বিএনপি'র অবস্থান কর্মসূচিতে নেতাদের গ্রেপ্তার এবং তা নিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য সমালোচনার জন্ম দিয়েছে৷ বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনরাই আইন মানেন না৷ তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন৷''
বিজ্ঞাপন
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের পর থেকে তাঁর মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছে দলটি৷ কিন্তু দলটির অভিযোগ পদে পদে তাদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে, আটক করা হচ্ছে নেতা-কর্মীদের৷ মঙ্গলবার প্রেসক্লাবে ঢুকে অস্ত্র উঁচিয়ে বিএনপি'র স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক শফিউল বারী বাবুকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ৷ গোয়েন্দা পুলিশের সেই সশস্ত্র মহড়ার ছবি সংবাদ মাধ্যমে ছাপাও হয়েছে৷ এরপর বৃহস্পতিবার ছাত্রদল নেতা মিজানুর রহমানকে রীতিমত টেনে হেঁচড়ে পুলিশ প্রেসক্লাবের সামনে থেকে আটক করে নিয়ে যায়৷ বিএনপি'র মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরও পরে যান সেই টানা হেঁচড়ার মধ্যে৷ অথচ এই প্রেসক্লাবের সামনেই পুলিশের কথায় ১৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপি তাদের অনশন কর্মসূচি নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করে দিয়েছিল৷
রাস্তায় নৈরাজ্য, যেন আইন ভাঙার হিড়িক
১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা৷ শুধু রাজধানীই নয়, দেশের আইন-শাসন-বিচার বিভাগ এখান থেকেই পরিচালিত হয়৷ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যসহ নানা কাজের কেন্দ্রও এটাই৷ অথচ কোনো সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নেই ঢাকায়৷
ছবি: bdnews24.com
উলটো পথে চলাচল
ঢাকা শহরে নানা ট্রাফিক অব্যবস্থপনার মধ্যে উলটো পথে চলা অন্যতম৷ বাইকার, সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভিআইপি – অনেকেই নিজের তাড়াতাড়ি যাওয়া নিশ্চিত করতে উলটো পথে গাড়ি ছোটান৷ তাতে আরো বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন রাস্তায় নামা সাধারণ মানুষ৷
ছবি: bdnews24.com
বেপরোয়া ড্রাইভিং
এমনিতে হয়ত যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় ঠায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় অনেক গাড়িকে৷ তবে রাস্তা ফাঁকা পেলে যেন দেরি সয় না অনেক চালকের৷ বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে দেন তাঁরা৷ এর ফলে অনেক সময়ই প্রাণ যায় মানুষের৷ প্রিয়জন হারানোর আহাজারিতে ভারী হয় আকাশ বাতাস৷ কেবল ঢাকার রাস্তাতেই প্রতি বছর কয়েক শত মানুষের প্রাণ যায়৷
ছবি: bdnews24.com
যত্রতত্র পার্কিং
ঢাকা মহানগরের সড়কগুলো আর যাই হোক, বিপুল পরিমাণ মানুষ আর যান বাহনের চাপ সামলানোর মতো নয় বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত৷ সরু সেই সব রাস্তার অবস্থা আরো করুণ হয়ে যায়, যখন যত্রতত্র পার্কিংয়ে এই রাস্তা আরো সরু হয়ে যায়৷
ছবি: bdnews24.com
অননুমোদিত ড্রাইভিং
গত মে মাসে এক স্কুলছাত্র এই গাড়িটি নিয়ে বের হয়ে পড়ে রাস্তায়৷ অননুমোদিত এই ড্রাইভিংয়ে আহত হয় আরেক শিশু৷ অবৈধ ড্রাইভিংয়ে কেবল শিশু নয়, বড়রা জড়িয়ে পড়েন৷ লাইসেন্স ছাড়াই অনেকে নেমে পড়েন রাস্তায়৷ লাইসেন্স থাকলেও মাদক গ্রহণের পর, শারিরীক বা মানসিকভাবে অনুপযুক্ত অবস্থায়ও গাড়ি চালানো আইনে নিষেধ৷ সড়কে বিপজ্জনকভাবে গাড়ি চালানো, রেসে অংশ নেয়াও নিষিদ্ধ৷ বীমার বাধ্যবাধকতাও অনেকে মানেন না৷
ছবি: bdnews24.com
উলটো পথে চললে চাকা ফুটো
উলটো পথে গাড়ির চলাচল বন্ধ করতে একটি যন্ত্র বসিয়েছিল ট্রাফিক পুলিশ৷ কথা ছিল গাড়ি উলটো পথে চললে তাতে চাকা ফুটো হয়ে যাবে৷ কিছুদিন পর এই যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যায়৷ ঢাকা শহরের গাড়িকে স্বয়ংক্রিয় সংকেত বাতির উপর নির্ভরশীল করে দিতে সর্বশেষ ২০১৫ সালে একটি উদ্যোগ নেয়া হয়৷ কিন্তু পুলিশের অসহযোগিতায় সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে৷ এই শহরে ট্রাফিক আইন ভাঙা মামলাও হয় গতানুগতিকভাবে, হাতে লিখে৷
