বাংলাদেশে গৃহকর্মী, দিনমজুর বা সাধারণ শ্রমিকদের জন্য নেই কোনো সুরক্ষা বা সুনির্দিষ্ট মজুরি৷ পোশাক কারখানাসহ ৫৪ ধরনের শিল্পে সরকার সর্বনিম্ন মজুরি বেঁধে দিলেও শ্রমিকদের বিশাল একটি অংশ অনিশ্চিত জীবন যাপন করে৷
বিজ্ঞাপন
বিবিএসের হিসাব দেখলে বাংলাদেশের শ্রমিক ও শ্রমশক্তি সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যায়৷ তাদের হিসাব অনুযায়ী, ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে অর্থনৈতিকভাবে কর্মক্ষম শ্রমশক্তি ৬ কোটি ৭ লাখ৷ এ শ্রমশক্তির মধ্যে ৫ কোটি ৮০ লাখ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত৷ বাকি ২৭ লাখ বেকার৷
আর এই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, পরিবারের মধ্যে কাজ করেন কিন্তু কোনো মজুরি পান না এমন মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ১১ লাখ৷ আর ১ কোটি ৬ লাখ আছেন দিনমজুর, যাঁদের কাজের নিশ্চয়তা নেই, নেই মজুরির কোনো নিশ্চয়তা৷ আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-র মতে তাঁরাও বেকার৷
বিবিএস-এর আরেক হিসাব বলছে, বাংলাদেশে এখন ২৫ লাখ গৃহকর্মী বা গৃহশ্রমিক আছেন৷ গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে এমন শিশুর সংখ্যা ১ লাখ ২৫ হাজার, যাদের বয়স ৫ থেকে ১৭ বছর৷ এর মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই মেয়েশিশু৷
‘গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের অধীনে আনার দাবি জানাচ্ছি দীর্ঘদিন ধরে কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি’
ঢাকার কলাবাগানের গৃহকর্মী হোসনে আরা৷ বয়স ৩০ বছর৷ তিনি অবশ্য স্থায়ীভাবে কোনো বাসায় কাজ করেন না৷ একাধিক বাসায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ‘ছুটা' কা করেন তিনি৷ ডয়চে ভেলেকে হোসনে আরা বলেন, ‘‘প্রতিটি কাজের জন্য পাই ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা৷ তাতে মাসে ৬ হাজার টাকার মতো আয় হয়৷ কিন্তু কাজ করলে মজুরি আছে, কাজ না করলে নাই৷''
অন্যদিকে এক বাসায় যাঁরা স্থায়ীভাবে কাজ করেন, তাঁদের থাকা- খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও বেতন দেয়া হয় সামান্যই৷
বাংলাদেশে গৃহশ্রমিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করা হলেও তাঁদের বেতন কাঠামো, নিয়োগ এবং কর্মঘণ্টা নিয়ে কোনো আইন হয়নি৷ গৃহকর্মীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনে যুক্ত কাজী সিদ্দিকুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের অধীনে আনার দাবি জানাচ্ছি দীর্ঘদিন ধরে৷ আমরা গৃহকর্মীদের নিয়েগপত্র, বেতনকাঠামো এবং কর্মঘণ্টার দাবি জানিয়ে আসছি৷ সরকার একটা কমিটিও করেছে৷ কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হয়নি৷ আরেকটা সমস্যা হচ্ছে গৃহকর্মীদের নানা ক্যাটাগরি আছে৷ সেই ক্যাটাগরি নির্ধারণ দরকার৷''
‘আমাদের মজুরি সরকার নির্দিষ্ট করে দিলে ভালো হয় কিন্তু এটা আমরা কার কাছে বলবো?
