1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যাত্রীর ভিড় সামলে ট্রেন চালানো কি সম্ভব

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৯ আগস্ট ২০২০

কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর ভারতে ফের চালু হতে পারে ট্রেন চলাচল৷ কিন্তু সংক্রমণ এড়িয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দেওয়া মস্ত চ্যালেঞ্জ রেলওয়ের সামনে৷

কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর ভারতে ফের চালু হতে পারে ট্রেন চলাচল৷ কিন্তু সংক্রমণ এড়িয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষকে পরিষেবা দেওয়া মস্ত চ্যালেঞ্জ রেলওয়ের সামনে৷
ছবি: DW/P. Samanta

করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ভারতে প্রশাসন গণপরিবহণ বন্ধ করে দিয়েছিল৷ বাস, ফেরি চলাচল শুরু হলেও বিশেষ পরিষেবা ছাড়া ট্রেন বন্ধই রয়েছে৷ ‘আনলক প্রক্রিয়া’ শুরু হওয়ার পরও ট্রেন চালু করার ঝুঁকি নেয়নি কেন্দ্র৷ রাজ্যগুলির আপত্তি ছিল৷ এবার রাজ্য সরকার রেল এবং মেট্রো চালাতে আগ্রহী হওয়ায় আলোচনা শুরু হয়েছে৷ কিন্তু ভিড় সামাল দিয়ে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া কি আদৌ সম্ভব হবে?

মহামারি মোকাবিলার সবচেয়ে বড় অস্ত্র সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা৷ কিন্তু ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে প্রতিটি ট্রেনে যে ভিড় হয়, তাতে দূরত্ব বজায় রাখার কোনো প্রশ্নই নেই৷ বিশেষ করে অফিসের সময়, সকাল ও সন্ধ্যায় হাওড়া এবং শিয়ালদহ স্টেশন দিয়ে লক্ষ লক্ষ যাত্রী যাতায়াত করেন৷ অনেকের মতে, ১২ কামরার একটি ট্রেনের প্রতিটি কামরায় নির্দিষ্ট সংখ্যক যাত্রীকে উঠতে দেওয়া উচিত৷ নজরদারির জন্য প্রতি কামরায় থাকবেন রেল সুরক্ষায় নিযুক্ত কর্মীরা৷ যাত্রীদের প্রশ্ন, প্রথম কয়েকটি স্টেশনে সব কামরা ভর্তি হয়ে গেলে পরবর্তী স্টেশনগুলি থেকে ট্রেনে ওঠা কীভাবে সম্ভব? একটি স্টেশন থেকে পাঁচজন যাত্রীকে ট্রেনে তোলার অবকাশ থাকলে সেখানে যদি দশজন অপেক্ষায় থাকেন, তাহলে কি বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে না? রেলের স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বর্ষীয়ান বাম নেতা বাসুদেব আচারিয়া বলেন, ‘‘ট্রেন চালু করা জরুরি৷ থার্মাল গান, স্যানিটাইজার, মাস্কের ব্যবস্থা করতে হবে৷ ভিড় এড়াতে দরকার ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো যাতে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সকলে সফর করতে পারেন ও বিশৃঙ্খলা এড়ানো যায়৷’’

অরূপ চৌধুরী

This browser does not support the audio element.

রাজ্য সরকার রেল পরিষেবা চালুর বিষয়ে সবুজ সংকেত দেওয়ার পর বল এখন কেন্দ্রের কোর্টে৷ যদিও শিয়ালদহ  ডিভিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভিড় মোকাবিলায় তারা রাজ্য সরকারের সহযোগিতা চায়৷ হাওড়া স্টেশনের নিয়মিত যাত্রী সমর ঘোষাল ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘স্টেশন চত্বর ও তার বাইরের অংশে ভিড় সামলাতে রাজ্য পুলিশ সদর্থক ভূমিকা নিতেই পারে৷ কিন্তু প্ল্যাটফর্ম বা চলন্ত ট্রেনে যাত্রীদের নিরাপদ দূরত্বে সফর নিশ্চিত করতে হবে রেল কর্তৃপক্ষকেই৷’’

রেলওয়ের উপর নির্ভর করে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের জীবিকা নির্বাহ করে৷ এর মধ্যে সরাসরি রেল পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত ঠিকা শ্রমিক যেমন আছেন, তেমনই রয়েছেন অসংখ্য ব্যবসায়ী ও হকার৷ ট্রেন চালু হলে ঠিকা শ্রমিকরা তাদের কাজ কিছুটা ফিরে পাবেন, কিন্তু ব্যবসায়ী ও হকারদের কী হবে? রেল জানিয়েছে, আপাতত হকারের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে স্টেশনে৷ যারা বিভিন্ন প্লাটফর্মে দোকান করে ব্যবসা চালান তাদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত৷ প্রতিটি স্টেশনে আউটডোর বিজ্ঞাপনের সঙ্গেও যুক্ত রয়েছেন হাজার হাজার শ্রমিক৷ এতদিন স্টেশন খালি থাকায় নতুন বিজ্ঞাপন লাগানো হয়নি, শ্রমিকরা বেকার বসে আছে৷ এবার কিছু কাজ শুরু হবে বলে আশাবাদী আউটডোর বিজ্ঞাপন সংগঠনের সভাপতি অরূপ চৌধুরী৷ তিনি বলেন, ‘‘কমবেশি মোট ১০ লক্ষ মানুষ রেল পরিষেবাকে কেন্দ্র করে বেঁচে থাকে৷ তারা তাকিয়ে আছে রেলওয়ের দিকে৷ শুধু বিজ্ঞাপন ব্যবসা নয়, সব ব্যবসাই প্রাণ ফিরে পাবে ট্রেন চালু হলে৷’’

রেলের উপর নির্ভরশীল মানুষদের কথা বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রকে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছেন বাসুদেব আচারিয়া৷ রাজ্য সরকারগুলিও একই অনুরোধ জানিয়েছে৷ তবুও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না হকার ও ব্যবসায়ীরা৷ শিয়ালদহের গেদে শাখায় বিভিন্ন সামগ্রী ফেরি করেন অশোক নস্কর, সনৎ বিশ্বাসরা৷ তাদের মতো অনেকেই গত কয়েকমাস বিকল্প পেশা খুঁজে নিয়েছেন৷ অশোক ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘হকারদের ট্রেনে উঠতে দেবে না বলছে৷ তাহলে রেল চালু হলেও আমাদের লাভ নেই৷ এখন টুকটাক যে কাজ করে কোনো রকমে দিন চলছে, সেভাবেই চালাতে হবে৷’’ 

মে মাসের ছবিঘর দেখুন...

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