ছবি: bdnews24.com
যত্রতত্র পথচারীদের চলাচল
ঢাকার রাস্তায় আরেক যন্ত্রণা সৃষ্টি করে খোদ পথচারীরাই৷ নির্ধারিত জায়গার পরিবর্তে যেখানে সেখানে রাস্তা পার হয়ে যান তাঁরা৷ রাজধানীতে পথচারীদের আইন না মানার প্রবণতাও এখানকার দুর্ঘটনার একটা কারণ৷
ছবি: bdnews24.com
আইন প্রয়োগে ফাঁকি
ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক করতে নানা আইন থাকলেও, সেটা প্রয়োগে ফাঁকি রয়েছে৷ প্রায়ই খোদ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অনেক সদস্যকেই আইন ভাঙতে দেখা যায়৷ লেগুনা নামের এই ‘আনফিট’ গাড়ি ব্যবহার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷
ছবি: bdnews24.com
ব্যক্তিগত গাড়ির আধিক্য
রাজধানী ঢাকায় যে সব গাড়ি চলে তার অধিকাংশই ব্যক্তিগত৷ এ সব গাড়িকে যত্রযত্র যানজট সৃষ্টির জন্যও দায়ী করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
গণপরিবহনে নৈরাজ্য
ঢাকার সমস্যা গণপরিবহন ব্যবস্থায় নৈরাজ্য৷ মানসম্মত গণপরিবহনের অভাব তো রয়েছেই৷ যে গাড়িগুলো রয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল৷ যেখানে সেখানে থামিয়ে যাত্রী তোলা যেন নগরীর নিত্যদিনের চিত্র৷
ছবি: bdnews24.com
9 ছবি1 | 9
বৃহস্পতিবারের আটকের ঘটনার পর শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘‘রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করলে পুলিশতো গ্রেপ্তার করবেই৷ আওয়ামী লীগ কোথাও রাস্তা বন্ধ করে সভা সমাবেশ করে না৷ একটি নির্দিষ্ট স্থানে সমাবেশ করা হয়৷ কিন্তু বিএনপি প্রেসক্লাবের মতো একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করতে গেলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করবেই৷ কারণ রাস্তা বন্ধ করে সমাবেশ করা বেআইনী৷ আর পুলিশ কাউকে বেআইনী কাজ করতে দেবে না৷ '' তাঁর এই বক্তব্য নিয়েই শুরু হয়েছে সমালোচনা৷
‘আইন শুধু বিএনপি’র জন্য?’
ওবায়দুল কাদেরের এই কথার জবাবে বিএনপি'র চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, ‘‘ আমরা সব সময় পুলিশের অনুমতি নিয়েই সভা-সমাবেশ করেছি এবং করছি৷ বিএনপি'র কর্মসূচি যেখানে হচ্ছিল, তাতে মূল সড়কের যান চলাচল বিঘ্নিত হয়নি৷ প্রেসক্লাবের সমানের সড়কের মূল যান চলাচল নির্বিঘ্ন রেখে ফুটপাতের পাশে কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল৷ আমরা যে কর্মসূচির অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠি দিয়েছি, তার রিসিভড কপি আমাদের কাছে আছে৷ পুলিশ কমিশনার সাহেব আমাদের মহাসচিবকে মৌখিকভাবে অনুমতির কথা বলেছেন৷ পুলিশ আমাদের বলেছে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে করতে৷ আমরা তাদের কথা অনুযায়ী প্রেস ক্লাবের সামনে করেছি৷ ধড়পাকড়ের আগে আমাদের কোন ওয়ার্নিং দেয়া হয়নি বা কিছু বলাও হয়নি৷''
আজম খানের প্রশ্ন,‘আইন শুধু বিএনপি'র জন্য?' তিনি আওয়ামী লীগের বেশ কিছু সমাবেশের উল্লেখ করে বলেন,‘‘৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ঢাকা শহরের সব বাস ব্যবহার করে কর্মীদের জড়ো করেছে৷ সাধারণ মানুষ কোন যানবাহন পায়নি৷ তাতে আইনের কোনো লঙ্ঘন হয়নি? আসলে বিএপিকে বর্তমান সরকার কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচিই পালন করতে দিতে চায় না৷ যেকোন অজুহাতে নেতা-কর্মীদের আটক করছে৷ ২২ ফেব্রুয়ারি আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছিলাম পাইনি৷ আমাদের সরকার এখন ঘরে বসে কর্মসূচি পালন করতে বলে৷ গণতন্ত্রকে তারা ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে৷''
‘সরকারি দলের লোকজনতো আর শান্তি শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন না’