বাংলাদেশে দিনমজুরদের মধ্যে কৃষি শ্রমিক যেমন আছেন, তেমনি নির্মাণ, শিল্প, পরিবহন, উন্নয়নসহ নানা খাতে দিনমজুর শ্রমিক কাজ করেন৷ তাঁদের প্রতিদিনের কাজের জন্য সকালে অপেক্ষা করতে হয়৷ গ্রামাঞ্চলে যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁরা কাজ পান৷ তবে শহরাঞ্চলে দালালের ওপর নির্ভর করতে হয়৷ ঢাকায় এখনো দিনমজুর শ্রমিকের হাট আছে৷ প্রতি সকালে এই হাট বসে৷ যার যার প্রয়োজন অনুযায়ী এই হাট থেকে শ্রমিক নিয়ে যান৷ এখানে মজুরির ঠিক নেই, ঠিক নেই কর্মঘণ্টা৷
সেরকমই একজন শ্রমিক আমান উল্লাহ৷ থাকেন ঢাকার মান্ডা এলাকায়৷ স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মাটিকাটা, পাইপ লাগানো থেকে শুরু করে আরো অনেক কাজ করি আমি৷ কোনোদিন কাজ পাই আবার কোনোদিন পাই না৷ সাধারণত দিনে ৫শ' টাকা মজুরি ও খোরাকি দেয়৷ এর কম-বেশিও হয়৷ নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর৷ আর কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট নয়৷''
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘আমাদের মজুরি সরকার নির্দিষ্ট করে দিলে ভালো হয়৷ কিন্তু এটা আমরা কার কাছে বলবো? আর আমরা বললেই কি সরকার তা করবে!''
কৃষি শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিকদের বড় একটি অংশই দিন মজুর৷ আবার যাঁরা মাস বা বছর চুক্তিতে কাজ করেন, তাঁদেরও মৌখিক চুক্তিতেই কাজ করতে হয়৷ ফলে চুক্তি লঙ্ঘন করলে তাঁরা কোনো প্রতিকার পান না৷ বাংলাদেশে পরিবহন খাত অনেক শক্তিশালী হলেও চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপারদের বড় একটি অংশ মজুরি পান দিন অথবা ট্রিপ ভিত্তিতে৷ আর প্রাইভেট কার চালকরা মাসিক বেতনের ভিত্তিতে কাজ করলেও বেতন ১০ হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকার মধ্যে৷ কিন্তু তাঁদের কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট নয়৷ এসব খাতে কিছু অলিখিত নিয়ম থাকলেও তা শ্রমিকবান্ধব নয়৷
‘‘আমাদের শ্রম শক্তির বিশাল একটি অংশ ইনফরমাল সেক্টরে কাজ করেন ফলে তাঁরা জাতীয় মজুরি নীতির মধ্যে নেই’
আর নারীদের ঘরের কাজের তো কোনো অর্থনৈতিক মূল্যায়নই নেই৷ অ্যাকশন এইডের এক গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৪ সালে নারীরা ঘরের যে কাজ করেছেন তা ওই বছরের জিডিপির ৭৮ থেকে ৮৭ ভাগ৷ ওই সময়ের হিসেবে গ্রহণযোগ্য মূল্য পদ্ধতিতে তার মূ্ল্য হতো ১০ লাখ ৩৭ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা৷
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস)-এর অর্থনীতিবিদ ড, নাজনীন আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমাদের শ্রম শক্তির বিশাল একটি অংশ ইনফরমাল সেক্টরে কাজ করেন৷ ফলে তাঁরা জাতীয় মজুরি নীতির মধ্যে নেই৷ এ কারণে সেখানে শ্রম শোষণের ঘটনা ঘটে৷ তাঁদের ক্ষেত্রে কর্মঘণ্টা মানা হয় না৷ শ্রম আইনের কোনো সুবিধা পান না তাঁরা৷ তবে এটা শ্রম আইনের অধীনে আনাও অনেক কঠিন, কারণ, মনিটর করার জন্য যথেষ্ট জনশক্তি নেই৷''
তবে তিনি বলেন, ‘‘এখন সম্ভব না হলেও কমপক্ষে একটি নীতিমালা থাকা দরকার, যা সবাই অনুসরণ করবেন৷ আর আমি মনে করি, বাংলাদেশ যেহেতু উন্নয়নশীল দেশ হচ্ছে, তাই দেশের উন্নয়নের প্রয়োজনেই তাঁদের শ্রম আইনের অধীনে আনতে হবে৷''
ঐতিহাসিক কয়েকটি শ্রম আন্দোলন
মে দিবসের চেতনা শ্রমিকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ১৮৯০ সাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে দিবস পালনের সূচনা হয়৷ ছবিঘরে দেখে নিন বিশ্বের অন্যতম কয়েকটি শ্রম আন্দোলনের কথা৷
