যুক্তরাজ্যে আরো ছোঁয়াচে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়ায় সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল ফ্রান্স। তারা আবার সীমান্ত খুলল।
বিজ্ঞাপন
যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস খুবই ছোঁয়াচে, কিন্তু বেশি মারাত্মক নয়, জানার পরই সিদ্ধান্ত বদল করল ফ্রান্স। যুক্তরাজ্যের সঙ্গে আলোচনার পর ফ্রান্স সীমান্ত খুলে দিয়েছে। তবে যুক্তরাজ্য থেকে যাঁরা ফ্রান্সে ঢুকবেন, তাঁদের কাছে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট থাকতে হবে। সেই সার্টিফিকেট ৭২ ঘণ্টা বা তিনদিনের বেশি পুরনো হওয়া চলবে না। এই সার্টিফিকেট থাকলে তবেই ফ্রান্সে ঢোকা যাবে।
শুধু ফ্রান্স নয়, ইউরোপের বাকি দেশগুলিও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান চলাচল বন্ধ রেখেছে। যাতায়াতেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন সকলকেই এই কড়াকড়ি তুলে নেয়ার অনুরোধ করেছে। তবে সীমান্ত খোলা-বন্ধের বিষয়টি প্রত্যেক দেশ নিজের নিয়ম ও সিদ্ধান্তমতো করে। তাই এখন ইউরোপের দেশগুলিকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা সীমান্ত খুলবে কি না এবং যুক্তরাজ্য থেকে মানুষকে ঢুকতে দেবে কি না।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানিয়েছে, করোনা-সার্টিফিকেট নিয়েই যুক্তরাজ্য থেকে ফ্রান্সে ঢোকা যাবে। আর এই করোনা পরীক্ষা যেন সর্বশেষ প্রযুক্তি দিয়ে হয়, যাতে নতুন ধরনের ভাইরাসকে ধরা যায়।
এ বছর জার্মানিতে যেভাবে ক্রিসমাস উদযাপন
করোনা সংকট জার্মানিতে ক্রিসমাসের আমেজে কেমন প্রভাব ফেলেছে, দেখুন এই ছবিঘরে...
ছবি: picture alliance/D. Kalker
ড্রেসডেনের গির্জা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে তৈরি ড্রেসডেন শহরের ফ্রাউয়েনকির্শে গির্জাটি এই অঞ্চলে সৌহার্দ্যের প্রতীক৷ সাধারণত, এই গির্জায় ক্রিসমাসের সময় ভিড় জমান কয়েক হাজার মানুষ৷ এ বছর তা হবে না৷ বদলে, গির্জার অনুষ্ঠান ইন্টারনেটের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে সবার জন্য৷
ছবি: picture-alliance/ZB/T. Eisenhuth
বাখের গির্জা
বিখ্যাত সংগীতস্রষ্টা ইওহান সেবাস্টিয়ান বাখ লাইপসিশ শহরের টোমাসকির্শে গির্জার সাথে দীর্ঘ ২৭ বছর যুক্ত ছিলেন৷ তার হাতে গড়া সেন্ট টমাস বয়েজ কয়ার আজও প্রতি বছর ক্রিসমাসের সময় নানা ধরনের ক্যারল পরিবেশন করে৷ এই গির্জায় জমায়েতের অনুমতি থাকলেও অন্যান্যবারের মতো হাজার হাজার মানুষ সেখানে যোগ দিতে পারবেন না৷ আগে থেকে নাম নথিভুক্ত করা হাতে গোনা কয়েকজনই পারবেন অংশ নিতে৷
ছবি: Bachfest Leipzig/J. Schlueter
মিউনিখের ফ্রাউয়েনকির্শে
ক্রিসমাসের ভোর তিনটের সময় প্রতি বছর এই গির্জায় টানা ২০ মিনিট ধরে ঘণ্টা বাজানো হয়৷ ক্রিসমাসের অনুষ্ঠান তারাও সরাসরি সম্প্রচার করবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে৷ সশরীরে অনুষ্ঠান উপভোগ করার অনুমতি রয়েছে মাত্র ১৩০জনের৷
ছবি: picture-alliance/Chromorange/A. Gravante
কোলন ক্যাথিড্রাল
বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ গির্জা কোলনের ক্যাথিড্রাল৷ ৫১৫ ফুট উঁচু এই ক্যাথিড্রালের ক্রিসমাসের বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নিতে সাধারণ মানুষকে আগে থেকে অনুমতি নিতে হবে৷ মানা হবে অন্যান্য করোনাবিধি৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Berg
রাজার ক্যাথিড্রাল
আখেন শহরের ক্যাথিড্রালটি এক হাজার ২২৪ বছর পুরোনো৷ এই ক্যাথিড্রালে এক সময় জার্মান রাজাদের অভিষেকের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো৷ জনপ্রিয় এই ক্যাথিড্রালেও এবার করোনার কারণে ক্রিসমাসের অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন মাত্র ১২০জন৷
ছবি: DW/Muhammad Mostafigur Rahman
হামবুর্গের গির্জা
জার্মানির উত্তরাঞ্চলের ‘মিশেল’ গির্জায় ক্রিসমাসের সময় বেশ কয়েকদিন ধরে চলে টানা প্রার্থনা৷ এ বছর গোটা প্রার্থনাটাই হবে গির্জার ভেতরে ও বাইরে খোলা আকাশের নীচে অনেক বেশি জায়গা জুড়ে৷ কারণ, গুরুত্ব পাচ্ছে শারীরিক দূরত্ব ও করোনাবিধি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বার্লিনের গির্জা
বার্লিনের কাইজার মেমোরিয়াল গির্জা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল৷ আজও এই গির্জার গুরুত্ব মানুষের কাছে বেশ অনেকটাই৷ করোনাবিধি মেনে এখানে অন্যান্য বারের তুলনায় কম দর্শক ভিড় জমাবেন, কারণ, কড়াকড়ি কমানো হয়নি এখনো৷
ছবি: picture-alliance/ ZB
সর্বোচ্চ চূড়া যে গির্জার
বিশ্বের সবক’টি গির্জার মধ্যে সবচেয়ে উঁচু চূড়ার খেতাব রয়েছে উলম শহরের ম্যুনস্টার গির্জার৷ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় এই স্থানে এবার ভীড় অনেকটাই কম হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ৷ জার্মানির সবচেয়ে বড় ‘প্রোটেস্টান্ট গির্জা’য় ক্রিসমাস পালন করতে হলে প্রয়োজন হবে আগাম অনুমতির৷
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Puchner
এগারোটি প্রার্থনার অনুষ্ঠান
হিলডেশহাইম ক্যাথিড্রালে নিয়ম মেনেই পালিত হবে ক্রিসমাস৷ দর্শকের ভীড় সামলাতে মোট ১১টি প্রার্থনা আযোজিত হবে৷ প্রতিবারই বজায় রাখা হবে দূরত্ব৷ একেকটি প্রার্থনা সভায় যোগ দিতে পারবেন সর্বোচ্চ ৮০জন৷
ছবি: Fotolia/panoramarx
নিয়ম মেনেই উৎসব
এরফুর্ট শহরের সবক’টি গির্জাতেই এবার ব্যাপক কড়াকড়ি৷ জার্মানির অন্যান্য গির্জার মতো এখানেও জারি আছে দূরত্ববিধি৷ গির্জার প্রবেশদ্বারের পাশেই রয়েছে হাতধোয়া ও জীবাণুনাশকের ব্যবস্থা৷ এভাবেই সংকটের মধ্যেও সংযতভাবে উৎসব পালন করার পরিকল্পনায় জার্মানির গির্জাগুলি৷
ফ্রান্স সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ায় জিনিসভর্তি প্রচুর ট্রাক সেখানে আটকে আছে। যুক্তরাজ্যের কাছে সেটা মাথাব্যথার কারণ। ব্রিটিশ পরিবহণ মন্ত্রী জানিয়েছেন, বুধবারের মধ্যে ট্রাক চালকদের করোনা পরীক্ষা হয়ে যাবে এবং তাঁরা সার্টিফিকেট পাবেন। করোনা না থাকলে তাঁরা ফ্রান্সে ঢুকতে পারবেন। তবে সব ট্রাক চালকদের পরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দিতে দুই-তিন দিন সময় লাগবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
যুক্তরাজ্যে এই নতুন ধরনের করোনা ভাইরাস অত্যন্ত দ্রুত ছড়াচ্ছে। সে জন্য এই নতুন প্রজাতির ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাস দ্রুত ছড়ালেও বেশি মারাত্মক নয়।