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সাধারণভাবে কোনো সমাবেশ করতে হলে পুলিশের অনুমতি প্রয়োজন৷ আর জনসাধারণের চলাচল ও যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা আছে৷ এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ কমিশনার(মিডিয়া) মাসুদুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘মেট্রোপিলটন পুলিশের ২৮ ও ২৯ ধারা অনুযায়ী, কোনো এলাকায় সভা সমাবেশ করতে হলে পুলিশের অনুমতি নিতে হয়৷ আর পুলিশ কমিশনার যদি মনে করেন তাহলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো সভা সমাবেশ বা মিছিল বা কোনো ধরণের অস্ত্র বহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন৷''
তিনি আরও বলেন, ‘‘যানবাহন ও জনগণের চলাচলে বিঘ্নিত এমন কোনো কাজ করা যাবে না৷ সেটা সভা সমাবেশ বা মিছিলের মাধ্যমে হতে পারে, অন্যভাবেও হতে পারে৷ আমরা প্রথমে অনুরোধ করি এধরণের কাজ বন্ধ করতে বা বিরত থাকতে৷ তাতে কাজ না হলে আমরা ছত্রভঙ্গ করতে শক্তি প্রয়োগ করি৷ আর এর বিপরীতে যদি কোনো অপরাধমূলক কাজ হয় তাহলে ধরণ অনুযায়ী আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেই৷''
‘আগে ক্ষমতাসীনদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে’
আইন প্রয়োগে পক্ষপাতের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিরপেক্ষভাবে আইন প্রয়োগ করি৷ তবে আরো কিছু বিষয় আমাদের মাথায় থাকে৷ সরকারি দলের লোকজনতো আর শান্তি-শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে না৷ তারা এটা বজায় রাখার চেষ্টা করে৷''
রাস্তায় সভা-সমাবেশের ব্যাপারে মানবাধিকার কর্মী এং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, ‘‘রাস্তাঘাট দখল করে সভা সমাবেশ ও মিছিল মিটিং-এর বিরোধিতা করে আসছি দীর্ঘদিন ধরে৷ এটা জনগণের স্বাধীন চলাচলের অধিকারের লঙ্ঘন৷ এর বিরুদ্ধে আইনও আছে৷ কিন্তু যারা ক্ষমতায় থাকে তারাই এই আইন মানেন না৷''
তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতাসীনরা যখন কোনো কর্মসূচি পালন করে তখন রাস্তা-ঘাট দখল করে তা করে, যানবাহনও দখল করে নেয়৷ ভয়াবহ জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়৷ অন্যদিকে, বিরোধীরা কোনো কর্মসূচি দিলে তা বন্ধ করতে পুলিশই রাস্তাঘাট ও যানবাহন বন্ধ করে দেয়৷ তাই আগে ক্ষমতাসীনদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে৷ তাদের দেখেই তো অন্যরা সেই পথে চলবে৷''
গুলশানের বাসভবনে ‘অবরুদ্ধ’ খালেদা জিয়া
বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশানের বাসভবনে কার্যত ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা হয়েছে৷ রবিবার তিনি পুলিশের বাধার কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ি থেকে বেরোনোর চেষ্টা
‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ বা ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’য় অংশ নিতে রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর তিনটার দিকে গুলশানের বাড়ি থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া৷ কিন্তু তাঁর পথরোধ করতে বাড়ির গেটে মানব দেয়াল তৈরি করে পুলিশ এবং ব়্যাবের সদস্যরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
আটকে ছিলেন গেটে
পুলিশ এবং ব়্যাব সদস্যদের বাধার মুখে বেশ কিছুক্ষণ গাড়ির মধ্যে বসে ছিলেন খালেদা জিয়া৷ এরপর এক পর্যায়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন তিনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া
গাড়ি থেকে বেরিয়ে পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী৷ এসময় তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন৷ উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে খালেদা বলেন, ‘‘দেশ আজ কোথায় যাচ্ছে? এরা সবাই গোপালগঞ্জের৷ গোপালগঞ্জের নামই বদলে যাবে৷’’ দৈনিক প্রথম আলো খালেদার এই বক্তব্য প্রকাশ করেছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
সোমবারও চলবে কর্মসূচি
নিরাপত্তা বাহিনীর বাধার মুখে শেষ পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি খালেদা জিয়া৷ তবে তিনি বাড়ির মধ্যে ফিরে যাবার আগে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘‘এই সরকার জালেম এবং অগণতান্ত্রিক৷ এই সরকারের পতন হবেই৷’’ এসময় তিনি ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ সোমবারও চলবে বলে ঘোষণা দেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