ছবি: picture alliance / Tass/dpa
হে মার্কেটের শ্রমিকদের আন্দোলন
১৮৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা নেমেছিলেন তুমুল আন্দোলনে৷ তাঁদের দাবি ছিল, উপযুক্ত মজুরি এবং দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ নয়৷ মে মাসের প্রথম দিনেই শ্রমিকরা ধর্মঘটের আহ্বান জানায়৷ প্রায় তিন লাখ শ্রমিক যোগ দেয় সেই সমাবেশে৷ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের রুখতে মিছিলে পুলিশ এলোপাথাড়ি গুলি চালায়৷ বহু শ্রমিক হতাহত হন৷
ছবি: picture-alliance/KPA/TopFoto
মে দিবস
পরে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় গ্রেপ্তারকৃত ছয় শ্রমিককে৷ কারাগারে বন্দিদশায় এক শ্রমিক নেতা আত্মহত্যাও করেন৷ পরের বছর প্যারিসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক শ্রমিক সম্মেলনে দিনটিকে মে দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷
ছবি: AP
আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস
বর্তমানে মে মাসের প্রথম দিনটিকে পুরো পৃথিবীতে পালন করা হয় ‘মে দিবস’ হিসেবে৷ পৃথিবীর সব শ্রমিকের লড়াই-সংগ্রাম-পরিশ্রমের প্রতি সম্মান জানানো হয় এই দিনে, শ্রদ্ধা জানানো হয় তাঁদের আত্মত্যাগের পুণ্যস্মৃতির উদ্দেশ্যে৷
ছবি: Getty Images/AFP/M. U. Zaman
শ্রমজীবী মানুষের সংগঠন
অ্যামেরিকা স্বাধীন হওয়ার আগে শ্রমজীবী মানুষের প্রথম সংগঠন গড়ে ওঠে ১৬৮৪ সালে৷ ঠেলাগাড়ির চালকরা প্রথম ঠেলা শ্রমিক ইউনিয়ন গড়ে তোলেন৷ ১৮৪২ সালে অ্যামেরিকায় শ্রমিক শ্রেণি ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘট করার অধিকার পায়৷ বিশ্বের প্রথম নারী শ্রমিকদের ধর্মঘট পালিত হয় অ্যামেরিকায় ১৮২৩ সালে৷ বিশ্বের শিল্প-কারখানাগুলোয় শ্রমিক আন্দোলন শুরু হয় ১৮২৮ সালে৷
ছবি: M. Cardy/Getty Images
আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী সংগঠন
ঊনবিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রমিক শ্রেণি নিজ নিজ দেশে ট্রেড ইউনিয়ন গড়ে তোলে৷ ১৮৬৪ সালে মার্কস- এঙ্গেলসের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী সমিতি৷ ইতিহাসে এটাই প্রথম আন্তর্জাতিক শ্রমজীবী সংগঠন নামে খ্যাত৷
ছবি: AP
প্যারিস কমিউন
১৮৭১ সালের ১৮ মার্চ প্যারিসের শ্রমিকরা শহর থেকে বুর্জোয়া শাসকদের হটিয়ে নিজেদের হাতে ক্ষমতা নিয়ে নেয়৷ দশ দিন পরে ২৮ মার্চ তারিখে শ্রমিকরা গঠন করেছিল পৃথিবীর প্রথম প্রলেতারিয়েত রাষ্ট্র প্যারিস কমিউন৷
অক্টোবর বিপ্লব
অক্টোবর বিপ্লবকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত অঞ্চলগুলোয় বলা হয় ‘মহান অক্টোবর সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব’৷ ১৯১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রাশিয়ায় বলশেভিকরা ক্ষমতা দখল করে, শুরু হয় ‘লাল’ আর ‘সাদা’-দের মধ্যে গৃহযুদ্ধ৷ অক্টোবর বিপ্লবের বিজয় রাশিয়াকে রাজনৈতিকভাবে একটি অগ্রসর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পুঁজিবাদী দাসত্ব থেকে মুক্তি
এই বিপ্লব জনগণকে পুঁজিবাদী দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছিল৷ এই বিপ্লব শ্রমিক শ্রেণি ও মেহনতি কৃষকের জন্য শুধু সামাজিক মুক্তিই আনেনি, রাশিয়ার গণতান্ত্রিক সমস্যাগুলোও সমাধান করতে সক্ষম হয়েছিল৷ লেনিন স্বয়ং ১৯২৪ সালে পরলোকগমন করেন, কিন্তু রুশ বিপ্লব, সোভিয়েত রাশিয়া বা কমিউনিজম, এ সবের সঙ্গে তাঁর নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত৷
ছবি: picture-alliance/akg
তেভাগা আন্দোলন
