যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল এসেক্সের কাছে শিল্প এলাকায় একটি কনটেইনার লরিতে ৩৯ জনের মৃতদেহ পেয়েছে দেশটির পুলিশ৷
বুধবার প্রথম প্রহরে ওয়াটারগ্লেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে লাশ পাওয়ার পর পুলিশ ওই লরির চালককে আটক করেছে৷ ২৫ বছর বয়সী ওই ট্রাক চালক নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা৷
নিহতদের মধ্যে ৩৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং একজন কিশোর৷ এসেক্স পুলিশের চিফ সুপারিটেনডেন্ট অ্যান্ড্রু মেরিনার বলেন, "আমরা ভিকটিমদের শনাক্তের চেষ্টা করছি৷ তবে এজন্য দীর্ঘ সময় লাগবে বলে মনে হচ্ছে৷''
লাশ উদ্ধারের পর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক এলাকায় প্রবেশপথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এতে করে আশেপাশের অনেক ব্যবসায়ী তাদের কার্যালেয় প্রবেশ করতে পারছেন না৷
যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে পিতা-কন্যার মৃত্যুর ছবিটি এখন অবৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়ার প্রতীক৷ ঝুঁকি জেনেও নদী সাঁতরে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে সুদিন চেয়েছিলেন রামিরেজ৷ নদী পার হতে গিয়ে মৃত্যু হয় বাবা মেয়ের৷
ছবি: picture alliance/AP Photoযুক্তরাষ্ট্র আর মেক্সিকোকে দ্বিখণ্ড করে বয়ে চলেছে রিও গ্র্যান্ড৷ যুক্তরাষ্ট্র প্রান্তে রিও গ্র্যান্ডের তীরে পড়ে আছে বাবা আর মেয়ের প্রাণহীন দেহ৷ দুই বছরের শিশুটির একটি হাত তখনো জড়িয়ে ধরে আছে তার বাবার গলা৷ যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে ঢুকতে সেন্ট্রাল অ্যামেরিকানদের কতোটা ঝুঁকি নিতে হয়, এ যেন তারই প্রতিচ্ছবি৷
ছবি: picture alliance/AP Photoস্বপ্নের অ্যামেরিকায় পা দিলে, চাকরি মিলবে৷ টাকা জমাতে পারলে, নিজেদের একটা বাড়ি৷ কিন্তু রিও গ্র্যান্ডের স্রোত কেড়ে নিল সব৷ তানিয়া আভলোস প্রাণে বেঁচে গেলেন ঠিকই, কিন্তু চোখের সামনে দেখলেন, স্রোতের তোড়ে স্বামী-সন্তানের ভেসে যাওয়া৷
ছবি: Reutersবাবা-মেয়ের মরদেহ উদ্ধারে পর তা রাখা হয় মর্গে৷ শত ধকল সয়েও তানিয়াকে পালন করতে হয়, সেখানকার দাপ্তরিক কাজ৷ নতুবা, স্বামী সন্তানের সৎকার নিয়ে তৈরি হবে জটিলতা৷
ছবি: Reuters/C. Jassoকোনোরকম পাড়ে পৌঁছান তানিয়া৷ সম্বিৎ পেয়ে শুরু হয় স্বামী সন্তানের জন্য আহাজারি৷ তাঁর আর্তচিৎকারে, স্রোতে ভেসে যাওয়া অস্কার আর তাঁর মেয়েকে খুঁজে পেতে, নদীতে নামে মেক্সিকান নৌ-সেনারা৷
ছবি: Reutersনিহত রামিরেজের মায়ের নাম রোজা রামিরেজ৷ আপন নিবাস এল সালভাদরে সব প্রতিকূলতা মেনে দিন পার করছেন৷ এই ভয়াল পথ নিয়ে পুত্রকে সাবধান করেছিলেন মা৷ কিন্তু জীবন বদলের স্বপ্নের মোহে, পুত্র শুনলো না মায়ের মিনতি৷ এখন সন্তান হারা মায়ের বুক জুড়ে খাঁ খাঁ শূন্যতা৷
ছবি: Reuters/J. Cabezas অ্যান্ড্রু মেরিনার বলেছেন, ‘‘পুলিশ এই ধারণা নিয়ে কাজ করছে যে ট্রাকটি বুলগেরিয়া থেকে এসেছিল এবং ১৯ অক্টোবর শনিবার হলিহেডে হয়ে এটি ব্রিটেনে প্রবেশ করে৷ আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি৷‘‘
তবে বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ট্রাকটি বুলগেরিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেছিল কিনা, তারা এখনো তা নিশ্চিত হতে পারেনি৷
বুলগেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্বেতানা ক্রাস্টেভা বলেন, ‘‘আমরা এখন ব্রিটিশ গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যগুলো যাচাই করছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি৷''
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এক টুইটে লাশ উদ্ধারের ঘটনাকে মর্মান্তিক উল্লেখ করে এতে তিনি হতবাক হওয়ার কথা জানিয়েছেন৷
এসআই/কেএম (এএফপি, এপি, ডিপিএ)