বালুভর্তি ট্রাকের ব্যারিকেড
খালেদা জিয়ার বাড়ির চারপাশে গত কয়েকদিন ধরেই পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছিল৷ শনিবার তাঁর বাড়ির সামনের রাস্তায় সাধারণ ব্যারিকেডের পাশাপাশি বালুভর্তি ট্রাকও যোগ করা হয়৷ কয়েকটি ট্রাক এমনভাবে রাখা হয়, যাতে খালেদার গাড়ি বাড়ির সামনের রাস্তা থেকে বের হতে না পারে৷ আমাদের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশিদ স্বপন জানান, খালেদা জিয়াকে কার্যত গুলশানের বাড়িতে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখা হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুলিশের বক্তব্য
খালেদা জিয়াকে বাড়ির বাইরে যেতে না দেয়া প্রসঙ্গে পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘নয়াপল্টনে কোনো জমায়েত বা সমাবেশের অনুমতি নেই৷ তাই বিরোধী দলীয় নেত্রীকে সেখানে যেতে দেয়া হবে না৷ আর তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টিও পুলিশের দেখার আছে৷’’
ছবি: DW/M. Mamun
প্রাণহানি
এদিকে, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’কে ঘিরে সংঘর্ষ এবং বিস্ফোরণে ঢাকায় কমপক্ষে দুই ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন৷ রবিবার সকাল এগারোটার দিকে ঢাকার মালিবাগে পুলিশ আর জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে প্রাণ হারান মনসুর আলী৷ অন্যদিকে, কমলাপুরে তল্লাশির সময় বোমার বিস্ফোরণে নিহত হন নিরাপত্তাকর্মী আবুল কাশেম৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
সুপ্রিমকোর্টে তাণ্ডব
এদিকে, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’য় যোগ দিতে সুপ্রিমকোর্টের বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা কোর্টের মূল গেট দিয়ে মিছিল করে নয়াপল্টনে যেতে চাইলে পুলিশ তাদের জল কামান ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে আটকে দেয়৷ এরপর তারা ভিতরে গিয়ে পুলিশের প্রতি ইট পাটকেল ছোড়ে৷ এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগের একদল সমর্থক সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে ঢুকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়৷ সেখানে কয়েকজন আইনজীবী আহত হন৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
বিরল সংঘর্ষ
বলাবাহুল্য, সাম্প্রতিক সময়ে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও বাইরে থেকে কোন দলের নেতাকর্মীরা সেখানে গিয়ে সংঘর্ষে অংশ নেয়নি৷ সেক্ষেত্রে রবিবার আওয়ামী লীগ সমর্থকদের আদালত চত্বরে প্রবেশ করে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়াটা বিরল ঘটনা বলে অবিহিত করেন আমাদের ঢাকা প্রতিনিধি৷
ছবি: Reuters
চুপচাপ নয়াপল্টন
‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচির আওতায় গোটা দেশ থেকে সক্ষম নেতাকর্মীদের ২৯ ডিসেম্বর, রবিবার বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে হাজির হওয়ার আহ্বান জানান খালেদা জিয়া৷ কিন্তু রবিবার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে পারেনি৷ কিছু নেতাকর্মী কার্যালয়ের সামনে যেতে চাইলে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ফলে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দৃশ্যত পুলিশ এবং সাংবাদিক ছাড়া কেউ ছিল না৷
ছবি: DW/M. Mamun
পাঁচ জানুয়ারি নির্বাচন
উল্লেখ্য, আগামী পাঁচ জানুয়ারি বাংলাদেশে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট এই নির্বাচন বর্জন করায় এবার ১৫৪টি আসনে ভোটাভুটির দরকার হচ্ছে না৷ এসব আসনে একজন করে প্রার্থী রয়েছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করার ঘোষণা দিয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
11 ছবি1 | 11
এ ব্যাপারে আপনাদের কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