১৯৩০ সালে বাংলার কয়েকটি জেলায় কৃষকরা তেভাগার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন৷ তেভাগা আন্দোলনের মূল দাবি ছিল, ভাগচাষিকে ফসলের তিন ভাগের দুই ভাগ দিতে হবে৷ এই আন্দোলনটি ছিল সম্পূর্ণ বর্ণ হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলমান ও নমঃশূদ্র চাষিদের অসহযোগ আন্দোলন৷ এ আন্দোলনে জমিদারদের পাইক-বরকন্দাজদের ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ করতে হয়েছিল কৃষকদের৷ ১৯৪৬ সালেও আর এক দফা আন্দোলন হয়েছিল৷
ছবি: AFP/Getty Images/R. Gacad
দক্ষিণ আফ্রিকা
দক্ষিণ আফ্রিকার খনি শ্রমিকদের ওপর নানা নির্যাতন, মজুরি বৃদ্ধি, থাকা-খাওয়া ও জীবনমান উন্নয়ন ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং ১৯৪৬ সালে ৭০ হাজার শ্রমিকের অংশগ্রহণে ধর্মঘট পালিত হয় কমিউনিস্টদের নেতৃত্বে৷ এএনসি এই আন্দোলনে যোগদানের বিষয়ে নীরব থাকলেও ম্যান্ডেলা পরিচিত কয়েকজনকে নিয়ে কমিউনিস্ট নেতা জেবি মার্কসের সঙ্গে দেখা করে এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন৷
ছবি: dapd
জার্মানির শ্রমিক আন্দোলন
১৯৫৩ সালের ১৭ জুন তৎকালীন পূর্ব জার্মানির সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল শ্রমিকসহ সাধারণ জনগণ৷ বড় কোম্পানিগুলো জাতীয়করণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পূর্ব জার্মান সরকার, যার প্রতিবাদে ১৬ জুন থেকে আন্দোলন শুরু করেছিল কয়েকশ’ শ্রমিক৷ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে প্রায় ৭০০ শহরে৷ ১৭ জুন আন্দোলন থেকে সরকারের পদত্যাগ, স্বাধীন নির্বাচন অনুষ্ঠান ও দুই জার্মানির একত্রীকরণের দাবি ওঠে৷ সেনাদের গুলিতে নিহত হয় ৫০ জন৷
ছবি: Getty Images
শ্রমিক বিক্ষোভে উত্তাল ইউরোপ
স্পেন ও পর্তুগালে ২০১২ সালের ১৪ নভেম্বর বুধবার পালিত হয়েছিল সাধারণ ধর্মঘট৷ কর্মবিরতি পালন করেছিলেন গ্রিস ও ইটালির শ্রমিকরা৷ এই আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানায় বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ডসহ পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো৷ এতে বিভিন্ন দেশের শিল্প-কারখানা অচল হয়ে পড়ে৷ বাতিল হয় ইউরোপের অনেক ফ্লাইট৷ চার দেশে একযোগে ধর্মঘট পালনের ঘটনা ইউরোপে এটিই প্রথম৷
ছবি: Reuters
ফ্রান্সে শ্রমিক আন্দোলন ২০১৬
একবিংশ শতাব্দীতে এসেও ফ্রান্সে সর্ববৃহৎ শ্রমিক বিদ্রোহ দেখা গিয়েছে ২০১৬ সালে৷ শ্রম আইন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে অসন্তোষের জের ধরে জেনারেল কনফেডারেশন অব লেবার (সিজিটি) ইউনিয়নের ডাকে ধর্মঘটে ফ্রান্সের প্রায় সব বিভাগের শ্রমিকরাই অংশ নিয়েছিলেন৷ এ ধর্মঘটের একপর্যায়ে প্রায় ৩৫ লাখ শ্রমিক রাস্তায় নেমে আসেন৷ তাদের সঙ্গে শামিল হয় ছাত্র ও তরুণরা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সর্বভারতীয় সাধারণ ধর্মঘট
হয়েছিল ১৯৮২ সালের ১৯শে জানুয়ারি সেই ধর্মঘট ছিল বৃহৎ, ঐতিহাসিক এবং সবদিক দিয়ে সফল৷ পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালায় সর্বাত্মক বন্ধ পালিত হয়েছিল৷
ছবি: Reuters/D. Siddiqui
ভারতে শ্রমিক বিক্ষোভ
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ন্যূনতম মাসিক মজুরি ১৮ হাজার রুপি করা এবং শিল্প-কারখানার বেসরকারিকরণ ঠেকানোসহ ১৪ দফা দাবিতে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট পালন করেন সেবা খাতের লাখ লাখ শ্রমিক৷ ১৫ কোটির বেশি শ্রমিক এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন বলে সংগঠনগুলোর দাবি৷