার মিরপুর থেকে সবখানেই ৪০ থেকে ৫০ ভাগ ভাড়া বেশি নেয়া হয়েছে৷ আর বাসে উঠলেই ১০ টাকা সেটা আলাদাভাবে হিসেব করেও অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন,"আমার অভিজ্ঞতায় ঢাকার সব বাস গ্যাসে চললেও এখন তারা দাবি করছেন তারা গ্যাসে নয়, তেলে চালান৷”
আসাদুল ইসলাম নামে আরেকজন যাত্রী জানান, গ্যাসচালিত লেগুনায় তিনি জিগাতলা থেকে আসাদ গেট আগে যেতেন ১০ টাকায় কিন্তু সোমবার নিয়েছে ১৫ টাকা৷ একইভাবে ফার্মগেট পর্যন্ত আগে ভাড়া ছিলো ১৭ টাকা এখন নিচ্ছে ২৫ টাকা৷
যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান,"নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত আগের চেয়ে দ্বিগুণ  ৩০ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে৷ আর শাহবাগ পর্যন্ত ভাড়া নেয়া হয়েছে ৪০ টাকা৷ কিন্তু বাড়তি ভাড়া হিসেব করলে আসে ২৮ টাকা৷”
তার পর্যক্ষেণে কোথাও শতকরা ৫০ ভাগ আবার কোথাও শতভাগ ভাড়া বাড়তি গুণতে হয়েছে যাত্রীদের৷ কিন্তু ভাড়া বেড়েছে ২৬-২৭ ভাগ৷ তিনি আরেকটি নতুন প্রতারণার কথা বলেন৷ যার নাম ওয়েবিল প্রতারণা৷ তার অভিযোগ,"দূরত্ব দেখে ভাড়া না নিয়ে ওয়েবিল অনুযায়ী ভাড়া নেয়া হচ্ছে৷ তার মানে হলো বাস ছাড়ার কয়েকটি স্টপেজ পর সিটিং বলে যে যেখানেই নামুক না কেন সবার কাছ থেকে সর্বশেষ স্টপজের ভাড়া আদায় করা হচ্ছে৷”
এদিকে সিএনজি চালিত বাসের ভাড়াও একই হারে বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি৷ তিনি বলেন,"২০১৬ সালে যখন গ্যাসের বিল বাড়ানো হয় তখন মালিকেরা বলেন তাদের ৯৫ ভাগ গাড়ি গ্যাসে চলে৷ আর এখন যখন ডিজেলের দাম বাড়ানো হলো তখন তারা বলেন তাদের সব গাড়ি ডিজেলে চলে৷ এটা তাদের ভাড়া বাড়ানোর একটি কৌশল৷”
এদিকে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া কেমন বেড়েছে তা পর্যবেক্ষণ করে বাংলাদেশ শ্রমিক পরিবহন লীগের সভাপতি মো. হানিফ খোকন জানান, বাসের ভাড়া কমপক্ষে ৫০ ভাগের মত বাড়ানো হয়েছে৷ কেউই সরকার নির্ধারিত নতুন ভাড়া মানছেন না৷ ইচ্ছেমত আদায় করা হচ্ছে৷
তিনি জানান, ঢাকা চট্টগ্রামের দূরত্ব ২৬০ কিলোমিটার, তাই নতুন হিসেবে ভাড়া হওয়া উচিত ৫০০ টাকা৷ কিন্তু নেয়া হচ্ছে ৭০০ টাকা৷ ঢাকা-কক্সবাজারের দূরত্ব ৪২০ কিলোমিটার ৷ ভাড়া হওয়া উচিত ৮০০ টাকা ৷ নেয়া হচ্ছে এক হাজার টাকা৷ এভাবে সবখানেই নতুন নির্ধারিত ভাড়ার চেয়েও অনেক বেশি নেয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন,"ভাড়ার ক্ষেত্রে এখন নৈরাজ্য চলছে৷ যে যেভাবে পারছে আদায় করছে৷ বিআরটিএ কিছুই দেখছে না৷ তারা মালিকদের পক্ষে কাজ করছে৷”
কিন্তু এইসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ৷ তিনি দাবি করেন,"কোথাও কোনো বাড়তি ভাড়া নেয়া হচেছ না৷ উল্টো কোথাও কোথাও কম নেয়া হচ্ছে৷ যারা অভিযোগ করছেন তারা আসলে না জেনেই অভিযোগ করছেন৷ বিআরটিএ ভাড়ার নতুন চার্ট করছে ৷ সেটা হলেই আর এই অভিযোগ থাকবে না৷” তবে সেই চার্ট কবে নাগাদ হবে তা তিনি জানাতে পারেননি৷ আর সিএনজি বাসের ডিজেল বাসের ভাড়া নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এখন আর তেমন কোনো বাস সিএনজিতে চলে না৷ তবে আগের ব্লু-বুকে অনেক বাসই সিএনজিতে রয়ে গেছে৷”
এ নিয়ে বক্তব্য জানতে বিআরটিএ চেয়াম্যানকে বার বার টেলিফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি৷
প্রসঙ্গত ধর্মঘটের মুখে রোববার বিআরটিএ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, দূরপাল্লার বাসে প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া এক টাকা ৪২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে এক টাকা ৮০ পয়সা হবে৷ বৃদ্ধি প্রায় ২৭ শতাংশ৷ ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জন্যে কিলোমিটার প্রতি মিনিবাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে দুই টাকা ১৫ পয়সা৷ যা আগে ছিলো ছিল এক টাকা ৬০ পয়সা৷ বড় বাসের ভাড়া প্রতি কিলোমিটারে এক টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে দুই টাকা ১৫ পয়সা করা হয়েছে৷ তবে মহানগরীতে বাস ও মিনিবাসের সর্বনিম্ন ভাড়া আট ও ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে৷ নগরীতে বাসের ভাড়া বেড়েছে শতকরা প্রায় ২৭ ভাগ৷

খন্দকার এনায়েত উল্যাহ

This browser does not support the audio element.

মোজাম্মেল হক চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

জহিরুল ইসলাম

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